JustPaste.it

963f4d422300df1a20f23db7f4d392ca.jpg

ঈদুল আজহার শিক্ষা ও করণীয়

 

 

মুফতি আবু যর আযযাম হাফিজাহুল্লাহ

(আরাকান থেকে খোরাসানের পুণ্যভূমিতে হিজরতকারী একজন দরদী আলীমে দ্বীন)

 

 

8d48b5dc630bc5f9bd793b48f734f7e5.png

 

---------------------------------------------------------------------------------

 

(শাইখ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী)

 

শাইখ মুফতি আবু যর আযযাম হাফিজাহুল্লাহ। জামেয়া ফারুকিয়া করাচীতে লেখাপড়া করেছেন। ইফতা শেষ করেছিলেন, কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার পূর্বেই পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হিজরত করেন ও ২০০৪ সালে মুজাহিদদের সাথে যোগদান করেন। তিনি সেখানে জিহাদ ও দাওয়াতের কাজে লিপ্ত থাকেন, এবং উজবেকিস্তানের জিহাদি জামাআত “হারাকাতুল ইসলামিয়্যাহ”র একজন প্রখ্যাত মুফতি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।  জিহাদের মিশন নিয়ে তিনি বিশ্বের নানা ভূমি চষে বেড়িয়েছেন। শাইখ “মুফতি আবু যর বর্মী” নামেও পরিচিত। উপমহাদেশ ও খোরাসানীয় অঞ্চলে শায়েখের জিহাদি পদচারনা কেমন ছিল তার একটি প্রমান হল, আমরা দেখতে পাই শাইখের বিভিন্ন অডিও, ভিডিও বয়ান কখনো উজবেকিস্তানের মুজাহিদদের জুন্দুল্লাহ স্টুডিও থেকে রিলিজ হয়েছে, কখনো তেহরিকে তালেবান পাকিস্তানের উমার মিডিয়া থেকে রিলিজ হয়েছে, কখনো হিজবে ইসলামী তুরকিস্তানের ভয়েস অফ ইসলাম থেকে রিলিজ হয়েছে ও কখনো বার্মায় অবস্তানরত মুজাহিদদের মিডিয়া থেকে রিলিজ হয়েছে। সেই হিসেবে এটা নিশ্চিত যে, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, বার্মা, তুর্কিস্তান ও উজবেকিস্তানের মুজাহিদগণ শায়েখের সোহবত ও মেহমানদারিতে ধন্য হয়েছেন। বিভিন্ন ভূমিতে জিহাদ জারি করার ক্ষেত্রে শাইখের অবদান রয়েছে।  

 

শাইখের ৩ টি বয়ানের অনুবাদ বাংলায় বিভিন্ন মিডিয়া থেকে প্রকাশিত হয়েছে-

১. মুফতি আবু যর আযযাম হাফিজাহুল্লাহর জামাআতুল বাগদাদি (আইএস) ত্যাগের বিবৃতি

লিঙ্ক:

https://justpaste.it/xubn

https://www.pdf-archive.com/2016/08/29/mufti-abu-jor-ajjam-ha/

http://up.top4top.net/downloadf-241vy2c2-pdf.html

২. একমাত্র জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ এর দ্বারাই ইসলামী শাসনব্যবস্থার বাস্তবায়ন সম্ভব

লিঙ্ক:

https://archive.org/details/RuleIslam

৩. জ্ঞান অর্জন করো, কিন্তু তোমার ইসলামী ঐতিহ্য ভুলে যেও না

লিঙ্ক:

https://archive.org/details/Islamic-Culture

https://archive.org/details/D_L_I_S

 

 

نحمده ونصلى على رسوله الكريم اما بعد: فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم - قال الله تعالى

مِلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِينَ - سورة الحج (٧٨)

صدق الله العظيم.

 

আমার সম্মানিত ভাই, বোন, মুজাহিদ, মুরুব্বী ও উস্তাদগণ!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

(শান্তি, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক আপনাদের সকলের প্রতি)

আজ ১৪৩৯ হিজরীর ঈদুল আজহার দিন। কুরবানির দিন। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা আমাদের আপনাদের সকলকে আনন্দে রাখুন। নিঃসন্দেহে আজ হাজার হাজার, লাখো-কোটি মুসলমান নিজেদের কোরবানির পশু আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করবে। আল্লাহ তা’আলা সকল মুসলমানদের কোরবানিকে কবুল করুন। হজ্জ্বে লাখ লাখ মুসলমান আজ লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনির মাধ্যমে নিজ জান-মাল নিয়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিতির হাজিরা দিচ্ছে। আল্লাহ তা’আলা সকলের হজ্জ্ব, উমরা ও কোরবানিকে কবুল করুন।

আমার মুহতারাম ভাই, বোন ও উস্তাদগন!

আমরা যেই সব পশুদের কোরবানি করছি তাদের জীবনের প্রতি যদি একটু লক্ষ্য করি তবে এই বিষয়টি আমাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, আল্লাহ তা’আলা তাদের মাঝে খুবই অনেক দান করেছেন। প্রত্যেক বছর মুসলমানগণ কোটি কোটি দুম্বা, ছাগল, উট ও যেগুলো দিয়ে কোরবানি করা জায়েয এমন অন্যান্য হালাল পশু আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করে থাকেন। এছাড়াও মুসলমানগণ সারা বছর বিবাহ-শাদি ও আনন্দ অনুষ্ঠানে হাজার হাজার, লাখ লাখ পশু জবাই করে থাকেন। কিন্তু তাদের মাঝে এতই বরকত হয় যে, পুরো পৃথিবীতে কেউ কখনো এটা শুনেনি যে, দুম্বা, উট, গরু, ও ছাগলের মাঝে কোন ঘাটতি হচ্ছে!! কিন্তু অপরদিকে একটু লক্ষ্য করুন পৃথিবীতে বিড়াল, কুকুর ইত্যাদি বিদ্যমান আছে, এগুলোকে কেউ কুরবানি করেনা। দেখুন তাদের সংখ্যা কখনো হালাল পশুর সমপরিমান হবেনা। কারণ আল্লাহ তা’আলা এদের মাঝে বরকত দান করেছেন। যেহেতু এদের দ্বারা কোরবানি করা যায়, আর কোরবানির ফলাফলে বরকত হয়। দুম্বা, উট, গরু, ছাগল ইত্যাদি সর্বোচ্চ বছরের দুই মাথায় দুটি বাচ্চা দেয় এরচেয়ে বেশি হয়না, কখনো অলৌকিক ভাবে হলে ভিন্ন কথা। আর এর মাঝে যেগুলো বড় ধরণের পশু আছে যেমন উট, গরু সেগুলোর অধিকাংশ শুধু বছরে একটি করে বাচ্চা দেয়। আর বিড়াল কুকুর বছরের দুই মাথায় বাচ্চা দেয় এবং প্রত্যেকবার সাত আটটা করে বাচ্চা দেয়। কিন্তু এগুলোর মাঝে কোন বরকত নেই। গরু, ছাগল ও দুম্বার মত যদি কুকুর বিড়ালের বাচ্চাও জীবিত থাকতো, তবে আমরা তাদের জন্য রাস্তায় হাঁটা চলা করার জায়গা পেতাম না। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এটা বুঝিয়েছেন যে, কুরবানি করলে বরকত হয়। আল্লাহর রাস্তায় কুরবানির মাঝে বরকত রয়েছে। হালালের মাঝে বরকত রয়েছে। হারামের মাঝে বরকত নেই। আমেরিকা ২০০১ এর মাঝে এরপর ২০০৩ এর মাঝে আফগানিস্তান ও ইরাকে হামলা করে। আলহামদুলিল্লাহ মুজাহিদগণ, মুসলমানগণ ও উম্মতে মুসলিমার ভাই-বোন  ও পিতা-মাতারা ছোট ছোট দুধের শিশুদেরকেও আল্লাহর রাস্তায় কুরবান করে দেয়। ছোট ছোট শিশুরাও আজ জেলে পড়ে আছে। নিষ্পাপ বন্দিদের দ্বারা জেল পরিপূর্ণ। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ মুসলিম উম্মতের মাঝে কোন ঘাটতি আসেনি। মুসলিম উম্মতের জিহাদী সৈনিক দৈনন্দিন বৃদ্ধি পচ্ছে। তাদের মাঝে ক্রমান্বয়ে বরকতই হচ্ছে। পৃথিবীব্যাপি কাফের, মুনাফেক ও মুরতাদরা মুসলমানদের বিপরীতে, উম্মতের বিরুদ্ধে, ইসলামের বিপক্ষে সর্বপ্রকার আগ্রাসন চালাচ্ছে। বিমান হামলা করছে, ট্যাংকের মাধ্যমে বোমাবর্ষণ করছে, সর্বপ্রকার আক্রমণ চালাচ্ছে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত জীবিত আছে। মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত সর্বদা জীবিত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

হে বার্মা আরাকানের আমার মাজলুম মুসলমানগণ! বার্মার মাঝে অকথ্য জুলুম নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আমরা আপনারা তো মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোলাম, মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত। আমাদের তো আল্লাহর রাস্তায় কুরবানি করা চাই। আল্লাহর রাস্তায় নিজের জান কুরবানি করা চাই। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ তা’আলা আমাদের মাঝে বরকত দিবেন। জানের কুরবানি থেকে ভয় করা যাবেনা। দুম্বার কুরবানি করা হয়, আর হাজার হাজার লাখ লাখ দুম্বা প্রতি বছর জন্ম নিতে থাকে। আল্লাহ তাদের মাঝে বরকত দেন। এদের বংশ বিস্তার ও বাচ্চা লালন পালনের জন্য আল্লাহ মানুষকে নিযুক্ত করেছেন। কুকুরকে কুরবানি করা হয়না। তাদের বাচ্চা ধ্বংস ও নিঃশেষ হয়ে যায়। তাদের বংশ বিস্তারের জন্য আল্লাহ তা’আলা মুসলমানদের তৈরী করেননি আলহামদুলিল্লাহ। তাই আমার ভাই বোনদের বলি: হে বার্মার মাজলুম ভাই ও বোনেরা! আল্লাহর রাস্তায় জান, মাল ও সকল প্রকার বৈধ বস্তু কুরবানি দেওয়ার জন্য নিজেকে তৈরী করুন। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ তা’আলা আমাদের জান-মালে বরকত দিবেন। আমি আফগানিস্তানের ভুমিতে বসে, হিজরত ও কুরবানির ভুমিতে বসে স্বচক্ষে দেখছি এখানে প্রতিদিন ড্রোন হামলা হচ্ছে, জঙ্গি বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু আফগান উম্মত, আফগান সম্প্রদায় নিঃশেষ হবেনা। বরং আল্লাহ তাআলা ধারাবাহিকভাবে আফাগান জাতিকে ইজ্জত দিচ্ছেন। বরকত দান করছেন। আর সারা পৃথিবীব্যাপী উসমানি খেলাফতের পর যেই ভুমিতে আল্লাহ তা’আলা  ইসলামী হুকুমত দান করেছেন তা হল আফগান ভুমি। তিনি এই সৌভাগ্য আফগান জাতিকে দিয়েছেন। কারন এই আফগান জাতি আল্লাহর রাস্তায় কুরবানি পেশ করেছে। ইংরেজরা এসেছিল, আফগান জাতি একত্রিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছে। রুশ এসেছিল, আফগানরা তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। আমেরিকা এসেছে, আফগান জাতি একত্রিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করছে। আল্লাহ তা’আলা এই আফগান জাতিকে শেষ করেননি বরং তাদের আল্লাহ তা’আলা ইজ্জত দিয়েছেন, বরকত দিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বব্যাপি জিহাদের নেতৃত্ব আফগান জাতির হাতে, ইমারাতে ইসলামিয়্যাহ আফগানিস্তানের হাতে। পুরো দুনিয়ার হকপন্থী যত মুজাহিদ আছে সবাই আফগান সম্প্রদায়, আফগান মুজাহিদ কওমের আনুগত্য করে। তাদের ইজ্জত ও সম্মান করে।

হে আমার বার্মার মাজলুম মুসলমানরা! হে মুরুব্বী ব্যক্তিবর্গ! হে উলামায়ে কেরাম! হে উস্তাতগণ! আপনারা নিজেদের সম্প্রদায়কে জিহাদের জন্য প্রস্তুত করুন। নিজ কওমকে কুরবানির জন্য তৈরী করুন। আমরা যদি আমাদের সম্প্রদায়কে আল্লাহর রাস্তায় কুরবানি করি তবে তিনি আমাদের সম্প্রদায়ের মাঝেও বরকত দান করবেন। আমাদের কওমকেও আল্লাহ তা’আলা ইজ্জত দিবেন, উন্নতি দান করবেন। জিহাদ ব্যতীত কোন দিন আমরা উন্নতি লাভ করতে পারবো না।

ما ترك قوم الجهاد إلا ذلوا

যে সম্প্রদায়ই জিহাদকে ছেড়ে দিবে আল্লাহ তা’আলা তাদের লাঞ্ছিত করবেন।

হে আমার মুরুব্বীরা! বুজুর্গরা! উস্তাদেরা, ভাই ও বোনেরা! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার জন্য তৈরী হয়ে যান। আজ আমাদের যার যতটুকু সামর্থ আছে. যতটুকু তাওফিক আছে তা অনুযায়ী নিজেদের পশুকে কুরবান করবো। এ অবস্থায় আমাদের আল্লাহ তা’আলার নিকট ওয়াদা ও অঙ্গিকার করা চাই যে, হে আল্লাহ! আমি নিজের টাকা-পয়সা দিয়ে পশু ক্রয় করে তাদের কুরবানি করছি, হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে যে জান-প্রাণ দিয়েছেন যে সন্তান-সন্ততি দান করেছেন তা আপনার রাস্তায় কুরবান করার ওয়াদা করছি, অঙ্গিকার করছি। আমাদের তো আল্লাহর সাথে এই ওয়াদা-অঙ্গিকার করা চাই। সারা পৃথিবীতে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বার্মা, আরাকান, সমরকান্দ, বোখারা, পুর্ব তুর্কিস্তান, পশ্চিম তুর্কিস্তান, আফ্রিকা ও আমেরিকার মাঝে যেখানেই আমাদের ভাই বোনেরা, ছোট ছোট ছেলেরা, দুধের শিশুরা জেলে আছে, নিষ্পাপ ব্যক্তিরা জেলে আছে হে আল্লাহ! তাদের সকলকে মুক্ত করে দিন। তাদের সবাইকে রেহাই দান করুন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে নিজের মুসলমান ভাই, বোন ও মুজাহিদ ভাইদের মুহাব্বাত করার তাওফিক দান করুন। হে আল্লাহ আমদেরকে নিজ দ্বীন, ঈমান ও ঈমানের হিফাজতের জন্য, নিজের মাহবুব পয়গম্বর মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইজ্জতের হেফাজতের জন্য, নিজের মাহবুব কুরআনের হিফাজতের লক্ষ্যে জিহাদ করার তাওফিক দান করুন।  

ওয়া আখির দা’ওয়ানা আনিল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।

 

الله اکبر، الله اکبر، لا اله الا الله والله اکبر، الله اکبر و لله الحمد.‏

(আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।)

 

ওয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলা খাইরি খালকিহি মুহাম্মাদ, ওয়ালা আলিহি ওয়া সাহবিহি আজমাইন।

ওয়াসসালামু আলাইকু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

 

**********

 

62ce9134f4b4dcfe9b43db390c091899.gif