JustPaste.it

বিজ্ঞানের বিস্ময়

পৃথিবীর ওপর সন্ধানী চোখ

 

মানুষ তার উদ্ভবের শুরু থেকেই পৃথিবীর সম্পদ ব্যবহার করে আসছে। চারপাশের হাওয়া,পানি,মাটি, গাছ-গাছালির ফলমুল, লতা-পাতা,কাঠ, ক্ষেতের ফসল, মাটির তলা থেকে খুড়ে তোলা তামা, লোহা, কয়লা, তেল ইত্যাদি খনিজ বস্তু ব্যবহার করে মানুষ বেঁচে থেকেছে, সৃষ্টি করেছে জীবনযাত্রার নানা উপকরণ, গড়ে তুলেছে তারা আজকের সভ্যতা।

কিন্তু পৃথিবীর এসব সম্পদ কি অফুরন্ত? প্রকৃতি চিরকাল অকৃপণ হাতে মানুষকে যুগিয়ে যাবে তার দরকার আর চাহিদা মতো সব উপকরণ? এ প্রশ্ন নিয়ে মানুষের আগে তেমন মাথা ঘামাবার প্রয়োজন হয় নি। এমনকি এই শতকের মাঝামাঝিতেও প্রশ্নটা তেমন বড় হয়ে দেখা দেয় নি। বহু হাজার বছর ধরে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ছিল কম। রোগে-মহামারীতে, বন্যজন্তুর কবলে, প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে তার জীবন-নাশের হার ছিল বেশি। চারপাশে দুনিয়ার সম্পদ মনে হত অঢেল;আর এই অঢেল সম্পদে যে ঘাটতি পড়তে পারে এ আশঙ্কা আজকের মতো মানুষকে কখনো ভাবিয়ে তোলে নি।

এর মধ্যে অবস্থা অনেক বদলে গেছে। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা একশ কোটি থেকে বেড়ে দু’শ কোটি হতে লেগেছিল গোটা উনিশ শতক। অথচ দেখা যাচ্ছে, বিশ শতক শেষ হবার আগেই জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে দশ কোটির ওপরে। এই বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার চাপে ক্রমে ক্রমে কমে যাচ্ছে পৃথিবীর বনভূমির এলাকা; কমছে চাষের জমির পরিমাণ; অভাব দেখা দিচ্ছে সুপেয় পানির, তেল-কয়লা এসব জ্বালানির, নানা ধরনের খনিজ ধাতুর। অন্যদিকে বাড়ছে উষর মরুভূমির পরিধি, রাসায়নিক দ্রব্যে দূষিত হচ্ছে নদী-নালা,খাল-বিল, সমুদ্রের পানি, ধোঁয়ায় ধূলোয় বিষাক্ত গ্যাসে আচ্ছন্ন হচ্ছে চারপাশের বায়ুমন্ডল, বদলে যাচ্ছে জলবায়ু। আর এসব কিছুই আজ প্রভাব ফেলছে মানুষের জীবনের ওপর, তার সভ্যতার ভবিষ্যতের ওপর।

সারা দুনিয়ার বিজ্ঞানীরা এ সমস্যা নিয়েমাথা ঘামাচ্ছেন। উপায় বের করতে চাইছেন, কি করে পৃথিবীর সম্পদ এমনভাবে হিসেব করে ব্যবহার করা যায়, যাতে মানুষের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট না হয়, মানুষের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে না ওঠে। এর জন্য দরকার পৃথিবীর সব ধরনের সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ। চারপাশের পরিবেশ সম্বন্ধে তথ্য, মানুষের ক্রিয়াকলাপ আর তার ফলাফল সম্পর্কে খবরাখবর। এসব তথ্য চাই ক্রমাগত, সারা বছর ধরে আর দুনিয়ার সব দেশ সম্বন্ধে। মানুষের পরিবেশে অনবরতই যেসব পরিবর্তন ঘটে চলেছে, তা যদি সর্বক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তাহলে সে অনুযায়ী মানুষ তার চারপাশের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর তাহলে হয় তো দীর্ঘকাল ধরে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে পারবে মানুষের সভ্যতার অগ্রযাত্রা।

আজ অবশেষে পৃথিবীর সম্পদ আর পরিবেশের ওপর সর্বক্ষণ এমনি সন্ধানী চোখ রাখা সম্ভব হচ্ছে কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে। এসব কৃত্রিম উপগ্রহে বসানো হয় এমন সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি, যা কয়েকশ কিলোমিটার ওপর থেকে পৃথিবীর সম্বন্ধে নানা খবরাখবর সংগ্রহ করে যাচ্ছে দিনরাত আর নিয়মিত মানুষকে সরবরাহ করছে সে সব খবর।

 

দূর থেকে খবর

বিজ্ঞানীরা তাদের পরীক্ষাগারে যন্ত্রপাতি দিয়ে মেপে অনেক বিষয়ে খবর পান হাতেনাতে। কিন্তু আবার অনেক কিছু সম্পর্কে হাতেনাতে খবর যোগাড় করা যায় না। সেখানে খবর নিতে হয় দূর থেকে; কখনো সে খবরের অর্থও উদ্ধার করতে হয় নানা কৌশলে। মানুষ চাঁদের বুকে গিয়ে নামার ৩৬০ বছর আগেই গ্যালিলিও তার দূরবীনের চোঙে চোখ লাগিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন, চাঁদ মোটেই রুপাল চাকতি নয়, বিশাল একটা গোলক-তার ওপর আছে পাহাড় আর খাদ। বহু কোটি কিলোমিটার দূরের সূর্য আর তারাদের আলো পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা বলতে পারেন, তাদের দেহ কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি। রাডারের সূক্ষ তরঙ্গ ছুড়ে দিয়ে আজ সহজেই জানা যায়, সমুদ্রে কত দূরে আছে জাহাজ, আকাশে কোথায় আছে বিমান অথবা দূরে কোনদিক থেকে ধেয়ে আসছে ঝড়ো মেঘ। পৃথিবীর ওপরকার খবর দূর থেকে নেবার একটা আশ্চর্য নতুন উপায় পাওয়া গেল ১৯৫৭ সালে ৪ অক্টোবর তারিখে। প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক-২ তাতে বসানো হলো ‘লাইকা' নামে এক জীবন্তু কুকুর। লাইকা’র খবরাখবর পৃথিবীতে বিজ্ঞানীদের কাছে এসে পৌঁছতে লাগলো বেতার-তরঙ্গে ভর করে।

১৯৬০ সালের ১ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আকাশে ছুঁড়লো প্রথম আবহাওয়া উপগ্রহ টাইরস-১। এই উপগ্রহ থেকে বিজ্ঞানীরা পেতে লাগলেন পৃথিবীর নানা এলাকার মেঘের ছবি। এরপর পৃথিবীর ওপর আরো অনেক আবহাওয়া উপগ্রহ ছোঁড়া হয়েছে। সেগুলো নিচ্ছে হাওয়ার উষ্ণতা, বেগ, জলীয় বাষ্প, পানি বা বরফের কণা ইত্যাদি নানা কিছুর খবর। তারপর এসব খবর পৌঁছছে সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের কাছে। আবহাওয়া উপগ্রহ ছাড়া আরো নানা ধরনের দূরাভাস উপগ্ৰহ ঘুরছে পৃথিবীর চারপাশে।

দূর থেকে এমনি করে খবর নেয়ার জন্য বিজ্ঞানীদের প্রধান উপায় হল আলো বা বেতারের ঢেউ। বিজ্ঞানীরা বলেন এ দুই আসলে এক ধরনের তরঙ্গ -তাদের এক কথায় বলা যায় তড়িৎচুম্বক তরঙ্গ। তাপ-রশ্মিও পড়ে এই তরঙ্গের দলে। এদের মধ্যে তফাৎ আদতে শুধু তাদের ঢেউ-এর দৈর্ঘ্যে। বেতারের ঢেউ সবচাইতে লম্বা তারপর আসে তাপরশ্মি, তার চেয়ে ছোট আলোক রশ্মি।

মহাকাশ থেকে পৃথিবীর ওপর নজর রাখার জন্য যেসব ঢেউ ব্যবহার করা হয়, তার মাপের হিসেবটা নেয়া যাক। এক মিটার হল এক গজের চেয়ে সামান্য একটু লম্বা [৩৯.৩৭ ইঞ্চি] এক মিটারের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগকে বলা হয় মাইক্রোমিটার। মোটামুটি ০.৩ মাইক্রোমিটার থেকে ১৫.০ মাইক্রোমিটার মাপের ঢেউ ধরা পড়ে কৃত্রিম উপগ্রহের যন্ত্রে । আমরা যে আলো দেখি তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে ০.৩৮ মাইক্রোমিটার [এক ইঞ্চির লক্ষ ভাগের দেড় ভাগ-বেগুনি রঙের আলো] থেকে ০.৭৬ থেকে ৩.০ মাইক্রোমিটার লম্বা তরঙ্গকে বলা হয় অবলোহিত তরঙ্গ। এর চেয়ে লম্বা মাপের ঢেউ হল তাপরশ্মি।

সূর্যের রশ্মি পৃথিবীর ওপর পড়লে নানা বস্তু তাকে নানাভাবে ঠিকরে ফিরিয়ে দেয়। এই ঠিকরে দেয়া রশ্মির ছবি তোলা হয় কৃত্রিম উপগ্রহের শক্তিশালী ক্যামেরার সাহায্যে। পৃথিবীর ওপরকার নানা বস্তু নিজেদের গা থেকে নানা মাপের তাপরশ্মিও ছড়িয়ে দেয় চারপাশে। উপগ্রহ যেসব ছবি নেয় তা থেকে নানা মাপের তাপরশ্মিও ছড়িয়ে দেয় চারপাশে। উপগ্রহ যেসব ছবি নেয়, তা থেকে তৈরি হয় নানা রঙের ছবি। সেই ছবির রঙ থেকে বোঝা যায় কোন অংশ পানি, কোথায় চষা খেত, কোথায় মরুভূমি, কোথায় বন বা কোথায় মাটিতে রয়েছে খনিজ বস্তু।

 

খবর নেবার উপগ্রহ

ঠিক এই মুহূর্তে প্রায় ন'শ কিলোমিটার উঁচু দিয়ে পৃথিবীর চারপাশে অনবরত ঘুরে চলেছে প্রায় এক টন ওজনের একটি কৃত্রিম উপগ্রহ। এটা একবার পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে আসতে সময় লাগে ১০৩ মিনিট। আর এই পথ এমনভাবে বসাতো যেন এটি দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় ১৪ বার পৃথিবীকে পাক খেয়ে ১৬ দিন পর আবার একই সময়ে একই জায়গায় বিষুব রেখাকে অতিক্রম করে। ঘোরার সময় এই উপগ্রহের শক্তিশালী ক্যামেরা পৃথিবীর ওপরকার ১৮৫ কিলোমিটার চওড়া জায়গার ছবি তুলে নিতে থাকে। এমন সূক্ষ এই ছবি যে ত্রিশ মিটারের চেয়ে বড় আকারের যে কোনো জিনিস এতে স্পষ্ট চেনা যায়। প্রতিবার পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে এর পথ খানিকটা করে পশ্চিমে সরে যায়। এভাবে ষোল দিনে ঘুরপাক খেতে খেতে সারা পৃথিবীর ছবি তোলা হয়ে যায়; উপগ্রহটি তখন আবার সেই আগের জায়গা থেকে ছবি তুলতে শুরু করে। এই উপগ্রহটি হল আমেরিকার ল্যান্ডস্যাট ৫'। এটি মহাকাশে ছোড়া হয়েছে ১৯৮৪ সালে। এর আগের চারটি ‘ল্যান্ডসাট ছোড়া হয়েছিল যথাক্রমে ১৯৭২,১৯৭৫,১৯৮২ আর ১৯৮৩ সালে। কিন্তু সেগুলোর চেয়ে ল্যান্ডস্যাট ৬ আরো উন্নত। এতে পৃথিবীর নানা বস্তু সম্পর্কে আগের চাইতে নিখুঁতভাবে খবরাখবর নেয়া সম্ভব হচ্ছে। আর সেসব খবর সরবরাহ করা হচ্ছে দুনিয়ার নানা দেশে। পৃথিবীর প্রায় সোয়াশ’ দেশ আজ ল্যান্ডস্যাটের তথ্য পেয়ে তাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের জরিপ চালাতে পারছে।

নানা দেশে ল্যান্ডস্যাটের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার ফসলের প্রকৃত ফলন কত। দেশে কোন ফসলের ফলন কি পরিমাণ হচ্ছে তার হিসেবে কৃত্রিম উপগ্রহের ছবি থেকে ৮০ শতাংশ শুদ্ধভাবে জানা যায়। আমেরিকার মতো দেশে যেখানে গমের ক্ষেত হয় বিশাল আকারের সেখানে এই শুদ্ধতার পরিমাণ ৯৫ শতাংশ। ফসলের ক্ষেতে পোকা লাগলে বা ফসলের আর কোনো ক্ষতি হলে তার পরিমাণও সহজে জানা যায় উপগ্রহের ছবি থেকে।

থাইল্যান্ডে কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে ১৯৭৩ আর ১৯৭৬ সালের পাওয়া ছবি মিলিয়ে দেখা যায় এই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলে সাতটি প্রদেশে প্রায় দেড় হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার বন কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে সে দেশে নতুন বৃক্ষ রোপণের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। উপগ্রহ থেকে এমনি বন ধ্বংস হবার খবর পাওয়া গেছে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল এবং আরো নানা দেশে। ফিলিপাইনে বনাঞ্চল ধ্বংস করে মানুষ কিভাবে আবাসিক এলাকা গড়ে তুলেছে তার স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাচ্ছে উপগ্রহ থেকে।

বাংলাদেশ ও ভারতে বছরের বিভিন্ন সময়ে নদীতে পানির পরিমাণ জানার জন্য এসব ছবি বেশ কাজে আসছে। বিশেষ করে কোনো এলাকায় প্লাবন দেখা দিলে ঠিক কোন কোন এলাকায় কতটা প্লাবন হয়েছে, তা সহজেই জানা যায় এসব ছবি থেকে।

পাকিস্তানে ল্যান্ডস্যাট ছবি থেকে জানা যাচ্ছে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় কোথায় তামার খনি পাবার সম্ভাবনা রয়েছে তার কথা। সিন্ধু নদীর মোহনায় কিভাবে পলি পড়ছে সে সম্বন্ধেও অনুসন্ধান চলছে। নদীতে বা সমুদ্রের উপকূলে পানি কিভাবে দূষিত হচ্ছে তারও খবর পাওয়া যাচ্ছে এসব ছবি থেকে। ইন্দোনেশিয়ায় উপগ্রহের ছবির সাহায্যে দেশের বড় আকারের [১: ২৫০,০০০ স্কেলে বা ১ সে. মি. =২.৫ কিলোমিটার] নিখুঁত মানচিত্র তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বলা বাহুল্য, মহাকাশের এসব ছবি বিনে পয়সায় পাওয়া যায় না। ছবি পাবার জন্য মার্কিন মহাকাশ সংস্থাকে বার্ষিক মোটা হারে নজরানা দিতে হয়। কোনো দেশ এসব ছবি পাবার ভূ-কেন্দ্র স্থাপন করতে চাইলে তার খরচ অন্তত এক কোটি ডলার। তা ছাড়া এই কেন্দ্র চালু রাখার খরচও বছরে দশ লাখ ডলারের কাছাকাছি।

এছাড়া একটি বড় সমস্যা হল বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রশ্ন। ল্যান্ডস্যাটের ক্যামেরার সূক্ষ্মতা ভবিষ্যতে আরো বাড়াতো হবে, তখন মাটিতে দশ মিটার চওড়া জিনিসও সহজেই চেনা যাবে এসব ছবি দেখে ইতোমধ্যে ফরাসিরা ‘স্পট' নামে যে কৃত্রিম উপগ্রহ ছুড়েছে তার ছবিতে দশ মিটারের বড় যে কোন জিনিস চেনা যায়। একটি দেশের ভেতরে কি ঘটছে না ঘটছে তার সব খবর আরেক দেশ জেনে যাক এটা প্রথম দেশ হয়তো নাও চাইতে পারে। এসব খবর শত্রুতামূলক কাজে বা ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবিধা আদায়ের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু আজকের কৃত্রিম উপগ্রহের যুগে কোনো দেশের এমনকি কোনো মানুষেরও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখার উপায় কি? ল্যান্ডস্যাট ছাড়াও আরো নানা ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীর ওপরকার খবরাখবর নিচ্ছে। 'মেটস্যাট’ উপগ্রহ নিচ্ছে আবহাওয়ার খবর, ‘জিওস্যাট' নিচ্ছে ভূ-প্রকৃতি ও খনিজ বস্তুর খবর, সীস্যাট' নিচ্ছে সমুদ্রের পানির আর উপকূলের নানা খবরাখবর! এসব অনেক খবর মানুষের প্রচুর কাজে লাগছে। যেমনঃ সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের আগাম খবর আজ পাওয়া যাচ্ছে সহজেই। কোথায় বনে লেগেছে দাবানল, আগ্নেয়গিরিতে ঘটেছে উদগার, জাহাজ বা বিমান পড়েছে বিপদে-যত দুর্গম আর বিজন এলাকাতেই হোক-তার খবর আজ মানুষ পেয়ে যাচ্ছে সাথে সাথে। কিন্তু এই উপকারী দিকের পাশাপাশি এর বিপদের দিকটার কথাও আমাদের মনে রাখতে হবে।

জাতিসংঘের উদ্যোগে মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার সম্পর্কে বিচার-বিবেচনা চলছে। কখনো এসব বিষয় নিয়ে তুমুল বিতর্কও হচ্ছে। মহাকাশ থেকে যেসব ছবি বা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তা যেন শুধু শান্তির কাজে ব্যবহার করা হয় তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু সর্বসম্মত নীতিমালা উদ্ভাবনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই চেষ্টা সফল না হলে দুনিয়ার দুর্বল দেশগুলির জন্য যে তা সমূহ বিপদ ডেকে আনবে সে কথা বলাই বাহুল্য।

(সৌজন্যেঃ কারেন্ট নিউজ)