এ লড়াইয়ে জিততে হবে
============================
প্রিয় আবদুল্লাহ,
তোমাদের উদ্দেশ্য করে লিখছি। বহুদিন হলো তোমরা গ্রাম ছেড়েছ এখানে আমরা কেমন আছি তোমরা কোনদিন খবর নিয়েছ'? নাওনি। আমরা আজ মানবেতর জীবন যাপন করছি। তোমরা হয়তো শুনে থাকবে, এনজিও নামের জঞ্জাল এখন আমাদের সমাজের প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে ঢুকে পড়েছে। তোমরা সেই যে গ্রাম ছেড়েছ, আর আসনি। আমার স্পষ্ট মনে পড়ে, তোমরাই কোরআন প্রতিযোগিতায় ফাষ্ট হতে। না'ত প্রতিযোগিতার পুরষ্কারও তোমাদের হাতে থাকতো। কেউ একটু উচ্চারণে ভুল করলে রাগে ফেটে পড়তে। বলতে কোরআন শুদ্ধ করে পড়তে পারনা আবার মুসলমানী পরিচয় দাও! তোমরা আজ আমা হতে বহু দূরে ৷ কেউ হাটহাজারী. পটিয়া আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে, “কেউ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয় গুলোতে অবস্থান করছো। ছোটতে তোমরা আডডা আর খেল-তামাশা পছন্দ করতে না। এখন কেমন লাগছে জানিনা ; হয়তো সাথীদের নিয়ে দিনগুলো ভালোয় যাচ্ছে, অথবা খারাপ! বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর যা অবস্থা, তাতে বিদ্যালয়ের বিষাক্ত আবহাওয়ায় নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারছনা মনে হচ্ছে। এরকম হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়৷ শুধু তোমরাই নয় তোমাদের মত যারা আমরা গ্রামে আছি তাদেরও কিন্তু প্রায় একই অবস্থা। অবশ্য তোমরা ভালো আছ। কেননা তোমরা এনজিও দের শিকার হওনা। গ্রামীণ ব্যাংকের হুমকী ধমকির মুখোমুখি হওনা। - তোমাদের চোখের সামনে তোমাদের মা বোনদের ইজ্জত লুষ্ঠিত হয়না। এসব কিন্তু আমাদের নিত্য দিনের দৃশ্য। তোমরা আর কতদিন এ গ্রামগুলোকে ছেড়ে থাকবে? তোমাদের মা বোনদের ইজ্জত হারাবে; আর তোমরা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কতদিন পড়ে থাকবে? এদের নির্লজ্জ তৎপরতার ইতিহাস কিছু কিছু মাসিক জাগো মুজাহিদে হয়তো পড়েছ।
প্রিয় আব্দুল্লাহ। দেশের আজ যে পরিস্থিতি তাতে বসে থাকার সময় নেই। সরকার বাহাদুর (?) "যেমন নাচায় তেমন নাচি পুতুলের কি দোষ"-এর মত কাজ করছে। আমরা দশ কোটি মুসলমান যেখানে সেখানে কাদিয়ানীরা অমুসলিম বলে ঘোষিত হচ্ছেনা, নাস্তিক মুরতাদদের শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছেনা, দেশবরেণ্য আলেম ওলামাদেরকে বিদ্রুপ করার পরেও তাদের বিচার হচ্ছেনা। সর্বপরি কুরআনের আয়াত নিয়ে ব্যংগুক্তি করার পরেও কোন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। সেখানে সরকার নীরব থাকা, তা কি.তার অযোগ্যতা, নাকি পশ্চিমাদের চালাকি') তা তোমরাও বলতে পারবে। আমাদের অলসতা এবং নিষ্ঠাহীনতার কারণেই কিন্তু আজ এমন পরিস্থিতি। নয়তো যারা ব্যবসার নাম করে এ দেশে এসে আমাদের সর্বস্ব লুটে নিয়ে গেল, তাদেরই আবার কোন লজ্জায় জায়গা দেই'।
আসলে ৭/৮ টাকার কেরোসিন ১৫/১৬ টাকায় ১০/১২ টাকার চাল ১৭/১৮ টাকা হওয়াটা যেমন “কিছুনা” গোছের হয়ে গেছে। এ সরকারের আমলেও নীতিহীনতা, অনাচার, খুন-খারাবী, রাহাজানি, ধর্মের উপর কটাক্ষ, কোরআন নিয়ে বিদ্রুপ, আলেম-ওলামা ও ধর্মীয় অনুভূতিকে নিয়ে সরকার তেমনি যেন “কিছুনা” ভাবতে চাচ্ছে!
তোমরা ইতিহাস পড়েছ, তোমরা আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবে। যুগে যুগে দেশে দেশে সরকারের অযোগ্যতার কারণে, অজস্র বিভীষিকার সসৃষ্টি হয়েছে, অবশেষে নে অরকারের পতন হয়েছে। দ্বীন ও কোরআনকে রক্ষা করতে গিয়ে তোমাদের মত দামাল ছেলেরা ফাঁসির কাষ্টরে ঝুলেছে, অকাতরে জানকে বিলিয়ে দিয়েছে।
প্রিয় আব্দুল্লাহ, তোমরা কি কোরআনের হেফাজতের জন্য আবার প্রাণদিতে প্রস্তুত হতে পারবেনা"? নিশ্চয় পারবে। বেহেস্ত তোমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তোমরা অধ্যায়ন-তপস্যা আপাতত স্থগিত রাখ। তোমাদের ঈমান, কোরআন ও নবীর ইজ্জত বাঁচলে, আবার অধ্যায়নে ব্রত হতে পারবে। এ শতাব্দির যুবকের খুনে জেহাদী স্পৃহা জাগ্রত হয়েছে, তাই বাতিল আর অপশক্তির মোকাবেলায় জেহাদের ময়দান তৈরী হচ্ছে। তোমরা জানো হয়তো, আমাদের অস্তিত্ত্ব মিটিয়ে দেবার জন্য অতি জঘন্য ষঢ়যন্ত্র চলছে। বেঈমানের দল, নরপণ্ড, লাল বানরের দালাল, চরম বিশ্বাস ঘাতকেরা এ দেশকে তাদের দাদা বাবুদের হাতে তুলে দেবারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নয়তো মীরজাফর, মীরসাদেক, ঘষেটি বেগমরা কেন এতো উঠে পড়ে লেগেছে? এর কারণ নিশ্চয় একটা আছে। তারা মনে করেছে, আমরা (মুসলমানরা) সবাই যন্ত্র মাফিক চালিত, আর তারা মানুষ। যন্ত্রের যেমন অনুভূতি নেই, উপলব্দি নেই, নেই কোন নিজস্ববোধ, আমাদেরকেও তারা তাই ভেবে যে কুকর্ম করছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে স্বচক্ষেই তারা দেখতে পাবে যে, প্রতিবাদের কন্ঠ কত নির্দয় ও কঠোর হয়।
প্রিয় আব্দুল্লাহ! তোমরা শুনে আনন্দিত হবে, আমরা বাংলার ৬৮ হাজার গ্রামবাসীর সকল মুসলমান জেহাদের জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। হয়তো তোমরা ভাবতে পারো, কার বিরুদ্ধে 'জেহাদ? বলছি শোন। “কোন সরকার নয়. সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে। যদি সরকারও অপশক্তির সহযাত্রী হয়, তাকে হটাতে হবে বৈকী।.হে আব্দুল্লাহ! তোমরা এলেই আমরা জেহাদে নামবো। নিজেদের অস্তিত্ব, কোরআনের ইজ্জত ও ধর্মকে রক্ষা করতেই হবে। এবারের লড়াই অস্তিত্বের লড়াই। মনে রাখবে, এ লড়াইয়ে জিততেই হবে। সকলেই চল মাঠে নামি। সবধরণের কু-গ্রহ পরিষ্কার করতে হবে। এতে দরকার হলে বুকের তাজা রক্তে আবার ওহুদ, বদর, খায়বর, হুনাইন, কারবালা, বালাকোটের প্রাংগনের মতো এ দেশের মাটি ও মুসলিম রক্তে লালে-লাল হবে। তবু আমাদের অস্তিত্ব মেটাতে দেবনা। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে। হে আবদুল্লাহ! তোমরা আর ঘুমিয়োনা। তোমাদের ডাকছি, তোমরা প্রস্তুত হয়ে ঝড়ের বেগে ছুটে আসো। আমরা তোমাদের পথ চেয়ে আছি।
ইতি
তোমাদের সহযাত্রী
নাছির বিন আছগার