JustPaste.it

আমরা যাদের উত্তরসূরী

 

আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর জিহাদ

মেজর জেনারেল আকবর খান

 

ইসলামী  প্রতিরক্ষা  ইতিহাসের  গুরুত্ব

(পূর্ব প্রকাশের পর)

ফরাসী পর্যবেক্ষক নেপলিয়ানও তাঁর সেনাবাহিনীকে কেবলমাত্র এই পরামর্শ দেন নি বরং এই পরিকল্পনাকে বাস্তব আকারে পেশ করেন। ফ্রান্স বর্তমানেও সেই পরিকল্পনার উপরেই আমল করছে। জার্মানী এবং আমেরিকাও ইসলামের জিহাদ বিষয়ক মাসআলার অনুসরণকে নিজেদের গর্বের বিষয় বলে মনে করে। কিন্তু আমরা যারা এই মূলনীতির প্রণেতা ছিলাম অলস নিদ্রার শিকার হয়ে তা ভুলে বসেছি।

আমাদের স্কুল, কলেজ ও ভার্সিটি

পাঞ্জাব ভার্সিটির মিলিটারী সায়েন্স এবং মিলিটারী ট্রেনিং (সমর বিজ্ঞান এবং সামরিক প্রশিক্ষণ)-এর ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ এবং প্রশিক্ষণ কোর্সের পাঠ্যসূচী ভার্সিটির একজন সদস্যের সৌজন্যে ২৮শে মার্চ, ১৯৫৩ সনে যাই। যা পড়ার পর আমি দুঃখ পেলাম।

এই স্কীম সেই ফৌজী পাঠ্যক্রমের চেয়েও নীচু মানের যা আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বয়েজ কোম্পানীর সেই সব বালকদের জন্য নির্ধারণ করেছিলাম যাদেরকে যুদ্ধকালীন সময়ে ভর্তি করা হয়েছিল। ঐ সব বাচ্চাদের বয়স হত  ১৮ থেকে ১৬ বছরের মাঝামাঝি। ভর্তির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি যদিও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নির্দিষ্ট ছিল, কিন্তু সাধারণ ৬০% ভাগ শিশুই অক্ষর জ্ঞানহীন হত। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত অর্থ্যাৎ দু'বছরের সংক্ষিপ্ততম সময়ে আমরা ঐ সব শিশু কিশোরদের ভেতর থেকে শতকরা একশভাগকেই প্রাইমারী এবং উত্তীর্ণ ছাত্রদের ভেতর থেকে ৮০% ভাগ ছাত্রকে মিডল ক্লাস-এর শিক্ষার সাথে সাথে ফৌজ প্রশিক্ষণ দিয়ে এমনভাবে তৈরী করে দিতাম যে, এই সংখ্যার ভেতর থেকে আনুমানিক ১০% থেকে ১৫% ভাগ পর্যন্ত ছাত্র এক দু' বছরে নন-কন্ডিশন অফিসার হয়ে যেত। অবশিষ্ট নওজোয়ান উন্নত শ্রেণীর সৈনিক বিবেচিত হত। অবশ্য যে সব শিশু কিশোর ১২-১৩ বছর বয়সে কিং জর্জ মিলিটারী স্কুলে ভর্তি হত তারা পাঁচ বছরেই ম্যাট্টিক স্কুল মানের শিক্ষার সাথে এমন দৈহিক ও ফৌজী প্রশিক্ষণ লাভ করত যে, ১৮ বছর বয়সেই উত্তম জুনিয়ার লীডার হিসাবে ফৌজে যোগ দিত।

আমাদের 'ভার্সিটি ও কলেজের যুবকেরা কি বুদ্ধি ও অনুধাবনের ক্ষেত্রে উল্লেখিত কিশোরদের চেয়ে কমতর? এমন শিক্ষার উপর আফসোস! এই গাফিলতীর এই ফল হচ্ছে যে, আমাদের যুবকদের বয়সের সেই সর্বোত্তম অংশ (১২ থেকে ২০ বছর) যে বয়সে প্রভাব-প্রতিক্রিয়া ও আবেগোদ্দীপ্ত প্রেরণা কবুল ও সমঝ গ্রহণের ভুল পথে চলে নষ্ট হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। যদি অবস্থা এই থাকে তবে অবস্থা শোধরাবার আশা আকাশ কুসুম কল্পনায় থেকে যাবে।

আমরা পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থার সাথে বলতে পারি যে, আমাদের শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও সদস্যবৃন্দ আমাদের সামরিক স্কুল কলেজগুলোর শিক্ষক ও সদস্যবৃন্দের চেয়ে কোন অংশেই হেয় কিংবা খাটো নয়। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, সামরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সদস্যবৃন্দের যেহেতু প্রতিরক্ষার ইতিহাস, প্রতিরক্ষাগত ঐতিহ্য, শাসন শৃংখলা ও বিন্যাসের সাথে যোগসূত্র স্থাপিত হয়, সেজন্য তাদের ভেতর হীনমন্যতাবোধ কম হতে থাকে।

আমরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এবং পূর্ণ আস্থার সাথে বলতে পারি যে, আমাদের এই ফৌজ শিক্ষকগণ যারা অত্যন্ত আগ্রহ ও উৎসাহ ভরে পশ্চিমা বিজেতাদের রণনৈপুন্য ও রণকৌশলতা দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত হয়ে তাদের সমসাময়িকদের থেকে এতটা এগিয়ে যেতে পারেন, যদি তাদের এই আবেগ ও প্রেরণাকে ইসলামের প্রতিরক্ষা ঐতিহ্য দ্বারা সমৃদ্ধ করা যায়, তাহলে আমাদের জাতির আত্মবিশ্বাসের মাপকাঠি পৃথিবীর অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর চেয়ে নিশ্চিত রূপেই উন্নততর প্রমাণিত হবে।

উপরে উল্লেখিত বিশ্লেষণ থেকে এই ফলাফল গ্রহণ করা যেতে পারে যে, আমাদের প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে বহুবিধ ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে, যার সংস্কার এভাবে হতে পারেঃ

ক. ইসলামী যুদ্ধ-জিহাদ ও অন্যান্য বিজয় অভিযানসমূহকে প্রতিরক্ষাগত ও রাজনৈতিক নীতিমালার আলোকে পেশ করতে হবে। কেবলমাত্র আবেগ উদ্দীপিত করা যেন এর লক্ষ্য না হয়।

খ. এই ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহকে প্রতিরক্ষাগত দিক থেকে কার্যকর ও ফলপ্রসূ বানাতে হবে। অন্য কথায়, যেখানে হৃদয়গ্রাহিতা ও আত্মপ্রেরণাকে সমুন্নত করার চেষ্টা চালাতে হবে, সেখানে এও লক্ষ্য রাখতে হবে যে, এই সব ঘটনাসমূহের অধ্যায়ন থেকে পাঠকের ভেতর যেন দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারতা জন্মে এবং এর সাথে তিনি যেন জিহাদ পাঠ ও গ্রহণ করতে পারেন, যার সাহায্যে আমাদের অতীতের অস্ত্র সজ্জিত সেনা নায়কগণ ধর্ম, সংস্কৃতি ও মুসলিম মিল্লাতের লজ্জা শরম ও প্রভাব প্রতিপত্তিকে বিপদের মুখ থেকে কেবলমাত্র বাঁচান নি, তাই নয় বরং ইসলামী শান-শওকত পর্যায়ক্রমে সসমুন্নত করেছেন। যে ধরণের গ্রন্থের উল্লেখ আমরা করেছি-কমপক্ষে বাংলা ও উর্দু ভাষায় যাকে সাধারণের পক্ষে বোধগম্য বলা যায় তা দুষ্প্রাপ্য। এধরণের পুস্তক রচনার জন্য না সাধারণ মানুষ চেষ্টা চালিয়েছে, আর না সরকারের পক্ষ থেকে এ জাতীয় প্রয়াসকে উৎসাহিত করা হয়েছে। যদি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়-এর বর্তমান প্রতিরক্ষা পাঠ্যক্রম দেখা যায় তাহলে বলতে হবে যে, এখন পর্যন্ত তা উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ থেকে বঞ্চিত এবং অনেকখানি সংস্কারের মুখাপেক্ষী।

গ.  সমস্ত স্কুল, কলেজ ও দফতর বরং জীবনের সকল শাখায় জন সাধারণকে মিলিটারি সায়েন্স তথা প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে এবং এরই সাথে সমরশাস্ত্রের শিক্ষাও নিতে হবে, কিন্তু এই পাঠ্যক্রমের বুনিয়াদী মূলনীতি এবং আবশ্যকীয় শর্ত এই হতে হবে যে, তা মহানবী (ﷺ) এর প্রতিরক্ষানীতি ও কৌশল এবং মুসলিম মুজাহিদদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্যের ভিত্তিতে প্রণয়ন করতে হবে।

আমরা যখন বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানী কিংবা আমেরিকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করি তখন দেখতে পাই যে, সেখানে প্রতিরক্ষা কৌশল এবং প্রতিরক্ষাগত ঐতিহ্য শিশু-কিশোরদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের দিকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ শুধু তাই নয় বরং ঐ সব দেশের ভার্সিটিগুলোর অধ্যাপক মন্ডলী উল্লেখিত বিষয়ের উপর  উপর বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য পুস্তকাদি লিখে স্বীয় জাতিগোষ্ঠি ও দেশের অহংবোধকে সমুন্নত  করতঃ নিজেদেরকে সমুন্নত শির করবার পূর্ণ প্রয়াস চালিয়েছেন। বৃটেন তার ব্যক্তিগত ধ্যান-ধারণা ও স্বার্থের জন্য ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণকে প্রতিরক্ষা ও কৌশল সম্পর্কে অন্ধকারে রাখে।  আমরা ইংরেজদেরকে স্বার্থপর বলতে পারি, কিন্তু আমাদের এই অলসতার জন্য আমরাই দোষী। সাধারণ গণ-মানুষের প্রতিরক্ষার দিকে এখন পর্যন্ত সমীচীন এবং প্রয়োজনানুগ আকর্ষণ নেই। এজন্যই আমাদের মন্ত্রী ও উপদেষ্টাবর্গকে পার্লামেন্টে সর্বদাই জনসাধারণের অমনোযোগী ও নিস্পৃহ মানসিকতার জন্য আফসোস করতে হয়েছে।

আমরা যদি প্রতিরক্ষামূলক বিষয়াদি থেকে এভাবেই মুখ ফিরিয়ে থাকি, তাহলে ইসলামের প্রতিরক্ষা ঐতিহ্য পুণর্জীবিত করা, তা উপলব্ধি করা এবং এ থেকে উপকৃত হওয়া সম্ভব হবে না। এবং আমাদের প্রতিরক্ষা সেই একই টানা পোড়েনের অবস্থায় থাকবে। যে অবস্থার ভেতর দিয়ে তা শত শত বছর ধরে চলে আসছে। আমাদের কিসসা কাহিনী কেবলমাত্র আবেগ উত্তেজিত করবার ভেতরই সীমাবদ্ধ। কিন্তু আমাদের আজ  চোখ, কান খোলা রেখে কাজ করা দরকার। আমাদের প্রতিরক্ষার তরুণ সেনা নায়কদের নিকট আমাদের প্রত্যাশা, তারা আমাদের সামরিক কলেজগুলোতে উচ্চতর ধ্যান ধারণাকে নিত্যই উন্নতির পথে নিয়ে যাবেন। কিন্তু এই বাস্তবতাকেও উপেক্ষা করা যাবে না, মহানবী (ﷺ)-এর প্রতিরক্ষা কৌশল এবং ইসলামের ঐতিহ্যের নির্ভরযোগ্য পুস্তকাদির স্বল্পতা ও দুষ্প্রাপ্যতার কারণে আমাদের তরুণ সেনা নায়কগণ পশ্চিমা প্রতিরক্ষা পদ্ধতিকে আঁকড়ে ধরে আছে আর ঐ সব অমুসলিম লেখকগণ সব সময় এ প্রয়াস চালিয়েছেন, যাতে ইসলামী ঐতিহ্য কিছুতেই পুনরুজ্জীবিত হতে না দেওয়া হয়। এ পশ্চিমা সামরিক শিক্ষা পদ্ধতি আমাদের উল্লিখিত তরুণ সেনা নায়কদের উচ্চতর ও উন্নততর ধ্যান ধারণার পথে এক মস্ত বড় বাধা ও প্রতিবন্ধক। এরই ফলে আজ তারা হীনমন্যতা বোধের শিকার  হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা এই হীনমন্যতা বোধকে শ্রেষ্ঠত্ববোধে  রূপান্তরিত করার দৃঢ় সংকল্প নিচ্ছি আমাদের সাফল্য সুদূর পরাহিত। এর একটাই পথ হতে পারে আর তা হলো এই যে, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সামরিক শিক্ষা ও সমরশাস্ত্রে পারদর্শিতা লাভের দিকে পরিপূর্ণ মনোযোগ দেবে। যেহেতু ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলোতে দেশের প্রতিটি নাগরিককে অংশ নিতে হবে। অতএব এটা আবশ্যক। আমাদের শিক্ষাকেন্দ্রের উৎসকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করি। আমরা যদি জেনে নিই আমাদের সে উৎস কোথায় তাহলে সংস্কারের প্রস্তাব তৈরী করতে আমরা নিশ্চিতই  সফল হব। এভাবেই আমরা যদি আমাদের নতুন রোপিত চারার বুনিয়াদ সুদৃঢ় এবং যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যূতি  থেকে মুক্ত করতে পারি তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমাদের ভবিষ্যৎ শানদার হবে। মিল্লাতের প্রসারিত দৃষ্টি সত্তা তথা অহংবোধকে  উন্নততর করতে সাহায্য করবে এবং এভাবে জাতির উন্নতি ও  অগ্রগতি অব্যাহত পর্যায়ে ক্রমিকভাবে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে।

সংবাদপত্র

যদি আমাদের সংবাদপত্রের কলামিস্টগণ প্রতিরক্ষামূলক কৌশলগত জটিলতার উপর প্রতিরক্ষামূলক কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকেও আলোচনা-সমালোচনা করেন তাহলে জনসাধারণও এদিকে মনোযোগ দেবে। এভাবেই জাতি তার যিম্মাদারী সঠিকভাবে উপলব্ধি করার যোগ্যতা হাসিল করতে পারবে। এ কোন নতুন কথা নয়। পশ্চিমা বিশ্বের সংবাদপত্রসমূহ জনগণকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষার শিক্ষা দিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে এর প্রচন্ড ঘাটতি রয়েছে। একথা ঠিক যে, পাকিস্তানে প্রতিরক্ষার সদস্যবৃন্দ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। যেমন, রয়েল পাকিস্তাম আর্টিলারী, রয়েল পাকিস্তান আর্মী  সার্ভিস কোর ইত্যাদি। কিন্তু এসব পত্রিকার সম্পাদকগণ সেই স্বাধীনতা ও নির্ভীকতার সাথে বিভিন্ন সমস্যার উপর আলোচনাআ-সমালোচনা ও পর্যালোচনা করতে পারে না, যেভাবে অন্য পাঁচজন সাধারণ সাংবাদিক করতে পারেন। এ ছাড়া এর প্রচার ও প্রকাশনাও সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে। এর সাথে সাথে বিভিন্ন ঘটনাও সাক্ষ্য দেবে যে, যখনই কোন অফিসার কোন লাগামহীন সমালোচনা করেছে, তাকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ছাড়াও এ কথা ঐতিহাসিক ঘটনাবলী থেকে প্রমাণ করা যাবে। উদাহরণত আমেরিকান জেনারেল শেরম্যান, বৃটিশ জেনারেল ফুলার, জার্মান জেনারেল রডস্টেড, ফরাসী জেনারেল দ্যগলে এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ, যাদের স্মৃতি এখন অবধি জীবন্ত। এসব দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শাসন-শৃংখলা রক্ষার আড়ালে নিজেদের দোষ-ত্রুটি লুকোতে চেষ্টা করেছে। এসব অফিসারদের অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু সংবাদপত্রের লেখা অ মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা তাদের দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়েছে।  [চলবে]

 

  অনুবাদঃ আবু জাবিদ