কাশ্মীরঃ আযাদীর রক্তে পিচ্ছিল এক উত্তপ্ত জনপদ
প্রিন্সিপাল এ,এফ,সাইয়েদ আহমাদ খালেদ
========================================================================
ইসলামের অক্ষয় শক্তি হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর পবিত্র হাতে পৌত্তলিক আরবের চরম পরাজয় এবং পুতুলবাদের দুঃশাসনের মুকানিলায় এবং যুগযুগান্তরের নির্যাতিত মনবতার জয়, বিশ্ব ইতিহাসের এক বিস্ময়কর ঘটনা। অসার ও অন্তঃসারশুন্য পৌত্তলিকবাদের উচ্ছেদ সাধঙ্কারী তৌহিদপন্থী মুসলমানগণ মহানবীর (সাঃ) নেতৃত্বে জগতের মাঝে নিজেদের অতুলনীয় ও শ্রেষ্ঠতম মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিল দেড় হাজার বছর আগে। একত্ববাদের আখড়া ভেঙ্গে খান খান হয়ে গিয়েছিল। পুরুলানুসারীদের হৃদয়ে মহাকম্পন সৃষ্টি হয়েছিল ইসলামের বাণী স্বার্থপর পুরোহিত শ্রেণির ভাওতাবাজী ও পাগলামির আওবসান ঘটিয়ে তৌহিদী শান্তির আবেহায়াত বহায়ে দিয়েছিল ধরণীর উৎপীড়িত ও শোষিত মানুষের জীবনে। সে শান্তির অমিয় ধারা আজও প্রবাহমান পৃথিবীর বুকে তৌহিদী জনতার দ্বারা। অতীতে ইসলাম বৈরী ও এর প্রতি যারা ছিল রুষ্ট, গ্রগণ করনি কভু সত্যধর্ম ইসলাম বহুত্ববাদের অসারতা উপলব্ধি করেও অন্যায়ের প্রতি যারা ছিল অবিচল তাঁদের বংশাবলী ও রক্তধারাও বিশ্বে বিদ্যমান। তাদের কাছে দারূন ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসলাম। সেদিনের আরব ভূখন্ড হতে বিতাড়িত পৌত্তলিকদের প্রেতাত্মারা বিশ্বের প্রায় সবকোণে বিরামজান; দিএন দিনে এরা অনেক হয়েছে। তারাই ইসলাম ও মুসলিমের শত্রু।
ভারতবর্ষ এমনি একটি দেশ। এখাঙ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাতিলের ধারক, পৌত্তলিক ও বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। এই আজব দেশটি আল্লাহ্র আওনুসারী রশূলের উম্মত মুসলিম নিধনে মেতে উঠেছে। অবশ্য এটা তাদের জন্মগত স্বভাব। স্বাধীন সত্তার স্বীকৃতি ও মর্যাদা দানে এরা চির বাধাগ্রস্থ। বীর গাজী সালাহ উদ্দিনের ন্যায় চিকিৎসার দরকার। আফসোস! আর কোন সালাহউদ্দীন কি জন্মাবে না? ভারতসহ অমুসলিম দুনিয়া আজ ভীষণ তৎপর মুসলিম জাতির অস্তিত্ব বিলোপ সাধ্নে। তাকি সম্ভব? যুগ-যুগের বিপর্যয়ের জবালা ভুলতে না পারার কারণেই অমুসলিম বিশ্ব হয়রানি শুরু করেছে। সত্য ও ন্যায়ের ধারক মুসলিমের রক্ত ঝরাতে ময়দানে নেমেছে। দাঁত ভাঙ্গা জবাব দানে মুসলমান্দের আজ সংঘবদ্ধ হতে হবে; রক্ত দিতে হবে। রক্ত ছাড়া বিজয় আসে না, আসেনি রসূলের জমানয়ও। লাত , মানাত, হোবলের উত্তরসূরী পুতুলবাদের আখড়া ভারতের বেলায় এরূপ চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়া অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জৈনক খৃষ্টান নেতা উক্তি করেছিলেনঃ 'ওদের (মুসলমানদের)ঘুমাতে দাও জাগিয়ো না। না জেগেই অর্ধ পৃথিবী দখল করে নিয়েছে; জাগ্লে সব যাবে।' এ কথার সত্যতা ইউরোপসহ সকল দেশের খৃস্টানরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছে। মুসলিম ব্যাথ্যায় সমবেদনায় ভান করে মুসলিম নিঃশেষে এরা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বন্ধুত্বের ভান করে গন্ডগোল জিইয়ে রাখাই এঁদের ধর্ম। ওদের মায়া কান্নায় জুড়াবে না, অরা নবীর শত্রু এবং শ্বাশত নবীর অনুসারী মুসলিম জাতির শত্রু।খৃস্টান দুনিয়াআকে নিঃসন্দেহে শয়তানের নিজস্ব চেলা বলা যায়। ভারতও তার যোগ্যতায় তাদেরই আপনত্বের পরিচয় দিচ্ছে, সম্পর্ক বজায় রাখছে অত্যন্ত চতুরতার সাথে।
একদা প্রাচ্য ভূখন্ডের বিপুল অঞ্চল নিয়ে বিশাল ভারতবর্ষ থেকে বেশ কিছু অঞ্চল ভাগ হয়ে যেয়ে তারা স্বাধীন ও স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ভারত তাদের মিনিব নয়। এই ভারতের এমন কিছু অঞ্চল আছে যেগুলি সামন্ত্রাজা কর্তৃক শাসিত করদ রাজ্য বলে পরিচিত ছিল। এসব। রাজ্যের নিজস্ব শাসন পদ্ধতি আছে; তার আলোকেই রাজ্য পরিচালিত হয়েছে। নির্দিষ্ট সীমানা দ্বারা চিহ্নিত সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলি শাসিত হয়েছে। কাশ্মীর এমনি একটি মুসলিম অধ্যুষিত করদ রাজ্য ছিলো। দুনিয়ার মানুষের কাছে ভূস্বর্গ বলে পরিচিত । প্রাণ জুড়ানো মনোরম এই রাজ্যটি আবহামান কাল ধরে পৃথক সীমারেখায় অবস্থিত-ভারতের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত-পর্যায়ক্রমিক 'রাজা' কর্তৃক শাসিত হয়ে আসছিল। ভারতের সার্বভৌম অধিকারের বাইরে ছিল কাশ্মীর সহ আরো অনেক করদ রাজ্য। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ-ভারত ও পাকিস্তান নামে দু'টি রাষ্ট্রে বিভক্ত হয় এবং ভারতীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বংশধর বৃটিশ বন্ধুরাই করদ রাজ্যগুলির ভাগাভাগির ব্যাপারে স্পষ্ট ধাওরণা দান করে যায় যে, করদ রাজ্যগুলির পাকিস্তান বা ভাওরত, যে কোন একটিতে যোগদান করতে পারবে সংশ্লিষ্ট অঞ্চচল সমূহে জনসংখ্যাধিক্যের মতামতের ভিত্তিতে এবং মতামত যাচাই করা হবে গণভোটের মাধ্যমে।
ভারত ও পাকিস্তান সন্তুষ্ট চিত্তে এ ফরমুলা মেনে নিলেও ভারতের জন্মগত শয়তানী ফন্দির তীব্রতা অল্প সময়ের মধ্যেই ষড়যন্ত্রের রূপ পরিগ্রহ করে এবং ন্যায়ানুগ গণভোটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে হায়দারাবাদ, জুনাগড় মানদাভার ইত্যাদি রাজ্যগুলি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। কিছুদিনের মধ্যেই কাশ্মীরের হিন্দু শাসকের কারসাজিতে এবং বিদায়ী বেঈমান ইংরেজ শাসক চক্রের ষড়যন্ত্রে সৌন্দর্যের লীলাভূমি নব্বই শতাংশ মুসলিম জন্সংখ্যার মতামত উপেক্ষা করে সম্রাজ্যবাদী ভারত কাশ্মীর দখল করে নেয়।ইতিহাসের যে কোন রায়ের আলোকেই এই দখল অমার্জনীয়-জঘন্য অপরাধ বলে বিবেচিত হয়েছে। সেদিন থেকেই কাশ্মীর চরম বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আজও কাশ্মীর সম্মানজনক সমাধানের মাধ্যমে ছেড়ে না দেওয়া উগ্রবাদী ভারতের নির্লজ্জতার প্রমাণ বহন করে। যারা আজন্ম ঘৃণিত, ধিক্কারে তাদের খিছু আসে যায় না বটে। তবে ভারতীয় ছোবলে কাশ্মীরই বিপর্যস্ত নয়, নব্য ভারতের অসংখ্য আস্ফালনে উপমহাদেশের স্বাধীন রাষ্ট্রগুলিও দারুন বিব্রত। যে পাপের ফলশ্রুতিতে প্রচীন বিশাল ভারত বহু খন্ডে বিভক্ত হয়ে আজ সংকুচিত আকারে নব্য রূপ নিয়েছে, এদের অসহিষ্ণু কর্ম ও মোনাফেকীর কারণে আরও সংকুচিত হওয়ার পথে তা আলামতেই বোঝা যাচ্ছে।
কাশ্মীরে ন্যায় সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় কয়েকবার যুদ্ধ হয়েছে; সংঘর্ষ চলছেই। রক্ত ঝরছে এবং সে রক্ত শুধু মুসলিমের। আলোচনের পর আলোচনা চলেছে-চলছে; বিহিত কিছি হচ্ছে না। ধীর্ঘ সূত্রিতা কাশ্মীরের ভাগ্য পরিবর্তনে কোন সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে না। সারা বিশ্বের মুসলিম জাতির ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটেছে বিজাতীয় কর্তৃক মুসলিম ধ্বংসের আস্ফালন দেখে। কাজেই আমাদের ভাবনা আমাদেরই ভাবতে হবে। অন্য কেউ ভেবেও দেবে না, করেও দেবে না কিছু। মুসলিম স্বার্থ, তাই জাতিশংঘ নীরব। প্রভু রাশিয়ার মদদপুষ্ট ভারত এই বিতর্কিত মুসলিম রাজ্যটির ন্যায্য দাবীর প্রতি সামান্যতম সম্মান প্রদর্শন করছে না। জাতিসংঘ যদি নিরপেক্ষ হতো, বলশালী খৃষ্টীন দেশের লেজুর না হতো, তাহলে গণভোট অনুষ্ঠানে ভারতকে বাধ্য করাতে পারত। তাই আমরা জাতিসংঘকে মুসলিম আগ্রাসনী একটি সংঘ বলতে বাধ্য। এ সংঘ শয়তানী চক্র আমেরিকার দসর বৈ কি? সুতরাং এই সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া যায় যে, বিজাতীয় বহুরূপী আধিপত্যের আখড়া জাতিসংঘের দ্বারা কাশ্মীর তথা মুসলিম স্বার্থ আদৌ আদায় হবার নয়। শুধু কাল ক্ষেপন, পরিণামে মুসলিমের দুর্গতি-আরও রক্তক্ষয়।
কোন নেপথ্য ঈঙ্গিতে ভারত বলার দঃসাহস দেখায় যে, কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ? একটি মুসলিম রাজ্য চ্চিরকায় স্বকীয় স্বত্বায় ও বৈশিষ্টে শাসিত ভুখন্ড নির্লজ্জ আগ্রাসনের মাধ্যমে দখল করলে আর তা তার হয়ে গেল(?)এযুক্তি ও দাবী একমাত্র মিথ্যাদাবী ও চক্রসংঘের সদস্য ভারতের পক্ষে করাই সাজে। এরূপ অর্বাচীন যুক্তির পাগলা ঘোড়ায় চড়েই মাটির ঢেলা পুজারী ব্রাক্ষ্মণরা কাশ্মীরের বুকে নির্যাতন চালাচ্ছে। এদেরই পূর্ব পুরুষ আবু লাহাবের দল কি সহস্র নির্যাতনেও মুসলিম বিজয় প্রতিহত করতে পেরেছিল? পেরেছিল কি পবিত্র ক্বা'বার দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখতে? দাম্ভিক ভারত ইতিহাসের এ শিক্ষা কি গ্রহণ করে সুবুদ্ধির উদয় ঘটাতে পারে না। তার জান উচিৎ, নির্যাতনই মুসলিম জাতির ঈমানী বলিষ্ঠতা ও সাহসিকতা বৃদ্ধি করে। প্রমাণ, কাশ্মীর ম্মুক্তি আন্দোলনে শত নির্যাতনেও সেদেশের মুসলিমগণ জীবন দিচ্ছে একের পর এক, মাথা নোয়াচ্ছে না। ব্রাহ্মন্যবাদী ভারত দূরন্ত মুজাহিদদের হাতে বিপর্যস্ত করম হচ্ছে না- তবুও ক্ষান্ত দিচ্ছে না অন্যায় সমর হতে। অরা লাঞ্ছিত ও পশু স্বভাবী এক জাতি। মানুষের ন্যায্য অধিকারের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও পাওনা পরিশোধে ভারত চির কৃপন। হ্যাঁ, সত্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদানে অটুট থাকার আদেশ দানের কারণেই বিশ্বাসঘাতক জাতির হাতেই মহাত্মাগান্ধীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
এ হলো এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।ইতিহাস জানেন কওর বেশি সকলেই; পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন না থাক্লেও কাশ্মীর হারানোর পিছনে যে চক্রান্ত ছিল তার সামান্য তুলে ধরছি। ১৯৪৭ সালের বিভক্ত ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা নির্ধারণকারী মিঃ র্যাডক্লিক তার রোয়েদাদে উল্লেখ করেন যে, দেশীয় করদ বা অঙ্গরাজ্যগুলি নবগঠিত যে কোন দেশের সাথে যোগদান করতে পারবে-সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির অধিকাংশ জনমতের পূর্ণ ইচ্ছার ভিত্তিতে এবং গণভোটই জনমত যাচাইয়ের একমাত্র সুষ্ঠু পন্থা বলে গণ্য হবে। ইতিহাস নির্মম। বিশ্বের একমাত্র বিশ্বাস জাতি মুসলমানগণ উক্ত দলিলের প্রতি পূর্ণ সম্মান দানপূর্বক নিশ্চুপ ছিল যথাসময়েও যথাযথ সমাধানের অপেক্ষায়। ইসলামের দুশ্মন জড়বাদী ভারত, ততোধিক শত্রু ইংরেজ। উভয়েই একই বেঈমানী রঙ্গে রঞ্জিত। ও সময় কাশ্মীরের শাসক ছিল হিন্দু ডোগরা মহারাজা। এই হিন্দু শাসক ভারতের পদস্থ বৃটিশ কর্মচারী লর্ড ইস্মের কুট পরামর্শে মুসলিম সংখ্যাগুরু কাশ্মীরের জনমত উপেক্ষা করে নবগঠিত ভারতীয় ডেমিনিয়নের সাথে কাশ্মিরের ব্যাপারে সম্পূর্ণ একক সিদ্ধান্তে গোপ্নে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে অন্তর্ভূক্তির সম্মতি জ্ঞাপন করে ইতিহাসের এক কলংকময় অধ্যায় রচনা করে। পরবর্তী ঘটনাবলী বড়ই দুঃখজনক। এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য পুঞ্চের মুসলমানগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিতর্কিত অঞ্চলের কিয়দাংশ দখল করে নেয়। যা বর্তমানে 'আজাদ কাশ্মীর' নামে পরিচিত। নানামনভোলানো ও চটকদারি আশ্বাসের ফলে তাতক্ষণিকভাবে বিদ্রোহ থামিয়ে দেয়া হয়।
অন্য পক্ষে মহারাজার নির্দেশে বংশবদ সৈন্যরা জম্মু হতে মুসলিম বিতাড়ন শুরু করে এবং ২/৪ দিনের মধ্যে অনন্ত কালের কুখ্যত ডোগরা শাসক কাশ্মীরকে পাকাপাকিভাবে ভারত ভূক্তির ব্যাবস্থা করে ফেলে। আর এই হচ্চছে সততার প্রতি (!) চিমটাধারী চন্দনমাখা সাধু (?) বাবাজীর দেশ ভারতের দলিল এবং ের বলেই পরিস্থিতি একটু অনুকুল হলেই জিগীর তোলে "কাশ্মীর আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ"। অদ্ভুত মানব চরিত্র। যা যা হোক, ২৬ অক্টবর পাকিস্তানের জনক ও গভর্নর জেনারেল কায়েদে আজম মুহম্মদ আলী জিন্নাহ লাহোর গমন করে সীমান্তের পরিস্থিতি অবলোকন করেন।পাকিস্তানে যোগদান করতে ইচ্ছুক জুনাগড় ও হায়দারাবাদ পূর্বাহ্নেই ভারত জোর পূর্বক নিয়ে নিয়েছে। এখন তার সামনে কাশ্মীর সমস্যা মারাত্মক হয়ে দেখা দিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় জিন্নাহ সাহেব কাশ্মীরে অভিযানের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু খৃস্টান রক্তের ধারক স্যার অকিনলে এ পরিকল্পনায় আপত্তি তোলার কারণে যুদ্ধের দ্বারা মিমাংসার প্রস্তুতি ভন্ডুল হয়ে যায়। সেদিন যদি জিন্নাহ সাহেবের আদেশ পালিত হতো তাহলে কাশ্মীরের আজাদী, নাজুক পরিস্থিতিতেও ছিল অবসম্ভাবী। কেননা, অকিনলে জানতেন সমরাঙ্গনে মুসলিম জাতির সাথে টিকে থাকার হিম্মত ভারতীয় সৈন্যের নেই। ভারত দরদী বন্ধুর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ফল আজ কাশ্মীরের মুসলমানগণ জীবন দিয়ে অনুভব করছে; তাদের আর্ত চীৎকার আমাদের হৃদয়কেও ব্যথিত করে তুলছে অহরহ। হ্যাঁ, আদেশ পালিত না হওয়ায় দুঃখে কাতর বিশ্ব বরেণ্য নেতা,রণক্লান্ত বীর, পাকিস্তানের জনক কায়দে আজম সাহেব আর বেশী দিন বিচিত্র পৃতীর আলো বাতাস উপভোগ না করে জান্নাতের আশায় চির নিদ্রার কোনলে ঢলে পড়েন। সেদিনের পরিনতিই কাশ্মীরের বর্তমান বেদিনাবহ রূপ।
জগতে সহজভাবে মুসলমানদের কেউ কিছু দেয়নি; আত্মত্যাগের মাধ্যমে আদায় করে নিয়ে হয়েছে। কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ঘটা অসম্ভব ও অমূলক। তেত্রিশ কোটি দেবতার পূজারী সাম্প্রদায়িক ভারত পারবে কি এক আল্লাহ্র পূজারী কাশ্মীরি মুসলমানদের মুক্তির ন্যায়-সংগত অধিকারকে অস্বীকার করতে? আজাদীর লড়াইকে নস্যাৎ করে দিতে? দুঃখ, এ মুক্তি সূর্য্যের আভা যখনই দূর চক্রাবালে দেখা দেয়, তখনই ভারত আলোচনার মায়া কান্না শুরু করে। স্বাভাবগত এই ভন্ডামীর দ্বারা বিজাতীয় বিশ্বের করুন দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তাদের চাপের ফলে সব ভন্ডুল হয়ে যায়। উল্টা পাল্টা চরিত্রের ভারত কাশ্মীরের মিমাংসার ব্যাপারে প্রায় অর্ধ্ব শতাব্দী যাবত এরকম তাল বাহানা করে চলছে। কাশ্মীর সমস্যা উপমহাদেশের সকল মুসলমানকে বিব্রত করে তুলেছে এবং সেদেশের মুসলিমের হাহাকার আমাদের হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। এর কি পরিসমাপ্তি হবে না? বলতে চাই, এরূপ ন্যাকারজনক অশুভ পরিবেশের সমাপ্তি যুদ্ধের দ্বারাই সম্ভব। কোন আলোচনায় প্রজ্বলিত কাশ্মীর আর শান্ত হবে না।
এই সেই ভারত, যে ভারতের হিন্দু শাসকদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বৌদ্ধরা, পায়নি নিরিহ নিম্নবর্ণের হিন্দুরাও, এখনও পাচ্ছে না ভারত ভুক্ত বিভিন্ন প্রদেশের সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির ক্ষেত্র চ্যাম্পিয়ন তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের অবাঞ্চিত শীকারেরহাত থেকে পবিত্র বাবরী মসজিদ রক্ষা পেল না- বিচার পেল না মুসলিম বিদ্বেষী নরসীমা রাও সরকারের কাছ থেকে শুধু বেদনা বিহ্বল মুসলমানদের চোখে পানিই ঝরল! এক্ষেত্রে মুসলিম স্বার্থের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভি,পি, সিংহের অবদান বিশ্ব মুসলিমের নিকট চিরনন্দিত। তার সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে ধর্মপুত্র (?)আদভানির বাব্রী মসজিদ ধ্বংসের পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যায়। আদভানির যোগ্য পুষ্য নরসীমা রাও খুশী করলেন রামের প্রতিভূদেরই কেবল। যাহোক বিশ্ব নাথ প্রতাপ সিংহের স্বল্পকালীন শাসনামল নব্য ভারতের অতীত ও বর্ত্মাঙ্কে হার মানিয়েছে। মুসলিম জাতির গৌরবময় কর্ম ও কৃতিত্ব কোন কল্যাণবহ সৃষ্টির প্রশংসায় কৃপন নয়। অপ্রাসঙ্গিক হবে না, তাঁর আমলে ভারতে মহানবী(সাঃ) এর জন্ম দিনে ছুটি ঘোষিত হয়েছিল, শের-ই বাংলা এ,কে,এম ফজলুল হক সাহেবের নামে কোল্কাতায় একটি রাস্তার নামকরণ হয়েছে। মনে হয় নিঃসন্দেহে ভি,প,সিংহ, পশ্চিম বঙ্গের শ্রদ্ধাভাজন জ্যোতি বসু প্রমুখের ন্যায় উদার ব্যক্তিত্ব যদি ভারত সরকারের কর্ণধার হতেন তাহলে সর্বাঙ্গীন সুন্দর না হলেও মুসলিম নির্যাতন অপেক্ষাকৃত কম হতো, হযরত বাল মসজিদ অবাঞ্চিত ঘেরাওয়ের স্বীকারে পরিণত হত না, কাশ্মীরে হয়তো সম্মানজনক সমাধানের পথে অগ্রসর হতে পারত এবং ভারতের বুকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মধ্যে দাংগার বদলে হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে ওঠত।
কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এটা অবশ্যই গলাবাজির বিষয় নয়। এটা কার অংশ তা গণভোটই সমাধান দেবে। এই সেদিনও তো আমেরিকা কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয় বলে বক্তব্য রেখেছে এবং সে বক্তব্যে সম্রাজ্যবাদী ভারতের গাত্র দাহ শুরু হয়েছে। সত্য সবসময় অপ্রিয়- মানতে পারলে শান্তিদায়ক হয়। অপরের ন্যায়সংগত অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার প্রবণতা বর্জন করে ভারতকে অবশ্যই সুবুদ্ধির বিকাশ ঘটাতে হবে; তাতে কল্যাণ আসবে। নচেৎ গণভোট উপেক্ষার পরিণাম বর্ত্মানের চেয়েও মারাত্মক্রূপ ধারণ করতে পারে। বিতর্কের অবকাশ নেই, ভারত কাশ্মীরে অন্যায়ভাবে প্রবেশকারী, মুসলিম নির্যাতন ও যুদ্ধেংদেহী পরিবেশ সৃষ্টইকারী এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অবৈধ দখলদার। তার জানা উচিৎ, এটা মুসলমানদের নির্ভেজাল সত্যের লড়াই, বাঁচলে গাজী মরলে শহীদ-এটাই মুসলিম জাতির ঈমানী তেজ। জগত দেখেছে মুসলিমের তেজ বহ্নি ও তরবারির জোশ। সিংহরূপ মুসলিম জাতির তরবারীতে ইনশা আল্লাহ্ মরিচা ধরেনি। বেশী নয় একটি বিজয়ের দিকে তাকানোই যথেষ্ট।
আফগান রণাঙ্গণে বীর মুজাহিদগণের প্রচন্ড প্রত্যাঘাতের শিকার ছিন্নভিন্ন বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি বলে গর্বিত রাশিয়ার লেজগুটিয়ে পলায়ন। ভাঙ্গা অস্ত্রের সাথে ঈমানী বলের সমন্বয়ই মুসলমান মুজাহিদদের জয়ের পথ করে দেওয়ার ফলেই আফগান ভূমি আজ দস্যুমুক্ত। এসব বাস্তব ঘটনা থেকে কি ভারতের শিক্ষা নেবার কিছু নেই? অতীতের দূর্ভাগ্যজনক ইতিহাসের ফলাফল মেনে নিলেই মঙ্গল। কাশ্মীর মুসলমানদের, এখান থেকে ভারতকে সরে দারাতে হবেই ইনশা আল্লাহ্। সমেয়ের ব্যাপার মাত্র। দুঃখ হলো তার আগেই চাপিয়ে দেওয়া ভারতীয় আগ্রাসনের লেলিহান শিখায় ভূস্বর্গ কাশ্মীরের সকল উপাদান, উপকরণ সম্পদ শেষ হতে চলেছে। অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। এও এক চক্রান্ত। তবু কাশ্মীর চাই; ও মাটি মুসলিমের। আমরা জানি, আত্মিত্যাগের পর আল্লাহ্র রহমতে স্বাধীনতা যখন আসবে, দেখা যাবে ১৯৭১ সালের বিজয়ী বাংলাদেশের ন্যায় কাশ্মীরের শরীরেও পরিলক্ষিত হবে। ভারতীয় অপহরণের পৈশাচিক থাবার রক্তিম দাগ। হ্যাঁ, এত স্বত্বেও বাংলাদেশ টিকে আছে-এগিয়ে যাচ্ছে । অতএব, মুসলিম কাশ্মীরের মুক্তির আন্দোলন যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এই উপমহাদেশসহ দুনিয়ার সকল মুসলিমকে-বোসনিয়ার নির্যাতীত মুসলমানদের প্রতিও নজর রাখতে হবে।
অন্যায়ের চির-বৈরী ও ন্যায়ের অকৃত্রিম সমর্থনকারী প্রত্যাঘাত দিতে জানে-দূর্বলকে ক্ষমা করতেও জানে। ক্রুসেড-যুদ্ধের পরিণতি জেনেই জন মেজর মুসলিম নিধন কল্পে তাঁর পরমবন্ধু ডগলাসের কাছে গোপন চিঠি দিয়েছেন- হাসি পায়!পৈতাধারী ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতের স্মরণ রাখা উচিৎ ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের কথা গায়ের জোরে ভাগলপুরী গরু হওয়া যায় হয়তো,কিন্তু কোন জাতির গুরু হয়া যায় না, চিরদিন দাবিয়ে রাখাও যায় না কোন দাবিকে। সকাল বিকাল যত পরিবর্তনকারী ইহুদীমনা ভারত যুগ যুগ ধরে কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধানে টালবাহানার অভিনয় করে চলছে। বিতর্কিত রাজ্যের জনগণের মান সমভ্রম জীবন বিষময় করে তুলেছে। সেখানে শুধু আজাদীর আওয়াজ আর রক্ত ঝরা হাহাকার! মুসলিম দুনিয়াকে আর নীরব থাকার সময় নেই; জিহাদী পোশাকে সজ্জিত হয়ে ভাই বোন রক্ষার্থে অগ্রসর হতে হবে। এর চেয়ে কোন এবাদত আজ বড় নেই। কাশ্মীর শোনিত্যাক্ত প্রান্ত্র।
ইসলামের অভ্যুদয়-যুগের পৈশাচিনী হিন্দার (রাঃ) প্রতিভু ভারতের নির্দয় সৈন্যরা কাশ্মীরীদের নির্বিচারে হত্যা করে কলিজা চিবিয়ে খাচ্ছে। পৈশাচিক তৃষ্ণা মিটাতে তাদের দেহের উষ্ণ রক্তপান করে চলেছে। হৃদয় বিদারক এরূপ সংবাদ আমাদের বেদনার্ত করে তুলেছে। তবে ব্যথাআহত জীবনে এতটুকু সান্তনা, কাশ্মিরী মুজাহিদদের সাথে ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশসমূহের মুজাহিদগণও একাত্মতা ঘোষণা করে প্রত্যাঘ্যাত করে চলেছে। তারা শত্রু পক্ষকে মারছে এবং মার খাচ্ছে।হারাচ্ছে তারা অনেক কিছু; তবু আগ্রাসনকারী ভারত সরকারের সম্বিত ফিরছে না। মনে হয় এ অত্যাচারের খেসারত দিয়েই ভারতকে মরতে হবে শেষ পর্যন্ত।
একটি দেশ ও জাতির পতন যখন ঘনিয়ে আসে, তখন তাঁর সুবুদ্ধির বিলোল ঘটে। কোন ভাল কথা শুনতে চায় না। দুষ্ট বুদ্ধির ভিড় জমায় সে জাতির চারপাশে। ইতিহাসের কুখ্যাত নির্দয় রাজা বিজাতীয় দুষিত রক্তের উত্তরসূরী লর্ড ইসমেও অকিনলের প্রেতাত্মা এখনও ভারতে তাগুতী শক্তির প্রেরণা যুগিয়ে চলছে বলেই ভারত ক্ষান্ত হচ্ছে না। তাঁর বুঝা উচিৎ, এই প্রেতাত্মার পূর্ব পুরুষরা কি এদেশে টিকে থাকতে পেরেছে? কাশ্মীরের ব্যাপারে ভারতের এ থেকে শিক্ষা লয়া প্রয়োজন নয় কি? হে বিশাল ভারতের খন্ডিত অংশ নব্য ভারত। তুমি আজ বিশালও নও , খুব বিরাটও নও। তোমাকে ভাবতে হবে তোমার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। তোমার আভ্যন্তরীণ আকাশে সর্বত্র দূর্যোগের ছায়া। আসাম, মনিপুর, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, নাগা-কুকির বিদ্রহ। কোনটাকে সামাল দেবে? ব্রাহ্মণ্যদেবের সীমাহীন নির্যাতনে রুষ্ট সবাই। কাশ্মীরে হাত দিয়েছো, ঐক্যবদ্ধ মুসলিম প্রত্যাঘাতই তোমার রাক্ষসী ছোবলের উপযুক্ত জবাবদানে অচিরেই কামিয়াব হবে ইনশা আল্লাহ্। এরা সেই তৌহিদী জনতা; তাদের হাতেই অসংখ্য দেবতার সম্মিলিত শক্তির পরাজয় ঘটেছিল সেদিন। জানা নেই? কাশ্মীর কি ছিনিয়ে আনা যাবে না? ইনশা আল্লাহ্ যাবে; তবে সহজভাবে নয়-ত্যাগ ও আত্মাদানের মাধ্যমে।
ভূ-স্বর্গ লাভের আশায় ভুলের স্বর্গে বাস করছে বলেই ভাআরত প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িক অৎপীড়ন ও বর্ণবাদী নিপিড়ন চালাচ্ছে। ভারত নিয়ন্ত্রিত প্রায় সকল প্রদেশে বসবাসকারী মুসলামান্দের বর্তমান অবস্থা খুবই করুন। আল্লাহ্! জালিমদের হাআত থেকে তোমার অনুসারীদের রক্ষা কর, সকল মুসলিমকে কোরআন-সুন্নাহর সঠিক পাবন্দ কর, ঈমানী তেজে বলীযান কওর পূর্ব জামানার ন্যায়; ভেদাভেদ নয়, মুক্তিব সুমতি দাও। তৌহিদী জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে না। কই, মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে বসবাসকারী কোন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মুসলমান কতৃক উৎপীড়িত হচ্ছে এমন নজীর কি কেউ দেখাতে পারবে প্রতিহিংসা বিমুখের আলোকে? সামাজিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন ব্যাপারে কখনও যদি কোথাও খিছু ঘটে, সে দ্বন্দ্বের পিছনে, দ্ব্যার্থহীন চিত্তে বলা যায় মুসলমান সরকারের সমর্থন থাকে না; বরং জানামাত্রই উদার জাতির সরকার কঠোর হস্থে দমন করে-সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখার প্রয়াসে তারা সদা জাগ্রত। পক্ষান্তরে ভারত সরকার এর উল্টা-জনগণকে লেলিয়ে দেয় বা দিচ্ছে মুখোশধারী পোষাকে সজ্জিত করে মুসলিম ধ্বংসে।
নকল প্রবণতায় ও ছদ্মবেশী শিক্ষায় ভারতের অবস্থান এ উপমহাদেশে শীর্ষে। বিশ্মিত হতে হয়, হিন্দু ও খৃষ্টানের দর্শনের অন্যতম প্রধান কথা হলোঃ প্রেম জীবে দয়া করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। হ্যাঁ, কাশ্মীরের মুসলমান মেরে হিন্দু ভারত মহান রাণীর মহৎ প্রতিদান দিচ্ছে। বিরল এমন প্রেমের নজীর। ঈশ্বরের সেবা করছে নানা রকম নিয়ামতে সমৃদ্ধ কাশ্মীরের মুসলিম রক্তের পেয়ালা পান করে। ওদের ঈশ্বরও পুরষ্কার (?) দিচ্ছেন নানাভাবে। ভারতীয় বিবেকে তা ধরা পরছে কি? রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার উগ্র বাসনায় পবিত্র বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পুরষ্কার স্বরূপ সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের লাতুর ওসমানাবাদ জিলার চরম গণবিপর্যয়, শতাধিক লোকের অমূল্য রতন চোখের জ্যোতির চির বিলুপ্তি ইত্যাদি সূচিত হয়েছে। এতদসত্বেও হজরতবাল মসজিদ অপবিত্র করণে আবার মেতে উঠেছে। এ কোন সভ্যতা? কাশ্মীরের ব্যাপারে অসহিষ্ণু ভারতের সীমাহীন ঔদ্ধত্য মুসলিম জনগষ্ঠীকে অস্থির করে তুলেছে। কাশ্মিরীদের প্রতি ভারত কর্তৃক দীর্ঘ ধরে নারকীয় আচরন ও পৈশাচিকতার বিবরণ দানে যে কোন মানবিক কলম তাঁর স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলে। সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ও মর্জাদাশীল জাতির প্রতি নির্দয় ও অমানবিক অত্যাচারের কাহিনী জগতের ইতিহাসে বহু কোথাও লিপিবদ্ধ আছে কি যা এখন ভারত করেছে? হ্যাঁ, ভারত বন্ধু খৃষ্টান দুনিয়ার ইতিহাসে এরূপ নজীর টকটকে হয়ে আছে।
মুসলিম জাতি সুযোগ পেয়েছে কিন্তু দূর্বল , বন্দী, ও অসহায় এবং নিরস্ত্রের প্রতি খড়গ চালায়নি, গ্লানি ভরা ইতিহাস এদের নয়-ক্ষমা, বীরত্ব ও সমত্বের সম্ভারেই এ জাতির ইতিহাস সমৃদ্ধ। আধিক্যের মোকাবেলায় ইতিহাস সৃষ্টিকারী বদর, ওহুদ, খন্দক, ক্রুসেড এবং বিংশ শতাব্দীর ১৯৬৫ সালের পাক ভারত যুদ্ধের অসীম সাহসী মুসলিম যোদ্ধাদের উত্তরসূরী তো আমরা। সে চিরঞ্জীব দলিলের আলোকেই কাশ্মিরীগণ বৃহৎ ভারতের সাথে মরণপণ লড়ে যাচ্ছে। এই চরম সন্ধিক্ষনে অন্যান্য মুসলিম দেশের করণীয় কিছুই নেই? জাআমায়াত শুধু মসজিদে নয় রাসূলে করীম (সাঃ) জামাতবদ্ধ হয়ে রণাঙ্গণে গিয়েছেন। সে আদর্শ অনুপ্রাণিত তাঁর অনুসারীদের নির্দ্বধায় আজ কাশ্মীর প্রান্তরে জামাতবদ্ধ হয়ে দুশমনের বুকে আঘাত হানতে হবে। উপযুক্ত সময় এই এবং সুযোগের সদ্ব্যবহারে উদাসীনতা প্রদর্শন প্রকারান্তরে দীর্ঘ বিতর্কিত মুসলিম দেশের ন্যায় সঙ্গত দাবীর বিলুপ্তি সাধনের নামান্তর হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে একটিই শ্লোগানঃ 'কাশ্মীরে আজ দিতে হবে জান হতে হবে কোরবান, ভাইয়ের কান্নায় ভাই যাবে ছুটে, তবে তো মুসলমান।'
মিঃ নেহেরু তাঁর জীবদ্দশায় গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের কথা বলে বলে প্রতিপক্ষকে ঠান্ডা করে রেখেছিলেন; মীমাংসার বস্তব উদ্যোগ গ্রহণ না করে পরপারে পাড়ি কমিয়েছেন-রেখে গছেন ভাওতাবাজী শিক্ষা যা ভারত সরকার সমুন্নত রেখেছে। অবশ্য এরা একধাপ উঁচুতে অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, গণভোটেই সমাধান দেবে কাস্নীর ভারতের না পাকিস্তানের এরা বলছে অসব কথা নয়- কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কি চমৎকার বুলি! একেই বলে 'বাপ কা বেটা'। এর জবাব শোনাতে হবে না বাদশা হারুনর রশিদের ন্যায় দেখাতে হবে।জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগ্রাসনকারী ভারতের অসংযত প্রলাপের স্মুচিত শিক্ষাদানের ইস্পাত কঠিন পদক্ষেপে অগ্রসর হতে হবে এবং কাশ্মীর মুক্তির সংগ্রামের নেতৃত্ব থাকবে পৃথিবীর মুসজাহিদ সকল। কাশ্মীরে আমরা জিহাদের দ্বারাই মুস্কতির সূর্য ছিনিয়ে আনব।
মার্গারেট থ্যাচার ইরানের প্রতি আমেরিকার আক্রমণের সমর্থনে দরদী কণ্ঠে বলেছিলেন 'ওদের (খৃস্টানদের)ও আমাদের একই রক্ত'। বেঈমানী রক্তের একাত্বতায় যদি তাঁর এত মহব্বত এমন মমত্ববোধের প্রকাশ ঘটে, তাহলে শ্বাশত নবীর উম্মত তৌহিদের একমাত্র উপাসক মুসলিম জাতির ঈমানের তেজ মুসলিমের দুর্গতিতে সত্যিকার অর্থে প্রতিফলিত না হলে আখেরাতের ময়দানে আল্লাহ্ ও রাসূলের সামনে আমরা দাঁড়াব কোন মুখ নিয়ে। কাজেই সমস্যার সমাধান করতেই হবে। সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠে না, ঘি জড়িয়ে থাকে থাকে মাত্র। কাশ্মীর সমস্যাও জড়িয়ে আছে ও থাকবে, ধন-প্রাণ, মাল-ইজ্জত যাচ্ছে ও যাবে শুধু মুসলিমের। এটা সাম্রাজ্জবাদী ভারতের সূক্ষ্ম পরিকল্পনা প্রসূত,প্রজন্ম ধ্বংসের চিন্তা চিন্তা চেতনা ও কৌশল বইকি; মুসলিম সংখ্যালঘু করণের প্রয়াস বললে ভুল হবে না। আমাদের মোহ্মুক্তি ঘুচবে কি?
সকল সংকীর্ণ ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে বৃহত্তর মুসলিম স্বার্থে ভারতের নৃশংসতার বিরুদ্ধে জেহাদী অভিযান চালাতে হবে-ভাই ও বোনের চেয়ে আছে বিশ্ব মুসলিমের দিকে করুন দৃষ্টিতে। আর্ত ও উৎপীড়িতের ডাকে সাড়া দেওয়াই ইমানের শ্রেষ্ঠ পরিচয়। এটাই মনবতা-এই প্রকৃত ধর্ম। "কুল্লু মুসলেমীনা এখওয়াতুন"-একথা যদি স্বীকার করি তাহলে বলঃ মুসলিম মোরা ভাই ভাই, জিহাদের নেশায় ছুটে চলি, মুজাহিদ মোরা সকলেই কাশ্মীর-শত্রু পায়ে দলি। (সমাপ্ত)
*****