বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
'আল ফিরদাউস' পরিবেশিত
'উস্তাদ খুবাইব আহমাদ হাফিজাহুল্লাহ' এর
'উস্তাদ খুবাইব আহমাদ এর
পোস্টসমগ্র'
****************************
ইরজার ফিতনা (১): গালিব সাহেবের অদ্ভুত আচরণ
আসাদুল্লাহ আল গালিব যে একজন জালিয়াত তা শায়খ তাহমিদুল মাওলা দা বা ইতিমধ্যে কয়েক দফা প্রমাণ করেছেন। তবুও এই ব্যক্তির আরও খিয়ানত সামনে তুলে ধরা জরুরী মনে করছি…
আসাদুল্লাহ আল গালিব সাহেব উনার বই “জিহাদ ও কিতাল” এ শায়খ ইবনে বাজ রহঃ’র বরাত দিয়ে লিখেছে -“যে ব্যক্তি আল্লাহ’র বিধান অনুযায়ী শাসন বা বিচার করেনা, সে ব্যক্তি চারটি বিষয় থেকে মুক্ত নয় :
(১) তার বিশ্বাস মতে মানুষের মনগড়া আইন আল্লাহর আইনের চাইতে উত্তম। অথবা (২) সেটি শারঈ বিধানের ন্যায়। অথবা (৩) শারঈ বিধান উত্তম, তবে এটাও জায়েয।
এরূপ বিশ্বাস থাকলে সে কাফির এবং মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ হয়ে যাবে। কিন্তু (৪) যদি সে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর বিধান ব্যতীত অন্য কোন বিধান বৈধ নয়। তবে সে অলসতা বা উদাসীনতা বশে বা পরিস্থিতির চাপে এটা করে, তাহ’লে সেটা ছোট কুফরী হবে ও সে কবীরা গোনাহগার হবে। কিন্তু মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ হবে না’।” (জিহাদ ও কিতাল, পৃষ্ঠা ৬৬)
অথচ শায়খ ইবনে বাজ রহঃ এর প্রকৃত বক্তব্য দেখুন,
وفي حال الاختلاف والتنازع الخاص والعام، سواء كان بين دولة وأخرى، أو بين جماعة وجماعة، أو بين مسلم وآخر، الحكم في ذلك كله سواء، فالله سبحانه له الخلق والأمر، وهو أحكم الحاكمين، ولا إيمان لمن اعتقد أن أحكام الناس وآراءهم خير من حكم الله ورسوله، أو تماثله وتشابهه، أو أجاز أن يحل محلها الأحكام الوضعية والأنظمة البشرية، وإن كان معتقدا بأن أحكام الله خير وأكمل وأعدل..( فتاوى(
“দ্বন্দ্ব ও বিবাদ, চাই তা নির্দিষ্ট হোক বা বিস্তর, দুই রাষ্ট্রের মাঝে হোক বা দুই দলের মাঝে অথবা দুজন মুসলমানের মাঝে, সর্বক্ষেত্রেই বিধান সমান। সৃষ্টি ও বিধান শুধুমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য যিনি আহকামুল হাকিমীন (সকল বিচারকের বিচারক)।
ঐ ব্যক্তি ঈমানদার নয়:
১. যে মনে করে মানব রচিত বিধি-বিধান বা মতামত আল্লাহ ও তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিধানের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
২. অথবা এগুলোকে আল্লাহর বিধি-বিধানের অনুরূপ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করে।
৩. আল্লাহর বিধি-বিধানের স্থানে মানব রচিত বিধি-বিধান ও আইন-কানুন প্রণয়নের বৈধতা প্রদান করে। #যদিও_সে_বিশ্বাস রাখে আল্লাহর বিধি-বিধানই উত্তম, শ্রেষ্ঠ ও ইনসাফপূর্ণ।”
[মাজমূয়ু ফাতাওয়া ইবনে বায, অধ্যায়: ওযূবু তাহকীমি হুকমিল্লাহ, খন্ড:১, পৃষ্ঠা: ৭৯]
৩টা থেকে যে কোনো ১টা থাকলেই কুফর আকবার। শায়খ ইবনে বাজ রহঃ এখানে তিনটি সুরত আলোচনা করেছেন। যে কোনো একটিই যথেষ্ট… মাত্রার দিক থেকে ১ম টি সবচেয়ে জঘন্য , তারপর ২য়টি, তারপর ৩য়টি… কিন্তু প্রতিটিই কুফরে আকবার। শায়খ ইবনে বাজ রহঃ’র বক্তব্য অনুযায়ী মানবরচিত বিধানপ্রণয়নকারী শাসক পাক্কা কাফের। আর ইরজার ব্যাধিতে আক্রান্ত এই ব্যক্তি সম্পূর্ণ উল্টো বক্তব্য শায়খ ইবনে বাজ রহঃ’র উপর চাপিয়ে দিয়েছে!!!
ইয়া আল্লাহ্! আপনার দ্বীন সল্পমূল্যে বিক্রীকারী আলেমদের হাত থেকে আপনি এই উম্মতকে হেফাজত করুন!
ইসলাহি মাজালিসঃ মিথ্যা থেকে বিরত থাকুন
মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহঃ বলেন,
“সত্যতা যাচাই করা ব্যাতীত যদি কোনো কথা বলা হয় তাহলে তা মিথ্যা অপবাদের অন্তর্ভুক্ত।
একটি কথা মিথ্যা বলে গণ্য হওয়ার মূল ভিত্তি তা মিথ্যা হওয়া নয় বরং তার সত্যতা যাচাই না করা।”(আনফাসে ঈসা)
তাই যাচাই বাছাই না করে ফয়সালা দেয়া একটি জঘন্য গুনাহ। উদাহারণস্বরূপ দেখুন-
১) আলেমদের দলীলবিহীন বা গোজামিল দেয়া বক্তব্যকে অন্ধের মত মেনে নেয়া, দালিলীক আলোচনাকে স্রেফ “পছন্দের আলেম” এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়াতে যাচাই না করেই আক্রমণ করা,
২) মুজাহিদিনদের দলীল পর্যালোচনা না করে, মুজাহিদিনদের অবস্থান সম্পর্কে খোজ-খবর না নিয়ে, ফেসবুকের কোনো আইডি কোন জায়গা থেকে চালানো হচ্ছে যাচাই না করে, সন্ত্রাসী-জঙ্গী-কম্বল মুজাহিদ আখ্যায়িত করা,
৩) এবং সুস্পস্ট প্রমাণ ব্যাতীত যে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ইহুদি-খ্রিস্টানের দালাল হওয়ার ব্যাপারে ঢালাও বক্তব্য প্রদান নিঃসন্দেহে মিথ্যা অপবাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আশা করি আকাবিরদের ভালোবাসার দোহাই দিয়ে এহেন মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত থাকা ব্যক্তিরা একটু চিন্তা করবেন ও মেনে চলবেন!
ব্যক্তিগতভাবে, ক্বারি মুস্তাফা ঈসমাইলের সূরা কাসাস তিলাওয়াত এবং ক্কারি মিনশাউয়ির সুরা আহজাব তিলাওয়াতের চেয়ে সুমধুর কিছু আমি আগেও শুনিনি, ভবিষ্যতেও শুনব কি না শিউর না। কিন্তু জামাল আব্দুন নাসেরের সময়কার ব্যক্তি মিনশাউয়ি, ব্যক্তি মুস্তফা ঈসমাইলকে কখনোই অনুসরণীয় মনে করিনি, নিকট ভবিষ্যতে করব বলে মনেও হচ্ছে না।
সোয়াত, ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তান বিমানবাহিনী পরিচালিত “জারব এ আজাব”, “রাহে নাজাত” (নাম দেখেই বুঝতে পারছেন ধর্মীয় দিক থেকে জাস্টীফাইয়ের উদ্দেশ্যে কোনো আলেমেরই রাখা) অপারেশনে ইনশা’আল্লাহ শহিদের সংখ্যা কম-বেশী ১লক্ষ…
তন্মধ্যে, নিহত শিশুর সংখ্যা ১২০০০+/-! বিগত ২৪ বছরে কাশ্মীরেও এত মুসলিম নিহত হয়নি। এছাড়াও বাস্তুহারা ৪০লক্ষাধিক।
লক্ষ্যভেদী বিমান হামলার জন্য বাড়িঘরের ছাদ পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনী উপড়ে ফেলে। সহস্রাধিক মসজিদ-মাদ্রাসা গুড়িয়ে দেয়া হয়। এখনো মাঝে মাঝে নিহত ১২০০০ +/- শিশুর কারো কারো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন দেহের ছবি ভেসে ওঠে…
যাই হোক, নির্মম এ অপারেশনের পর পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর ইমেজ সংকট কাঁটাতে গৃহীত হয় একটি পদক্ষেপ। পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর জন্য খুনী পাকিস্তানি বাহিনীর ইউনিফর্ম গায়ে জড়িয়ে থিম সং গাইতে আসেন, উপমহাদেশের ইসলামী অঙ্গনের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব - “জুনায়েদ জামশেদ”। কড়া মিউজিক সহকারে গাওয়া গানটিতে (জানি না এর ব্যাপারে উলামায়ে দেওবন্দ, তাবলীগী ভাইরা কী মনোভাব পোষণ করেন) পাকিস্তানি খুনী বিমান বাহিনীর সদস্যদের মুজাহিদ বলা হয়েছে। (সতর্কতাঃ কড়া মিউজিক আছে https://wwwyoutubecom/watch?v=grn1EiEECy0)
হায় আল্লাহ্! আপনি আমাদের শহিদ ভাইদের কবুল করুন এবং উনাদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা থেকে আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন যদিও বা পুরো দুনিয়া আমার বিপরীতে চলে যায়!!
তখন আমি মাঝে মাঝে ফেইসবুকে পোস্ট পড়তে আসতাম। জুনায়েদ জামশেদের পেজ লাইক দেয়া ছিল। আমার মনে আছে আমি ক্ষোভ থেকে বেশ কিছু কথা বলেছিলাম… সোয়াত, ওয়াজিরিস্তানের কথাও বলেছিলাম। সুবহান’আল্লাহ! পাকিস্তানি ভাইদের গালি-গালাজের বহর দেখেছিলাম সেদিন। সেটা বিষয় না। আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম যে, এটা কীভাবে সম্ভব এতগুলো মানুষের (৪১ লাখ বালেগ নারী-পুরুষের কথা বাদ দিলাম) কেউই ১২০০০+ শিশু হত্যার ব্যাপারে কোনোপ্রকার দুঃখবোধ প্রকাশ করছে না…তারা গর্বিত তাদের বিমানবাহিনীর ব্যাপারে! কীভাবে সম্ভব এটা?
রাহে নাজাত, জারব এ আজাব নামকরণ দিয়ে শুরু… জুনায়েদ জামশেদের থিম সং দিয়ে শেষ… জঙ্গি নারীপুরুষ-শিশু হত্যার গ্রহণযোগ্যতা আদায় শেষ…
জুনায়েদ জামশেদ রহঃ আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কেউ কখনো ছিল না। এমনকি দুনিয়ার কেউও যদি না চেনে তবুও সেই ড্রোনের আঘাতে ধুলায় মিশে যাওয়া মুহাজিরের মূল্য আমার কাছে কয়েক কোটি জুনায়েদ জামশেদের চেয়ে বেশী। যদিও সেই ভাইটির জন্য কেউ কাঁদেনি, কেউ জানেও না তার পরিচয়…
অবশ্যই দুঃখপ্রকাশ করুন। ভালোবাসা প্রকাশ করুন। কিন্তু জুনায়েদ জামশেদকে অনুসরণীয় বানানোর ব্যাপারে একমত হতে পারছি না। বরং বিপরীতটাই বলব…
১ লাখ নিহত (তাও সরকারি হিসাবানুযায়ী), তন্মধ্যে ১২ হাজার শিশু। ৪০ লাখ বাস্তুহারা (যাদের অনেকেই হয়তো আফগানিস্তান যাবার পথে অনাহারে মারা গিয়েছে)!
আমাকে আসলে এই ইস্যুতে বোঝানোর চেষ্টা করলে খুব একটা লাভ নাই। উচি বহুত উচি… জুনায়েদ জামশেদ গর্ব করেছে ও গর্ব করতে শিখিয়েছে ১২০০০+ শিশুর রক্তের উপর দাঁড়িয়ে…
জাযাকুমুল্লাহ!
নজির হুসাইন দেহলভি ও আজকের আহলে হাদিসঃ তাগুতের গোলামি সেই শুরু থেকেই!
“১৮৫৭ সালের আজাদি সংগ্রামে কতিপয় প্রভাবশালী আলেম ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদের ফতওয়া দেন। মিয়া সাহেব তাতে স্বাক্ষর করেননি। তিনি বলেন, “জিহাদ ঘোষণার জন্য যে সমস্ত শর্তের প্রয়োজন সেই সমস্ত শর্ত বর্তমানে বিদ্যমান নেই। কাজেই আমি ফতওয়ায় স্বাক্ষর করতে পারিনা”। তিনি সম্রাট বাহাদুর শাহকেও বুঝাতেন যে, ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হওয়া তার পক্ষে ন্যায়সঙ্গত হবে না!!এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ইংরেজরা তাকে সার্টিফিকেট প্রদান করে। এই ব্যক্তিটি হলেন উপমহাদেশে আহলে হাদিসদের প্রতিষ্ঠাতা মিয়া নজির হুসাইন দেহলভি…!(আল্লাহ্ তাকে যথার্থ পাওনা বুঝিয়ে দিন। আমিন) (সূত্রঃ বই — শাইখুল কুল ফিল কুল মিয়া নাজীর হুসাইন দেহলভি, পৃষ্ঠা ৪৪ ও ৪৫, লেখক — প্রফেসর ডক্টর মুজিবুর রহমান)
এই ইংরেজদের দালালের আরও কুকীর্তি দেখুন — -
যাদের সবচেয়ে বড় শায়খ, আসলি কাফের ইংরেজদের বিরুদ্ধেও জিহাদের শর্ত খুজে পান না… তাদের বর্তমান অবস্থা আর কতই ভালো হবে!! আফসোসের বিষয়, নজির হুসাইনের উত্তরসূরিরা হুবহু তার মত রয়ে গেলেও - ইমদাদ উল্লাহ মুহাজির রহঃ, কাশিম নানুতবি রহঃ’র উত্তরসূরীদের অনেকেই বদলে নজির হুসাইনদের অনুসরণ শুরু করেছে!
শাতিমে রাসুল সাঃ ও ইদ্রিস কান্ধলভি রহঃ
শাইখুল তাফসীর ইদরীস কান্ধলবী রহ. তাঁর অবিস্বরণীয় কিতাব (সীরাতে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বলেন,
আল্লাহ তাআলার প্রেরিত পয়গাম্বরের সম্মান ও মর্যাদা এবং তাঁর সাহায্য ও সহযোগিতা উম্মতের সকলের উপর ফরয। তাঁর অমর্যাদা আল্লাহ তাআলার দ্বীনের অমর্যাদা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবমাননা গোটা উম্মাহর অবমাননা।
উম্মাহর সকলের উপর ফরয, যখনই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে কোন অবমাননাসূচক কথা শুনবে, তখনই সাথে সাথে তাকে হত্যা করে দেবে, অথবা (তাকে হত্যা করতে গিয়ে) নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে দেবে।
[সীরাতে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামঃ ৩/৪৭, (ইসলামী ফাউন্ডেশন কতৃক প্রকাশিত) মক্কা বিজয়ের আলোচনার শেষাংশ দ্রষ্টব্য)
অতএব, আমাদের আকাবিরদের নিকট গোস্তাখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করতে না ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজন আছে, না খলীফা বা আমীরের শর্ত আছে।
বরং মহব্বতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাবি হচ্ছে, গোস্তাকে রাসূলকে যেখানে যে অবস্থায়ই পাবে হত্যা করে দেবে অথবা তাকে হত্যা করতে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে দেবে । আর এটা সুন্নত মুস্তাহাব কোন কাজ নয়, বরং উম্মতের সকলের উপর ফরয।
শায়খ আবুল ফারাজ আহমাদ সালামা মাবরুক আল মিসরি, রহঃ
বন্দিত্ব, হিজরত, জিহাদ আর কষ্ট-সংগ্রামের এক লম্বা রাস্তা পাড়ি দিয়ে অবশেষে মর্দে মুজাহিদ তাঁর নির্ধারিত সময়ে ঘোড়া থেকে নেমে এলেন।
এক ঝলকে এই বীর মুজাহিদের জীবন থেকে চোখ বুলিয়ে আসা যাক -
=> কৃষি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
=> মিসরের ইসলামী জিহাদি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং শুরা বিভাগের সদস্য।
=> আনোয়ার সাদাতকে হত্যা মামলায় সাত বছরের জেল।
=> আফগানিস্তানে হিজরত এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে জালালাবাদ,খোস্ত এবং অন্যান্য স্থানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ।
=> শায়খ আইমান আয জাওয়াহিরি ও অন্যান্যদের সাথে নিয়ে আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন।
=> ইয়েমেন এবং সুদানে হিজরত।
=> চেচনিয়াতে প্রবেশের চেষ্টা করেন কিন্তু দাগেস্তানে গ্রেফতার হয়ে যান।
=> দীর্ঘকাল কারাগারে বন্দী থাকার পর মুক্তি পান এবং আজারবাইজানে চলে যান।
=> পরবর্তীতে সিআইএ তাঁকে কিডন্যাপ করে এবং মিসরের হাতে তুলে দেয়।
=> তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং সেনাবাহিনী দ্বারা সংঘটিত আরব বিপ্লবের সময় মুক্তি পান।
=> এরপর তিনি শামে চলে আসেন জাবহাত ফাতহুশ শামের শুরা সদস্য হিসেবে কাজ করতে থাকেন। অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রুসেডার জোটের এক কাপুরুষোচিত হামলায় তিনি শহীদ হন।
আল্লাহ তা’আলা তাঁকে শহিদ হিসেবে কবুল করুন এবং মাফ করে দিন। আমিন!
কারা মুফাক্কিরে ইসলাম সাইয়েদ নাদাবি রহঃ প্রদত্ত সমাধানকে গ্রহণ করেছে?
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুফাক্কিরে ইসলাম সাইয়েদ আবুল হাসান আলি নাদাবি রহঃ আজীবন উম্মতের বিজয়ের স্বপ্ন দেখেছেন এবং দেখিয়েছেন…
এই উপমহাদেশে কেতাবি মুরুব্বি অনেকে থাকলেও তাদের চিন্তার সংকীর্ণতা এই উপমহাদেশের ইসলামকে শুধু ক্ষতিগ্রস্তই করেছে, যদিও তাদের দাবী সম্পূর্ণ বিপরীত। যাই হোক… শাইখুল হিন্দ রহঃ পরবর্তী দেওবন্দি আকাবিরদের মধ্যে একমাত্র সাইয়েদ নাদাবি রহঃই বাস্তবতার আলোকে দ্বীনের প্রয়োগ যথাযথ বুঝেছেন এটা বুঝসম্পন্ন সকলেই একমত। কেননা অন্যান্য ‘আকাবির’দের ভয়ংকর সব সিদ্ধান্ত ও আশ্চর্য নিরবতা উপমহাদেশে ইসলামকে আরও কোনঠাসা করেছে!
যদিও, অন্যান্য অনেক বাকসর্বস্ব দাবীর ন্যায়, উপমহাদেশের দ্বিধাবিভক্ত ইসলামী জামাতগুলোর (যেমন- জামাতে ইসলামী, তাবলীগ, সরকারি সালাফিগণ, মাদ্রাসা-খানকা গ্রুপ) সকলেই সাইয়েদ নাদাবি রহঃ’র কিতাবাদি কম-বেশী পাঠ করে এবং নিজেদের পক্ষে সাইয়েদ নাদাবি রহঃকে টানতে চায় তারা মূলতঃ সাইয়েদ নাদাবি রহঃ’র মনস্তত্ত্ব উদঘাটনে অক্ষম অথবা উপলব্ধি করা সত্ত্বেও আমলে পরিণত করতে ভীত!
সাইয়েদ নাদাবি রহঃ ছিলেন সকলেরই শুভাকাঙ্খী। তাই তিনি মাদ্রাসা-খানকার ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করেছেন আবার সীমাবদ্ধতাগুলোও দেখিয়েছেন। তাবলীগ জামাত, জামাতে ইসলামি-ইখওয়ানের-সালাফিদের প্রশংসাও করেছেন আবার করণীয় কী কী বাকি তাও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু, দলীয় ও ব্যক্তিকেন্দ্রীক গোঁড়ামি উক্ত দলগুলোকে সাইয়েদ নাদাবি রহঃ’র উপদেশ থেকে উপকৃত হওয়া থেকে আজো বিরত রেখেছে।
সাইয়েদ নাদাবি রহঃ স্বীয় কিতাব “মা যা খাসিরাল আলাম বি ইনহিতাতিল মুসলিমীন” পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন মুসলিম উম্মাহ নিজস্ব জাতিয়তা, নিজস্ব উম্মাহভিত্তিক (দেশভিত্তিক নয়) সেনাবাহিনী ব্যাতীত উম্মতের উত্তরণ নেই। প্রতিটি দলই নিজেদেরকে জিহাদে লিপ্ত বলে দাবী করে সুরা আনফালের ৬০ নং আয়াত টেনে থাকে। তিনি রাহিমাহুল্লাহ উকবা বিন আমর রাদিঃ থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাঃ’র সেই হাদিস এনেছেন যা সূরা আনফালের ৬০ নং আয়াতের প্রকৃত তাফসির… “শক্তি হচ্ছে নিক্ষেপ করা। শক্তি হচ্ছে নিক্ষেপ করা। শক্তি হচ্ছে নিক্ষেপ করা।” এর মাধ্যমে শায়খ রহঃ অন্য সকল ব্যখ্যা করে যারা নিজেদের ভীরুতা ঢাকার যে অপপ্রয়াস চালিয়ে থাকে তাদেরকে রদ করেছেন। সুতরাং, কারা আজ নিক্ষেপের শক্তি অর্জন করেছে ও করছে তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার!
শুধু তাই নয়, সাইয়েদ আলি হাসান নাদাবি রহঃ কে প্রশ্ন করা হয়, “উম্মতের বিজয়ের জন্য বিপ্লবের আদর্শ পদ্ধতি কী হওয়া উচিৎ”? সাইয়েদ নাদাবি রহঃ উত্তরে বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত ও জীবনাচারের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে যার অন্যতম হচ্ছে আন্তর্জাতিক শত্রুর (আমেরিকা-ইউরোপ) চ্যলেঞ্জ মুকাবিলা করার ক্ষেত্রে গাফিলতি!” সূত্রঃ কুয়েতস্থ ম্যাগাজিন, আল মুজতামা’আঃ ১৩৩৮ নং সংখ্যায় প্রদত্ত সাক্ষাৎকার দ্রস্টব্য।
ন্যূনত্বম বুঝশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিও আজ জানে যে, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের বিরুদ্ধে কারা আজ উঠে দাঁড়িয়েছে! সীমানা ও জাতীয়তাবাদী সত্ত্বার শিকড় উপরে ফেলে আন্তর্জাতিক শত্রুর মুকাবিলায় কারা সামনে এসেছে!? উত্তর শুধুমাত্র এবং কেবলামাত্র একটাই হতে পারে, আর তা হচ্ছে - শায়খ আল মুজাদ্দিদ উসামা বিন লাদিন রাহিমাহুল্লাহ এবং তার অনুসারীরা।
সুতরাং, যারা আলি নাদাবি রহঃ’র কিতাব পড়েন এবং উনাকে অনুসরণের দাবী রাখেন- তারা কি ভেবে দেখবে না?
সরকারি সালাফি ডক্টর সাইফুল্লাহ’র ভ্রান্তি
“ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ জিহাদ করেছেন মুজাফফর কুতুজের অধীনে যিনি ছিলেন একজন খলিফা।”
সাইফুল্লাহ মাদানি, “সমকালীন ফিতনা” শীর্ষক লেকচারে। উপস্থিত ছিলেন মোঃ এনামুল হক, নাসিল শাহরুখ সহ অনেকেই।
সুত্রঃ ১মিনিট ৪৪ সেকেন্ড থেকে দেখুন।
https://www.youtube.com/watch?v=l7ehipJkUYs
ভ্রান্তি ১- মুজাফফর কুতুজ রহঃ কখনই খলিফা ছিলেন না। তিনি মিশরের আমির ছিলেন যিনি তাতারদের বিরুদ্ধে আইনে জালুতের জিহাদে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সে সময় মুসলিম উম্মাহ খলিফাশূণ্য ছিল।
ভ্রান্তি ২- ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ মুজাফফর কুতুজ রহ’র অধীনে জিহাদ করেন নি। ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ জন্মগ্রহণ করেন ১২৬৩ ঈসায়ী এবং মুজাফফর কুতুজ রহঃ মৃত্যু বরণ করেন ১২৬০ ঈসায়ী!!
এমন বক্তব্য নিশ্চিত জাহালত/খিয়ানতের পরিচায়ক।
এসকল বিভ্রান্তকারী ব্যক্তিদের অনুসারীদের প্রতি আহ্বান -
“আপনারা এদের বর্জন করে সহিহ আকিদা ও মানহাজের অনুসরণ করুন। ইরজার রাস্তা ছেড়ে বিশুদ্ধ তাওহিদের রাস্তায় পথচলা শুরু করুন।
জাহান্নামের পথ ছেড়ে জান্নাতের পথ অনুসন্ধান করুন!”
****************