দেশে দেশে ইসলাম
থাই মুসলমানদের অতীত ও বর্তমান
নাসীম আরাফাত
==================================================
থাইল্যাণ্ডের রাজধানী ব্যাংকক দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এক অত্যাধুনিক শহর। প্রাচ্য মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তথা বিশ্বজুড়ে তার সুনাম সুখ্যাতি। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ছয়টি রাষ্ট্র মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ব্রুনাই, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যাণ্ডকে একত্রে এশিয়ান বলা এছাড়া কম্পোডিয়া, ভিয়েতনাম, লাওসও দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত। পৃথিবীর প্রসিদ্ধ চার ধর্ম হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান অনুসারীরা এশিয়ানে বাস করলেও সামগ্রিক ভাবে মুসলমানদের সংখ্যাই বেশী। এশিয়ানের ছয়টি রাষ্ট্রে গড়ে ৫৬% জন মুসলমান বাস করে। ইন্দোনেশিয়ায়, ৮৫%, ব্রুনাইয়ে ১০০%, মালেশিয়ায় ৫৭%, সিঙ্গাপুরে ১৭%, ফিলিপাইনে ৯% আর থাইল্যাণ্ডে ১০% জন মুসলমানের অধিবাস।
ইতিহাসের আলোকে থাইল্যাণ্ড
-----------------------------------------------------------------
১৯৩৯ সাল পর্যন্ত থাইল্যাণ্ডকে শ্যাম নামে অবহিত করা হতো। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা অত্র অঞ্চল শাসন করতো। সর্বপ্রথম ফিল্ড মার্শাল সোল গারাম একে থাই নামে অভিহিত করে। যার অর্থঃ আজাদ মানুষ। ১৩শ’ শতাব্দি থেকে থাইল্যাণ্ডে মুসলমানদের আগমন শুরু হয়। মালয়েশিয়ান মুসলমানরাও ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধার্থে থাইল্যাণ্ডে বসবাস শুরু করে। ১২৫৭-১৩৪৭ পর্যন্ত শোকেথাই রাজপরিবারের শাসনামলে থাইল্যাণ্ডে মুসলমানদের আগমনের নিদর্শন পাওয়া যায়। প্রাপ্ত প্রাচীন শিলালিপিতে “পসার” শব্দটি পাওয়া যায়। ফারসী ভাষায় যার অর্থ-বাজার। PREACHINGS OF ISLAM-এর গ্রন্থকার লিখেছেন, মালয়েশিয়ার সীমান্ত বরাবর থাইল্যাণ্ডে এখনো প্রাচীন মুসলমানদের ঐতিহ্য ও কীর্তি বিদ্যমান।
১৩৫০-১৭৪২ সাল পর্যন্ত আইয়োথিয়া রাজশাসনামলে থাই মুসলমানদের সংখ্যা ও শক্তি-সামর্থ বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া আরব, ইরান, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া তথা বহু দেশ থেকে মুসলমানরা থাইল্যাণ্ডে এসে বসবাস শুরু করে। মুসলমানরা সরকারী অফিস আদালতে চাকুরি শুরু করে। ব্যবসা বাণিজ্য ও কৃষি কাজেও তারা অনেক এগিয়ে যায়। ইরান থেকে আগত সাইখ আহমদ ও সাইখ সোলায়মানের প্রজন্মরা তখন বেশ প্রতিপত্তি অর্জন করে। তারা স্থানীয় অভিজাত ও সম্রান্ত পরিবারের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করে শাহী খান্দানের সাথে আত্মিয়তার সূত্রে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমান মালয়েশিয়ায় পেনাং অঞ্চলে তখন বহু মুসলমান বাস করতো। মালুক, ভিয়েতনাম, জাভা এবং ভারতের সাথে তখন থাই মুসলমানদের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক ছিলো। একারণে থাইল্যাণ্ডে মুসলমান আগমনের পথ অনেকটা সুগম হয়। মুসলিম শাসকবর্গের সাথেও তখন থাইল্যাণ্ডের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। সুফুরী সালতানাতের বাদশাহ শাহ সুলাইমান (১৬৬৫-১৬৭৪) আয়োথিয়ার রাজদরবারে বাণিজ্য কাফেলা প্রেরণ করেন। এবং থাই বাদশাহ বংগ নারায়ণকে ইসলাম এহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। থাই মুসলমানদের তখন BROTHES (পরদেশী) বলা হতো যা মূলত হিন্দিশব্দ PAROEST থেকে থাই ভাষায় প্রবেশ করেছে। ব্যাংককে অবস্থিত থাই জাতীয় যাদুঘরে রক্ষিত দিল্লীর সম্রাট আওরঙ্গজেবের ছবি সম্বলিত বই আজো দিল্লির সম্রাট ও আইয়োথিয়ান রাজার সুসম্পর্কের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
১৭৬৭ সালে বর্মীরা আইয়োথিয়া রাজ্যে আক্রমন চালালে মুসলমানরা প্রচণ্ড প্রতিরোধ গড়ে তোলে। থাই কম্বোডিয়ার মুসলমানরা জীবনের ঝুকি নিয়ে সশস্ত্র রণতরীগুলোর সুদক্ষ কাপ্তান হয়ে দেশ রক্ষার জিহাদে অবতীর্ণ হন।
১৭৮৬ সালে পাতানী অঞ্চলে বৌদ্ধ বাহিনীর আক্রমণে পর্যুদস্ত হাজার হাজার মুসলমানদের দাস বানিয়ে থাইল্যাণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করে। নিপীড়িত এই দাস মুসলমানদের দ্বারাই আজকের এই তিলোত্তমা শহর ব্যাংককের শোভা বৃদ্ধি করা হয়। আজো সেই নির্যাতিত মুসলমানদের উত্তরসূরীরা ব্যাংকক, আইয়োথিয়াহ থাইল্যাণ্ডের বিভিন্ন শহরে বাস করছে। শাহ মাকসীনের শাসনামলে মুসলমানদের নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। লঘু গুরু সকল অপরাধে মুসলমানদের মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র শাস্তি নির্ধারিত হয়। নও মুসলমানদের শিরোচ্ছেদ করা হয়। শাহ সোনিং খানের শাসনামলে মুসলমানদের মনে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। তখন ইরানী শাইখ আহমদ ও শাইখ সাঈদকে রাষ্ট্রের উচ্চপদে আসীন করা হয়। মুসলমানদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়। শিয়া সম্প্রদায় দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত অতি চতুরতার সাথে এ পদটি দখল করে রাখে। বাহরাহ, ইসমাইলিয়াহ, ইমামিয়াহ শিয়াদের এ তিনটি দলই থাইল্যাণ্ডে বাস করতো। তবে ইমামিয়ারাই ছিলো রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দারুন শক্তিশালী। ধীরে ধীরে এখন তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি কমে আসছে। ১৯৪৫ সালে সুন্নী মতাবলম্বী আলহাজ্ব শামসুদ্দীন মোস্তফা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে থাইল্যাণ্ডে ফিরে এলে সরকার তাঁকে মন্ত্রীত্বের পদ দান করেন।
থাই মুসলমানদের বর্তমান অবস্থা বর্তমানে
-----------------------------------------------------------------
৫২ লাখ মুসলমান থাইল্যাণ্ডে বাস করছে। যা থাই জনগণের ১০ %। সারা থাইল্যাণ্ডে মুসলমানদের বাস থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের চারটি প্রদেশেই মুসলমানদের জন সংখ্যা বেশী। সেখানে ৭৪ জন মুসলমান বাস করে। মুসলমানরাই এখন থাইল্যাণ্ডে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু জাতি। সারা দেশের আড়াই হাজার মসজিদের মধ্যে রাজধানী ব্যাংকক ও দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি প্রদেশেই এর অধিকাংশ অবস্থিত। থাই মুসলমানরা নিজেদের ইমান আকীদা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ধর্মাধীদের মাঝে নিজেদের স্বাতন্ত্র বজায় রাখছে। ইতিপূর্বে থাই মুসলমানদের আঞ্চলিক ভাষায় (মেহমান বা পর্যটক) বলা হতো। এখন সরকারী ভাবেই “থাই মুসলমান” শব্দটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
শিক্ষা দীক্ষা ও জীবন ধারা
-----------------------------------------------------------------
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মুসলিম শিও কিশোরদের জন্য ইসলামী পাঠ্য পুস্তক রচিত হলেও শিক্ষা দীক্ষায় থাই মুসলামনরা অনেক পিছিয়ে। ৮৩% জন মুসলমান অশিক্ষিত বা প্রাইমারী শিক্ষিত। তবে শিক্ষিতদের বিশেষতঃ আরব থেকে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করে যারা ফিরে আসে তাদের বিশেষ সম্মান ও শ্রদ্ধা রয়েছে থাই মুসলিম সমাজে।
সম্প্রতি পাকিস্তান ও ভারতের সাথে থাই ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক সম্প্রসারিত হলেও সাধারণ মুসলিম জনগণের জীবন যাত্রা একেবারে নিম্ন পর্যায়ের। বিশেষতঃ দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি মুসলিম প্রধান প্রদেশে মুসলমানদের অবস্থা বড়ই করুন। ৭৫% জন থাই মুসলমান কৃষক, ৯% সাধারণ ব্যবসায়ী। অধিকাংশ কৃষকরা ধান ও রাবারের চাষ করলেও সরকারী ভাবে তারা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। অনেকে গভীর সমুদ্র থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা অর্জন করে। সেখানেও বড় বড় সওদাগরদের মোকাবিলায় মুসলমানরা কোনঠাসা।
দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজনৈতিক অবস্থা
-----------------------------------------------------------------
১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ১২ জন মুসলমান থাই জাতীয় পার্লামেন্টে সদস্য নির্বাচিত হয়। তাদের ৭ জনই দক্ষিণাঞ্চল থেকে নির্বাচিত। অবশ্য ইতিপূর্বে দক্ষিণাঞ্চলের স্বাধীনতা আন্দোলন পুরোদমেই চলছিলো। এক পর্যায়ে তা সশস্ত্র জিহাদেরও রূপ নেয় এবং মুসলমান সংগঠন গুলো বহু শক্তিশালী হয়ে উঠে। ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অফ পাতানী; লিবারেশন ফন্ট অফ রিপাবলিক পাতানী, পাতানী ইউনাইটেড অর্গানাইজেশন তন্মধ্যে বিশেষভাবে উদ্দেখ যোগ্য। এ দল গুলোর অধিকাংশ সদস্যই শিক্ষিত, সচেতন ও মার্জিত যুবক – যারা রাষ্ট্রীয় অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার। দলগুলোর মতাদর্শ ভিন্ন থাকলেও থাইল্যাণ্ড থেকে দক্ষিণাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র কায়েমে তারা ছিলো ঐকমত্য। আন্দোলন চলাকালে মুসলিম বিশ্বথেকে পাতানী মুসলমানদের স্বাধীনতার স্বপক্ষে কোন সাড়া না পাওয়ায় ধীরে ধীরে সে দায়ী দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে সরকারও মুসলমানদের দাবি দাওয়া ও সমস্যা সমাধানের বাস্তব পদক্ষেপ নিতে থাকলে সশস্ত্র আন্দোলনের ধারা স্তিমিত হয়ে যায়।
ধর্মীয় স্বাধীনতা
-----------------------------------------------------------------
১৯৪৫ সালে এক সরকারী ফরমানে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়। সরকারী উদ্যোগে জাতীয় মুসলিম কাউন্সিল গঠন করা হয়। এ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক প্রদেশে প্রাদেশিক কাউন্সিল গঠন করা হয়। মুসলিম স্বার্থ সংরক্ষণে মন্ত্রণালয় গুলোকে পরামর্শ দান করা ও এর পক্ষে সরকারী ফরমান জারী করানোই এ কাউন্সিল গুলোর প্রধান দায়িত্ব। ১৯৪৬ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি প্রদেশে মুসলমানদের ইসলামী উত্তরাধীকার আইন অবলম্বনের অনুমতি প্রদান করা হয়। এলক্ষ্যে দুইজন মুসলিম জজকে নিযুক্ত করা হয়। ১৯৪৭ সালে মসজিদ আইনের আওতায় ইমাম, খতীব, মোয়াজ্জিনদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয় এবং প্রত্যেক মসজিদের জন্য কাউন্সিল গঠন করা হয় যা আজও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। মুসলমানদের স্বাভাবিক ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকলেও সংখ্যা গুরু বৌদ্ধদের জাতীয় মুসলিম বিরোধী চক্রান্ত কখনো থেমে যায় নি।
থাই মুসলমানদের সমস্যাবলী
-----------------------------------------------------------------
(১) মুসলমানদের জীবন যাত্রার মান খুবই নিম্ন। (২) মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্যের অভাব (3) মুসলমানদের বিজাতি চিহ্নিত করতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অপচেষ্টা (৪) মুসলিম নামের পরিবর্তনের মাধ্যমে সংস্কৃতিকভাবে মুসলমানদের পরাজিত করার অপকৌশল। (৫) মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে বৌদ্ধ কলোণী স্থাপন (৬) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বৌদ্ধমূর্তির সামনে সেজদাবনত হওয়া (৭) জন্ম নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করে মুসলিম জনসংখ্যা হ্রাস করা।
দাওয়াতের কাজে সমস্যাবলী
-----------------------------------------------------------------
(১) সার্বিক ঐক্যের অভাব
মুসলিম সংগঠনগুলো যুগোপযোগী পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ধর্মীয় শিক্ষা। প্রতিষ্ঠান গুলোর জরাজীর্ণতাসহ যুগোপযোগী শিক্ষাদানে অনেক পিছিয়ে। ৪০/৫০ বছরের পুরাতন পাঠ্য পুস্তকের পাঠদানের কারণে সচেতন যুগোপযোগী শিক্ষিত লোক তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অবশ্য ইতিমধ্যে কিছু সচেতন যুবক পাকিস্তান, ভারত ও আরব দেশগুলো থেকে পড়াশুনা করে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন তৈরি করছে। যা জাতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য একেবারেই অপ্রতুল।
(২) সাংগঠনিক সমস্যা
নাম সর্বস্ব বহু সংগঠন সম্বুক গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, যা দ্বারা মুসলিম জাগরণের কোন আশা করা যায় না। প্রত্যেক বছর কমিটি পরিবর্তন হচ্ছে অথচ যুগোপযোগী কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। কতক সংগঠন আবার কর্মসূচী অনুযায়ী অর্থ সংস্থান করতে না পেরে সরকারী সাহায্য কামনা করে নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে।
(৩) মাসায়েল কেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত
অদূরদর্শীতার কারণে ইখতেলাফী মাসায়েল নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এ জন্য পরস্পরে বাদানুবাদ, মনোমালিন্য অপ্রতিকর ঘটনাও ঘটছে। যে কারণে অমুসলিমদের কাছে দাওয়াত পৌছানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
(৪) মুসলিম দেশগুলোর পরস্পরে ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ
মুসলিম দেশগুলোর পারস্পরিক যুদ্ধেরঘটনা থাই মুসলমানদের মাঝে গভীর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অমুসলিমদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌছাতে প্রাচীর সম বাধার সৃষ্টি করেছে। কিছু সংগঠন কোন আরব দেশের লেজুড় হওয়ায় জাতীয় ঐক্যের সম্ভাবনা ক্রমশ দূরবর্তী হচ্ছে।
(৫) আরবী ভাষাজ্ঞানের অভাব
কুরআন হাদীস সহ ইসলামী জ্ঞানের ৭৫% ভাগই আরবী ভাষায় লিখিত হওয়ার কারণে বিভিন্ন সংগঠন প্রধানদের আরবী ভাষা জ্ঞান না থাকায় ইসলামী জ্ঞানে অপরিপক্ক নেতা-কর্মীরা সমাজে সঠিক ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছে না। আবার ইংরেজী না জানার কারণে আধুনিক শিক্ষিত সমাজের সাথে মিশে দাওয়াত পৌঁছানোও সম্ভব হচ্ছে না।
(৬) ইসলামী বই-পুস্তকের অভাব
এ পর্যন্ত গুটি কতেক ধর্মীয় গ্রন্থ থাই ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তন্মধ্যে কুরআন তরজমা, বোখারী শরীফের তরজমাসহ সাইয়েদ কুতুব, হাসানুল বান্মা ও আহমদ দীদার প্রমুখ আধুনিক ইসলামী চিন্তাবিদদের কিছু ধর্মীয় গ্রন্থ থাই ভাষায় অনূদিত হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। অমুসলিমদের নিকট দাওয়াত পৌছাতে-ইংরেজী ভাষায় অনুদিত পুস্তকের খুব প্রয়োজন।
ইসলামী সংগঠন সমূহ
-----------------------------------------------------------------
জমিয়াতুল ইসলামী ফাউণ্ডেশন অফ ইসলামিক সেন্টার অফ থাইল্যাণ্ড, ইয়ং মুসলিম এসোসিয়েশন অফ থাইল্যাণ্ড, ইনিষ্টিটিউট অফ ইসলামিক স্টাডিজ। থাই মুসলিম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, মুসলিম এসোসিয়েশন অফ থাই ইউর অফ ইসলাম, থাই মুসলিম ফাউণ্ডেশন বরায়ে, এতীম বাগছা, দারূল আহলিয়াত, মুসলিম মেডিকেল এসোসিয়েশন, দি মুসলিম ফাউণ্ডেশন, মুসলিম মাস কমউনিকিশন এসসাসিয়েশন, ইসলামিক গাইডেন্স পোষ্ট ইত্যাদি। তবে বর্তমানে মুসলিম এসোসিয়েশন অফ থাইল্যাণ্ড সবচেয়ে বেশী কর্মতৎপর। রাজধানী ব্যাংককের যুবক কৌসুলী মোহাম্মদ জালালুদ্দীন এর প্রধান দায়িত্বশীল। ইসলাম প্রচার ও ইসলামী সংগঠন পরম্পরিক সহযোগিতার বন্ধন সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে সংগঠনটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সাথে সাথে ইয়ং মুসলিম এসোসিয়েশনও দাওয়াতের কাজে অনেকটা এগিয়ে গেছে। অত্যাধুনিক মাধ্যম ব্যবহার করে অল্প সময়ে চারিদিকে ইসলামের দাওয়াত ছড়িয়ে দিচ্ছে।
*****