JustPaste.it

নারী স্বাধীনতা ও আমাদের সমাজ:

প্রিন্সিপাল এ. এফ. সাইয়েদ আহমদ খালেদ

=================================================

 

        আল্লাহর সাধের সৃষ্টি মানুষ এরা আবার দুটি শ্রেণীতে বিভক্তঃ নারী ও পুরুষ। এ দুয়ের কর্মের উপর সমাজ দেশ ও জাতি তথা মানুষের কল্যাণ ও অকল্যাণ নির্ভরশীল। যথেচ্ছাচার মানবকল্যাণের অন্তরায়; সামাজিক অবক্ষয় ডেকে আনে রাষ্ট্রীয় উন্নতি ব্যহত হয়। এক কথায় যথেচ্ছাচার, উশৃঙ্খলাতা ও সকল রকম অশোভন আচরণ সীমাহীন দুর্গতির ইঙ্গিত বহন করে এবং এই জাতীয় কার্যকলাপকে আদৌ স্বাধীনতা বা প্রগতি আখ্যা দেয়া যায় না।

 

        আজকে মুসলিম নারীদের স্বাধীনতা (?) পাশ্চাত্যের বেহায়াপনার নগ্ন প্রকাশ বৈ আর কিছু নয়। আমরা মুসলিম পৃথক সত্তার অধিকারী একটি জাতি। আমাদের আদর্শ পৃথিবীর অন্য জাতির ন্যায় মনগড়া আদর্শ নয়। আল-কোরআন ও আল-হাদিস কর্তৃক দেয়া নীতিমালাই আমাদের আদর্শ- চলার পথের পাথেয়; পরিতাপের বিষয় আল্লাহ ও রাসূলের আদেশ নিষেধ উপেক্ষা করে আজ আমরা কোন পথে? এককালের আলোড়ন সৃষ্টিকারী মুসলিম জাতি আজ দিশেহারা আঁধারের অভিযাত্রী। স্বীয় আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণে ঘরে ও বাইরে মুসলমানদের আজ চরম দুর্গতি।

 

        ইতিহাস পর্যালোচনায় এই-ই অবগত হওয়া যায় যে, মানুষ যখন আল্লাহকে ভুলে অধঃপতনের দিকে ধাবিত হয়ছে, তখনই তাদের শেষ পরিণতির হাত থেকে রক্ষার নিমিত্ত আল্লাহর তরফ থেকে নবী বা রাসূল প্রতিনিধি হিসেবে সেই জাতির মধ্যে প্রেরিত হয়েছেন। এমনই একটি চরম অধঃপতিত জাতি ছিল মরুর পরিবেশে লালিত আরবগণ। যারা ছিল চির স্বাধীন ও চির দুরন্ত। খোদায়ী বিধান ও কিতাবি জ্ঞান বিবর্জিত সে ও নির্লজ্জ এই আরব জাতির মধ্যে পুরুষদের প্রধান্য ছিল অসীম। নিয়ন্ত্রণ বিহীন খোলামেলা মরুচারী নারীগণ ছিল পুরুষের উচ্ছল আনন্দ উপভোগের প্রধান- বস্তু বিশেষ। তারা ছিল হৃদয়হীন নিষ্ঠুর আচরণের সামগ্রিক শিকার। তৎকালীন সমাজের তথাকথিত স্বাধীনা এই বিশেষ শ্রেণীর নারীদের মর্ম বিচারী কোন পুরুষের প্রাণে সামান্যতম করুনার উদ্রেক করতো না। নারী ও পুরুষ উভয়েই তো সেদিন স্বাধীন ছিল, ছিল মুক্ত। পুরুষের অত্যাচারী নেতৃত্ব বা পাশবিক শক্তি কে কেন প্রতিহত করতে পারত না। বাধা- বন্ধনহীন সে যুগের উৎশৃঙ্খলায় অত্যস্ত স্বধীনা নারীগণ? কেন আদায় করে নিতে পারেনি পুরুষদের কাছ থেকে তাদের ন্যায্য দাবি? অসংখ্য কারণের উল্লেখ করার দরকার নেই। এতটুকু বলা যায় নারীর কোমলপ্রাণা- দুর্বলতার অবকাঠামো দিয়ে তার দেহের গঠন এবং মাতৃত্ব সুলভ করুনার ফলগুধারা তার মাঝে প্রবাহমান।

 

        পক্ষান্তরে পুরুষ সাহসী, শক্তিশালী, দুর্দমনীয় ও প্রখর সূর্যের তীব্রতা সমতাপ তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। একে দমন ও পরাজিত করার ক্ষমতা নারী চরিত্রে সংযোজন করা হয়নি। জ্ঞান মার্গের সক্ষমতা দাবি করলেও পুরুষদের রুদ্র জনিত কর্মকান্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলার শক্তি নারীকে দেয়া হয়নি। তাই নারীর বুদ্ধিমত্তার প্রখরতা রক্ষা পায় পর্দা পরিবেষ্টিত পরিবেশে, পর্দার অন্তরালে, সকল নিরাপত্তা ও মর্যাদা তার পর্দায়। নারীর পবিত্র ইজ্জত সম্ভ্রম ইত্যাদি অবশ্যই ঢেকে রাখার বিষয়। এর নগ্ন বহিঃপ্রকাশ অনন্তকাল পুরুষদের যৌবিক লালসার খোরাক জুগিয়েছে। নারীর নগ্নতা, বেহায়াপনা, তথাকথিত হাতে হাত ধরে চলার স্বাধীনতা তাদের সম্মান বৃদ্ধি ও সম্ভ্রম রক্ষায় মোটেই সাহায্য করেনি। আজকের নারী সমাজ যদি সর্বক্ষেত্রে পুরুষদের সমকক্ষতা দাবি করে পাশাপাশি তাল মিলিয়ে চলতে চায় তবে পনের শত বছর পূর্বের নারীরাও তাদের সর্বপ্রকার অধিকার ভোগ করতো; সমাজ ছিল খোলামেলা। মুক্ত সমাজ তো তাদের স্বাধীনতা দিয়েছিল। তথাপি কেন তারা পুরুষ কর্তৃক চরমভাবে নির্যাতিত লাঞ্চিত হত? অবাধ স্বাধীনতা ভোগ কারী নারীসমাজ সংঘবদ্ধভাবে কেন প্রতিহত করতে পারত না পুরুষের বিষাক্ত কামুক ছোবল? এ প্রসঙ্গে অনেক কথা প্রশ্নের পর প্রশ্ন সে দিকে অগ্রসর না হয়ে বলা যায়, সেই অজ্ঞতা পূর্ণ নগ্নতার যুগে যে দু'একটি গোত্রের নারী তাদের মান-সম্মান, ইজ্জত-সম্ভ্রম, রূপ-লাবণ্য ইত্যাদিকে যথাসম্ভব যুগোপযোগী ঘৃণিত ভাবধারার চালিত সামাজিক পরিবেশ হতে রক্ষা করার চেষ্টা করত, তারা অপেক্ষাকৃত বর্বরীয় অত্যাচার ও নিগৃহীত হতে মুক্ত ছিল- ইতিহাস সাক্ষী। প্রকৃতপক্ষে এ শ্রেণীর ললনাগনই ছিল স্বাধীন।

 

        মুক্তির দিশারী ধরণীর শ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন আলোর মশাল হাতে করে। ইসলামী প্রদীপ শিখায় সব অন্ধকার বিভীষিকাময় যত হাহাকার সর্বপ্রকারের যুলুম বিদূরিত হল। মায়ের জাতি, বোনের জাতি, পেল পরম স্বাধীনতা পর্দার অন্তরালে অবস্থান গ্রহণ করে। শালীনতা বিমুখ জীবনের নোংরামি থেকে রক্ষা করে দুঃসহ স্বাধীনতা ভোগ কারী নারীকে দিলেন প্রকৃত স্বাধীকার। পর্দাবৃত অবস্থায় তাদের সকল প্রয়োজনীয় কর্মের অধিকার শান্ত হলো সকল অত্যাচারের ধ্বনি; পুরুষদের আইনের গণ্ডি রেখায় আবদ্ধ করলেন। তাদের বিষাক্ত ছোবল হতে নারী রক্ষা পেল। যথেচ্ছাচারের অবসান ঘটল। নারী শৃঙ্খলিত হলোনা, হলোনা বন্দি, ইসলাম পূর্ব যুগের একমাত্র ভোগের বস্তু নারী ইসলামী তথা নবী জীবনের পরশে হল পুণ্যময়ী অন্তরায় মুক্ত জাতীয় জীবনের কল্যাণ ধর্মী একটি বিশেষ শ্রেণী।

 

        পরিতাপের বিষয় আজ সেই নারীরা রাসুলের উপদেশ বিস্মৃত জাহেলিয়াত যুগের কলঙ্কময় অধ্যায় এর পুনরাবৃত্তিতে মেতে উঠেছে। নানা নগ্ন বিষয়ে তারা অগ্রসর। শুনতে চাই, বলাহীন নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার যুগে কি ছিল নারীর স্বাধীনতা? না ইসলামী যুগের পর্দা এনে দিল এই নারী স্বাধীনতা? নারী জীবনের স্বাধীনতাকে দিলঃ ইসলামী শাসন? না আজ্ঞ যুগের পৈশাচিক বর্বরীয় পরিবেশ? পর্দার সমালোচনা কেন? মুসলিম নারীরা পর্দার মাঝ দিয়েই জগতের বুকে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে এখনো করতে পারে। প্রচেষ্টা নেই, পরিচর্যা নেই তাই যত বিপর্যয়।

 

        ইসলামী শরীয়ত বাড়াবাড়ি যেমন পছন্দ করে না তেমনি অতিরিক্ত গোঁড়ামিও মানতে রাজি নয়। ইসলাম যারা বুঝেন না ধর্মের ব্যাপারে যারা উদাসীন তারাই ইসলামের বিকৃত অর্থ করার প্রয়াসী। গরুর গোশত খেলেই মুসলমান বলে দাবি করা যায় না। কেননা খৃস্টানরাও গরুর গোশত ভক্ষণ করে, পার্থক্য কোথায়? পার্থক্য ও ব্যবধান এত যার বর্ণনা ক্ষেত্র এটা নয়। আমার কথা হল ঈমানদার মুসলমানরা নয়, শুধু গরুর গোশত খাওয়া মুসলমানরাই ইসলামের এরূপ অপব্যাখ্যায় বিশেষ তৎপর এবং এটাই তাদের কাজ। ইদানিং এইরূপ একজন মহিলা পর্দা মেলামেশা, এককথায় ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে জঘন্য উক্তি করেছেন। ইসলামী নামে পরিচিতা হলেও সঠিক পথে পরিচালিত মুসলিম জাতির কাছে তিনি কতটুকু গ্রহণীয়, তা এই পথহারা বিকৃত অর্থ কারিনী মহিলাই ভেবে দেখবেন বলে আশা করি। আল্লাহর শাস্তি থেকে কি তিনি রেহাই পাবেন? পেয়েছে কেউ অতীতে? এদের কারণেই আজকের নারী সমাজ নানারকম দুর্গতির শিকারে পতিত হচ্ছে, যা প্রতিহত করার যন্ত্র তারা আবিষ্কার করতে পারেনি। পারছেন কি বিকৃত মস্তিষ্ক প্রসূত অপসমালোচকরা নারী দুর্গতি প্রতিহত করতে?

 

        পুরুষ-প্রধান্য চিরকালের সর্বযুগের দশটি নগ্নভাবে পথ চলা নারী এক পুরুষ যুবকের লোভাতুর দৃষ্টি এড়িয়ে চলার শক্তি রাখে না পর্দাহীন উলঙ্গ চলাফেরার কারণে বখাটে যুবকদের অবৈধ কামনার শক্তি যোগায় পক্ষান্তরে একটি পর্দাবৃতা নারীর চলাফেরার প্রতি স্বভাবতই দশটি উশৃঙ্খল যুবক যথাযথ পর্দা প্রদর্শন করতে বাধ্য হয়। এরূপ প্রমাণ আছে। এবার বলুন, কোন নারী স্বাধীন! বোরকবৃতা? না বোরকা বিমুখ নরী? যৌবন প্রস্ফুটিত দেহকে সংযত না করে বরং যুবকদের কুদৃষ্টির সুযোগদানের নিমিত্ত নগ্ন ভাবে পথে-ঘাটে স্কুল-কলেজে যত্রতত্র যাতায়াতের নাম কি স্বাধীনতা? পরিণামে যদি কিছু ঘটে বা ইদানিং ঘটছে সেই জন্য দায়ী কে? সমাজ না অভিভাবক? আমি মনে করি এজন্য দায়ী অভিভাবক বা ব্যক্তি! কারণ ব্যক্তির সংস্কারের ওপরই সামাজিক সংস্কার নির্ভরশীল।

 

        সত্যের কোন প্রতিবাদ মেনে নেয়া যায়না হযরত খাদিজা-আয়েশা-ফাতেমা রাঃ পতিগতা প্রাণা সাধ্বী রহিমা রাঃ বীরাঙ্গনা খাওলা ও রীরঙ্গনা সখিনা, তুরস্কের চির স্মরণীয়া নারী খালেদা এদিব খানম, মোগলবিদুষী জেবুন্নিছা, জাহানারা, গুলবদন, এরূপ অসংখ্য নারী জিহাদ ও যুদ্দের ময়দানে ইতিহাস, কাব্য-সাহিত্য, ধর্ম-দর্শন, তর্কশাস্ত্র, জ্ঞান-বিজ্ঞান ইত্যাদি চর্চাসহ সমাজের সর্বস্তরে যে অবদান রেখে গেছেন, তা আজও বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় সিটির মাইলফলক হিসেবে অম্লান হয়ে রয়েছে। তাদের দেওয়া পথ নির্দেশনা ও জ্ঞানগর্ভ মূলক গবেষণার আলোকেই দুনিয়ার নারীসমাজ ধন্য এরা কি পর্দার ভিতর দিয়েই সবকিছু সম্পন্ন করেন্নি? পর্দা কি তাঁদের প্রয়োজনীয় কর্মের অন্তরায় সৃষ্টি করেছিল? না গৌরভ বৃদ্ধি করেছিল? পর্দার অন্তরালে থেকে তারা জগত তথা জাতিকে যা দিতে পেরেছেন, পর্দার বিমুখ যথেচ্ছাচার এবং বেহায়াপনায় অভ্যস্ত আজকের নারী বিশেষ করে মুসলিম নারী সমাজ তা দিতে পারছেন কি? অবশ্যই না! সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার গ্লানি নেমে আসছে।

 

        দৃষ্টান্তঃ বিবেকের বিচার ও চিন্তার গভীরতা পর্দাহীন নামের স্বাধীনতার ফলে সংসার থেকে সর্বস্তরের দুর্ভোগ নেমে আসছে। কর্তা বা পুরুষ- ব্যক্তিত্ব অবক্ষয়ের পথে ধাবমান ইসলাম বহির্ভূত স্বাধীনতা দানের ফলে মেয়েদের অশালীন ব্যক্তিত্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, যা ইসলাম ধর্ম আদৌ সমর্থন করেনা। এই সমাজ বিধ্বংসী প্রশ্রয় রোধ করা কি সম্ভব? ব্যতিক্রম ও ভালো নারী যে নেই, শরীয়ত সম্মত অনুপম চরিত্রের নারী যে সমাজে একেবারেই নেই তা অস্বীকার করছি না, অবশ্য     তারা আঙ্গুলে গোনা। অধিকাংশ মুসলিম মেয়েদের রূপটাই তুলে ধরা আমারে প্রবন্ধের আসল বিষয়।

 

        বিশাল পৃথিবীর মধ্যে একটি দেশ এই বাংলাদেশ। এ দেশের অধিবাসী শতকরা ৯০ ভাগেরও অধিক মুসলিম। দুঃখ লাগে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলিম যুবতী ও বদুদের পথে-ঘাটে হাঁটা-চলা এত বিশ্রী ও অশোভন যার বর্নণা প্রদানে কলম থেমে যায়। (ব্যাথাহত প্রাণেই লেখনি চালাতে হচ্ছে) এর কুফল ভোগ করেও তারা উপলব্ধি করতে পারছে না, কোথায় গলদ! যুগে যুগে খোদার গজব নেমে এসেছে যে নারী স্বেচ্ছাচারিতা, অবাধ্যতা, নগ্নতা ও নির্লজ্জতা এবং পুরুষদের প্রশ্রয় দানের কারণে সেদিকে কারও খেয়াল নেই। পক্ষান্তরে ভালোর ও ভালো কথার অহরহ প্রতিবাদ চলছে। নারীকে লালন-পালন, ভরণ-পোষণ, সাধ্যমত সবকিছুর পূরণের যথাযথ দায়িত্ব কর্তাব্যক্তি পুরুষের এবং এ যারা শিকার ও পালন করে চলছেন তারা এই ক্ষণিকের দুনিয়ায় আর্থিক কষ্টে থাকলেও শান্তিতে আছেন বা থাকেন। আর এই প্রাচুর্য বিহীন শান্তির মাঝেই তো স্বাধীনতার আস্বাদ। সত্যের স্বাদ চিরকালই তিক্ত; হজম করতে পারলে পরিণাম বড়ই মিষ্ট। দুঃখের বিষয়, হাল জামানার বিভিন্ন ডিগ্রীধারী শিক্ষিত (?) পুরুষ সমাজে মেয়েদের আয় উপার্জনের ওপরই যেন নির্ভরশীল হতে বেশি আগ্রহী। এমনকি মাদ্রাসায় পড়ুয়া অনেক লোকও এই প্রবনতার শিকার। ফলে মেয়েদের শরীয়ত বিহীন বেহায়া ও বেপরোয়া চলাফেরা আজ ঘরে ও বাইরে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এজন্য দায়ী কারা? বলতে সংকোচ নেই! মেয়েদের এই ছন্নছাড়া, বল্লাহীন আবদার ও আবরূ বিহীন ঘোরাফেরার জন্য সঙ্গতভাবে অভিভাবকরা দায়ী। এরূপ প্রশ্রয় নারীর স্বাধীনতা নয় নারী জাতির ক্ষয়িষ্ণুতারই নাম।

 

        মেয়েদের অভিভাবক পিতা, বোনের বড় ভাই, স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামী। এদের প্রতি তাদের প্রধান্যই বেশি ও ন্যায় সঙ্গতভাবেই স্বীকৃত। শিক্ষিত মেয়েরা বধূরা মাদ্রাসা স্কুল কলেজে পড়বে একান্ত প্রয়োজনীয় ও কর্তব্যের তাগিদে বাইরে কোথাও যাবে তাতে আপত্তি বা বাধা কোথায়? আপত্তি শুধু নগ্নভাবে পর্যায় বিহীন চলাফেরায়। অবশ্যই সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ডেকে এককথায় বোরকা আবৃতা অবস্থায় সকল দায়িত্ব পালন করবে ও করতে হবে। এটাই নারী স্বাধীনতার দৃষ্টিতে নারীর গর্ব। পবিত্র রূপসৌন্দর্য ধরা পড়তে পারে, এমন অবস্থায় কোনমতেই বাইরে যেতে দেওয়া উচিত নয়। এটাই ইসলাম, এটাই পর্দা-নারী জাতির উদ্ধারকারী শাশ্বত নবী সাঃ এর সর্বকালের উপযোগী উপদেশ। এবং এইভাবে চললে ও সব কিছু করলে জীবন যেরূপ নিরাপদ থাকে, নারীর গৌরব যেমন বৃদ্ধি পাবে, পারিবারিক শান্তিও বজায় থাকবে ইনশাআল্লাহ।

 

        আজকাল এমন কিছু ইসলামী মূল্যবোধের ক্ষতিসাধনকারী মুসলিম দেখা যায়, যারা নিজেদেরকে চলার ও বলার সুন্নতের অনুসারী হিসেবে জাহির করে। তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র বাণী প্রচারে সদা ব্যাঘ্র, শরীয়তের উপদেশ দানে অহরহ তৎপর, এমনকি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরির ব্যাপারে কতনা ব্যস্ত; কিন্তু তাদের ভিতর অন্তঃসারশূন্য। জিহাদের কথা শুনলে শিউরে ওঠেন! দানের ব্যাপারে বিতর্কে অবতীর্ণ হন! পর্দার তাগিদের কথা বললে মুখ বিবর্ণ হয়ে যায়। এই বুঝি স্বাধীনতা গেল এক কথায় ফরজ রক্ষায় ও পারনে উদাসীন অথচ রুটিন মাফিক ধর্ম সভা, মিলাদ, মাহফিল ইত্যাদির আঞ্জামে কোন ক্রুটি নেই। এ শ্রেণীর অবস্থা হচ্ছে "মদ খাও আপত্তি নেই! গোঁফ যেন ভিজেনা"। আফসোস বাড়ির মহিলাগণ কোন সূরতে পথে বের হয় সেদিকে একটুও ভ্রুক্ষেপ করে না। আরো মজার ব্যাপার অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকগণ পর্যায়ক্রমে যুবতী বধু ও কন্যাদের নাঙ্গা অবস্থায় সঙ্গে করে পথে-ঘাটে-মাঠে হাওয়া খেতে বের হন! বাজারে চলাফেরা করেন! এ পৈশাচিক আনন্দ উপভোগের চেয়ে তিনি যে সমাজকে কলুষিত করেছেন শরীয়তের অবমাননা করেছেন সে দিকে লক্ষ্য নেই। বিবেগ তাকে কষাঘাত করেনা। পরিণামে দাম্পত্য জীবনে যদি কোনো অঘটন ঘটে, অশান্তির সৃষ্টি হয়, তখন দোষ পড়ে, মেয়ে ভাল, বেটা খারাপ! অথবা ছেলে ভালো, মেয়ে টি খারাপ! বেহায়া স্বাধীনতার ফলে যে এইসব ঘটেছে তা একবারও স্মরণে উদিত হয় না। [অসমাপ্ত...]

 

*****