JustPaste.it

tazkiya--.4.jpg

 

মুজাহিদের আত্মশুদ্ধি - ০৪

 

আল্লাহর বড়ত্ব  মহত্ত্ব

 

-উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহ

 

************************

 

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ ইন্নালহামদা লিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালাম আলা রাসুলিল্লাহ। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়া ওয়া আমালান মুতাকব্বালা।

আলহামদুলিল্লাহ আমরা আবার আরেকটি তাযকিয়া মজলিসে বসার তাওফিক পেয়েছি।

ভাই! আপনারা সবাই কেমন আছেন?   

উপস্থিত এক ভাইঃ আলহামদুলিল্লাহ সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।  

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ আমরা সাধারণত আল্লাহর নেয়ামতগুলোকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারি না, আর তাই যথাযথ শোকর আদায়ও আমাদের দ্বারা হয়ে উঠে না। আল্লাহ বলেন,

 

إِنَّ الْإِنسٰنَ لِرَبِّهِ لَكَنُودٌ

নিশ্চয়ই মানুষ তার প্রতিপালকের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ। সূরা আদিয়াত : ৬

এই মজলিসে বসতে পারাকে আপনারা কীভাবে দেখছেন, জানি না, তবে আমি আমার নিজের কথাটা একটু বলি - আমি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ফিরছিলাম। যেহেতু মজলিস আছে তাই ফরয পড়ে আর দেরি করিনি। ফেরার পথে দেখি, বেশ কজন লোক রাস্তার  পাশের এক দোকানের সামনে বসে টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখছে। দোকানটি মসজিদের পাশেই। এত কাছে হওয়া সত্ত্বেও তাদের মসজিদের যাওয়ার তাওফিক হয়নি! খুব আফসোস হল। পাশাপাশি আমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য শুকরিয়া আদায় করলাম। আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমাকে নিরাপদে মসজিদে নিয়ে গেছেন। আল্লাহর একটি ফরয হুকুম আদায় করার তাওফিক দিয়েছেন। আবার ফিরে এসে আপনাদের সাথে একটি দ্বীনী মজলিসে বসার তাওফিক দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।

কোনো কথা বারবার বলা হলে তা অন্তরে গেঁথে যায়    

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন একটা প্রশ্ন প্রায়ই আমার মাথায় আসতো, আল্লাহ তাআলা সুরা আর-রহমানে,

 

فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ

“অতএব তোমরা(হে জিন ও মানুষ) তোমাদের প্রতিপালকের কোন কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে”? (সূরা আর-রহমান)

এ আয়াতটি এত বার কেন বললেন? এর কোনো কারণই তখন আমার মাথায় ধরতো না। এমন আরও একটি প্রশ্ন প্রায়ই আমার মাথায় আসতো যে, কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা জান্নাত-জাহান্নামের কথা এত বার কেন বলেছেন? বড় হওয়ার পর এক শায়েখের লেকচারের মধ্যে এ বিষয় দুটির সমাধান পেয়েছিলাম। শায়েখ বলেছিলেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে আল্লাহ তাআলা বারবার বলেন, যেন ওগুলো আমাদের অন্তরে ভালোভাবে গেঁথে যায়। কারণ, কোন কথাকে যখন বারবার বলা হয় তখন এক সময় তা অন্তরে গেঁথে যায়।   

এ কারণেই আমাদের উচিৎ, আল্লাহর নেয়ামতের কথা বারবার স্মরণ করা। এর মাধ্যমে  আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব আমাদের অন্তরে খুব ভালোভাবে গেঁথে যাবে ইনশাআল্লাহ। কুরআনে কারীমের বহু জায়গায় আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর বড়ত্ব ও মহত্বের কথা বলার এবং অন্যের সাথে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা মুদ্দাসসিরে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লক্ষ্য করে বলছেন,   

 

وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ

আপনি আপনার প্রতিপালকের বড়ত্ব ও মহত্বের কথা বলুন। সূরা মুদ্দাসসির : ৩

এবার আমরা মূল আলোচনায় ফিরে আসি। প্রথমে উপস্থিত সব ভাইয়েরা মাশোয়ারা দিন আজকে আমরা কোন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারি?

উপস্থিত এক ভাইঃ আজকে আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ সুবহানাল্লাহ! আর কোনো ভাই কি কিছু বলবেন? উপস্থিত আরেক ভাইঃ রিযিক নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য যে রিযিক আসার, তা অবশ্যই আসবে। তা নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।  

৩য় আরেক ভাইঃ কাজ করতে করতে ক্লান্তি এসে গেলে কীভাবে নিজেকে প্রাণবন্ত রাখা যায় এবং কীভাবে বেশি বেশি ইবাদত করা যায়, এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।   

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ আলহামদুলিল্লাহ আজ তাহলে আমরা আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব নিয়ে কিছু আলোচনা করি। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরিও। আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব সংক্রান্ত আলোচনার মধ্যে রিযিকের বিষয়টিও চলে আসবে। কারণ, আল্লাহুর গুণবাচক নামগুলোর মধ্যে একটি হল, ‘আর-রাজ্জাক’ বা রিযিকদাতা। আর কাজ করতে করতে ক্লান্তি আসলে কীভাবে নিজেকে প্রাণবন্ত রাখা যায় ও কীভাবে বেশি বেশি ইবাদত করা যায় এটিও একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এ বিষয়ে ইনশাআল্লাহ আরেক দিন আলোচনা হবে। তো আজকের বিষয় হল, আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব।

তাযকিয়া ক্লাশের উদ্দেশ্য  

ভাই! আমাদের মধ্যে ছোট বড় যত ধরনের সমস্যা রয়েছে সব সমস্যার সমাধান রয়েছে আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্কের মধ্যে। আল্লাহর সাথে কম বেশি আমাদের সবারই সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অবস্থাভেদে আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্কের ধরণটাও ভিন্ন ভিন্ন। কারো কম, কারো বেশি। আমাদের এ তাযকিয়া ক্লাশের উদ্দেশ্য মূলত এটাই, আমরা সবাই যেন আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ককে বৃদ্ধি করতে পারি। আর এর জন্য আমাদের প্রথম কাজ হল, আল্লাহকে খুব ভালোভাবে চিনা। আমরা সবাই আল্লাহকে ভালোবাসতে চাই কিন্তু আমরা কখনই তাঁকে ভালোবাসতে পারবো না যদি না আমরা তাঁকে খুব ভালোভাবে চিনতে পারি। আর আমরা আল্লাহকে তাঁর নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমেই চিনতে পারবো।

উপস্থিত এক ভাইঃ ‘আমাদের অবস্থাভেদে আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্কের ধরণটাও ভিন্ন ভিন্ন’ কথাটিকে একটি উদাহরণ দিয়ে বললে ভালো হতো ভাই!

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ যেমন ধরুন, আমাদের যে সব মুসলমান ভাই নামায পড়ে না, সারাক্ষণ দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত, গুনাহের মধ্যে ডুবে আছে তারা যখন টিভি দেখে আর টিভিতে হঠাৎ কুরআন তেলাওয়াত শুরু হয় কিংবা বাইতুল্লাহ শরীফের কোনো চিত্র দেখানো হয় তখন তাদের কেউ কেউ প্রচন্ডরকম বিরক্তিবোধ করে। তারা ওসব জিনিস দেখতে বা শুনতে মোটেই পছন্দ করে না। এটা হল এক শ্রেণীর মুসলমানের অবস্থা। এর সম্পূর্ণ বিপরীত আরেকটি শ্রেণী হল, যাদের সামনে আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করা হলে তাঁদের চোখে পানি এসে যায়। আল্লাহর কালাম শুনতেই তাঁদের অন্তর গলে যায়। আরেকটি শ্রেণী হল আরও উচ্চ স্তরের। তাঁরা হলেন আল্লাহর বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা। উনারা হচ্ছেন আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম এবং তাঁদের সত্যিকারের অনুসারীগণ। আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেছেন,  

 

أُولٰٓئِكَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّنَ مِن ذُرِّيَّةِ ءَادَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرٰهِيمَ وَإِسْرٰٓءِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَاجْتَبَيْنَآ ۚ إِذَا تُتْلٰى عَلَيْهِمْ ءَايٰتُ الرَّحْمٰنِ خَرُّوا سُجَّدًا وَبُكِيًّا

 “এরাই তারা নবীগণের মধ্য থেকে- যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা নেয়ামত দান করেছেন। এরা আদমের বংশধর এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলাম, তাদের বংশধর, এবং ইব্রাহীম ও ইসরাঈলের বংশধর এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি ও মনোনীত করেছি, তাদের বংশোদ্ভূত। তাদের কাছে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তখন তারা সেজদায় লুটিয়ে পড়ত এবং ক্রন্দন করত”।

(সূরা মারইয়াম-৫৮)

 

ভাই! পূর্বের কথাটি এবার কি বুঝে এসেছে?

প্রশ্নকারী ভাইঃ জী, ভাই আলহামদুলিল্লাহ।

উপস্থিত আরেক ভাইঃ ভাই, ব্যাপারটি উল্টোও তো হতে পারে। অর্থাৎ, আল্লাহর সাথে কারো সম্পর্ক কমে গেলেই তার অবস্থা এমন শোচনীয় হয়ে যায়!

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ জী, ভাই! আমিও মূলত ওটাই বুঝাতে চেয়েছি। সম্পর্ক কমে যাওয়া এটাও সম্পর্কের একটি ধরণ। আল্লাহর সাথে কারো সম্পর্ক একদমই কম বা মোটেই নেই এটাও সম্পর্কের একটা অবস্থা।   

প্রতিটি মুহূর্তেই আল্লাহর কথা স্মরণ হয়

দেখুন ভাই! আমরা যখন সুন্দর কোন জিনিস দেখি তখন বলি – ‘মাশাআল্লাহ যখন কষ্ট পাই তখন বলি – ‘ইন্নালিল্লাহ যখন খুশি হই তখন বলি – ‘আলহামদুলিল্লাহ। যখন পাহাড়, নদী, সাগর দেখে মুগ্ধ হই তখন বলি – ‘সুবহানাল্লাহ আমাদেরকে কেউ কোন কিছু হাদিয়া দিলে বলি – ‘জাযাকাল্লাহ’।

দেখুন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের চারপাশকে এমন ভাবে সাজিয়েছেন যে, প্রতিটি মুহূর্তেই আল্লাহর কথা স্মরণ হয়। তিনি কোরআনে কারীমে বলেছেন,

 

وَفِى الْأَرْضِ ءَايٰتٌ لِّلْمُوقِنِينَ  وَفِىٓ أَنفُسِكُمْ أَفَلَا تُبْصِرُونَ

“বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে, (২০) এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও, তবুও কি তোমরা দেখ না”? (২১) (সূরা আয-যারিয়াত-২০-২১) 

 

আপনারা হয়তো শুনেছেন, কিছু দিন আগে রোবট সোফিয়া এসেছিলো। তাকে দেখার জন্য কত উন্মাদনা! নাউজুবিল্লাহ। অথচ আমরা আমাদের নিজেদের দিকে একবার তাকিয়ে দেখিনা!

ভাই একটু বলুন তো, দুনিয়ার মধ্যে যে সব রোবটকে শ্রেষ্ঠ বলা হয়, বেস্ট অফ দা বেস্ট মনে করা হয়, ওসব রোবট সর্বোচ্চ কী করতে পারে?  

কোনোটা হয়তো সিঁড়ি বেয়ে কয়েক ধাপ ওপরে উঠতে পারে। কোনোটা হয়তো একটু দৌড়াতে পারে। কোনোটা হয়তো নাচতে পারে। আচ্ছা বলুন তো, এসব কি পাঁচ বছরের ছোট্ট একটা বাচ্চা পারে না? সে তো ওই রোবটের চেয়ে বহু গুণ ভালো করে এসব কাজ করতে পারে।

আল্লাহ বলেছেন,

 

তোমাদের নিজেদের মধ্যেও রয়েছে বহু নিদর্শন। তবুও কি তোমরা দেখ না?

(সূরা আয-যারিয়াত-২১)

আফসোস! মানুষ সোফিয়া দেখতে যায় কিন্তু আশরাফুল মাখলুকাত দেখতে পায় না।

তোমার আঙ্গুলের ছাপসহ বানাবো

কুরআনে কারীমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন,

 

بَلَى قَادِرِينَ عَلَى أَنْ نُسَوِّيَ بَنَانَهُ

‘আমি তাদের আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত বানাতে সক্ষম’। সূরা কিয়ামাহ : ৪ 

 

কেয়ামতে দিন আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পুনরায় জীবিত করবেন। প্রত্যেককে তার পূর্বের আকৃতিতে সৃষ্টি করবেন। এখানে এ কথাই বলা হয়েছে যে, প্রত্যেককে তার পূর্বের আকৃতিতে সৃষ্টি করা হবে এতে তার কোনো অঙ্গের মধ্যে সামান্যতম পরিবর্তনও হবে না।

একটি বিষয় লক্ষ্য করুন, এখানে আল্লাহ তাআলা আঙ্গুলের ডগার কথা কেন বললেন?

বর্তমানে আমরা যখন কোনো সীম কিনি তখন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ দিতে হয় না ভাই? এটি কেন লাগে?

কারণ, এই আঙ্গুলের ছাপ বিষয়টা হচ্ছে এমন যে, দুনিয়ার প্রত্যেকটা মানুষের আঙ্গুলের ছাপ আলাদা। দুনিয়াতে যত মানুষ আছে তাদের কারও আঙ্গুলের ছাপ অন্যজনের সাথে মিলবে না। এমনকি যারা মরে গেছে তাদের কারো সাথেও মিলবে না! সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর কী কুদরত! কাউকে আইডেন্টিফাই করার অন্যতম উপায় হচ্ছে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট।

তো আল্লাহ তাআলা যেন বলছেন, তুমি ভাবছো, আমি তোমাকে পুনরায় কীভাবে বানাবো? তোমাকে তো বানাবোই, তোমার আঙ্গুলের ছাপসহ বানাবো। এই তুমিই একদিন আমার সামনে এসে হাজির হয়ে যাবে। তোমার জায়গায় অন্য কেউ হয়ে যাবে আর তুমি আমার  হাতছাড়া হয়ে যাবে, এমন কিছুতেই হবে না।

এতো স্পষ্ট হওয়ার পরও আমরা বুঝি না। এর কারণ কী? কারণ হল, আমরা আল্লাহর ব্যাপারে জানি না, আল্লাহকে চিনি না।

এক ভাইয়ের ঘটনা

এক মুজাহিদ ভাইয়ের কথা শুনেছিলাম। তার মাথার ওপর দিয়ে যখন ড্রোন উড়তো তখন তিনি খুবই শান্ত থাকতেন। মাথা তুলে ওপরের দিকে দেখতেনও না। অন্য ভাইরা তাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কীভাবে এমন থাকেন? তিনি উত্তর দেন, এ সময় আসমানের দিকে তাকাতে আমার লজ্জা লাগে ভাই! আমার মাথার ওপড়ে ড্রোন কিন্তু আল্লাহ তো আছেন ড্রোনেরও ওপরে। অতএব আমি ড্রোনের ভয়ে কীভাবে আসমানের দিকে তাকাই যেখানে আমি জানি ড্রোনের ওপরে আল্লাহ আছেন!

এটা সম্ভব কখন ভাই? যখন আমরা আল্লাহর ব্যাপারে জানবো, তাঁকে খুব ভালোভাবে চিনবো।

আমরা কীভাবে ওদেরকে ভয় পেতে পারি!

আমাদের অন্তরে অনেক সময়েই তাগুতের ভয় কাজ করে। তারা ধরে নিয়ে যাবে, জুলুম নির্যাতন করবে, আরও অনেক রকমের ভয় আসে। এসব আসা স্বাভাবিক। আসতেই পারে। কিন্তু এসব ভয়কে কখনো প্রাধান্য দেয়া যাবে না, জয়ী হতে দেয়া যাবে না। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলছেন,

 

إِنَّمَا ذَٰلِكُمُ الشَّيْطَانُ يُخَوِّفُ أَوْلِيَاءَهُ فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

“ওরাই হলে শয়তান, ওরা (তোমাদেরকে) তাদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভয় দেখায়। তোমরা তাদেরকে ভয় করো না। আমাকেই ভয় করো যদি ঈমানদার হয়ে থাকো”।

(সূরা আলে ইমরান : ১৭৫)

এখানে আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে লক্ষ্য বলছেন, এই যে হাসিনা, র‍্যাব, পুলিশ, ডিবি, সিআইডি, আর্মি আরও যারা আছে তোমরা যদি সত্যিকার মুমিন হয়ে থাকো তাহলে এদেরকে ভয় করো না, একমাত্র আমাকেই ভয় করো।

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

 

وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِأَعْدَائِكُمْ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ وَلِيًّا وَكَفَىٰ بِاللَّهِ نَصِيرًا

আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানেন। অভিভাবক হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যকারী হিসাবেও আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা নিসা : ৪৫)

 

এখানে যে শব্দটি এসেছে তা হল, كَفَىٰ  যার অর্থ হল ‘যা দরকার তার সব কিছুর জন্য যথেষ্ট’! এর অর্থ বেশ গভীর।  

তো এ আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা যেন আমাদেরকে বলছেন, এসব র‍্যাব আর ডিবির ব্যাপারে আমি খুব ভালো করেই জানি এবং এদের মোকাবেলায় আমিই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। বলুন ভাই! এরপরও আমরা কীভাবে ওদেরকে ভয় পেতে পারি!

আল্লাহর দুশমনরা যদি প্রকাশ্যে আল্লাহর দুশমনি করতে ভয় না পায় তাহলে আমরা আল্লাহর বান্দা হয়ে কীভাবে আল্লাহর ওসব দুশমনকে ভয় পাবো!?

একজন জাহান্নামী যদি জাহান্নামকে ভয় না পায় তাহলে আমরা আল্লাহর বান্দা হয়ে কীভাবে ওই জাহান্নামীকে ভয় পাবো!?

কী তাঁর পরিচয়?

আমরা হলাম মহান আল্লাহর বান্দা। আল্লাহ কেমন? কী তাঁর পরিচয়? কত ক্ষমতার মালিক তিনি? আল্লাহ হলেন তিনি যার কুরসি সাত আসমান এবং সাত জমিনকে বেষ্টন করে আছে। এই যে আমরা বিশাল আসমান দেখতে পাই এটি দ্বিতীয় আসমানের তুলনায় বিশাল মরুভূমির মধ্যে রাখা ছোট্ট একটি আংটির মতো। দ্বিতীয় আসমানও তৃতীয় আসমানের তুলনায় বিশাল মরুভূমির মধ্যে রাখা ছোট্ট একটি আংটির মতো। একই ভাবে তৃতীয় আসমান, চতুর্থ আসমান, পঞ্চম আসমান, ষষ্ঠ আসমান, প্রতিটি আসমান তার ওপরের আসমানের তুলনায় বিশাল মরুভূমির মধ্যে রাখা ছোট্ট একটি আংটির মতো। সপ্তম আসমানের ওপরে হল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার আরশ বা কুরসি। সেই কুরসির মালিক হলেন আল্লাহ জাল্লা জালালুহু। আমি-আপনি সেই আল্লাহর বান্দা! অতএব আমরা কীভাবে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পেতে পারি?

দেখুন ভাই! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কী স্পষ্ট ভাবে আমাদেরকে লক্ষ্য করে বলছেন,

 

وَكَفَىٰ بِاللَّهِ وَلِيًّا وَكَفَىٰ بِاللَّهِ نَصِيرًا

অভিভাবক হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যকারী হিসাবেও আল্লাহই যথেষ্ট।

 

তিনি যেন আমাদেরকে বলছেন, তোমার কিসের চিন্তা? তোমার সাথে আমি আছি না! আমিই তো তোমার জন্য যথেষ্ট!

বলুন ভাই! আমার ‘আল্লাহ’ যদি আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান তাহলে আমার আর কী লাগবে? কে আছে যে আমার সাথে পেরে উঠবে?

আমাদের প্রথম কাজ

এজন্য আমাদের প্রথম কাজ হল আল্লাহকে খুব ভালো ভাবে চিনা। আল্লাহর শান, তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ব সম্পর্কে জানা। আল্লাহ যে আমাদেরকে কত ভালোবাসেন তা কারো পক্ষেই বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। রাতের বেলা আমি, আপনি ঘুমিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের রব  আমাদেরকে ডাকতে থাকেন, হে আমার বান্দারা! কারো কি কিছু লাগবে? আমাকে বলো আমি দিবো। রিযিক, সুস্থতা, মাগফেরাত, কার কী লাগবে? আমাকে বলো, আমি যার যা কিছু  লাগবে তাকে তাই দিবো। সুবহানাল্লাহ! আমি আপনি ঘুমিয়ে থাকি, আল্লাহকে ভুলে যাই। কিন্তু আল্লাহ এক মুহুর্তের জন্যও আমাদেরকে ভুলেন না। ব্যাপারটা ভাবতেই কত আনন্দ  লাগে! তিনি আমাদেরকে দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন অথচ আমরা চাইতেও কৃপণতা করি।

ইয়া আল্লাহ! ইয়া আল্লাহ!

এক শায়েখ বলছিলেন, কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তির সামনে প্রচুর নেকি নিয়ে আসা হবে। সে দেখে বলবে, হে আল্লাহ! আমি দুনিয়াতে এত নেক আমল তো করিনি। তখন আল্লাহ বলবেন, হে আমার বান্দা! দুনিয়াতে অমুক রাতে তুমি অসুস্থ ছিলে, কেউ তোমার পাশে ছিল না। একা একা তুমি বিছানায় এপাশ ওপাশ করেছো। আর যন্ত্রণায় কাতর হয়ে বার বার ‘ইয়া আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ’ বলে আমাকে ডেকেছো। ডাকতে ডাকতে এক সময় তুমি ঘু্মিয়ে পড়েছো। পরদিন তুমি সবই ভুলে গেছো কিন্তু আমি তোমার সে ডাকের কথা ভুলিনি। তোমার সেই ‘ইয়া আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ’র প্রতিদান আজ আমি তোমাকে দিয়েছি।

আল্লাহ আমাদেরকে কত ভালোবাসেন!

কোরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেন,

 

قُلْ يٰعِبَادِىَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلٰىٓ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُۥ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

বলুন, হে আমার বান্দাগন যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সমস্ত গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

(সূরা আয-যুমার- ৫৩)

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন- কিছু লোক অন্যায়ভাবে বহু লোককে হত্যা করেছিলো। কিছু লোক ব্যভিচার করেছিল। তারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে আরজ করলো- “আপনি যে ধর্মের দাওয়াত দেন, তা তো খুবই উত্তম। কিন্তু আমরা তো অনেক জঘন্য কাজ করে ফেলেছি। আমরা যদি ইসলাম গ্রহণ করি তাহলে আল্লাহ্‌ কি আমাদের তাওবা কবুল করবেন? এ সময় উপড়ের আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। (সহী বুখারি- ৪৮১০, সহী মুসলিম- ১২২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

 

يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوا تُوبُوٓا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسٰى رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا الْأَنْهٰرُ يَوْمَ لَا يُخْزِى اللَّهُ النَّبِىَّ وَالَّذِينَ ءَامَنُوا مَعَهُۥ نُورُهُمْ يَسْعٰى بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمٰنِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَآ أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَآ إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।

(সূরা আত-তাহরীমঃ ৮)

 

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,

 

وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা করো তাহলেই সফলতা পাবে।

(সূরা নূর : ৩১)

 

হাদিসে এসেছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

কোন বান্দা যখন তওবা করে তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা ঐ ব্যক্তির চেয়ে বেশি খুশি হন যে তার উটের পিঠে চড়ে কোনো মরুভূমি অতিক্রম করছিল। হঠাৎ উটটি তার কাছ থেকে পালিয়ে যায়। তার খাদ্য ও পানীয় সবই ওটার পিঠে থাকে। বহু খোঁজাখুঁজির পর নিরাশ হয়ে সে একটি গাছের ছায়ায় শুয়ে পড়ে। হঠাৎ দেখে, উটটি তার সামনে দাঁড়ানো। তখন সে উটটির লাগাম ধরে প্রচণ্ড খুশিতে বলে ওঠে, হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা আর আমি তোমার প্রভু। সীমাহীন খুশির কারণে সে ভুল করে ফেলে। (সহী মুসলিম)

 

দেখুন ভাই! আল্লাহ আমাদেরকে কত ভালোবাসেন। গুনাহ করার পরও বান্দা যখন তওবা করে তখন আল্লাহ কী পরিমাণ খুশি হন। আল্লাহু আকবার

  

আসলে ভাই আমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে চিনতেই পারিনি। তিনি যে আমাদেরকে কত ভালোবাসেন, আমরা তা বুঝতেই পারিনি। তাই আল্লাহকে চেনার জন্য আমাদেরকে আল্লাহর নাম এবং সিফাতগুলো জানতে হবে। এ ব্যাপারে কিতাবাদি আছে। অনলাইনে লেকচারও আছে। এ বিষয়ে আমার প্রিয় একজন শায়েখের নাম উস্তাদ টিম হাম্বল হাফিজাহুল্লাহ। আসমা ওয়াস সিফাতের ওপর শায়েখের বেশ কিছু লেকচার আছে। ওই লেকচার সিরিজগুলো দিয়ে আমি নিজে খুবই উপকৃত হয়েছি। আরেকজন বাংলাদেশি শায়েখ আছেন, ইউকেতে থাকেন। শায়েখ হাসান আলী। তাঁর লেকচারগুলোও শুনতে পারেন। যেসব ভাই আরবি বুঝেন না তারা এ লেকচারগুলো শুনতে পারেন। উস্তাদ টিম হাম্বল হাফিজাহুল্লাহর লেকচার থেকে আমি আলহামদুলিল্লাহ অনেক কিছু শিখেছি।

লেকচারগুলোর লিংক,

“Explanation of the Beautiful Names Of Allah (Part 1) - ALLAH- By Ustadh Muhammad Tim Humble”

এই সিরিজে ৩৩ কি ৩৪ টি লেকচার আছে।

 “99 names of Allah - Lesson 01 Introduction to the names of Allah by Shaykh Hasan Ali”

এই সিরিজেও প্রায় ৩০ টার মত লেকচার আছে।

এক ভাইয়ের গল্প

একটি গল্প বলে আজকের ক্লাসটা শেষ করি। গল্পটা আমাদেরই এক ভাইয়ের। তিনি এক বার একটা ভিডিও দেখেছিলেন। ভিডিওটি ছিল কয়েকজন ফিদায়ী ভাইকে নিয়ে। ভিডিওটা  আমিও দেখেছি। ভিডিওটাতে দেখানো হয় যে, ওই ভাইদের মধ্যে এক ভাই আকাশে পরিষ্কার ‘আল্লাহ’ লেখা দেখতে পান। এতে ওই ভাইয়ের অন্তর ইতমিনান হয়ে যায় যে, আল্লাহ অবশ্যই কামিয়াবি দিবেন ইনশাআল্লাহ। তো আমাদের এই ভাই বলছিলেন, আমি যখন ভিডিওটা দেখি তখন আমার মনে হচ্ছিলো, আহ! আমিও যদি ওরকম কিছু একটা দেখতে পারতাম! কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল, কোথায় ওই ভাইয়েরা আর কোথায় আমি! যাক এরপর তিনি বিষয়টি ভুলে যান। এ ঘটনার প্রায় বছর খানেক পরের কথা। একদিন ওই ভাই আসরের সময় নিজ বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার আযকার পড়ছিলেন। হঠাৎ দেখতে পান, আসমানে এক টুকরো মেঘ, যা দেখতে ঠিক ‘আল্লাহ’ শব্দের মতো। ওটা দেখে ভাই  ভাবলেন, এটা মনে হয় আমার মনের কল্পনা মাত্র। তিনি ভাবলেন, আলিফটা তো বেশ দূরে দেখা যাচ্ছে। আর হা’টাও তত স্পষ্ট না। ওই ভাই বলেন, আমি মনে মনে এসব কথা ভাবছিলাম, হঠাৎ দেখি, এক টুকরো মেঘ যা দেখতে ঠিক আলিফের মতো লামের পাশে চলে এলো এবং হা’র  ভিতরে থাকা মেঘগুলো সরে গেল। এতে হা’র ভিতরটা একদম গোল হয়ে যায়। তখন আমার মনে হল, কেউ যেন আমার অন্তরে বলছে, তুমি না দেখতে চেয়েছিলে আজ আল্লাহ দেখিয়ে দিলেন!

বলুন তো ভাই, এই গল্পটি আমি কী উদ্দেশ্যে আপনাদেরকে শুনালাম?  

উপস্থিত এক ভাইঃ আল্লাহ তা‘আলার প্রতি আত্মবিশ্বাসী হওয়ার জন্য হতে পারে।

উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহঃ ঠিক বলেছেন ভাই। আমরা আসলে আল্লাহ সম্পর্কে খুব বেশি ভালো ধারণা করি না। আল্লাহ সম্পর্কে আমাদের ধারণা যেন অনেক বেশি উন্নত হয় এবং আরও সুন্দর হয়। ওই ভাই ভেবেছিলেন, আমি কি এটা দেখতে পারবো! তিনি  ভাবতেই পারেননি যে, আল্লাহ তার মনের ইচ্ছা পূর্ণ করবেন। তাই আমাদের উচিৎ, সব সময় আল্লাহর ব্যাপারে ভালো ধারণা রাখা। দোয়া করার সময় আল্লাহর কাছে বিরাট আশা নিয়ে দোয়া করা পাশাপাশি দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস রাখা।

আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। আমার কথায় যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে তা আমার পক্ষ থেকে, আর তাতে কল্যাণকর কিছু থাকলে তা একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।

وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله واصحابه اجمعين

وآخر دعوانا ان الحمد لله رب العالمين

 

------------------------

 

Balakot LOgo.png