JustPaste.it

মুসলিম বিশ্ব
সংবাদ বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন

------------------

ট্রাস্ট পরিচালিত দু’টি ম্যাগাজিনের
জাতিসত্তা বিরোধী ভূমিকার নিন্দা


ন্যাশনাল ফাউণ্ডেশন এণ্ড রিচার্স সেন্টারের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ঃ সরকারী মালিকানাধীন ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত ও প্রকাশিত সাপ্তাহিক বিচিত্রা'র ১৯ আগস্ট ১৯৯৪ সংখ্যায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও রাষ্ট্রধর্মের লেবাসকে অপমান করে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেন্টারের সদ্য সচিব মোঃ বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে পত্রিকাটির উক্ত সংখ্যাটিকে বাজার থেকে প্রত্যাহার করে অবিলম্বে এর সম্পাদককে বরখাস্ত এবং আইনের হাতে সোপর্দ করার জোর দাবী উত্থাপন করেন। অন্যথায় উদ্ভুত পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। কোন খুঁটির জোরে সরকারী মালিকাধীন একটি সরকারী পত্রিকা এহেন ন্যাক্কারজনক প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করার দুঃসাহস পায়? পাশাপাশি পতিত স্বৈরাচারের সমর্থক সংবিধানসম্মত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বিদ্বেষী, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমতু বিরোধী একশ্রেণীর এনজিও'র সেবাদাস গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বিজাতীয় সাংস্কৃতির আমাদনীকারক একটি লোক কিভাবে এখনও বিচিত্রার মতো সরকারী পত্রিকার ঘাড়ে বহাল তবিয়তে আছেন, তাও এক বিরাট জিজ্ঞাসা বটে। কাদের সাহায্যে কোন ‘মহান স্বার্থে’ এ ব্যক্তিটি ২২ বছরের অধিক সময় ধরে এই পত্রিকার ঘাড়ে নিশ্চিন্তে বসে আছে তাও আজ ভেবে দেখা দরকার। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিচিত্রা একটি সরকারী পত্রিকা। দেশ পরিচালনায় সাথে জনগণকে পরিচিত করে তোলাই এর প্রধান কাজ হওয়ার কথা ছিল। সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়মূলক কর্মকাণ্ড, দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর বিষয়-আশয়কে আলোকিত করে তোলাও এর একটা উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু এই সব কিছুকে তুড়ি ও রীতি-নীতির ফাঁক গলিয়ে বাণিজ্যের লোভ দেখিয়ে, একে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী এক শ্রেণীর এনজিওর মুখপত্রে পরিণত করেছেন। শুধু তাই নয়, দেশের রাজনীতিকে বিশেষ করে, বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তিকে হেয়প্রতিপন্ন করার মানসে একের পর এক তৎপরতা চালিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে নানা কায়দায় বক্তব্য রেখে যাচ্ছেন। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মাধ্যমে কিছু দিন আগে দেশে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার পেছনেও এই লোকটির অনেক ভূমিকা আছে বলে শোনা যায়। এই ঘাদানির ২৪ দেশদ্রোহীর দুই জন এখন বিচিত্রার নিয়মিত লেখক। এই লোকটির ধৃষ্টতা যে কি সীমাহীন তার প্রমাণ কিছু দিন আগের বিচিত্রার একটি সংখ্যা। এই সংখ্যায় আভাসে-ইজগিতে বলা হয়েছে, দেশ পরিচালনায় শহীদ জিয়াউর রহমান নাকি বিচিত্রা তথা তার পরামর্শ চাইতেন। এবারের বর্ষ পূর্তি সংখ্যায় দেশের রাজনীতিকে হেয় করার জন্য; বর্তমান সরকারকে তাচ্ছিল্য করে “ফাঁসির আসামী' কে বছরের আলোচিত চরিত্র করে জনৈক ঘাদানির ছবি প্রচ্ছদে ছাপে। ঈদুল ফেতর সংখ্যায় বাঙালী জাতীয়তাবাদের উপর প্রবন্ধ প্রকাশ করে। এছাড়া রাষ্ট্রের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অসংখ্য গুরুতৃপূর্ণ প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফালতু ও হাস্যকর বিষয়কে প্রধান হিসাবে তুলে ধরা এই সম্পাদকের ঘোড়ারোগে পরিণত হয়েছে। আর এভাবেই একটি সরকারী পত্রিকাকে সরকারের আদর্শ ও উদ্দেশ্য বিরোধী কাজে নিয়োজিত করে এর সম্পাদক হয়ে উঠেছেন তথাকথিত 'প্রগিতিশীল'।


মুসলিম ও ক্ষুদ্র দলের প্রতি উপেক্ষা 
ইউএনপি'র পরাজয়ের কারণ


শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) বিস্ময়কর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধন সত্বেও কেন পরাজিত হল, তা নিয়ে রাজধানী কলম্বোতে এখন নানা রকম বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। ইউএনপি ১৯৭৭ সাল থেকে শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাসীন ছিল।
ইউএনপি'র পরাজয়, বিস্ময়কর হলেও অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেস এবং আরও কিছু ক্ষুদ্র দলের সঙ্গে জোট বাধলে নির্বাচনে তারা সহজেই জয়লাভ করতে পারতো৷ ঐ সব দল - ইউএনপি'র সঙ্গে জোট বাধতে আগ্রহীও ছিল। কিন্তু অতীতের মতো এবারও ইউএনপি একলা চলার নীতি গ্রহণ করে। 
অপর দিকে শ্রীলঙ্কা ফ্রীডম পার্টি শুরু থেকেই ছোট ছোট রাজনৈতিক দলকে তাদের সঙ্গে আনার চেষ্টা করে এবং শেষ পর্যন্ত ফ্রীডম পার্টির নেতৃত্বে ১২টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত হয় পিপলস এ্যালায়েন্স (পিএ)।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই পিএ বিপুল অর্থ ব্যয়ে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালাতে শুরু করে। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য সর্বাত্বক প্রয়াস চালায়। রাজধানী কলোম্ব নগরী তারা বর্ণাঢ্য পোস্টারে ছেয়ে ফেলে। রাজধানীর বাইরেও একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। পার্টির কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে প্রচার কাজ চালায়। 
অপরদিকে ইউএনপি জনসভা ও সমাবেশ করা ছাড়া নির্বাচনী প্রচারাভিযানকে তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি। তাদের ধারণা ছিল, নির্বাচনে বিজয় তাদের অবধারিত। শেষের দিকে যখন তারা জনসাধারণের মনোভাব বুঝে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলেন, তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।

 

তসলিমা বিষয়ে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমণ্ডলোর খবরে 
বাংলাদেশ সম্পর্কে উপলব্ধির অভাব রয়েছে

-জেমস জে নোভাক


বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরীন সংক্রান্ত বিবাদ-বিতর্ক বিষয়ে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রকাশিত খবরে প্রকৃত পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের সংবাদপত্র, রাজনৈতিক ও পটভূমি বিষয়ে উপলব্ধির অভাব রয়েছে। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত 'বাংলাদেশঃ রিফ্রেকশন অন দি ওয়াটার' শীর্ষক গ্রন্থের লেখক জেমস জে নোভাক একথা বলেন।
আমেরিকার লেখক সাংবাদিক মিঃ নোভাক ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এশিয়া ফাউণ্ডেশনের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে বাস করেছেন এবং বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষতা বিষয়ে আরেকটি গ্রন্থ রচনা করছেন।
পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যম তসলিমা সংক্রান্ত বিচার হচ্ছে বলে চিৎকার করছে। অথচ, তসলিমাকে এই আইনে বিচার করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, পশ্চিমা মাধ্যমে উল্লেখিত পটি অব গড বা খোদার পার্টি বলে বাংলাদেশে কিছু নেই। যেটা আছে, তা হল জামায়াতে ইসলামী। তিনি বলেন, পশ্চিমা সাংবাদিকরা বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস, রাজনীতির পটভূমি উপলব্ধির জন্য যতটা সময় প্রয়োজন, ততটা সময় সেখানে থাকেননি বলেই এটা হচ্ছে। তিনি বলেন, তারা ইংল্যাণ্ডে যে ব্লাসফেমী ল' রয়েছে তার সাথে বাংলাদেশের ২৯৫ ধারাটিকে গুলিয়ে ফেলেছে।
পশ্চিমা পত্র-পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যম বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামী মৌলবাদ সংক্রান্ত যে প্রশ্নটি নিয়ে খুব বেশী মাতামাতি চলেছে, সে ব্যাপারে মিঃ নোভাক বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে ইসলামী মৌলবাদী পার্টি কোন সময়েই তেমন মাথাচাড়া দিতে পারেনি। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে ইসলামপন্থী বলা অযৌক্তিক ও অর্থহীন। সবচেয়ে ক্ষমতাশীল মুসলিম দলটি, সরকারের বিরোধী পার্টি। তার চেয়েও বড় কথা যে, সবচেয়ে ক্ষমতাশীল ইসলামী পার্টি আবার বাংলাদেশের সবচেয়ে ধর্মনিরপেক্ষ পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে। আর এটাই জটিলতাকে বাড়িয়ে তুলেছে-যা পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলো বুঝতে পারছে না!
২৯৫ ধারা সম্পর্কে মিঃ নোভাক বলেন, বাক-স্বাধীনতায় আমি আন্তরিক বিশ্বাসী হওয়া সত্বেও এ কথাও উপলন্ধি করি যে, বাংলাদেশের পট-প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধর্মের জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাতে হিংসা-হানাহানি বেধে না ওঠে, তার জন্য বৃটিশ শাসনামলের প্রথমেই চালু করা এই সাম্প্রদায়িক আইনের গুরুত্ব যথেষ্ট ।
তিনি বলেন, এ আইনের বলেই ভারত সলমান রুশদীর গ্রন্থটি বাজেয়াপ্ত করে। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে ইরানের আগেই এ গ্রন্থ নিষিদ্ধ হয়। তিনি বলেন, উপমহাদেশে যে সাম্প্রদায়িক জটিলতা রয়েছে, তার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোন পরিচয় নেই।
তিনি বলেন, গত ৩ আগস্ট তসলিম নাসরীনের জামিন প্রদানের ঘটনা ও উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি বাংলাদেশীদের যে অকুষ্ঠ আস্থা প্রকাশ পেয়েছে, তা সে দেশের জনজীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সূচিত করেছে এবং তার প্রতি আমার অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা রয়েছে।
 

তসলিমা সুইডেনেও নিরাপদ নয়


সুইডেনের মুসলিম গ্রুপগুলো দেশ থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরীনের কোন ক্ষতি না করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে এককভাবে কেউ কিছু করলে সে ব্যাপারে তাদের কিছু করার নেই বলেও গ্রুপগুলো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে!
সুইডেনের ইসলামী পরিষদের নেতা মাহমুদ আলডিবি বলেন, এখানকার মুসলিম গ্রুপগুলো তসলিমার কোন ক্ষতি করতে চায় না। তিনি সতর্ক করে দেন যে, কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে তার বিরুদ্ধে কিছু করে সে ক্ষেত্রে গ্রুপগুলো তাকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে না। জনাব মাহমুদ বলে, যারা ইসলামের অবমাননা করে তাদের শাস্তি আল্লাহ দেবেন, আমরা নই। তিনি বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের সময় সুইডেনের মসজিদণ্ডলোতে এ বার্তা প্রচার করা হবে। তবে তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, সুইডেনের মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তি এ নির্দেশ নাও শুনতে পারে। সুইডিশ' সংবাদপত্র 'ডাগেনস নাইহিটারে'কে জনাব মাহবুব বলেন, সুইডেনে থাকাকালে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে তসলিমার বিরত থাকা উচিত। 
ইসলামী পরিষদের মতে, সুইডেনে প্রায় ২ লাখ মুসলমান রয়েছে। এদের প্রায় সবাই তুরস্ক, ইরান ও বসনিয়া থেকে আগত। ভোয়া জানায়, তসলিমা নাসরীন বলেছেন যে, সুইডেনে আসার আগে নিজের দেশ থেকে পালিয়ে আসার ধকল কাটিয়ে ওঠার জন্য সময়ের প্রয়োজন। এক বন্ধুর মাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, তার বিশ্রাম ও অবসর প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন যে, আগামী সপ্তাহে তিনি সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
উল্লেখ্য, তসলিমা গত বুধবার সুইডেনে পৌঁছার পর পিইএন-এর সহযোগিতায় একটি গোপন স্থানে অবস্থান করছেন। সুইডেনের নিরাপত্তা পুলিশ বলেছে, তসলিমা কোথায় আছেন তারা জানে।
সুইডেনের পিইএন ক্লাবের সভাপতি গ্যাবি গ্লেইনম্যান গত বৃহস্পতিবার এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেন, তসলিমা এখানে যতদিন চান ততদিন থাকতে পারেন। কিন্তু লেখিকা জানিয়েছেন যে, তিনি চিরকালের জন্য দেশ ছাড়তে চান না।


মুসলমানদের উদ্বেগ ফ্রান্সে পাবলিক স্কুলে মুসলিম ছাত্রীদের স্কার্ফ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত


 ফ্রান্সে ৯টি মুসলিম সমিতি পাবলিক স্কুলসমূহে মুসলামান ছাত্রীদের স্কার্ফ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সরকারী সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মুসলমান ছাত্রীদের স্কুল থেকে বেরিয়ে যাবার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
প্যারিসে এক যুক্ত ইশতেহারে এ সব সমিতি ফ্রান্সে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতামূলক পরিবেশকে নিন্দা করে।
ইশতেহারের বলা হয়, “এসব বালিকা তাদের ধর্মের অনুশাসন মেনে এমন কি অপরাধ করল, যাতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার দরকার হল? শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য যদি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে পাবলিক স্কলসমূহ থেকে নিজ নিজ বাচ্চাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া এবং এসব বাচ্চার পড়াশোনার দায়িত্ব নিজে নিজে নেয়া ছাড়া ফরাসী মুসলমানদের আর কোনো বিকল্প থাকবে না।”
গত শনিবার ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী ফ্রসোঁয়া বেরোউ বলেছিলেন, হেড স্কার্ফের উপর নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর করা শুরু করার জন্য তিনি সব পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপালদের কাছে নির্দেশ জারি করেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর এই বিবৃতির জবাবে এসব সমিতি এই ইশতেহার জারি করল।
বেরোউ বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হচ্ছে ফরাসী সমাজের ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করা। 
মুসলিম সমিতিগুলো তাদের ইশতেহারে বিষয়টি প্রশ্নে যে কোন ভুল বোঝাবুঝি নিরসনের উদ্দেশ্যে বেরোউর সাথে আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছেন।
১৯৮৯ সালে ফ্রান্সের পাবলিক স্কুলগুলোতে মুসলমান মেয়েরা হেড স্কার্ফ ব্যবহার শুরু করায় এ ব্যাপারে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। সরকার সে সময় বিষয়টি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারটি সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর ছেড়ে দিলে কতিপয় মুসলিম বালিকাকে স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। 

 

লন্ডনের ইসলামী সম্মেলনে 
১০ হাজার মুসলমানের উপস্থিতিতে ঘোষণা 
প্রকৃত ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া 
মুসলমানদের শাস্তি ও নিরাপত্তা আসবে না


লন্ডনে ইসলামী সম্মেলনে যোগাদানকারী হাজার হাজার হর্ষোৎফুল্ল মুসলমান আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মধ্যপ্রাচ্যের জালেম শাসকদের উৎখাতের আহবানকে অভিনন্দিত করেছে।
রয়টার জানার, মুসলিম ঐক্য সংস্থা নামক সংস্থা বিশ্বব্যাপী এক মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পন্থা নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে গত ৭ আগস্ট লন্ডনের ওয়েম্বলি এলেনায় এক আন্তর্জাতিক মুসলমান খলিফা সম্মেলনের আয়োজন করে। সউদী আরব, পাকিস্তান ও বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশগ্রহন করেন।
 সম্প্রতি লগ্নে ইহুদী প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর দু'দফা পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে এবং পাক্কুয়া পুলিশী ওয়ে্লি এলেনায় এক আন্তর্জাতিক মুসলমান বোমা হামলার পর লগ্ডনের বুকেই মুসলমানদের মানসিকতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন।
সম্মেলনে ডঃ মোহাম্মদ মালকাবি নামক একজন বক্তা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে ইসলামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিসর্জন দেয়ার জন্য মুসলিম সরকারগুলোকে অভিযুক্ত করেন। এ সময় তুমুল করতালি দিয়ে উপস্থিত মুসলমানরা তার বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান। জর্দানের বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব সালকাবি বলেন, জালেম শাসকরা যে কোন মূল্যে স্থিতিশীলতা চায়। কারণ স্থিতিশীলতা তাদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তবে জনাব মালকবি জালেম শাসক বলতে কোন দেশের কোন শাসককের নাম উল্লেখ করেননি।
সংবাদ সংস্থাগুলো রোববারের এ সম্মেলনকে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে ইসলামপন্থীদের বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। সম্মেলনে প্রায় ১০ হাজার মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। তবে কোন কোন সূত্রে এ সংখ্যা ৭ হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জনাব মালকাবি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সরকারগুলোকে বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের দাসত্ব করার জন্য অভিযুক্ত করেন। তিনি পাশ্চাত্য মিডিয়ার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তারা ইসলামপন্থীদের সন্ত্রাসবাদীদের সমপর্যায়ে স্থাপন করেন। তিনি বলেন, এটা ইসলামের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ ।
পাকিস্তানের তানজিম আল ইসলামী গ্রুপের ডক্টর ইসরার আহমদ বলেন, একটি প্রকৃত ইসলামী রাষ্ট্র সৃষ্টি ছাড়া মুসলমানদের শান্তি ও নিরাপত্তা আসবে না।
সম্মেলনের উদ্যোক্তারা বলেন. বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় পুনর্জাগরণ, মুসলিম বিশ্বের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় এবং মানবাধিকার সমস্যা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়। আর আগে এএফপি'র খবরে বলা হয়, এ ইসলামী সম্মেলন নিষিদ্ধ করার জন্য বৃটিশ ইহুদীরা দাবী জানালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল হাওয়ার্ড তা প্রত্যাখ্যান করেন। বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, এ সম্মেলন নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেই। সংবাদদাতা জানান, সম্প্রতি লন্ডনে ইহুদী প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর দু’দফা বোমা হামলার পর লন্ডনের বুকেই মুসলমানদের এ সম্মেলন অনুষ্ঠান ইহুদীদের কাছে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা হিসেবেই অনুভূত হয়েছে। 
তবে সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের অন্যতম হিজবুত তাহবিরের মুখপাত্র ফরিদ কাশিম সম্মেলনের পূর্বেই বলেন, এ সম্মেলন সর্বপ্রকার বর্ণবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, তারা যদিও ইসরাইলের বিরোধী, কিন্তু সম্মেলনে ইহুদীদের বিরুদ্ধে কোন বিদ্বেষমূলক কথা বলা হবে না । তিনি বলেন, এখানে কেউ ইহুদী বিদ্বেষী নয়।
জনাব মালাকাবি বলেন, বিশ্বব্যাপী একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের পন্থা সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়। তিনি বলেন, ইসলামী নির্দেশনা অনুযায়ী একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত হলে সব সমস্যা নিরসন হবে।


বৃটেনে ইসলামী সম্মেলনে নেতৃবৃন্দের অভিযোগ 
আলজেরীয়দের সঙ্গে অসভ্য ও অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে


বৃটেনের শেফিন্ডে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলনে প্রবাসী আলজেরীয়দের সঙ্গে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফ্রান্স অমানবিক ও অসভ্য আচরণ করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মুসলিম নেতৃবৃন্দ কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ সম্মেলনের নিন্দা জানান এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত জাতিসংঘ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার জন্য মুসলিম দেশগুলোর সরকারের প্রতি আহবান জানান। তারা এ সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের অবাধ যৌনাচার ও অনৈতিকতা বৃদ্ধির বিষয়ে ধর্মনিরপেক্ষাতার ট্রয়ের ঘোড়া চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা বলে অভিহিত করেন। খরব এফপি।
ইসলামী নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন, ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চার্লস পাস্কুয়া ব্যক্তিগত রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য আলজেরীয়দের উপর চড়াও হচ্ছেন।
বুটেনের ইসলামী মিশনের (ইউকেআইএম) প্রায় ২ হাজার সদস্য শেফিন্ডে এমন এক সময়ে সমবেত হয়েছেন যখন ফ্রান্সে কমপক্ষে ১৫ জন আলজেরীয় গৃহবন্দী রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইসলামিক স্যালভেশন ফ্রন্টের সমর্থক। এই স্যালভেশন ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ফ্রান্স আলজিয়ার্সে ফরাসী দূতাবাসে গত ৩ আগস্ট ৫ জন ফরাসী নাগরিক হত্যার অভিযোগ করেছে।
বৃটেনস্থ আলজেরীয় সম্প্রদায়ের নেতা আবদুল্লাহ মেসাই বলেছেন, ফ্রান্স এখন একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে এবং পাস্কুয়া পুলিশী মানসিকতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন।
তিনি জানান, ফরাসী সরকার ফ্রান্সে বসবাসকারী আলজেরীয়দের হয়রানি ও নির্যাতন করছে। এর পেছনের কারণ একটাই, তা হলো তারা (ফ্রান্সে প্রবাসী আলজেরীয়রা) আলজেরীয় জনগণের বৈধ প্রতিনিধি স্যালভেশন ফ্রন্টের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ফ্রান্স স্যালভেশন  ফ্রন্টকে উত্খাতকারী আলজেরীয় সকরারের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। 
জনাব মেসাই বলেছেন, পাস্কুয়া কারো কথার জবাব দেন না। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। তিনি শুধু নির্বাচনে বিজয়ী হতে চান। সম্মেলনে ইউকেআইএম আলজেরীয় মুসলমানদের প্রতি ফরাসী সরকারের অমানবিক ও অসভ্য আচরণের বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করে। প্রস্তাবে বলা হয়“ফ্রান্স সরকার কর্তৃক গৃহীত বর্ণবাদী নীতির সুস্পষ্ট নিন্দা করার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”
তিউনিসীয়ার আন-নাহদা আন্দোলনের নেতা রাশেদ গানৌসি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মুসলমানদের সাথে আচরণে ফ্রান্স সেই বিরাট শয়তানের ভূমিকায় যা এক দশক আগে ইরানের ‍বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োগ করত ।
তিনি স্যালভেশন ফ্রন্টের সমর্থকদের দমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে জোট বাধার জন্য এবং ফ্রান্সে আলজেরীয়দের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী নীতি গ্রহণ করার জন্য প্যারিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, উত্তর আফ্রিকার কাউকে ফ্রান্সে কথা বলতে দেয়া হয় না। তিনি বলেন, এতে ফ্রান্স ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়েছে। তিনি আলজেরীয়দের প্রতি ফ্রান্সের আচরণের এবং পাস্কুয়া কর্তৃক এফআইএসকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ার সমালোচনা করেন।
অপর এক প্রস্তাবে ইউকেআইএম কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ জনসংখ্যা সম্মেলনের নিন্দা জানানো হয় এবং বিশ্ব জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন সম্পর্কিত জাতিসংঘ প্রস্তাব নাকচ করার জন্য মুসলিম দেশের সরকারদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবে তাদের এই বলে অভিহিত করা হয় যে, “তারা অবাধ যৌনাচার ও অনৈতিকতা বৃদ্ধির জন্য ধর্ম নিরপেক্ষতার ট্রয়ের ঘোড়া ছাড়া কিছু নয়।