JustPaste.it

1a5d7242e441f7ddb860918ef2dd0096.jpg

 

 

লড়াকু দরবেশ

শাইখ নাসর বিন আলী আল আনসি রহ.

 

 

 

মুহাম্মাদ উবাইদুল্লাহ

 

 

 

090050c2aeca03ab3376f20b5e67846a.png

****************************

 

শাইখ নাসর ইবনে আলী ইবনে আলী আল- আনসী।

তিনি ১৯৭৫ সালের ৮ অক্টোবর তারিখে তায়িয শহরে জন্মগ্রহণ করেন। সান'আর বিভিন্ন বিদ্যাপীঠে প্রথমিক শিক্ষা লাভ করেন ও বেড়ে  উঠেন। দ্বিতীয় স্তর পুর্ণ করার পর ১৯৯৩ সালে জামিআতুল ঈমানে ভর্তি হন, এটা ছিলো জামিয়া প্রতিষ্ঠার প্রথম বছর। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পাশাপাশি ঐ সময়গুলোতে তিনি একাধিক মাশায়েখের নিকট শরয়ী ইলম অর্জন করেন। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেনঃ

শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল আল-আমরানী,

শাইখ হুসাইন ইবনে শুআইব ও

শাইখ কাযী আলী ইবনে নাসর আল-আনসী।

১৯৯৫ সালে তিনি সার্বিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য বসনিয়ায় হিজরত করেন। সেখানে কমান্ডার আবু সাবিত আল-মিসরী, আবু ইউসুফ আল-কুয়েতী, উবাই আত-তিউনুসী সহ কতিপয় প্রশিক্ষকের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। সেখানে তাদের হাতে যুদ্ধকৌশল, সৈন্যগঠন, নেতৃত্বগঠন ও টপোগ্রাফী কোর্স সমুহ সহ কতিপয় বিশেষ সামরিক প্রশিক্ষণ কোর্স সামাপ্ত করেন। দায়তুন ও আওদার মাঝে সমঝোতা হয়ে গেলে অনেক মুজাহিদ যখন নিজ নিজ দেশে ফিরে আসেন, তিনিও তখন ইয়েমেনে ফিরে আসেন। ১৯৯৬ সালে ১২ জন আরব মুজাহিদ নিয়ে গঠিত একটি গ্রুপের সাথে তিনি আযাদ কাশ্মীরের জিহাদে বের হন। সেখানে ৫ মাস অবস্থান করেন। অধিকৃত কাশ্মীরে প্রবেশের জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন। কিন্তু পাকিস্তানী সরকার যখন কোন যুদ্ধফ্রন্ট খুলতে অস্বীকৃতি জানালো এবং ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মীরের যুদ্ধকে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রুপ আকারে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহন করল, তখন শহরের ভেতরে আরব মুজাহিদদের অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ল। কারণ বাহ্যিক বেশ-ভুষার কারণে তারা স্পষ্টভাবেই চিহ্নিত হয়ে যেতেন। একারণে শাইখ ও তার ৮ সাথী আফগানিস্তানে চলে যান। অবশিষ্ট ৪ জন কাশ্মীরে শহীদ হন। আফগানিস্তানে শাইখ জালালাবাদের সুরুবী সামরিক ঘাটিতে অন্তর্ভুক্ত হন প্রশিক্ষণ ও অধিকতর সামরিক জ্ঞান অর্জনের জন্য। তখন তিনি ও তাঁর সাথীগণ শুনতে পান তানযীমুল কায়দার অধীনস্ত একটি গ্রুপ কমান্ডার আব্দুল হাদী আল-ইরাকী (আল্লাহ তাকে কারামুক্ত করুন!) এর নেতৃত্ব তাজিকিস্তান অভিমুখে সফর করবে। আর সেখানে যাবে দক্ষিন তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের একটি এলাকাকে রাশিয়ার হাত থেকে মুক্ত করার জন্য। এই গ্রুপটির পরিকল্পনা ছিল কমান্ডার খাত্তাব (রহঃ) এর গ্রুপের সাথে সমন্বয় করে কাজ করা, যিনি ইতিপূর্বেই তাজিকিস্তানে পৌঁছে ছিলেন। উত্তর দিকে একটি ফ্রন্ট খুলে যায়। শাইখ নাসর আল-আনসী কমান্ডার শাইখ আবু হাফসা আল-মিসরী (রহঃ) এর সাথে সাক্ষাতের পর তিনি সর্বশেষে তাকে এই গ্রুপের সাথে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অনুমতি দেন, যেটা মুজাহিদের নিকট 'উত্তরের সফর' বলে খ্যাত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শীত ও ঘন বরফের কারণে কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছার পূর্বেই তাদেরকে প্রস্থান করতে হয়। ১৯৯৭ সালে শাইখ ইয়েমেনে ফিরে আসেন এবং বিবাহ সম্পন্ন করেন। তারপর শাইখ খাত্তাবের আমন্ত্রণে তিনি সিরিয়া অভিমুখে যাত্রা করেন। অতঃপর সেখান থেকে চেচনিয়া হিজরতের উদ্দেশ্যে তুর্কিস্তান অভিমুখে রাওয়ানা দেন। কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না। তাই শাইখ পুনরায় ইয়েমেনে ফিরে আসেন। ১৯৯৯ সালে শাইখ সপরিবারে আফগানিস্তানে হিজরত করেন। সেখানে শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহঃ) এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয় এবং কাবুলের একটি সফরে তার সাথী হন। তখন শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহঃ) তাকে কাবুলের একটি মেহমানখানার দায়িত্ব দেন। যা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম দেখাশোনা, বিভিন্ন সেনাছাউনি ও গ্রুপের মাঝে মুজাহিদ বণ্টন, আহতদের দেখাশোনা করা ও অন্যান্য দলগুলোর সাথে বহিঃসম্পর্ক রক্ষা করার কাজ করত। ১৯৯৯ সালে শাইখ প্রতিষ্ঠান থেকে সামরিক ময়দানে আসেন। অতঃপর আফগানিস্তানে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ কোর্সে অংশগ্রহণের জন্য ২৪ জন মুজাহিদের মাঝে তাকে নির্বাচিত করা হয়। যেটা "তাহীলুল কাওয়াদির" কোর্স নামে পরিচিত। যে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছিলেন শাইখ আবু আব্দুর রহমান আল -মুহাজির, অবুল ফজর আল-লিবী, আবু খালিদ আল- হাবিব, আব্দুল ওয়াকিল আল-মিসরী ও মুহাম্মাদ ফযলের মত বাছাইকৃত বড় বড় প্রশিক্ষকগণ। এই কোর্সটি সম্পন্ন হয়েছিল শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল- মিসরী (আল্লাহ তাকে কারামুক্ত করূন) এর তত্ত্বাবধানে। এই কোর্সে বক্তৃতা করেন বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোর নেতৃবৃন্দ ও কমান্ডারগণ। যেমন উজবেকিস্তান মুজাহিদ গ্রুপের আমীর, লিবিয়ান মুজাহিদ গ্রুপের আমির, তাজিকিস্তান মুজাহিদ গ্রুপের আমির ও দখলকৃত পূর্ব তুর্কিস্তানের আমির। এই কোর্সে শাইখের সাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন কমান্ডার আবু খালিদ আত-তাযী (রহঃ), কমান্ডার কাসিম আর-রিমী। কোর্স শেষ হওয়ার পর কোর্স সম্পন্নকারী ৭ জনের মাঝে তাকে নির্বাচন করা হয় হেলমন্দে আল- ফারুক সেনাঘাটিতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। এই সময়ে শাইখ আস-সাহাব মিডিয়ার দু'টি প্রকাশনা প্রস্তুত ও সাম্পাদনার কাজে সম্পৃক্ত হন। সেগুলো হলঃ

১. আমেরিকার আগ্রাসন ও

২. মুসলিম উম্মাহর হালচিত্র।

২০০১ সালে শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহঃ) শাইখকে একদল মুজাহিদ সমবিহারে ফিলিপাইন যেতে বলেন সেখানকার মুজাহিদ ভাইদের সাথে জিহাদে অংশগ্রহণ এবং তাদের শরয়ী, সামরিক ও সাংগঠনিক মানোন্নয়নের চেষ্টায় অংশগ্রহণের জন্য। ফিলিপাইন পৌঁছার পর তাদের নিকট ১১-ই সেপ্টেম্বরের মোবারক হামলার সংবাদ এলে। সেখানে তারা দায়িত্ব সম্পন্ন করার পর ইমারাতে ইসলামীয়া আফগানিস্তানে ক্রুসেড হামলা শুরু হওয়ার সাথে সাথে আফগানিস্তান প্রতিরক্ষা লড়াইয়ে মুজাহিদদের সাথে অংশগ্রহণের জন্য সেখানে প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পথিমধ্যেই সানআ বিমানবন্দরে শাইখ গ্রেফতার হন এবং সানআর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। এটা ছিল ২০০২ সালের গোড়ার দিকে। ৬ মাস কারাবন্দী থাকার পর শাইখ মুক্তি পান। আর তাকে সফর করতে নিষেধ করে দেওয়া হয়। শাইখ এই সুযোগটিকে জিহাদী সামরিক প্রতিষ্ঠানিক নীতিমালা প্রস্তুতকরণ ও ইলম অর্জনের কাজে ব্যাবহার করেন। সেজন্য শাইখ একাধিক শাইখের সান্নিধ্য গ্রহণ করেন এবং ফিকহে শাফেয়ীর উপর ফাতওয়া প্রদানের অনুমতি লাভ করেন। এমনভাবে খ্যাতনামা যায়দী আলেম আল্লামা সায়্যিদ মুহাম্মাদ আল-কাবসীর থেকে ইলম অর্জন করেন এবং শাইখ আব্দুল কারীম যিদানের জন্য আল- মাজাল্লাতুল আদালিইয়্যাহর কয়েকটি পরিচ্ছেদ প্রস্তুত করে দেন। ২০০১ সালে আরব বসন্তের বরকতময় উত্থানগুলোর পর শাইখ তানযীমূল কায়দা- জাযীরাতুল আরবের মুজাহিদদের সঙ্গে যোগ দেন স্বীয় ভাইদের সাথে জিহাদী লক্ষকে পরিপূর্ণ করার জন্য। ২০১৫'র এপ্রিল আমেরিকান ড্রোন আক্রমণে শাইখ নাসর শাহাদাৎ লাভ করেন

আল্লাহ্‌ তা'আলা শাইখের শাহাদাত কবুল করুন

*****

 

95685decbf326f1f5616e91fe579a5bf.gif