JustPaste.it

গজনবীর দেশ থেকে সোমনাথের পথে

কমান্ডার নাসরুল্লাহ মনসূর।

=================================================================

 

        ১। হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামী আল-আলমীর জানবাজ গেরিলা কমান্ডার নাসরুল্লাহ মনসুর (লেংরিয়াল) হরকতের প্রথম শ্রেণীর একদল মুজাহিদ নিয়ে হাজার ১৯৯২ সনের ৩১ শে অক্টোবর পাকিস্তান থেকে রওয়ানা হয়ে জিহাদরত নির্যাতিত কাশ্মীরি মুসলমানদের সহযোগিতার জন্য অধিকৃত কাশ্মীরের প্রবেশ করেন। কাশ্মীরের আকাশ চুম্বী বরফ ঢাকা পাহাড় ও দুর্গম পার্বত্য উপত্যকা কিভাবে অতিক্রম করে তিনি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছালেন এবং অত্যল্প সময়ের মধ্যে তিনি কিভাবে আক্রমণ চালিয়ে সাফল্য লাভ করলেন, তার বিবরণ তারই সহযাত্রী মুজাহিদ হাফেজ আকরাম উল্লাহর জবানীতে আমরা শুনব। আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আমরা কাশ্মীরে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। প্রতিদিনই ভাবতাম, আজ হয়তো রওয়ানা হয়ে ওপারে গিয়ে পৌছাবো। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য আমাদের ক্রমাগত দেরী হতে লাগলো। আমরা নিজ অবস্থান থেকে কয়েক বার বের হয়েও ছিলাম, কিন্তু বেশি দূর অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়নি। বারবার ফিরে এসে স্বস্থানে অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে ৩১ শে অক্টোবের সকালের সূর্য আমাদের জন্য নিয়ে এলো সুখবর। আমরা সকাল সকাল বের হয়ে পাকিস্তানকে "আল বেদা" জানিয়ে সীমান্ত রেখা অতিক্রম করে একটি পাহাড়ি ঝর্ণার কিনারা ধরে অগ্রসর হতে থাকি। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর ঝর্ণাটি দুভাগ হয়ে দুই দিকে চলে গেছে। আমরা তার মোহনায় বসে বিশ্রাম নিলাম। কাশ্মীরের মাটিতে এটাই আমাদের প্রথম বিশ্রাম, প্রথম অবস্থান।

 

         বিশ্রামের পর আমরা ঝরনাটা পিছনে রেখে পাহাড়ে উঠতে থাকি। এখানে আমাদের বেশিক্ষণ অবস্থান করা সম্ভব ছিল না। ডানে-বামে ভারতীয় সৈন্যদের পোস্ট। অতি সতর্কতার সাথে কখনো ঝোপ-ঝড়ের আড়ালে, কখনও মাথা নীচু করে নুয়ে নুয়ে কখনো বা হামাগুড়ি দিয়ে সামনে অগ্রসর হতে থাকি। এক জায়গায় এসে আমাদের বাধ্য হয়ে থেমে যেতে হল। এই পাহাড়ের কাছাকাছি দুটি চূড়ায় ভারতীয় সৈন্যদের দুটি পোস্ট। যার মধ্য দিয়ে দিনের বেলা অতিক্রম করা একেবারেই অসম্ভব। দিনের বাকী অংশটুকু আমরা পাহাড়ের আড়ালে বসে কাটিয়ে দিলাম। রাতের অন্ধকার ছেয়ে গেলে আমরা দুই পোস্টের মধ্য দিয়ে সামনে অগ্রসর হই। এবার আমাদের আর একটি পানির নালা ধরে তার পাশে পাশে চলার কথা। কিন্তু নালার কিনারায় তাঁবু টানানো দেখে আমাদের সন্দেহ হলো, হয়ত ভারতীয় সৈন্যরা এখানে তাবু ফেলে পাহারা দিচ্ছে। পদ পরিবর্তন করে আমরা ঝর্ণা ও চুড়ার উপরে পোস্টের মধ্যে বরাবর দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। এইভাবে ছয়টি বিপদজনক পোস্ট অতিক্রম করে আমরা নভেম্বরের দুই তারিখ সবচেয়ে উঁচু পাহাড় "ওঝি টাপ" এর উপর পৌছতে সক্ষম হই। এরপর আমাদের ঢালু পথ ধরে নীচে নামতে হবে।

 

        আমাদের গ্রুপে ৩২ জন মুজাহিদ ছিল। হরকাতের কেন্দ্রীয় কমান্ডার নাসরুল্লাহ মনসূর কমান্ডিং এর দায়িত্ব পালন করছিলেন। হরকতের মুজাহিদরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর আফগান জিহাদের অংশ নেওয়ার ফলে সকলেই যুদ্ধের কলা কৌশল সম্পর্কে অভিজ্ঞ ছিলেন। সর্বশেষ চূড়ায় পৌঁছার পর আমাদের মুজাহিদরা দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অগ্রসর হতে লাগল। আমাদের সাথে দুজন গাইড (পথ প্রদর্শক) ছিল একজন ১৬ জন সাথী নিয়ে প্রথমে অগ্রসর হল। নাসরুল্লাহ মানসূরসহ আমরা পিছনের গ্রুপে ছিলাম। পদচিহ্ন ধরে বেশ কিছুদূর অগ্রসর হয়ে পিছনে ফিরে দেখি সাথীরা কেউ আসছে না। একটি পাথরের আড়ালে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ক্লান্তিতে আমার চোখে ঘুম নেমে এল। হঠাৎ পায়ের শব্দে চমকে উঠলাম। দেখি, আব্দুল গফুর সহ ৫ জন সাথী এগিয়ে আসছে। আমি তাদের কাছে বাকি সাথীদের কথা জিজ্ঞেস করলাম। তারা বলল, নাসরুল্লাহ মনসূরসহ বাকী সাথীরা এখনো পিছনে রয়ে গেছে। আমি পিঠের বোঝা নীচে নামিয়ে রেখে দ্রুত সামনে অগ্রসর হলাম। যাতে করে অগ্রবর্তী গ্রুপকে থামানো যায়। ঢালু পথে বরফ জমে ছিল, বেশি দ্রুত অগ্রসর হতে পারছিলাম না। ঘন্টাখানেক চলার পরও সাথীদের নাগাল পেতে ব্যর্থ হলাম। পেছনে ফিরে এসে দেখি, নাসরুল্লাহ মানসূর পিছনের গাইডসহ সাথীদের নিকট পৌঁছে গেছেন।

 

        নাসরুল্লাহ মানসূর ১৯৮১ সাল থেকে কাবুল বিজয় পর্যন্ত আফগানিস্থানেই ছিলেন। নিজ হাতে রুশীয়দের হেলিকপ্টার ও ট্যাংক ধ্বংস করেছেন। সাথীরা তাকে 'ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী' উপাধি দিয়েছে। তিনি বহুবার আহত হয়েছেন। তার উরুতে অনেকগুলো গুলি ঢুকেছিল। তখন থেকে তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটেন। ক্রমাগত হাঁটা এবং প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তার আহত পায়ে ব্যথা শুরু হয়। তিনি ছাড়া আরো কয়েকজন মুজাহিদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে দিনে এখানে বিশ্রাম করে রাতে অগ্রসর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কামান্ডার নাসরুল্লাহ মনসূর আমাদের থেকে কিছু দূরে আর আরো একটি পাথরের আড়ালে কয়েকজন সাথী নিয়ে বসলেন। যে পাথরের আড়ালে আমরা বসে ছিলাম সেগুলির উচ্চতায় কম ছিল। আমরা খঞ্জর দিয়ে মাটি খুড়ে তার মধ্যে বসার চেষ্টা করলাম। তবুও পুরোপুরি মাথা লুকানো সম্ভব হলো না। উপরন্তু এখানে বসে ফায়ার করার সুবিধাও ছিল না। প্রায় ৬০ বর্গ মিটার এলাকা নিয়ে আমরা আলাদা আলাদা হয়ে বসে পড়ি। আমাদের গাইড সামনে অগ্রসর হয়ে আশে পাশের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। সে আমার পাশ দিয়ে অতিক্রম করে ২০ মিটার অগ্রসর হয় হঠাৎ চমকে উঠে। তার সামনেই একজন ভারতীয় সৈন্য দাঁড়িয়ে আছে। সৈন্যটি গাইডকে অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানায়। তাদের কথার শব্দ শুনে আমি একটি পাথরের ছিদ্র দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি, সেখানে তিনজন ইন্ডিয়ান সৈন্য দাঁড়িয়ে সাথে কথা বলছে। আমি বুঝতে পারলাম সৈন্যরা আমাদের ঘিরে ফেলছে। কান পেতে তাদের কথাবার্তা শোনার চেষ্টা করলাম। একজন সৈন্য গাইডকে ফাঁসানোর জন্য চাতুরি করে বলছে। গুরু নানকের কসম খেয়ে বলছি, আমি শিখ, তুমি আত্মসমর্পণ করলে তোমাকে কিছু বলব না। গাইড বলল "তুমি শিখ হলে তোমার দাড়ি কোথায়? সে বললো দাডি রাখা আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক নয়।

 

         গাইড বলল তবে তোমার পাগড়ী কোথায়? সে জবাব দিল, সকালবেলা তো তাই পড়ে আসেনি। গাইড বলল তবে তোমার চুল কোথায়?  শিখ সৈন্যটি তার মোড়ানো বেণী খুলে তাকে দেখালো। এবার সে আবার গুরু নানকের কসম খেয়ে বলল। আমরাও স্বাধীনতা চাই। আমি জিয়াউল হকের সময় পাকিস্তান যেয়ে ট্রেনিং নিয়ে এসেছি। তবে এভাবে লড়াই করে স্বাধীনতা লাভ করা যায় না। স্বাধীনতা আলোচনার টেবিলে বসে নিতে হয়। সৈন্যরা এত কাছাকাছি ছিল যে আমরা একত্রিত হয়ে পরামর্শ করতে পারছিলাম না যে, এখন কি করব। সকলে নিজ নিজ স্থানে বসে সজাগ দৃষ্টি রাখতে থাকি। শিখ সৈন্যর নরম নরম কথায় গাইড অস্ত্র ফেলে দিয়ে হাত উপরে তুলে দাঁড়ালো। তৎক্ষণাৎ কামান্ডার নাসরুল্লাহর একটি গুলী এসে একজন সৈন্যের মাথায় বিদ্ধ হয়। সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কামান্ডার একের পর এক গুলী ছুড়ে সাথীদের আক্রমণ করার জন্য উচ্চস্বরে আদেশ দিতে লাগলেন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা 'আল্লাহু আকবার' ধ্বনি দিয়ে পাহাড়ি উপত্যকা মুখরিত করে আক্রমণে ঝাপিয়ে পড়লাম। অত্যন্ত ঝুঁকির সাথে পাথরের আড়াল থেকে বের হয়ে গুলী চাতে হচ্ছিল। কারো গুলী শেষ হলে সে পাথরের আড়ালে চলে আসতো, আর একজন তার জায়গায় নেমে আবার গুলি চালাতো।সকালে শুরু হওয়া যুদ্ধ দুপুর পর্যন্ত গড়ালো। শত্রু সৈন্যরা ক্লাশিনকভ রকেট লাঞ্ছারের গোলা এবং অসংখ্য গ্রেনেট বর্ষণ করেছে। একে একে আমাদের সাতজন সাথী শহীদ ও একজন গ্রেফতার হয়। বাকি ৬০ জনের মধ্যে কামান্ডার নাসরুল্লাহসহ অধিকাংশ সাথী আহত হয়। আমরা তায়াম্মুম করে পাথরের আড়ালে বসে জোহরের নামাজ আদায় করলাম।

 

মজরুহুল ইসলামের শাহাদাত

         মজরুহুল ইসলাম হরকতের প্রবীণ মুজাহিদ। তিনি অত্যান্ত পরহেজগার-মুত্তাকী এবং মিষ্টিভাষী ছিলেন। তিনিও তায়াম্মুম করে জোহরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ পড়ে তিনি কেবলামুখী হয়ে এক সৈন্যের উপর গুলী চালান। মুজাহিদ মুহাম্মদ আছেম তার সাথে ছিলেন। সে বলল, "আমি দেখলাম, গুলী খেয়ে সৈন্যটি লুটিয়ে পড়ে আর অপর দিক থেকে একটি গুলী এসে মজরুহুল ইসলামের কপালে বিদ্ব হয়। তিনি কেবলামুখী হয়ে দুই হাঁটুর উপর বসে পড়েন এবং সোজা সেজদায়ে চলে যান। আমি ধারণা করতে পারিনি যে তার কপালের গুলি লেগেছে। মনে করেছি, ইন্ডিয়ান সৈন্যকে হত্যা করার শুকরিয়া জানাতে তিনি সেজদায়ে লুটিয়ে পড়ছেন। অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি মাথা না উঠালে আমার সন্দেহ হয়। কয়েকবার ডাক দিলাম, কিন্তু কোনো জবাব নেই। মনে করলাম, হয়তো যখমী হয়েছেন। উঠাবার চেষ্টা করতেই কপাল থেকে ঝর ঝর করে রক্ত বের হতে থাকে। তখন আর তিনি বেচে নেই। তার আত্মা জান্নাতে পৌঁছে গেছে। মজরুহুল ইসলাম ছিলেন এই যুদ্ধের সর্বশেষ শহীদ।

 

        তিনশত ভারতীয় সৈন্য এই আক্রমণে অংশ নেয়। তারা কয়েক লাইনে শৃংখলাবদ্ধ হয়ে আমাদেরকে ঘিরে রাখে। তাদের প্রথম বেষ্টনী লাইন আমাদের থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে ছিল। কখনও সৈন্যরা সামনে অগ্রসর হয়ে পাথরের আড়ালে গ্রেনেড ছুড়ে মারতো। আমাদের হাতে দুটি রকেট লঞ্চার ছিল। একবার এক সৈন্য একটি গ্রেনেড আব্দুশ শুকুরকে লক্ষ্য করে ছুটে মারে। আব্দুশ শুকুর দ্রুত গ্রেনেড তুলে বাইরে নিক্ষেপ করে, এতে তার কাছে রক্ষিত রকেট লঞ্চারে গ্রেনেডের একটি টুকরোর আঘাত লাগে। যার ফলে রকেট লাঞ্চার অকেজো হয়ে যায়। এমন সময় একটি হেলিকপ্টার গানশীপ আমাদের মাথার উপর ঘুরতে থাকে। তার সাথে ছয়টি মেশিনগান ফিট করা ছিল। হেলিকপ্টার থেকে আমাদের উপর মুষলধারে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। কিন্তু এতে আমাদের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। মাত্র একটি রকেট লাঞ্চার দিয়ে হেলিকপ্টারের মোকাবেলা করি। এরপর দুশমনরা কয়েকটি মর্টারের তোপের গোলা বর্ষণ করে, যা  ডান ও বাম পাডে বিস্ফোরিত হয়। মর্টারের গোলার পর তারা আবার জোরদার আক্রমণ চালায়। আমি যে পাথরের আড়ালে মূর্ছা নিয়েছি তার উপর চড়ে একজন ভারতীয় সৈন্য আমাকে বলতে লাগল, বের হয়ে আসো। আমি যে মুর্চায় জায়গায় নিয়েছিলাম তা এত সংকীর্ণ ছিল যে, তার মধ্যে ভালো করে বসতে পারছিলাম না। সে তার বন্দুক দিয়ে আমার উপর বৃষ্টির মতো গুলি নিক্ষেপ করার কারণে মাথা তুলে সৈন্যদের দিকে তাকাবার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। সৈন্যটি আমার উপর একটি হ্যান্ড গ্রেনেট ছুড়ে মারে, যা আমার পেটের উপর পডতেই ধরে বাইরে নিক্ষেপ করে ফেলে দেই। এরপর আরেকটি গ্রেনেট নিক্ষেপ করে। সেটাও ধরে বাইরে নিক্ষেপ করি।

 

        যখন সৈন্যটি দেখল যে গ্রেনেড দিয়ে একে ঘায়েল করা যাবেনা, তখন এক নতুন চাল চালালো। আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল, তোমার ট্রেনিং দেখে আশ্চর্য হলাম। আমাদের তোমার মতো সুশিক্ষিত যুবকদের খুবই প্রয়োজন। তুমি বাইরে চলে এসো তোমার প্রশিক্ষণের জন্য তোমাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। তুমি বাইরে চলে এসো। আমি তার আওয়াজ শুনতে ছিলাম, কিন্তু তাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমি তাকে ডেকে বললাম তুমি আমার সামনে এসে কথা বল। কিন্তু সে আমার সামনে আসতে হিম্মত না করে আমার উপর আরো একটি গ্রেনেড ছুড়ে মারে। গ্রেনেড লক্ষচ্যুত হয়ে বাইরে গড়িয়ে পড়ে। এবার সে অন্য সৈন্যদের কাছে গ্রেনেড চায়। সাথী সৈন্যটি গ্রেনেড নেই বলায় সে ফিরে চলে যায়। সেই সুযোগে আমি মোর্চা থেকে বের হয়ে পাথরের আড়ালে পজিশন নিয়ে নিলাম। (চলবে)

অনুবাদ মঞ্জুর হাসান

 

*****