আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা, দ্বীন ও রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালিদাতার উপর
উন্মুক্ত তরবারি
মূল- শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ
অনুবাদ- মুহিব্বুল্লাহ নুমান
********************
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
জেনে রাখা উচিৎ! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাকে বা তার দ্বীনকে অথবা রাসূল (সাঃ) কে গালি দেওয়া অত্যন্ত জঘন্য একটি অপরাধ (আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে ও আপনাকে গোমরাহী ও ভ্রষ্টতার পথসমূহ থেকে রক্ষা করুন)। তাওহীদকে অন্তর থেকে গ্রহণকারী ও আল্লাহ তা‘আলার যথাযথ মূল্যায়নকারী বান্দারা এই ধরণের জঘন্য পাপাচারীদেরকে অন্তর থেকে ঘৃণা করে। আমরা ইদানিংকালে দেখতে পাচ্ছি যে, এই অন্যায় কাজটি কুফফার রাষ্ট্রগুলো বাদেও অনেক মুসলিম রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সকল রাষ্ট্রে এই জঘন্য পাপাচারটি মহামারীর মত ছড়িয়ে পরার অন্যতম প্রধান কারণ হল তাদের অসার আইনব্যবস্থা। এ সকল রাষ্ট্রের চলমান আইনে রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অথচ এই শাসকগোষ্ঠী ও তাদের নেতাদের শাসক, আসমান-জমিনের মালিক আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার বিরুদ্ধে যারা কটূক্তি করে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং অবজ্ঞার সাথে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর তাদের আদালতগুলো প্রহসনের স্থানে পরিণত হয়েছে। এখানে তাদের বিচারকদের কাছে শাসকদের কটূক্তিকারীরা কোন মাফ পায়না। অথচ রবের কটূক্তিকারীরা সহজেই মুক্তি পেয়ে যায়।
আমাদের কথা হচ্ছে এই অবস্থার জন্য এই সকল মুসলিম-অমুসলিম দেশের রাষ্ট্র ও আইনব্যবস্থা দায়ী। আমাদের দাবির স্বপক্ষে আমাদের কাছে প্রমাণও আছে। আমরা দেখতে পাই পূর্বে কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা নেতাদের বিরুদ্ধে অপমানজনক বা কটূক্তিকারীদের ব্যাপারে শুধু রাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ আর নিরাপত্তা বিভাগই মাথা ঘামাত। অন্য কোন বিভাগ এই বিষয়কে গুরুত্বই দিত না। আর এখন রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা বিভাগ ও কর্মচারী এই ব্যাপারে সোচ্চার। কেউ কটূক্তি করলেই তার আর রক্ষে নেই। অথচ রাষ্ট্রের এই গোয়েন্দা বিভাগ, নিরাপত্তা বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীদের চোখের সামনেই আল্লাহর শত্রুরা আল্লাহ্ ও তার সত্য দ্বীনকে গালি দিয়ে যাচ্ছে। আর এই সকল রাষ্ট্রপুজারিরা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখছে। তাদের বিচারালয়গুলোতে বিচারকদের সামনেই এই সকল কীটরা আল্লাহ্ ও তার সত্য দ্বীনকে গালি দেওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।
এ ব্যাপারে সকল উলামায়ে কেরাম একমত যে, আল্লাহ্ তা’আলাকে বা তার দ্বীনকে বা তার রাসুলকে (সাঃ) কটূক্তিকারী মুরতাদ। এই অন্যায় কাজ করার সাথে সাথে তার স্ত্রীর সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। এ অবস্থায় যদি সে মারা যায় তাহলে তার সকল আমল বাতিল বলে গণ্য হবে। তাকে মুসলমানদের কবরে দাফন করা যাবে না। তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আর অবশ্যই তা একটি নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।
যে কেউ আল্লাহ্ ,তার রাসুল বা তার দ্বীনের ব্যাপারে কটূক্তি করবে সেই মুরতাদ বলে গণ্য হবে। এই ক্ষেত্রে কোন উজর গ্রহণ করা হবে না। চাই সে সত্য মনে করে বলুক বা ঠাট্টা করে বলুক। সে শান্ত অবস্থাই বলুক বা রাগান্বিত অবস্থাই বলুক। সে মুসলিম হোক বা চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম হোক। সে পুরুষ হোক বা মহিলা হোক। সে ইহুদী, খ্রিস্টান বা যুদ্ধবন্দী যাই হোক তার উপর রিদ্দার নিয়ম আপতিত হবে। মোটকথা যে কেউ যে কোন হালতেই বলুক সে মুরতাদ বলে গণ্য হবে। মুসলমানদের জন্য তার জান ও মাল হালাল বলে গণ্য হবে।
এর দলীলসমূহ অনেক,যার অধিকাংশ শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা রহ. তার কিতাব “আস-সারিমুল মাসলুল আলা শাতেমের রাসূল” তে উল্লেখ করেছেন।
দলিল নং - ১
আল্লাহ্ সুব’হানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন-
"إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُهِينًا"
“নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লানত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক আযাব”। (সূরা আল-আহযাব-৫৭)
আল্লাহ তা‘আলাকে বা তাঁর দ্বীনকে কিংবা তাঁর রাসূল (সাঃ)কে গালিদাতাও এর অন্তর্ভুক্ত।
বুখারী শরীফের হাদীসে রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেন,“কে আছো কা’আব ইবনে আশরাফের জন্য? কেননা সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দিয়েছে”। তখন মুহাম্মদ বিন মাসলামাহ দাড়িয়ে গেলেন। অতঃপর বললেন যে, “ আমি হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আপনি কি চান যে, আমি তাকে হত্যা করি?” তিনি বললেন, “ হ্যাঁ”।
অথচ এই কা‘আব ছিল চুক্তির কারণে মা‘সুমুদ দাম (যার রক্তের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল)। কা’আব থেকে রাসূলকে গালি দেওয়া ও নিন্দা করা প্রকাশ পেলে রাসুল (সাঃ) খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। রাসূল (সাঃ) তার কষ্টের বর্ণনা এভাবে করেছেন যে, “সে আল্লাহ ও তার রাসূলকে কষ্ট দিয়েছে”। আর একারণেই রাসুল (সাঃ) কা’আব ইবনে আশরাফের রক্ত প্রবাহিত করার বৈধতার ঘোষণা দিয়েছেন নিরাপত্তার চুক্তির আওতাধীন হওয়া সত্বেও।
আর এই ঘটনার মাধ্যমে রাসুল (সাঃ) আমাদেরকে খ্রীস্টান ও তাদের ন্যায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বী কাফেরদের মধ্য হতে যারা আমাদের দ্বীন, আমাদের রব কিংবা আমাদের রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে গালমন্দ করার দুঃসাহস করে তাদের জন্য শাস্তি কি হবে তা বলে দিয়েছেন। আমরা দেখতে পাই যে, কা‘আব বিন আশরাফ চুক্তিবদ্ধ ইহুদী ছিল। সুতরাং এটাতো আরো অধিক উপযোগী হবে যে, আল্লাহ , রাসূল (সাঃ) বা দ্বীনকে গালমন্দকারী খ্রীস্টান বা ইহুদী বা মুশরিককে হত্যা করা হবে। তবে শর্ত হল সে এমন খ্রিস্টান বা ভিন্ন ধর্মের লোক হতে হবে যার মুসলমানদের সাথে কোন চুক্তি নেই। সে মুসলিমদের কোন জিম্মি (জিযিয়া দিয়ে নিরাপত্তা লাভকারী কাফির) হতে পারবে না। এমন অবস্থায় সে উপরোক্ত জঘন্য কাজটি করলে তার জান ও মাল মুসলিমদের জন্য হালাল বলে গণ্য হবে।
আর আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা উপরোক্ত আয়াতে যারা এধরনের কাজ করে তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিসম্পাত করেছেন। এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। বান্দার জন্য এর চাইতে ভয়ংকর আর কি হতে পারে !
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহঃ) এর মতে,কাফিররা হচ্ছে আল্লাহর লানত প্রাপ্ত বান্দা। তিনি তার “আস-সারিমুল মাসলুল” বইতে উল্লেখ করেছেন যে, উপরোক্ত আয়াতটি কাফিরদের জন্য প্রযোজ্য হবে। কেননা লা‘নত মানে হল আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত করা। আর আল্লাহ তা‘আলা যাকে দুনিয়া ও আখেরাতে তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত করেছেন সে নিঃসন্দেহে কাফেরই হবে।
অনুরূপ ভাবে তাকে (অবমাননাকর শাস্তির) হুমকি দেওয়াও তার ‘কুফুরির’ প্রমাণ বহন করে। কেননা পাপী মুমিনকে আল্লাহ তা‘আলা কখনো কখনো ভীতিপ্রদর্শন করেছেন বড় শাস্তি কিংবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির কথা বলে। কিন্তু অবমাননাকর শাস্তি কুরআনে কেবল কাফেরদের ব্যাপারেই উল্লেখিত হয়েছে।
আর আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
"وَمَنْ يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ مُكْرِمٍ"
“আর আল্লাহ যাকে অপমানিত করেন কেউ তার সম্মানদাতা নেই ”। (সূরা আল-হাজ্জ- ১৮)
এসব কিছুই একথার উপর দালালত করে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাকে, দ্বীনকে অথবা রাসূল (সাঃ)কে কটূক্তিকারী মুরতাদ।
দলিল নং – ২
আরো একটি দলিল হল আল্লাহ তা‘আলার এই এরশাদ,
"لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَنْ تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنْتُمْ لَا تَشْعُرُونَ"
“ তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো না এবং তোমরা নিজেরা পরস্পর যেমন উচ্চস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না। এ আশঙ্কায় যে, তোমাদের সকল আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না ”। (সূরা আল-হুজুরাত- ০২)
এই আয়াতের মাঝে আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে ভীতিপ্রদর্শন করেছেন নবী (সাঃ) এর আওয়াজের উপর তাদের আওয়াজ উঁচু করার ক্ষেত্রে। আর এই কাজ কখনো কখনো আমল বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার দিকে নিয়ে যায়। আর আমল তখনই নষ্ট হয়ে যায় যখন ব্যক্তি ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়ার মত কোন অপরাধ করে থাকে।
আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ
“যদি আপনি শিরক করেন তাহলে আপনার আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে”। (সূরা আয্-যুমার-৬৫)
এই আয়াতের অর্থ হল, ইবাদতের ক্ষেত্রে বিশেষ কোন শর্ত বা এধরণের কোন কিছুর কমতির কারণে আমল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, নবী (সাঃ) এর আওয়াজের উপর কারো আওয়াজ উঁচু করায় তার উপর সেই কুফরির আশঙ্কা করা হচ্ছে যা আমল বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার দিকে নিয়ে যায়। অতএব তার কি অবস্থা হবে যে আল্লাহর দ্বীনকে অথবা আল্লাহর রাসুলকে গালমন্দ করে ? নিঃসন্দেহে এই কাজ সম্পাদনকারীর সকল আমল বাতিল হয়ে যাবে। এবং উপযুক্ত শর্তপূরণ সাপেক্ষে তাকে মুরতাদ সাব্যস্ত করা হবে।
দলিল নং- ৩
আরো একটি দলিল হল, আল্লাহ তা‘আলার বাণী-
"وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِنْ نَعْفُ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْكُمْ نُعَذِّبْ طَائِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ"
“আর যদি আপনি তাদেরকে প্রশ্ন করেন, অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা আলাপচারিতা ও খেল-তামাশা করছিলাম। আপনি বলেন, ‘আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা বিদ্রুপ করছিলে’? তোমরা ওযর পেশ করো না। তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ। যদি আমি তোমাদের থেকে একটি দলকে ক্ষমা করে দেই, তবে অপর দলকে আযাব দেব। কারণ, তারা হচ্ছে অপরাধী”। (সূরা তাওবাঃ ৬৫-৬৬)
এই আয়াতটি এব্যাপারে অকাট্য সুস্পষ্ট বক্তব্য যে, আল্লাহকে, তাঁর দ্বীনের কোন বিষয়কে কিংবা তার রাসূলকে নিয়ে উপহাসকারী ঈমান আনয়নের পরও মুরতাদ হয়ে যাবে।
অতএব কোন ব্যক্তি আল্লাহকে বা তার রাসূল (সাঃ)কে গালি দিলে অথবা দ্বীনের কোন বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করলে তাকে তাকফির করার যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে। এই কটূক্তি সে ইচ্ছাকৃত ভাবে করুক কিংবা হাসি-তামাশা বা ক্রীড়াচ্ছলেই করুক। যেহেতু এই আয়াতগুলো ঐ সকল লোকদের ব্যাপারে অবতীর্ন হয়েছে যারা নবী কারীম (সাঃ) এর সাথে তাবুক যুদ্ধে জিহাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। অতঃপর তাদের (সাহাবীদের) কয়েকজন থেকে তাঁর ক্বারী সাহাবীদের নিয়ে কিছু উপহাস প্রকাশ পেয়েছিল। সুতরাং যখন তাদের ব্যাপারে এই আয়াতগুলো নাযিল হল, তখন তারা নবী কারীম (সাঃ) এর কাছে এই বলে ওযর পেশ করতে লাগল যে, “আমরা তো যাত্রীদল তথা মুসাফিরদের আলোচনার ন্যায় আলোচনা করছিলাম, যেন আমাদের সফরের ক্লান্তি কম অনুভূত হয়”। অর্থাৎ আমরাতো রসিকতা ও খেল-তামাশা করছিলাম যেন এর দ্বারা আমরা সফরের দূরত্ব ও ক্লান্তি দূর করতে পারি। আমরা এর দ্বারা কুফরির ইচ্ছা করিনি কিংবা কুফরি বিশ্বাসও পোষন করিনি। এর উত্তরে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলেননি। অথবা তারা কুফরি করতে চেয়েছিল ও কুফরিতে বিশ্বাস পোষন করেছিলো এমনটাও বলেননি। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা উত্তরে বলেছেন যে-“তোমরা উযর পেশ করো না, তোমরা ঈমান আনয়নের পর কুফরি করেছ”। অর্থাৎ তোমরা ঈমান আনার পর এই কাজের মাধ্যমে কুফরি করেছো। যদিও এই কুফরি তোমরা ইচ্ছা করে করনি বা তোমরা এই কুফরিতে বিশ্বাসও করতে না তবুও অনিচ্ছাকৃত ভাবে করা এই কাজের মাধ্যমে তোমাদের কুফরি প্রকাশ পেয়েছে।
সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি সাহাবাদের কয়েকজন থেকে এই আচরণ প্রকাশ পাওয়াই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। অথচ তারা নামায পড়তেন, রোযা রাখতেন এবং আল্লাহর রাসূল (সাঃ)এর সাথে জিহাদে বের হয়েছিলেন।
অতএব মুসলমানের মধ্যে যারা নিজের দ্বীনের নিরাপত্তার প্রতি আগ্রহী তাদের এই সমস্ত বিপদ ও বিপদগ্রস্থলোকদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিৎ।
মুসলমানদের মধ্যে কেউ কেউ একথা বলে যে, আমি আল্লাহ্, তার রাসুল ও দ্বীন ইসলামের কোন বিষয়ে কোন খারাপ ধারণা অন্তরে পোষণ করি না। কিন্তু এই ব্যক্তি আবার এমন লোকদের সাথে চলাফেরা করে যারা আল্লাহ্, আল্লাহর রাসুল বা দ্বীন ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করে। এই সকল মুসলিমরা এই কটূক্তিকারীদের সাথে উঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া ও হাসি-তামাশা করে বেড়ায়। এই কটূক্তিকারীদের সম্মান করে ও তাদের দেখে খুশি হয়। এটা কখনোই একজন মুসলমানের চরিত্র হতে পারে না বা হওয়া উচিতও না। এই সকল মুসলিমদের উচিত হবে এই সকল কটূক্তিকারীদের কাজে কঠোরভাবে নিষেধ করা। কটূক্তিকারী যখন এই কাজ করবে তখন মুসলিমের চেহারায় তার ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ থাকতে হবে। আর যদি কোন মুসলিম এই ধরণের কটূক্তিকারীদের সাথে একই মজলিসে অবস্থান করার সময়ে কটূক্তিকারী এমন কাজ করে তবে মুসলিম ভাইবোনদের উচিত হবে সেই মজলিশ ত্যাগ করা। আর না হলে এই মুসলিম ভাই বা বোন এই কুফুরির অংশীদার বলে গণ্য হবেন ।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,