JustPaste.it

আমার দেশের চালচিত্রঃ

 

জাতির ভাগ্যাকাশে মহা দুর্যোগের ঘনঘটাঃ কাণ্ডারী হুঁশিয়ার!

–মুহাম্মাদ ফারূক হুসাইন খান

=================================================

 

        এ সবুজ শ্যামল এই দেশ, বাংলাদেশ। চীর শান্তির এই দেশ, বাংলাদেশ। হাজার বছরের মুসলমানদের বাসভূমি এই দেশ বাংলাদেশ। ১০ কোটি মুসলমানের প্রাণের চেয়েও প্রিয় দেশ আজকের এই বাংলাদেশ। পীর, আউলিয়া, গাউছ, কুতুবের দেশ এই বাংলাদেশ। লাখো লাখো মসজিদ, মাদ্রাসার দেশ এই দেশ। লাখো নায়েবে রাসূল ﷺ -এর পদস্পর্শে ধন্য এ দেশ। দেশের আনাচে-কানাচে, গ্রামে-গঞ্জে, শহরে বন্দরে সর্বত্র থেকে প্রতিদিন লাখো মুয়াজ্জিন উদাত্ত চিত্তে ঘোষণা করে “আল্লাহু আকবর-আল্লাহ মহান।” লাখো মসজিদে হাজির হয়ে কোটি কোটি মুসলমান প্রতিদিন আল্লাহ্'র দরবারে কৃতজ্ঞতায় শির অবণত করে, সেজদায় লুটিয়ে পড়ে।

 

        সেই চীর শান্তির দেশে, কোটি কোটি মুসলমানের মাতৃভূমিতে আজ প্রকাশ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে, ঘরে ঘরে অশান্তির আগুন জ্বালানো হচ্ছে। মানুষের ঈমান-আকীদা ও ধর্ম বিশ্বাসের ওপর হানা হচ্ছে ভয়ঙ্কর আঘাত। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিকসহ সকল সেক্টরে ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত হানা হচ্ছে। সরকারী প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অঙ্গণ, প্রচার মিডিয়া সর্বত্র ঘাপটি মেরে থাকা নব্য আবু জাহেল, আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়রা সোচ্চার হয়েছে, মুখোশ ফেলে দিয়ে স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ইসলাম বিদ্বেষী মোনাফেকরা জেকে বসে আছে। এরা মুসলিম জনগণের পয়সায় লালিত পালিত হয়েও মগজ ধোলাই করে ঝাকে ঝাকে যুবককে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে। দেশের একটি রাজনৈতিক কুচক্রী মহল দেশে কৌশলে গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে আগ্রাসী বহিশক্তিকে ডেকে এনে মুসলমানদের খতম করার পথ সৃষ্টির জন্য কোমর বেধে নেমেছে। দেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক সকল অঙ্গনে চলছে চরম অরাজকতা। আর এই অরাজকতা সৃষ্টিকারী নব্য ইসলাম বিরোধী মোনাফেক গোষ্ঠী এদেশ থেকে ইসলামকে সমূলে উৎখাত করার জন্য সর্ব শক্তি নিয়োগ করেছে।

 

        দেশের স্বাধীনতা লাভের পরক্ষণেই দস্যু বেনিয়া জাতের বংশধররা পুনরায় এদেশের মানুষের ঈমান আকিদা ধর্ম বিশ্বাস, ধন-সম্পদ, ইজ্জত আব্রু লুট করে নেয়ার জন্য সেবার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এনজিও নামে এদেশে এসেছে। ওরা সুকৌশলে এদেশের রাজনীতি, সরকারের নীতি-নির্ধারণ, সংস্কৃতি চর্চায় হস্তক্ষেপ করে ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। অর্থের প্রলােভন দেখিয়ে এদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি প্রতিটি সেক্টরে ইসলাম বিদ্বেষী নিজেদের তাবেদার সৃষ্টি করছে। পাশ্চাত্যের ভোগবাদী বিলাসী জীবন যাত্রার প্রলােভন দেখিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষকে ধর্মহীন ও নৈতিকতা বর্জিত করে গড়ে তুলতে নিজেরাই আত্মনিয়োগ করেছে।

 

        আন্তর্জাতিক ইসলাম বিরোধী চক্রের এদেশীয় সেবাদাসরা লেখনীর মাধ্যমে অহর্নিশ ইসলামী মূল্যবোধের ওপর আঘাত হেনে চলছে। তাসলিমা নাসরিন, আহমেদ শরীফ, শামসুর রহমান, মাজহারুল ইসলাম, কবির চৌধুরী, ফয়েজ আহমদ, সুফিয়া কামাল, জাহানারা ইমাম, সাইদুর রহমান, মালেকা বেগম প্রমুখ নাস্তিক চক্র পত্র-পত্রিকা, সভা-সমিতি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অহরহ ইসলামের বিরুদ্ধে বিষাক্ত ছোবল হেনে চলছে। “মৌলবাদ খতম কর, মসজিদ মাদ্রাসা বন্ধ কর” উঠতে বসতে এই জিকির করে চলছে। বছরের শুরুতে ‘সপ্তম জাতীয় কবিতা উৎসবে’ সুফিয়া খাতুন আহবান জানিয়েছিল, “আসুন, দশ কোটি মানুষ এক হয়ে এক কোটি মোল্লা খতম করি।” এই সেদিন -২৪ শে সেপ্টেম্বর টিএসসিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহা সমাবেশে এক নব্য নাস্তিক প্রফেসর সাইদুর রহমান ঘোষণা করলেন, “এদেশের মাদ্রাসাগুলােতে কোন মানুষ তৈরী হয় না। শিক্ষাঙ্গণ থেকে ধর্মকে মুক্ত করতে হবে। মক্তব মাদ্রাসা আর ধর্ম দেশকে ডুবাচ্ছে। সুতরাং এ গুলােকে বন্ধ করতেই হবে।”

 

        ব্যাঙের ছাতার ন্যায় এদশে নিত্য নতুন পত্রিকা গজাচ্ছে। বিদেশী প্রভুদের নিয়ন্ত্রিত এসব পত্রিকা ইসলামকে মৌলবাদ প্রমাণ করা এবং এদেশের মানুষকে এই মৌলবাদ ঠেকানো, খতম করা, নির্মূল করার আহবান জানানোর একমাত্র ঠিকাদারী নিয়েছে। মনুষ্যত্ব বিবর্জিত একদল অসৎ পত্রিকা, ব্যবসায়ী মানবতা, নৈতিকতা ও ধর্মকে উপেক্ষা করে নগ্ন নারীদেহের ছবি ও স্নায়ু উত্তেজক রগরগা কাহিনীকে পূজি করে অসহায় মানুষের পকেটের পয়সা লুটে নেয়ার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অশ্লিল পত্র-পত্রিকার সয়লাবে আজ কিশোর ও যুব সমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের মারাত্মক শিকারে পরিণত হয়েছে। উদ্দাম বাধাহীন গতিতে সিনেমা, টেলিভিশন ভিসিয়ারের পর্ণোগ্রাফী ও অশ্লিল ফ্লিম প্রদর্শিত হচ্ছে তো হচ্ছেই। ইসলামী মূল্যবোধকে চূড়ান্ত ভাবে ধ্বংস করার জন্য বিদেশী নগ্ন সংস্কৃতিকে অবাধে এদেশে আমদানী করা হচ্ছে এবং নতুন প্রজন্মকে তার চর্চায় উৎসাহ দেয়া হচ্ছে সর্বাত্মকভাবে।

 

        দেশে রাসূল ﷺ এর সুন্নতের অনুসারী দাড়ী টুপিওয়ালা মুসলমানদের ওপর সর্বত্র হামলা চালানো হচ্ছে। এসব মুসলমান এখন ঘরের বাইরে বের হলেই আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। মুসলামনদের পকেটের টাকায় যে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলে সে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলমান ছাত্রদের কোন ধর্মীয় জ্ঞান, নৈতিকতা ও চারিত্রিক শিক্ষা প্রদানকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হচ্ছে, তাদের মনে ভোগবাদী ও বিলাসী চেতনাকে গেঁথে দেয়া হচ্ছে, দাড়ি রেখে, টুপি পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সিংহভাগ ব্যয় মুসলমান জনগণের পকেট থেকে নেয়া হলেও টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ ইসলামী সংস্কৃতি, আদর্শ প্রচার করাতো দূরের কথা ইসলাম শব্দটা প্রচার করতেও নারাজ। অথচ মুসলামনদের দাড়ি, টুপি আচার-আচরণ ও ইসলামী মূল্যবোধকে কটাক্ষ করে অনুষ্ঠান প্রচার করতে এরা ষোল আনা পারদর্শী।

 

        দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে আর এক ফিতনা-কাদিয়ানী সমস্যা। ওরা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, বিকৃত ব্যাখ্যাসহ ভ্রান্ত কুরআন শরীফ প্রকাশ করছে। মসজিদ নির্মাণ করে তাতে ডিস এন্টিনা লাগানো, মসজিদে ব্লু-ফ্লিম প্রদর্শন করার ন্যায় স্পর্ধা দেখাচ্ছে। দেশের মুসলমানরা নিজের গাঁটের টাকা খরচ করেও আল্লাহর ইবাদত হজ্জ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারছে না। তাদের টাকা নিয়েও হচ্ছে দুর্নীতি। দুনীতিবাজদের কারণে তাদের অমানবিক কষ্ট স্বীকার করে হজ্জ পালন করতে হয়েছে চলতি বছর। অথচ দুনীতিবাজরা বহাল শরিয়তে বিনা কৈফিয়তে বিনা বিচারে দিন গুজরান করছে।

 

        ওদিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের একটি মহল এদেশের ভয়াবহ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা আবিষ্কার করে কেচ্ছা কাহিনী রটিয়ে এদেশের সংখ্যালঘুদের সম্প্রদায়িক উস্কানী দিচ্ছে। এদের সাথে যোগ হয়েছে এদেশের অসাম্প্রদায়িকতার প্রবাদ পুরুষ/কন্যা তাসলিমা নাসরিন এণ্ড কোম্পানী। বিদেশী প্রভূদের উক্কানীতে এদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত স্বনামধন্য নেতা সি, আর দত্ত গংরাও কম তোলপাড় করছেন না। প্রশাসনের রহস্য জনক নিরবতার সুযোগে এই নেতা সাম্প্রদায়িকতার দুর্গন্ধ ছড়িয়েই যাচ্ছে। বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করলে এবং সংবিধান থেকে ‘বিসমিল্লাহ’ অপসারণ না করলে উনি ৩০ লক্ষ লাঠিয়াল নিয়ে হেস্তনেস্ত করার হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন।

 

        অরাজকতার এই সুযোগে রাজনৈতিক অঙ্গনের মতলববাজরাও চুপচাপ নেই। ওরা দেশে আমরা বাঙ্গালী না বাংলাদেশী এই অনর্থক বিতর্ক সৃষ্টি করছে। কে রাজাকার, কে মুক্তি যোদ্ধা, কে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি আর কে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি এই অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের ঝড় তুলে জাতিকে দু’ভাগে বিভক্ত করে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দাড়িওয়ালা, টুপি ওয়ালাদের স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের খতম-নির্মূল করার সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন চালানো হচ্ছে। এদের লালিত ছাত্র সংগঠন, সংস্কৃতিক সংগঠন ইসলামী সংস্কৃতিকে বিদায় করে দিয়ে সে স্থলে বাঙ্গালী সংস্কৃতির নামে জাহেলিয়াত যুগের নষ্টা সংস্কৃতির ন্যায় মঙ্গল প্রদীপ ও মূর্তি সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠিত জোর প্রোপাগাণ্ডায় লিপ্ত হয়েছে। সভা-সেমিনার ও অনুষ্ঠান করে এসব জাহেলিয়াতের গুণ-কীর্তন গাওয়া হচ্ছে।

 

        অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার এই পথ ধরে। ইসলামের ওপর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত ছোবল হানার পায়তারা চলছে। বিদেশী মুরব্বীদের হারিয়ে এতিম হয়ে যাওয়া নাস্তিক। কমুনিষ্টরা হল সর্বশেষ এই হামলার ৭ উদ্যোক্তা। এদের সাথে হাত মিলিয়েছে তাবৎ ইসলাম বিদ্বেষী ও সেকুলারচক্র। ওনাদের দাবী হল এদেশে ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। স্পর্ধাই বটে! যে দেশে শতকরা ৯০ জন মানুষ মুসলমান সে দেশের গুটি কতেক বখাটে রাজনীতিক ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য গলাবাজী করার সাহস পাচ্ছে। আর এটা করতে পারলে ওদের কাঙ্খিত সাফল্য অর্জিত হবে। ইসলামী রাজনীতি একবার নিষিদ্ধ করতে পারলে ওরা ইসলামকে খৃস্টানদের চার্চের ন্যায় মসজিদের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ করতে পারবে। সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসন থেকে সকল নৈতিকতাকে দূর করে দিয়ে ওদের স্বেচ্ছাচার ও লুটপাটতন্ত্র আরও মজবুত করে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে ওদের শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠকে অনায়াসে স্তব্ধ করতে পারবে। সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ইনসাফের শেষ অস্তিত্বটুকু মুছে ফেলা যাবে। রাজনীতি ইসলামের একটি অন্যতম অঙ্গ। কোন সমাজে সার্বিকভাবে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। ইসলামী প্রশাসন ব্যতীত ইসলামী সংস্কৃতি, শিক্ষার স্বান্ত্র রক্ষা, অর্থনীতির সুসম বন্টন, সমাজ থেকে দুনীতি ও অপরাধের মূলোচ্ছেদ সম্ভব নয়। এইসব নব্য আবু জাহেলরা ভাল ভাবেই জানে এবং তা যে তাদের স্বার্থসিদ্ধির পথে প্রতিবন্ধক বলেই তারা মক্কার আবু জাহেলের সুরে সুর মিলিয়ে দাবী জানাচ্ছে, “ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ কর।”

 

        এসব আলামত কোন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নির্দেশ করছে না। এসব আলামত এদেশের ইসলাম ও মুসলমানদের ভয়াবহ বিপর্যয়ের আলামত। এদেশ থেকে ইসলামের অস্তিত্ব সমূলে মিটিয়ে দেয়ার জন্যই একের পর এক ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত হানা হচ্ছে। মানুষের মন থেকে মুসলিম চেতনাকে হাইজ্যাক করার জন্য সহ-শিক্ষা ব্যবস্থা, নৈতকিতা বর্জিত শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন, বিদেশী ও অশ্লিল সংস্কৃতির অবাধ চর্চায় উৎসাহ যোগান, ফ্যাশনের নামে প্রগতি ও নারী স্বাধীনতার নামে নারী সমাজকে ভোগ্য পণ্যে পরিণত করা ও তাদের পর্দা প্রথাকে উপেক্ষা করতে উৎসাহ দান করা হচ্ছে। যুবক ও কিশোরদের চরিত্রকে ধ্বংস করার জন্য পতিতালয়, বার, নাইট ক্লাব, মাদক সেবন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। নাস্তিক লেখক/সাহিত্যিকরা ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত হেনে চলছে, মুসলমানদের অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেয়া হচ্ছে, তবুও প্রশাসন তাদের বিচার করছে না। কাদিয়ানীরা ইসলামকে বিকৃত করে চলছে, তাদের তৎপরতা নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের কোন মাথাব্যাথা নেই। দাড়ি, টুপিওয়ালা মুসলমানদের নিয়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেই চলছে এ ব্যাপারেও সরকার নির্বিকার।

 

         ধার্মিক মুসলমানদের মাথায় টুপি থাকার জন্য, মুখে দাড়ি থাকার জন্য রাস্তা-ঘাটে ইসলামের শত্রুদের হাতে অপদস্ত হতে তাদের নিরাপত্তার জন্য বা অপরাধীদের দমন করার জন্য কোন পদক্ষেপ সরকার নিচ্ছে না। সি, আর, দত্তরা সরকারের নাকের ডগার ওপর থেকে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়েই যাচ্ছে আর মুসলমানদের হুমকী ধামকী দিয়ে যাচ্ছে। বিদেশী এনজিও ও মিশনারীর ছদ্মবেশে এদেশে আগত আন্তর্জাতিক লুটেরারা আমাদের ঈমান আকিদা নিয়ে কুকুর-শিয়ালের ন্যায় টানা হেছড়া শুরু করেছে। তাদের তৎপরতাও সরকারের নিরবতার সুযোগে বাধাহীন গতিতে চলছে তো চলছেই। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক মহলও আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার খায়েশ ব্যাক্ত করছে, আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে নাকগলাচ্ছে, আমাদের রাজনৈতিক ব্যাপারেও ভয়ঙ্কর উস্কানী দিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। এদেশে ইসলামী চেতনার বিকাশকে সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ করার জন্য সরকারী উদ্যোগে পরিচালিত ইসলামী ফাউণ্ডেশন থেকে ভবিষ্যতে যাতে আর কোন ইসলামী বই পত্র প্রকাশিত না হয় সে জন্যে এক উদ্ভট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ এদেশের সরকারী খরচে পরিচালিত সেকুলার পণ্ডিতদের ঘাটি হিসেবে পরিচিত অন্য প্রকাশনা সংস্থাটি বহাল তবিয়তেই সাহিত্য ও সাহিত্যিকের সেবা করে যাচ্ছে।

 

        মূলত প্রশাসন ও সমাজে, সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রীয় অঙ্গণে স্বার্থপর, মানবতা বর্জিত ও ধর্মহীন লোকদের পাল্লা প্রতিনিয়ত ভারী হয়ে যাওয়ায় তারা ভবিষ্যত ঘৃর্ণ স্বার্থ উদ্ধারের এক মাত্র বাধা ইসলামকে যে কোন মূল্যে ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সাংস্কৃতিক ও আদর্শগত বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সহজ সরল মানুষের ধর্মীয় চেতনাকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এভাবে মানুষের মগজ ধোলাই করে ওরা এদেশে, নব্য জাহিলিয়াতকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার, এই দেশে ৪০ লক্ষাধিক আলেম, দ্বীন ইসলামের প্রজ্জলিত মশাল অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত থাকতেও ইসলামের বিরুদ্ধে কু-চক্রীরা লাগামহীন ভাবে আঘাত হেনেই চলছে। এদেশে প্রতিনিয়ত মাদ্রাসাগুলােতে আলেমের সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষী মোনাফেকদের সংখ্যা তার চেয়েও বেশী এবং দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আহমদ শরীফ-তসলিমা নাসরিন গংদের উৎপাতও খুব বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

        এদেশে অশ্লিলতা, পর্দাহীনতা, চরিত্রহীনতাসহ সকল সামাজিক অপরাধ কেবল বেড়েই চলছে। টুপি, দাড়িওয়ালা লােকের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তার চেয়ে অধিক টুপি, দাড়িওয়ালা লােক অপদস্থ হয়েছে, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েরা পর্দা পালন করে যাওয়ায় শিক্ষকদের কাছে তিরস্কৃত হয়েছে। দাড়ি রাখলে চাকুরী হারাবার আশঙ্কা দেখা দেয়ায়, নামাজ পড়লে মৌলবাদী আখ্যা পেয়ে বসের সন্দেহের দৃষ্টিতে পতিত হওয়ার বা তা গোপন অপরাধ বলে নথিভূক্ত হওয়ার ভয়ে চাকুরীজীবীরা ইচ্ছা সত্ত্বেও দাড়ি রাখা ও নিয়মিত নামাজ পড়তে পারছে না — এমন ঘটনাও এ সমাজে কম ঘটছেনা। অশ্লিল সিনেমার ফ্লিম নির্মাণ, ব্লু-ফ্লিম আমদানী ও প্রদর্শনী, মাদকাশক্তি, মাস্তানী, অপহরণ, ছিনতাই, সন্ত্রাস, যৌতুকের অভিশাপ দিন দিন কেবল বেড়েই চলছে।

 

        দেশে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা এমন পর্যায়ে উপনিত যে কোন সময় জাতির চরম বিপর্যয় ঘটে যাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। এনজিও, কাদিয়ানী, সেকুলার, কমুনিষ্ট, বাঙ্গালী সংস্কৃতিওয়ালা, স্বাধীনতার স্বপক্ষ দাবীদার, বাঙালী জাতীয়তার দাবীদার, উপমহাদেশ পুনরুজ্জীবন আন্দোলনকারী, হিন্দু সাম্প্রদায়িক সি, আর দত্ত গং, নাস্তিক চক্র, নারী আন্দোলনকারী, নির্মূল-খতমের প্রবক্তারা, বঙ্গভূমি ওয়ালারা ইত্যাদি সকলের টার্গেট ইসলাম। সকলেরই তৎপরতার মুল উদ্দেশ্য এদেশ থেকে যে করে হোক ইসলামকে উৎখাত করা। উল্লেখ্য, আমাদের প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্রটির নিকটও কিন্তু বাংলাদেশ শত্রু নয়, শত্রু বাংলাদেশের সচেতন মুসলমানরা। কেননা, বাংলাদেশ থেকে এ সচেতন মুসলমানদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেলে সংখ্যালঘুরা এবং মুসলিম নামধারী তাদের সেবাদাসরা স্বেচ্ছায় ভারতের সাথে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি ঘটাবে। সুতরাং তারা এদেশীয় সেবাদাসদের সার্বিক সহযোগিতা ও উস্কানী প্রদান করে দেশে একের পর এক অস্থিরতা ও অব্রাজকতা সৃষ্টি করাচ্ছে। ঐসব রাষ্ট্র ও ইসলাম বিরোধী চক্র যাতে অরাজকন্যা ও গৃহযুদ্ধের সৃষ্টি করে ক্ষমতায় যেতে পারে সে পটভূমি সৃষ্টির জন্য খতম-নির্মূলের সন্ত্রাসী রাজনীতিকে উস্কে দেয়া হচ্ছে।

 

        এসব চক্র অরাজকতার সুযোগ নিয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তা নিয়ে যে অদূর ভবিষ্যতে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করবে না বা এরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের খুটি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে। ইতিহাস সাক্ষী মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, ইরান, মিশর, ইরাক, সিরিয়ায় বিভিন্ন সময়ে দেশের স্বার্থপর ক্ষমতালােলুপ চক্র, নাস্তিক ও কমুনিস্ট চক্র যখনই এমনি অরাজকতা ও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তখন হয় তারা ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার জন্য বিদেশী প্রভূদের ডেকে এনেছে অথবা বিদেশী শক্তির খুটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আর এরা একবার কোন প্রকারে ক্ষমতা দখল করতে পারলেই প্রথম আঘাতেই মসজিদ, মাদ্রাসা ধ্বংস করে ফেলেছে, লাখো লাখো আলেমকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করেছে।

 

        নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়ে জুলুমের সকল প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭২-৭৫ মেয়াদের সেকুলার শাসনামলের জ্বলন্ত ইতিহাস তো আমাদের সামনেই রয়েছে। ঐ সময় কত মাদ্রাসাকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সকল ইসলামী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলকে সেকথা হয়তো এদেশের মুসলমানরা ভুলে যায়নি। এসব চক্র যদি আবার ক্ষমতার মুখ দেখতে পায় তবে যে তাদের চরিত্রের প্রমাণ এবং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না তার গ্যারান্টি কে দিবে?

 

        আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়ায় রাজনৈতিক মতলববাজরা বিদেশী প্রভুদের মদদে স্বদেশে দীর্ঘদিন যাবৎ অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিল। কিন্তু জনগণের বিবেক আলেম সমাজ এর সূচনালগ্নে তাদের চক্রান্তের স্বরূপ উন্মোচন করতে পারেননি, পারেননি তৎক্ষণাৎ তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। তাদের এই অদূরদর্শীতার কারণে চক্রান্তকারীরা চূড়ান্ত আঘাত হানার পরই কেবল তাদের টনক নড়ে এবং খেসারত স্বরূপ মধ্য এশিয়ায় দীর্ঘ সত্তর বছর কমুনিজমের ভূত সওয়ার হয়ে থাকে, আফগানদের দীর্ঘ ১৪ বছর রক্তক্ষয়ী লড়াই চালিয়ে কমুনিজমকে খেদাতে হয়েছে। অথচ এসব চক্রান্ত অঙ্কুরে বিনাশ করলে চরম মূল্য দিতে হতো না। তাদের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, মুসলিম অধ্যুষিত হওয়া সত্ত্বেও সিরিয়া, ইরাক, তুরস্ক, মিশর, লিবিয়া, সৌদি আরব প্রভৃতি দেশে সময়ের সঠিক পদক্ষেপের অভাবে বিদেশী শক্তি এসব দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলে স্বার্থ উদ্ধার করেছে বারংবার। দুঃখের বিষয়, ইতিহাস আমাদের শিক্ষা নেয়ার জন্য রচিত হলেও আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেই না।

 

        কুচক্রী রাজনৈতিক মতলববাজদের চরিত্র, তাদের কার্যক্রমের পরিণতি এবং সময়ানুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তারা যে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে ইতিহাস তা বার বার প্রমাণ করে দেখালেও আমাদের চৈতন্যের উদয় হয় না। আমাদের বুঝতে হবে, দেশে একই সাথে সংস্কৃতি, শিক্ষা, রাজনীতি, প্রচার মাধ্যম, শিল্প, সাহিত্য কলা প্রভৃতি সকল অঙ্গন থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে এভাবে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করার উদ্দেশ্য কি। ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষকদের সংখ্যা এবং তাদের অনুচরদের পরিধি যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের সাথে যদি বিদেশী শক্তি হাত মেলায় তবে এদেশের ইসলাম ও মুসলমানদের পরিণতি আফগানিস্তান বা বসনিয়ার চেয়ে কি একটুও কম ভয়ঙ্কর হবে? এখন প্রকাশ্য রাজপথে দাড়ি, টুপিওয়ালাদের গণপিটুনি দেয়া হচ্ছে, তখন যে দাড়ি, টুপিওয়ালাদের মৌলবাদী আখ্যা দিয়ে গণহত্যা চালানো হবে। তার কি কোন গ্যারান্টি আছে? কিন্তু আরও অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হল, কুচক্রীরা তাদের ষড়যন্ত্র সফল করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ময়দানে আবির্ভূত হয়েছে, অথচ সমাজের বিবেক, ইসলামের সেবক আলেমগণের শিবির থেকে এই ষড়যন্ত্র রুখার জন্য কোন সময় উপযোগী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। কাদিয়ানী ফিতনা, এনজিও ফিতনা, নাস্তিক-কমুনিষ্ট-সেকুলার চক্রের ফিতনা ক্রমান্বয়ে ভয়ঙ্কররূপ ধারণ করছে অথচ বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ ছাড়া এর প্রতিকারে কোন সমন্বিত ও সাহসী উদ্যোগ নিচ্ছে না।

 

        জাতির অগ্রগতির স্বার্থে সচেতন মুসলমানদের ঐক্যের সূত্রে আবদ্ধ করতে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। মাদ্রাসা, মসজিদ, দাওয়াত, গবেষণা, পাঠাগার, সাহিত্য চর্চা, সংস্কৃতি চর্চা প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসরে সচেতন মুসলমানরা বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অথচ জাতির অস্তিত্ব ও স্বার্থ রক্ষার জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ করা বা হওয়ার মত অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপটি গ্রহণ করার মত কোন তৎপরতা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। বাগদাদ, স্পেন, মধ্য এশিয়া বা যে কোন মুসলিম শক্তির পতনের ইতিহাস খুঁজে দেখলে দেখা যায়, পতন যুগে মুসলমানরা কখনোই ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। তারা ইসলামের সেবা করার উদ্দেশ্যে অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, গবেষণাকেন্দ্র, সাহিত্য মজলিস ও বিভিন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলেও ইসলামী বিধান অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে কেবল বিভিন্ন মত ও পন্থা আবিষ্কার করেছে। অধিকাংশ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিই নিজের মতকে নির্ভুল এবং একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ বলে বিশ্বাস করেছে। অপরের মতামত ভ্রান্ত মনে করে। তার বা সে সংগঠনের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেছে। ফলে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণের ন্যায় তাদের সমর্থকদের মধ্যেও হানাহানি, শত্রুতা ছাড়িয়ে পড়ে। আমাদের জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে বিপর্যয়ের সতর্ক সাইরেন যখন বেজেই বিদ্বেষ, চলছে, তখনও দেখা যায় আমাদের সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন করেও ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে না। এক সংগঠনের নেতা, কমীরা অদৃশ্য প্রতিযোগিতা, বিদ্বেষের কারণে অন্য সংগঠনের নেতা কর্মীদের বন্ধু বলে ভাবতে পারছেন না। অথচ সকলেরই উদ্দেশ্য ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রতিষ্ঠা করা।

 

        ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, আর কতবার ঘটবে? আর কতবার আমরা অপদস্ত, লাঞ্চিত হব? জাতি আজ ভয়ঙ্কর সঙ্কটের সম্মুখীন, জাতির ভাগ্যকাশে মহা দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। এ মহাবিপদ, মহা সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে হলে আর সময়ক্ষেপন না করে আমাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। আমরা আর অদূরদর্শী হয়ে মার খেতে চাই না। আমরা বীরের জাতি, অন্যায়, জুলুম নীরবে সহ্য করার জাতি আমরা নই। আমরা বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হওয়ার জাতি। আমরা আর মুখ বুঝে মার খেতে চাই না, আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে কুচক্রীরা আরও নর্দন কুর্দন করুক আমরা তাদের সে সুযোেগ আর দিতে ইচ্ছুক নই। জাতির অনৈক্য, অরাজকতার কারণে আর কত মূল্য আমাদের দিতে হবে আজকের ইসলাম ও দেশপ্রেমী তরুণ প্রজন্মের এটা একটা মস্তবড় প্রশ্ন। তারা জাতির বিবেক আলিমগণের কাছে আর কিছুই চায় না, চায় শুধুমাত্র তাদের নির্দেশনা। তারা চায় তাদের কাফেলার সামনে একজন। বিচক্ষণ সাহসী নেতা, পাহাড়সম অটল যার মনোবল। তারা সেই নেতৃত্বের আশা করে যে নেতৃবৃন্দের শহীদী খুনে রাজপথে বিপ্লবের আলপনা অঙ্কিত হবে, যাদের রক্তের স্রোতে, কালের গর্ভে ভেসে যাবে এদেশের সকল ও জাহেলিয়াতের আড্ডাখানা। এখনই শহীদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ নেতার আজ বড় প্রয়োজন।

 

*****