JustPaste.it

জীবন পাথেয়

রাসুল সা এর পবিত্র জীবনের সকাল-সন্ধ্যা

===========================================================

 

       ফজরের পরেঃ রাসূলে করীম (সাঃ) ফজরের নামাযান্তে তসবীহ পাঠ করে মসজিদেই চারজানু হয়ে বসে যেতেন এবং সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) পতঙ্গসম তাঁর সন্নিকটে এসে স্থান গ্রহণ করতেন। এটাই ছিল দরবারে নবুয়ত। এটাই ছিল তাঁদের সাধনার বৃত্ত। মজলিসই পাঠাগার হয়ে যেত এবং এটাই বন্ধু-বান্ধবের মজলিসের রূপ পরিগ্রহ করত। এখানেই তিনি সদ্য অবতীর্ণ ওহী সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামকে অবহিত করতেন এবং এখানেই তাঁদের প্রতি আধ্যাত্মিক বরকতের বৃষ্টি বর্ষণ করতেন। এখানেই তিনি প্রিয় অনুসারীগণকে ধর্মীয়, সামাজিক রীতিনীতি,কাজ কারবারের নিয়ম-কানুন ও চারিত্রিক বিধানাবলী শিক্ষা দিতেন। মুসলমানদের পারস্পরিক লেন-দেন ও বিরােধ-বিবাদের ফায়সালাও এখানেই হত।

 

        প্রায়ই হুযুর পাক(সাঃ) সাহাবায়ে কেরামকে বলতেনঃ তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখে থাকলে বর্ণনা কর। অতঃপর তিনি স্বপ্ন শুনতেন ও তার ব্যাখ্যা দিতেন। কখনও তিনি নিজেই বলতেনঃ আজ আমি এই স্বপ্ন দেখেছি। অতঃপর নিজেই তার ব্যাখ্যা বর্ণনা করতেন। পরবর্তীকালে তিনি এ নিয়ম বর্জন করেন।- (মাদারেজ) কখনও সাহাবায়ে কেরাম কথাবার্তার ফাঁকে শিষ্টাচার বজায় রেখে জাহেলী যুগের কিসসা-কাহিনী বর্ণনা করতেন এবং স্তুতিগাঁথা ও কবিতা আবৃত্তি করতেন। অথবা হাসির কথাবার্তা বলতেন। রসূলুল্লাহ (সাঃ) শুনতেন এবং কখনও হেসেও ফেলতেন। এরপর তিনি এশরাকের নফল নামায পড়তেন। প্রায়ই তিনি যুদ্ধলব্ধ সম্পদ অথবা জনগণের বৃত্তি বন্টন করতেন। সূর্যোদয়ের পর যথেষ্ট বেলা হয়ে গেলে রসূলুল্লাহ (সাঃ) চাশতের নফল কখনও চার, কখনও আট রাকআত পড়ার পর মজলিস সমাপ্ত করতেন। অতঃপর পালা অনুযায়ী পত্নীদের গৃহে তাশরীফ নিয়ে যেতেন। সেখানে তিনি গৃহস্থালীর কাজে লিপ্ত হতেন। প্রায়ই গৃহের বিভিন্ন কাজকর্ম নিজেই আঞ্জাম দিতেন। দিনে মাত্র একবার খাদ্য গ্রহণ করতেন এবং দ্বিপ্রহরে সামাণ্য কিছু সময় বিশ্রাম করতেন। -(সীরাতুন্নবী)

 

       যােহরের পরেঃ জামাআতের সাথে যােহরের নামায পড়ার পর রসূলুল্লাহ (সাঃ) মদীনার বাজারসমূহ পর্যবেক্ষণ করতেন। দোকানদারদের প্রতি দৃষ্টি দিতেন। তাদের পণ্যদ্রব্য পরিদর্শন করতেন। পণ্যদ্রব্যের ভালমন্দ যাচাই করতেন এবং মাপ ও ওজন ঠিকমত দেওয়া হচ্ছে কিনা, তা লক্ষ্য করতেন, জনপদ ও বাজারে কোন অভাবগ্রস্থ থাকলে তিনি তার অভাব দূরকরার ব্যবস্থা করতেন।

 

       আছরের পরেঃ জামাআতের সাথে আছরের নামায পড়ে রসূলুল্লাহ (সাঃ) বিবিগণের মধ্যে প্রত্যেকের গৃহে গমন করতেন, কুশলাদি জিজ্ঞাসা করতেন এবং কিছু সময় প্রত্যেকের কাছে অতিবাহিত করতেন। এ কাজটি এত নিয়মিত ছিল যে, প্রত্যেকের কাছে নির্ধারিত সময়েই পৌছে যেতেন। সকলেই জানত যে,তিনি সময়ের মূল্য কতটুকু বুঝেন এবং সময়ের কতটুকু পাবন্দি করেন।

 

       মাগরিবের পরেঃ মাগরিবের নামায জামাআতের সাথে পড়ে এবং নফল আওয়াবীন সমাপ্ত করে তিনি যে বিবির পালা হত, রাত্রি যাপনের জন্যে সেই বিবির গৃহে চলে যেতেন। প্রায়ই পত্নীগণ সকলেই সেই গৃহে এসেজমায়েত হতেন।

 

মদীনার মহিলারাও অনেক সময় এসে সমবেত হতেন কারণ, এ সময়ে তিনি মহিলাদেরকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। এ মজলিসটি প্রকৃতপক্ষে নারী-শিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠানের রূপ ধারণ করত। যেখানে চূড়ান্ত শিষ্টাচার ও পর্দার সাথে মহিলারা ধর্মীয় বিদ্যা, উত্তম সামাজিক ও উত্তম চরিত্রের বিষয়াদি সরাসরি প্রিয় নবীজীর কাছ থেকেই শিক্ষা করার সুযােগ লাভ করতেন। মায়ের কোলই শিশুদের প্রথম পাঠাগার। রসূলুল্লাহ (সাঃ) এই মাকে ধর্মীয় জ্ঞান থেকে বঞ্চিত এবং ইসলামী জীবনাচরণের সাথে অপরিচিত রাখতে চাইতেন না। মহিলারা এখানেই তাদের অভিযােগের কথাও পেশ করত এবং রসূলুল্লাহ (সাঃ) সে সবের ফয়সালা করতেন। মহিলারা তাদের উদ্বেগ, অভাব-অভিযােগ, অক্ষমতা এখানেই বর্ণনা করত। রসূলুল্লাহ (সাঃ) সেগুলােরও সমাধান দিতেন। কেউ বায়াত হতে চাইলে তিনি এখানেই তাকে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহের ওপর বায়াত করে নিতেনঃ আল্লাহ্ তা'আলার সাথে কাউকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচারে লিপ্ত হবে না, সন্তান হত্যা করবে কারও প্রতি অপবাদ আরােপ করবে না এবং সকাজে রসূলের তরিকার বিরুদ্ধাচরণ করবে না।

 

বায়াতের পর তিনি তাদের জন্যে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। এশার নামায পর্যন্ত এই পাঠাগার চালু থাকত। অতঃপর তিনি এশার নামাযের জন্যে মসজিদে চলে যেতেন এবং মহিলারা আপন আপন গৃহে প্রত্যাবর্তন করত।

 

       এশার পরেঃ এশার নামায জামাআতের সাথে পড়ে রসূলে করীম (সাঃ) নিজ বাসগৃহে গিয়ে নিদ্রা যেতেন। তিনি এশার পর কথাবার্তা বলা পছন্দ করতেন না, তিনি সর্বদা ডান পাশে শুয়ে নিদ্রা যেতেন। প্রায়ই ডান হাত গালের নীচে স্থাপন করতেন। মুখমণ্ডল কেবলার দিকে থাকত। মেসওয়াক শিয়রে অবশ্যই রাখা থাকতাে। নিদ্রার পূর্বে সূরা জুমু'আ, সূরা তাগাবুন ও সুরা ছফ তেলাওয়াত করতেন। জাগ্রত হওয়ার পর মেসওয়াক করতেন, ওযু করতেন, অতঃপর তাহাজ্জুদ পড়তেন। কখনও তাহাজ্জুদের সেজদায় দীর্ঘক্ষণ দোয়া করতেন। এরপর তিনি বিশ্রাম গ্রহণ করতেন।

ফজরের আযান হলে গাত্রোত্থান করে কক্ষের মধ্যেই দু'রাকআত সুন্নত পড়ে সেখানেই ডান পার্শে শুয়ে থাকতেন। জামাতের সময় হওয়ার পর মসজিদে গমন করে জমাআতের সাথে ফজরের নামায আদায় করতেন। রসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর এটাই ছিল দৈনন্দিন কর্মসূচী।

 

 

        প্রথমতঃ পাঞ্জেগানা নামায নিজেই স্বাভাবিকভাবে সময়ের অনুবর্তিতা শিক্ষা দেয়। কিছুক্ষণ পরেই পরবর্তী নামাযের সময় এসে মুসলমানকে সাবধান করে যে, এতটুকু সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে এবং এই পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। কাজেই যা করে নেওয়া উচিত। সময়ের এই অনুবর্তিতা ছাড়া রসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, তিনি প্রত্যেক কাজের জন্যে সময় নির্দিষ্ট করে দিতেন এবং তা পুরাপুরি করতেন। একারণেই তিনি অল্প সময়ে অনেক কাজ। করতে পারতেন। তিনি কখনও সময়ের। অভাব ও সংকীর্ণতার অভিযােগ করেননি।

 

(সীরাতুন্নবী) দিনের সুন্নতসমূহ-

প্রত্যুষে গাত্রোত্থান করেই এসব সুন্নত পালন করা শুরু করতে হবেঃ

 

        (১) নিদ্রা থেকে উঠেই উভয় হাত দ্বারা মুখমণ্ডল ও চক্ষু ঘষে নিবে, যাতে নিদ্রার আবেশ দূর হয়ে যায়। - (তিরমিযী)

 

        (২) জাগ্রত হওয়ার পর চক্ষু উন্মীলিত হলে তিনবার আলহামদুলিল্লাহ, তিনবার কলেমায়ে তাইয়্যেবা লা-ইলা ইল্লাল্লাহু মােহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ পাঠ করবে।

 

        (৩) নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে মৃত্যু দেয়ার পর জীবন দান করলেন। তাঁরই দিকে আমরা উথিত হয়ে প্রত্যাবর্তন করব।-(শামায়েল)

 

        (৪) যখনই নিদ্রা থেকে উঠবে, তখনই মেসওয়াক করবে। (আবু দাউদ)

 

        (৫) এস্তেনজার জন্যে পানির পাত্রে হাত ডুবাবেনা; বরং প্রথমে উভয়হাত তিনবার ধৌত করবে, এরপর পানির মধ্যে হাত ডুবাবে।- (তিরমিযী)

 

এরপর প্রস্রাব-পায়খানার জন্যে যাবে।গােসলের প্রয়ােজন হলে গোসল করবে। নতুবা ওযু করে কিংবা অসুস্থ হলে তায়াম্মুম করে, নামায পড়বে। এরপর মসজিদে আউয়াল ওয়াক্তে গিয়ে জামাআতের সাথে ফরয নামায পড়বে।

 

        গৃহের বাইরে যাওয়ার দোয়াঃ হযরত আনাস (রা)-এর বর্ণনা; রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তােমরা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এই দোয়া পড়বে- আমি আল্লাহর নামে বের হচ্ছি। আল্লাহর ওপরই আমার ভরসা। কোন কল্যাণ লাভ করা অথবা অনিষ্ট থেকে বাঁচার ব্যাপারে সফলতা আল্লাহ তাআলার আদেশেই হতে পারে। এ দোয়া পাঠকারীকে ফেরেশতারা বলেঃ আল্লাহর বান্দা, তােমার এ নিবেদন তােমার জন্যে যথেষ্ঠ। তুমি পূর্ণ হেদায়াত পেয়ে গেছ এবং তােমার হেফাযতের ফয়সালা হয়ে গেছে। অতঃপর শয়তান নিরাশ হয়ে তার কাছ থেকে দূরে চলে যায়।- (তিরমিযী, আবু দাউদ, মা’আরেফ)

 

       এশরাকের নামাযঃ কোন শরীয়তসম্মত ওযর না থাকলে ফজরের নামায শেষে এশরাক পর্যন্ত যিকিরে লিপ্ত থাকবে। মসজিদে যে জায়গায় ফরয পড়া হয়, সেখানেই বসে থাকার মর্তবা বেশী। মধ্যম মর্তবা হচ্ছে মসজিদের যে কোন জায়গায় বসে থাকা এবং নিম্ন মর্তবা হচ্ছে মসজিদের বাইরে চলে যাওয়া; কিন্তু মুখে যিকির অব্যাহত রাখা। সূর্যোদয়ের পর প্রায় পনের মিনিট সময় অতিক্রান্ত হলে দু'রাকআত নফল পড়বে। এতে পূর্ণ এক হজ্জ ও পূর্ণ এক ওমরার সওয়াব পাওয়া যায়। একে এশরাকের নামায বলা হয়।

 

        যে ব্যক্তি এশরাকের সময় দু'রাকআত নফল পড়ে, তার সকল সগীরা গােনাহ মাফ হযে যায়। - (তরগীব ও তরহীব)

 

        সকালের দোয়াঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণনা; রসূলে করীম (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি সকালে নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করে, সে সারাদিনে যেসব পূণ্য কাজ করতে পারতাে কিংবা করার নিয়ত ছিল, কিন্তু পারে নাই; সেসব কাজেও সওয়াব পাবে এবং যে সন্ধ্যায় পাঠ করে, সে সারা রাত্রির না করা পুণ্য কাজসমূহের সওয়াব পাবে। আয়াত এইঃ “যখন তােমাদের সন্ধ্যা হয়, যখন তােমাদের সকাল হয়, আল্লাহ তা'আলার তসবীহ পাঠ কর। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে আল্লাহতাআলাই প্রশংসার যােগ্য; অতঃপর তৃতীয় প্রহরে এবং যখন তােমাদের দ্বিপ্রহর হয়, (আল্লাহ্ তা'আলার তসবৰ্হি পাঠ কর।) তিনিই জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন এবং তিনিই মৃতকে জীবিত থেকে নির্গত করেন। ভূমির মৃত্যুর পর, তিনিই তাকে জীবিত তথা শস্য-শ্যামল করেন। এমনি ভাবেই তােমরা (মৃত্যুর পর) পুনরুত্থিত হবে।”

 

        এশরাকের নামাযান্তে জীবিকা উপার্জনের কাজে বের হয়ে যাবে। হালাল রুযী উপার্জন করবে। এছাড়া অন্যান্য ফরয ও ওয়াজিব এবাদত আদায় ও জীবনের সকল কর্মে সুন্নত অনুসরণের প্রতি যত্নবান হবে। সূর্য যখন যথেষ্ট উঁচুতে উঠে পড়ে এবং তার কিরণ প্রখর হয়ে যায়, তখন চাশতের নামায আদায় করবে। এ নামাযের রাকআত সংখ্যা চার থেকে বার পর্যন্ত। -(মুসলিম)

 

        হাদীসে বর্ণিত আছে, চাশতের মাত্র চার রাকআত নামায পড়লে মানব দেহে যে ৩৬০টি গ্রন্থি আছে, সবগুলাের সদকা আদায় হয়ে যায় এবং যাবতীয় ছগীরা গােনাহ মাফ হয়ে যায়।–(মুসলিম)

 

       দ্বিপ্রহরের নিদ্রাঃ অবসর পাওয়া গেলে সুন্নত অনুসরণের নিয়তে দুপুর বেলায় আহারের পর অল্পক্ষণ শুয়ে থাকবে। হাদীসে একে ‘কায়লুলা’ বলা হয়েছে। এর জন্যে নিদ্রা যাওয়া জরুরী নয়। কেবল শােয়াই যথেষ্ট‌।‌ -(যাদুল-মা’আদ)

 

        হযরত আনাস (রাঃ) বলেনঃ সাহাবায়ে কেরাম আগে জুমু'আ আদায় করতেন, এরপর কায়লুলা করতেন। -(বুখারী)

 

        হযরত খাওয়াত ইবনে জুবায়র (রাঃ) বলেনঃ সূর্যোদয়ের সময় নিদ্রা যাওয়া নির্বুদ্ধিতা, দ্বিপ্রহরে নিদ্রা যাওয়ার অভ্যাস এবং সূর্যাস্তের সময় নিদ্রা যাওয়া বােকামী। -(বুখারী)

 

        উদ্দেশ্য এই যে, রাত্রি ছাড়া কোন সময় নিদ্রা যাওয়া নির্বুদ্ধিতা, বােকামী ও অজ্ঞতার দলীল। - (আদাবুল-মুফরাদ)

 

        যােহরের নামায জামা’আত সহকারে আদায় করার পর সাংসারিক কাজ-কর্মে মশগুল হবে এবং আছরের নামাযের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখবে। কুরআন পাকে এ সম্পর্কে বিশেষ আয়াত বর্ণিত আছে।

 

ঐ আয়াতে (মধ্যবর্তী নামায)-এর অর্থ আছরের নামায। রসূলুল্লাহ (সাঃ)- এ সম্পর্কে জোর তাকীদ করেছেন।-(বেহেশতী যেওর)

 

        আছরের নামাযের পূর্বে চার রাকআত নামায পড়া সুন্নত। এর অনেক ফযিলত বর্ণিত আছে। (তিরমিযী)

 

        ফজরের নামাযের ন্যায় আছরের নামাযের পর অল্পক্ষণ বসে যিকির করবে এরপর মােনাজাত করবে। (বেহেশতী যেওর)

সংকলনঃ আবু খালেদ

 

******