JustPaste.it
User avatar
Jago Mujahid @JagoMujahid · Nov 15, 2021

চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ গোটা আফ্রিকাকে খ্রিস্টান বানানোর চক্রান্তঃ খ্রিস্টান চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করুন

আহমদ দিদাত

========================================================================

 

        দক্ষিন আফ্রিকার বিখ্যাত মুসলিম ধর্ম প্রচারক শেখ আহমদ দিদাত ইসলাম প্রচারের ব্যাপারে কোন কিছু না করার জন্য দাওয়াতী সংগঠনের তীব্র সমালােচনা করেছেন। অন্য দিকে খৃস্টান ধর্ম প্রচারকরা কেবলমাত্র অ-মুসলিম এলাকার লাখ লাখ লােকদের ধর্মান্তরিত করছে না বরং যে সব দেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখানকার জনগােষ্ঠীকেও ধর্মান্তরিত করছে। খৃস্টান ধর্ম প্রচারকরা জোর গলায় বলে বেড়াচ্ছে যে, তারা ইন্দোনেশিয়ায় ১কোটি ৫০ লাখ এবং বাংলাদেশে ৫০ লাখ লােককে ধর্মান্তরিত করেছে তারা আগের ১শ' বছরের চেয়ে স্বাধীনতার পর থেকে আরাে পাকিস্তানীকে ধর্মান্তরিত করেছে। তারা এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ ইন্দোনেশিয়াকে একটি খৃষ্টান দেশ বানানাের মতলব এটেছে। মুসলিম ধর্মীয় নেতা জনাব দিদাত আরব নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন। তিনি দাওয়াতী কর্মতৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের তাদের কৌশল পরিবর্তন এবং তাদের পদ্ধতি উন্নত করার আহবান জানিয়েছেন।

 

        তিনি দাওয়াতের জন্য দক্ষ ও উপযুক্ত কর্মী বাহিনী তৈরী করার জন্য এই সংস্থার শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সকল বিষয়ের আমূল পরিবর্তনের আহবান জানিয়েছেন। জনাব দিদাত বলেন, দেশীয় ও স্থানীয় যে সব প্রচারকরা কথা বলেন, তাদের শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে। কারণ শিক্ষা যে কোন উন্নয়নের পূর্বশর্ত। খৃষ্টান ধর্ম প্রচারকারীরা এই কথা বলে মুসলমানদের প্রভাবিত করছে যে, দোজখের আগুন থেকে তারা তাদের রক্ষা করতে চাচ্ছে। আর এ জন্যই প্রয়ােজন রয়েছে ইহুদি অথবা খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করা। আর এই ধর্ম গ্রহণ না করা পর্যন্ত তারা স্বর্গে যেতে পারবে না। জনাব দিদাত আরাে বলেন, আমাদের সম্পর্কে খৃষ্টানরা যে কথা বলে এটা তাদের মন গড়া কথা। তারা যদি সত্যি কথা বলে তবে সে কথার প্রমাণ দিক। আল্লাহ জানেন, তাদের কাছে এ সম্পর্কে কোনই প্রমাণ নেই। সাক্ষাতকারে দক্ষিণ আফ্রিকার ধর্মীয় মূসলিম নেতা আরো বলেন, একজন খৃষ্টান ধর্ম প্রচারকারি হাজার হাজার কিলােমিটার দূর থেকে আপনার কাছে আসবে এবং আপনাকে বলবে, আপনি নরকে যাচ্ছেন। তখন আপনার জবাব কি হবে? তখন কি আপনি বিষয়টি প্রমাণ করানাের জন্য তাকে পাল্টা কিছু বলবেন?

 

        দিদাতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মুসলিম বিশ্বে শত শত দাওয়াতী সংস্থা রয়েছে। কিন্তু তাদের কর্ম তৎপরতা উল্লেখযােগ্য নয়। তিনি বলেন, মুসলমানরা ইসলামী কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত করে যাচ্ছে। দুর-দুরান্ত থেকে খৃষ্টান ধর্ম প্রচারকারীরা আপনার কাছে একাধিকবার আসবে, আপনার মগজ ধোলাই করবে, এমনকি পাঞ্চকার্ড ও পা-পােশ হিসাবে আপনাকে ব্যবহার করতে তারা দ্বিধা করবে না। আপনি ওর কুমতলবে মেতে যাবেন। কারণ এর মধ্যে আপনি আরামদায়ক কিছু খুঁজে পাবেন। মুসলমানদের জন্য এ সব সৌভাগ্যের কথা নয়। সকল ধর্মের শ্রেষ্ঠ হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। তিনি বলেন মুসলমানদের ধর্ম সম্পর্কে যে দায়িত্ব রয়েছে তারা তা পালন করছে না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলােতেও ভাষা সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে না। এ কারণে দাওয়াত তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছে না।

 

        বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুক্রবারের উপদেশাবলী জানার জন্য ইমাম তৈরীর ব্যাপারে জনগণকে শিক্ষা দিচ্ছে এবং পাশাপাশি শিশু-কিশােরদেরও এর আওতায় আনা হচ্ছে। কিন্তু তুলনামূলকভাবে খৃস্টানরা তাদের সম্প্রদায়ের লােকদের ধর্ম সম্পর্কে বেশী শিক্ষা দিচ্ছে এবং মুসলমান, হিন্দু ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লােকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাদের প্রস্তুত করে তুলছে।

 

        শেখ দিদাত (৭৫) তার আন্তর্জাতিক প্রচারনা কেন্দ্রে দাওয়াতী কর্মকাণ্ডের ওপর খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি আরাে জানান, ইংরেজী, ফরাসী ও জুলু ভাষায় লাখ লাখ বই ৪ প্রচারপত্র এই কেন্দ্র থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। সর্বত্র আহবান জানানাে হয়েছে যে, ইসলাম গ্রহণ কর। ইসলাম তােমাকে ভাকছে, জানাচ্ছে তােমাকে স্বাগতম। জনাব দিদাত বলেন, বিশ্বে অন্যরা যা করে, মুসলমানরা তা করে না। আমার বই ইসলাম ধর্ম পালন করতে হলে কি করতে হবে তাদেরকে এই শিক্ষা দেবে।

 

        তিনি বলেন, তার বইয়ের কপি মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিটি সদস্যের কাছে পাঠিয়েছেন। তারা এর জবাব দিয়েছেন এবং ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ফার্স্ট লেডী হিলারী ক্লিনটনও আমাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। এসব লােক সৌজন্যতার খাতিরে এই ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমি ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য মুসলিম দেশের জন্য ৫শ' কপি বই পাঠিয়েছি। এর মধ্যে অনেকেই ধন্যবাদ জানাবে। সউদী আরবে তার মিশনের প্রকৃতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে দিদাত বলেন, তিনি আরাে যুব দিদাত সৃষ্টির জন্য সেখান বিশেষ অনুরােধ জানাবেন।

 

        শেখ দিদাত বলেন, রিয়াদে একজন মার্কিন নাগরিক তার সঙ্গে দেখা করতে আসলেন এবং ইলাম ধর্ম গ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন-এ গল্পটিই তিনি সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছিলেন।

 

        মার্কিন নাগরিক জানালেন, পরিবার পরিজনসহ তিনি ২৫ বছর রিয়াদে কাটিয়েছেন কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কেউ তার কাছে আসেনি বা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ সম্পর্কে কেউ তাকে উদ্বুদ্ধ করেনি।

 

        মার্কিন নাগরিক বলেন, তিনি বিভিন্ন স্থানে সাতবার বাসা পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু কোন লােক তার কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আসেনি। ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও সুদানে কতজন খৃস্টান ধর্ম প্রচারকারী এসেছে বা কতজন মুসলমানদের কাছে গেছেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে দিদাত বলেন, মুসলমানরা যদি অমুসলিমদের সাথে বসবাস করতাে বা তাদের সাথে ইসলাম ধর্মের প্রধান প্রধান বিষয় সম্পর্কে তাদের অবহিত করতাে তাহলে আমি মনে করি, তাদের সবই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতাে।

 

        আসল কথা হচ্ছে, অমুসলিমরা যেভাবে তাদের ধর্ম সম্পর্কে সচেতন বা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করে আমরা তা পারি না। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, মুসলমানরা ধর্ম প্রচারের জন্যে অন্যদের ভাষা শেখে না। এটা তাদের দায়িত্বের আরেকটি অক্ষমতা। সুদানের বৃহত্তম জনগােষ্ঠীর ভাষা “দিমকা”। আমি যখন তাদের এই ভাষা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম তখন নেতিবাচক জবাব এলাে। আরবী ভাষায় দিমকা ভাষা শেখা উচিত বলে আমি মনে করি। খৃস্টানরা সুদানে গেছে এবং এই ভাষা শিখেছে। তিন শ্রেণীর দিমকা ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ করা হয়েছে।

 

        জনাব দিদাত হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন যে, ১৯ শতাব্দীর শুরুতে আফ্রিকায় খৃষ্টান সম্প্রদায়ের সংখ্যা ছিল তিন শতাংশ। কিন্তু আজ এই মহাদেশের ৪০ শতাংশই হচ্ছে খৃস্টান। এখন আশংকা যে, এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ খৃস্টান ধর্ম প্রচারকারীরা পুরাে মহাদেশটিই খৃস্টান বানিয়ে ছাড়বেন বলে চক্রান্ত চলছে।

(সূত্রঃ আরব নিউজ)

 

 

═──────────────═