JustPaste.it

কবিরা গুনাহ

 

ভবিষ্যদ্বক্তা জ্যোতিষীর কথা বিশ্বাস করা

ইমাম আয যাহাবী

 

            আল্লাহ বলেনঃ “যে বিষয়ে তোমার নিশ্চিত জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় চোখ, কান, হৃদয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।”

           ইমাম ওয়াহেদী এ আয়াতের তাফসীর প্রসংগে বলেনঃ অর্থাৎ, তুমি যা জানোনা তা বলোনা।

             কাতাদা বলেনঃ অর্থাৎ, তুমি যা দেখনি তা দেখেছ, যা শোননি তা শুনেছ এবং যা জাননি তা জেনেছ বলে দাবী করোনা। এক কথায়, কোন ব্যাপারে যা জানো না তা বলো না!

           হযরত ইবনে আব্বাস এ আয়াতের শেষাংশের ব্যাখ্যায় বলেনঃ অর্থাৎ চোখ, কান ও হৃদয় কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, সে কথা আল্লাহ জিজ্ঞাসা করবেন। এ কথার মাধ্যমে যা দেখা হারাম তা দেখতে, যা শোনা হারাম তা শুনতে এবং যে ইচ্ছা পোষণ করা নিষেধ তা পোষণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

            অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহই একমাত্র অদৃশ্যজ্ঞ। তিনি তার অদৃশ্য জ্ঞান নিজের মনোনীত কোন রাসূলকে ব্যতীত আর কাউকে দেন না।”

            ইমাম ইবনুল জাওযী বলেনঃ অর্থাৎ অদৃশ্য বা গায়েবের জ্ঞানের ওপর আল্লাহর একচ্ছত্র অধিকার। এ অধিকারে তার কোন শরীক নেই। এই গায়েবের জ্ঞান তিনি কোন মনোনীত রাসূল ছাড়া কাউকে দেন না। শুধুমাত্র রাসূলকে যতটুকু গায়েবের জ্ঞান দিতে চান দেন। কেননা এই গায়েব বা অদৃশ্যের তথ্য জানানোই নবীর নবুয়তের প্রমাণ। এ থেকে বুঝা যায়, যে ব্যক্তি নক্ষত্রকে অদৃশ্য জ্ঞানের উৎস মনে করে সে কাফের।

            রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন জ্যোতিষী বা ভবিষ্যদ্বক্তার কাছে যায় এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, সে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওপর নাযিলকৃত কিতাব ও ওহিকে অস্বীকার করে। (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)।

            এক হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেনঃ “আমার বান্দাদের ভেতর কেউ হয় মুমিন এবং কেউ হয় কাফের। যে বলে যে, আল্লাহর অনুগ্রহে বৃষ্টি হয়েছে, সে আমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নক্ষত্রে অবিশ্বাসী। আর যে বলে যে, বৃষ্টি হয়েছে অমুক ধরনের আবহাওয়ার কারণে বা বাতাসের কারণে, সে আমার প্রতি অবিশ্বাসী এবং নক্ষত্রে বিশ্বাসী।”

            অভিজ্ঞ মনীষীগণ বলেছেনঃ বিশেষ ধরনের আবহাওয়ার কারণে বৃষ্টি হয়েছে একথা বলার সময় কোন মুসলমান যদি মনে করে যে, বিশেষ ধরনের আবহাওয়াই বৃষ্টির স্রষ্টা, তাহলে সে নিঃসন্দেহে কাফের ও মুরতাদ হয়ে যায়।

            আর যদি কেউ মনে করে যে, বিশেষ ধরনের আবহাওয়া বৃষ্টির আলামত বা লক্ষণ মাত্র, তাহলে কাফের হবেনা তবে অধিকাংশ আলেমের মতে এরূপ না বলাই ভালো।

            সহীহ মুসলিমে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন গণকের কথায় বিশ্বাস করে, তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল হয়না।

           সহীহ বুখারী ও মুসলিমের এক হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে যে, একদল লোক রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গণক ও জ্যোতিষীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ “ওসব কিছুই নয়। ওসব কিছুই নয়।” তখন কয়েকজন বললেনঃ হে রাসূল! অমুক জ্যোতিষী না অমুক কথা বলেছে? রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কিছু সত্য কথা জিনেরা সংগ্রহ করে, অতঃপর তা তার মনিব মানুষটির কানে কানে বলে দেয়, অতঃপর সে তার সাথে শত শত মিথ্যা সংযোজিত করে প্রচার করে।

            বুখারী শরীফের এক হাদীসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “ফেরেশতারা মেঘের ভেতরে নেমে আসে, অতঃপর যে সব বিষয়ের যে ফায়সালা হয়ে গেছে, তা নিয়ে আলোচনা করে! শয়তান এই সব কথা আড়ি পেতে শুনে জ্যোতিষীদের কাছে পৌঁছায়। অতঃপর জ্যোতিষীরা তার সাথে শত শত মিথ্যা যোগ করে।”

অনুবাদঃ আকরাম ফারূক