গণতন্ত্রের লাঞ্চনা থেকে ইসলমের জিহাদের পথে আসুন
হে বাংলাদেশের কুরআন-সুন্নাহর বাহকগণ! আপনারা দেখে আসছেন এই দেশে কুরআনের বাহকদের অসহায়ত্বের অবস্থা, দেখে আসছেন, এই দেশে বারবার ইসলামকে লাঞ্ছিত করার হৃদয়ফাটা দৃশ্য। কতকাল ধরে হৃদয়ে জখমের ঘা সয়ে চলেছেন! আর কত হৃদয়ের রক্তক্ষরণ করবেন?
আপনারা দেখেছেন, গত ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তাগুত আওয়ামীলীগের শাসনামল। তাগুত সরকার ইসলামী শরীয়তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে আদালতে রায় দেয়: “ফাতওয়া প্রদান করা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ”।
যদিও পূর্বেও এখানে কুরআন-সুন্নাহ-মুক্ত কুফরী শাসনব্যবস্থাই ছিল, কিন্তু ধর্মত্যাগীদের এই দল মুসলিমদের ব্যক্তিগত ধর্মপালনও সহ্য করল না। অত:পর ধর্মত্যাগীদের এই দল সদম্ভে রাজত্ব করতে থাকে।
আলেম-উলামা এর বিরুদ্ধে কী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন? তারা ইসলামের পক্ষে কী প্রতিশোধ গ্রহণ করেছিলেন??
আলেমসমাজ আন্দোলনের ডাক দেন। তারা মুরতাদ তাগুতদেরকে হত্যার চেষ্টা না করে এবং তাদের কুফরী আদালত, সংসদ ও শাসনযন্ত্রগুলোকে ধ্বংস না করে তথা জিহাদের পথ না ধরে, ধরেন কাফেরদের বানানো গণতন্ত্রের নীতি। তারা সমাবেশের ডাক দিলেন, অনর্থক মিছিল ও আন্দোলন করলেন, মুরতাদদের থেকে অনুমাতি নিয়েই। ফলে পুলিশের লাঠিপেটা, জলকামান, টিয়ারগেস ও গুলির স্বীকার হলেন। আর তারা তো অক্ষমের মত, খালি হাত-পা। আত্মরক্ষার শক্তিটুকুও নেই তাদের।
ফলে রক্তাক্ত ও জখমী হয়ে ক্ষতের ব্যাথার কোকড়ানী আর কারাগারের ভীতি নিয়ে ঘরে ফিরেন অসহায়ভাবে! অনেকে আশ্রয় পান কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে, সইতে থাকেন রিমান্ডের নির্মম নির্যাতন!!
এভাবে তারা ইসলামের হুকুম ও রাসূলুল্লাহ সা: এর আদর্শ, কাফেরদেরদের বিরুদ্ধে কিতাল ও যুদ্ধ করার পথ অবলম্বন না করে অবলম্বন করলেন অসহায় নীতি, নাঞ্ছনার নীতি ও ইসলামকে পরাধীন করার নীতি।
সেই সময়েই এই তাগুত সরকারের বাহিনী ভ্রাহ্মণবাড়ীয়ায় চারজন মাদ্রাসার তালিবুল ইলমকে হত্যা করে নৃশংসভাবে।
সারা দেশ আলোড়িত হল, সমস্ত তৌহিদী জনতা মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ হলেন। কিন্তু কে তাদের ভাইয়ের রক্তের সম্মান রক্ষা করবে? কে তাদের রক্তের বদলা কড়ায়-গন্ডায় আদায় করবে জালিম কাফেরদেরকে জাহান্নামে পাঠিয়ে???
আলেম-উলামা মুহাম্মদ সা: এর উম্মতের রক্তের বদলা নেওয়ার কোন প্রকৃত পদক্ষেপই গ্রহণ করলেন না। তারা আবারও ধরলেন সেই গণতন্ত্রের পথ- মিছিল, সমাবেশ হরতাল। তারা নবী সা:র উম্মতের হত্যাকারীদেরকে নিজ হাতে হত্যা না করে, মুসলিমদের প্রতিপক্ষ সেই তাগুত কাফেরদের কাছেই এর বিচারের দাবি জানালেন। আবার মিছিল ও সমাবেশ করতে বের হলেন। সকলেই ঢাকায় দৌঁড় দিলেন আবার সেই অবাস্তব হাস্যকর হুমকি ধমকিগুলো দিতে।
ফলে আবার তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে জালিম মুরতাদ সরকারের পেটোয়া বাহিনী। আহত-নিহতদের ফিরিস্তি আরো দীর্ঘ হয়, কারাবন্দীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে, একটির পর আরেকটি ঈমানদারের লাশ পড়তে থাকে। আর অসহায়ভাবে নির্বাক মাটি শোষে নিতে থাকে দ্বীনের বাহকদের রক্ত। দ্বীনের বাহকদের রক্ত একেবারেই মূল্যহীন হয়ে পড়ে। পক্ষান্তরে এই মিছিল-সমাবেশের হাক-ডাক দিয়ে জালিমদের পশমে আচর লাগানোও সম্ভব হয় না।
তারপর সামনে আসে ২০০১ সালের নির্বাচন। দু:খের বিষয়! আলেমগণ সেই হাত-পা বাঁধা অভিশপ্ত গণতন্ত্রের ছায়াতলেই আশ্রয় খুঁজে পেতে সচেষ্ট হন। নবীজীর সুন্নাহ, তথা তরবারীর মাধ্যমে নিজেদের হাতে ইসলামের জন্য কিছু করার ব্যাপারে অক্ষমতার পরিচয় দিয়ে বিএনপির মাধ্যমে ইসলামের স্বপ্ন দেখতে থাকেন। ইসলামের বন্ধু হিসাবে বিএনপির পক্ষ এমনভাবে সমর্থন করতে লাগলেন, যেন বিএনপি ক্ষমতায় এলে ইসলামই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে।
তাঁরা বিএনপির কাছে কিছু দাবি জানান: “ফাতওয়ার রায় কার্যকর করতে হবে” “ভ্রাহ্মণবাড়ীয়ার চার শহীদের বিচার করতে হবে”, “ইসলাম বিরোধী আইন করা যাবে না”, ইত্যাদি। কুরআন-সুন্নাহ মুক্ত কুফরী সংবিধানের মাধ্যমে শাসন পরিচালনাকারী বিএনপির তাগুতদের কাছ থেকে দাবি পূরণের মিথ্যা আশ্বাস পেয়ে সস্তা ইসলামের রঙ্গিন স্বপ্ন নিয়ে নির্বাচিত করলেন বিএনপিকে। কিন্তু না, খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হল না; সেই তাগুতের দলই ক্ষমতায় বসল, যারা মদকে সরকারী লাইসেন্স দিয়ে বৈধ করল, তথা আল্লাহর স্পষ্ট হারামকে হালাল করে ধর্মত্যাগে লিপ্ত হল, যারা নস্যাৎ করে দিল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ হুকুম জিহাদের প্রচেষ্টাগুলোকে, হারাকাতুল জিহাদের আল্লাহওয়ালা মুজাহিদদেরকে কারাগারে বন্দী করল, তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাতে লাগল কারাগারে, রিমান্ডে।
অপরদিকে শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইসহ জিএমবি’এর নিবেদিত প্রাণ মুজাহিদদেরকেও নিষ্ঠুরভাবে ফাঁসিতে ঝুলালো, সকল মুসলমানদের সামনেই।
নিশ্চয়ই তারা অন্তত: তাওহীদে বিশ্বাসী এবং মুহাম্মদ সা: এর উম্মতই ছিলেন। আল্লাহকে ভালবেসেই জীবন দিয়েছিলেন এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠার নিয়তেই সব কিছু করেছিলেন।
সেই তাগুত বিএনপিও আলেমদের দাবিগুলোর কোন পাত্তাই দিল না, ফাতওয়ার রায়ও কার্যকর করল না এবং একজন শহীদেরও বিচার করল না। এভাবে কুরআনের বাহকদের রক্তগুলো মূল্যহীনভাবেই জমীনকে ভাসাতে লাগল। আর আলেম-উলামাদের দুই/একজন বিএনপির সামান্য সৃদৃষ্টি লাভ করেই ধন্য হল। তারা ভুলে গেল শহীদদের রক্তের কথা, ফাতওয়ার রায় কার্যকর করার কথা। যদিও প্রকৃতপক্ষে কাফেরদের থেকে ইসলাম কার্যকর করার দাবি করা একেবারেই হাস্যকর এবং নিজেদের দায়িত্বে অক্ষমতার পরিচায়ক। তবুও তারা ধরলেন না অপরাধীদেরকে হত্যা করার পথ, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করার পথ।
তারপর আবার আসল সেই জালিম আওয়ামীলীগ। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসাবে তারা যে কাজগুলো করলো তার মধ্যে একটি হচ্ছে, কুরআন বিরোধী নারী নীতি বাস্তবায়ন। আলেম-উলামা কুরআনকে বাস্তবায়ন করার জন্য তাগুতদেরকে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা না করে, তাদেরকে জাহান্নামে না পাঠিয়ে আবারও ধরলেন সেই অভিশপ্ত গণতন্ত্রের পথ-মিছিল, সমাবেশ, হরতাল। করলেন রাস্ত-ঘাটে অনর্থক লোক সমাগম। অনর্থক মিছিল, সমাবেশ।
ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিল নাস্তিক সরকার ও তার তাগুত বাহিনী, কিন্তু আলেমগণ তাদেরকে তাদের শাসনক্ষমতায়ই বহাল রেখে তাদের কাছ থেকে দাবি আদায়ের জন্য নামলেন ফাঁকা রাস্তায়। ফলে জালিম ও অপরাধীদের কিছুই হল না, তারা তাদেরকে মোল্লা বলেই গালিগালাজ করতে লাগলো, তাদের অহংকার বাড়তেই থাকল। আর তাদেরকে লাঠি পেটা করে মুরতাদ আইন শৃংখলা বাহিনী জখমী অবস্থায় বাড়ীতে পাঠালো, জেলে ভরল। অনেক টাকা দিয়ে পরে ছুটে আসতে হল।
এই অনর্থক হরতাল মিছিল করে শহীদ হলেন যশোরে এক রাসূল প্রেমিক মাদ্রাসার ছাত্র।
কে শোনাবে শহীদের মায়ের কানে একটু শান্তনার বাণী? কে দাঁড়াবে এই শহীদ জননীর পাশে? এই অন্যায় ও অবিচারের কি কোন প্রতিবাদকারী নেই? জালিমদের কি কোনই শাস্তি দেওয়া যাবে না?
শত শত আলেম-উলামা, তালিবুল ইলম ও দ্বীনদার মানুষ! কিন্তু সবাই অক্ষম। নিজেদের কোন বিষয়ের বিচার লাভ করার বা নিজেদের সামান্য আত্মরক্ষা করার শক্তিটুকুও নেই তাদের।
সর্বোচ্চ, সবাই মিলে মিছিল করতে আসবেন, আর মিছিলে আবারও মার খাবেন ও নিহত হবেন, তারও কোন বিচার হবে না। এই রক্তের কোন মূল্যও হবে না। এভাবে অন্যায় ও অবিচারের স্বীকার হয়ে ইতিহাসের অজানা অধ্যায়ে হারিয়ে যাবে কতগুলো নিষ্পাপ প্রাণ।
তাই আলেম-উলামা আবারও ধরলেন সেই অভিশপ্ত গণতন্ত্রের পথ- মিছিল, সমাবেশ, হরতাল। জালিমদেরকে তাদের মসনদে প্রভু হিসাবে রেখেই আলেম-উলামা নামলেন ফাঁকা মাঠে মিছিল করার জন্য। অনর্থক শ্লোগান দেওয়া হল, আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিব না, রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়।
অথচ কিভাবে ভেসে যাবে অন্যায়!! কার্যকরী কিছু নেই, অনর্থক শ্লোগান! তাগুতদেরকে ফুলের টোকাও দেওয়া যাচ্ছে না, শুধু মিছিল করে বলছে, ভেসে যাবে অন্যায়।
তাই পূর্বোক্ত হত্যার কোন মূল্যই হল না, বরং তাদেরকে লাঠিপেটা করে বাড়িতে পাঠালো তাগুত সরকার। বিনামূল্যে হত্যা করল আরো কয়েকজন তালিবুল ইলমকে। আহতের সংখ্যাও আরো বাড়ল। তবুও আলেম-উলামা তাগুত সরকার ও তার বাহিনীকে সসম্মানে ক্ষমতায় রেখে তাদের কাছেই তাদের কুফরীর বিচার ভিক্ষা চাইতে লাগলো। আর লাঠি পেটা খেয়ে আবার জখমী হয়ে ঘরে ফিরতে লাগলো বাচ্চাদের মত।
তারপর জালিম সরকারের উদ্যোগে শুরু হল, রাসূলুল্লাহকে গালিগালাজ করা, উম্মতের জননীদেরকে নিয়ে অন্তর ছেড়া নোংড়া কথা। নাউযু বিল্লাহ!! আর চলতে লাগলো প্রকাশ্যে বেহায়াপনা এবং ইসলামের সাথে যুদ্ধ। কিন্তু আলেম-উলামা তবুও কুরআনের জন্য হাতে অস্ত্র নিতে রাজি হলেন না, রাসূল সা: এর জন্য ও ইসলামের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত হলেন না, বরং আবারও ধরলেন সেই অভিশপ্ত গণতন্ত্রের পথ- মিছিল, সমাবেশ, হরতাল। সেই তাগুত সরকারকে ক্ষমতায় রেখেই তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে তাদেরই বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মিছিলের উদ্যোগ নিলেন। তাগুত কাফেরদের নিকট আবেদন করতে লাগলেন, যেন তারা আলেমদের জন্য ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে দেয়।
আর তাগুত কাফেররা এই নাটক দেখে হাসতে লাগলো। আলেমদেরকে নিয়ে ঠাট্টা করে মজা পেতে লাগল। তাদেরকে লাঠিপেটা করে আবার ঘরে ঢুকাতে থাকে, আবার বাড়ে কারাবন্দী, জখমী ও নিহতদের তালিকা।
অবশেষে আলেমগণ সেই তাগুতদের নিকট থেকে অনুমতি নিয়েই হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে সারাদেশব্যপী ঐতিহাসিক লংমার্চের ডাক দিলেন। লংমার্চ হল। তাতেও আগে পরে অনেক রাসূলের উম্মত শহীদ হলেন। তাদের রক্ত কোন মূল্য ছাড়াই প্রবাহিত হল। সবার কথা ছিল, এখন যত ক্ষতি হবে, সব ৫ মে র অবরোধের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেওয়া হবে। অথচ অবরোধ কি মাকড়সার জালের চেয়ে শক্তিশালী কিছু? এটা কি কোন শক্তি? এটা অসহায়ত্ব ছাড়া কি ই বা বৃদ্ধি করবে? লাশের সাড়ি আর মজলুমদের আর্তনাদ ছাড়া কি উপহার দিবে?
তাই হত্যাকরীদেরকে কেউ কিছুই বলতে পারল না। তাদেরকে কিছু বলার চেষ্টাও না করে, তাদেরকে খুঁজার চেষ্টাও না করে করা হল ফাঁকা মাঠে অনর্থক সমাবেশ।
এতে সৃষ্টি হল, ইতিহাসের এক নির্মম কালো অধ্যায়। ৫ই মের ঐতিহাসিক রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে রচিত হল মুহাম্মদ সা:এর অসহায় উম্মতের রক্তে লেখা উপখ্যান। অসংখ্য সিজদাকারীর রক্তে সিক্ত হল বাংলার জমীন।
এমনকি শাপলা চত্বর থেকে আহত অবস্থায় গাড়ি দিয়ে ফেরার পথেও ছাড়া পেল না হিংস্র ছাত্রলীগ বাহিনী থেকে। তারা পথে পথে গাড়ি থেকে নামিয়েও মারল অসংখ্য তাওহীদী জনগণকে। হায়রে গণতন্ত্র!!! কী মার খাওয়ার পথ শেখালো জাতিকে!!!
দ্বীনদার অনেক শহীদ হলেন নির্মমভাবে, কিন্তু তাগুত ও নাস্তিক একটিও হত্যা করা হল না। এত সমাবেশ, এত মিছিল, লক্ষ লক্ষ মানুষ, কিন্তু একটি তাগুতকেও হত্যা করা গেল না, শুধু তাদের বিরুদ্ধে মিছিলই করা হল। আর তারা একের পর এক মাদ্রসার ছাত্র ও দ্বীনদার মুসলমানদেরকে হত্যা করতে লাগলো। একটির পর একটি প্রাণ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার মোকাবেলায় একটি তাগুতও নিহত হচ্ছে না। হায়রে উম্মতে ইসলামীয়ার অসহায়ত্ব!! হায় বিজয়ী ইসলামের অযোগ্য উত্তরসূরীদের অবস্থা!!
কিন্তু আলেম-উলামার সেই গণতন্ত্র থেকে ভক্তি ও ভালবাসা তবুও উঠলো না। গণতন্ত্রের প্রতি তাদের বিশ্বাসে একটুও চির ধরল না।
তারা আবারও সেই গণতন্ত্রের উসূল মোতাবেক উক্ত শাপলা চত্বরের শহীদদেরও বিচার চাইতে লাগলেন সেই হত্যাকারী তাগুত সরকারের কাছেই। কি তামাশা! কি আশ্চর্য!
তারা রাসূল সা: এর জিহাদের পথ ছেড়ে কাফেরদের গণতন্ত্র- তথা মিছিল, সমাবেশ, স্মারকলিপি, মানব বন্ধন, হরতাল, লংমার্চ, অবরোধ ইত্যাদির পথ ধরেই থাকলেন। তারা গণতন্ত্রের মিছিল সমাবেশ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত ও অসহায়ভাবে মরতে রাজি, কিন্তু জিহাদের পথে সম্মানের সাথে শহীদ হতে রাজি নয়? গণতন্ত্রের পথে নিত্যদিন লাঠিপেটা খেতে রাজি, কিন্তু জিহাদের পথে আঘাত করতে ও খেতে রাজি নয়। গণতন্ত্রের সমাবেশে শুধু বক্তৃতা দিয়ে রিমান্ডের নির্মাম নিষ্পেষণ সইতে রাজি, কিন্তু জিহাদের পথে নিজেও কিছু ইসলামের শত্রুকে হত্যা করে রিমান্ড সইতে রাজি নয়। তারা গণতন্ত্রের পথে কারাগারের ভয়-ভীতি সহ্য করে থাকতে রাজি, কিন্তু জিহাদের পথে ভয়-ভীতি সহ্য করতে রাজি নয়। হয়ত এতে ইহুদী-নাসারা তাদের ব্যাপারে সন্তুষ্ট হয়ে যাবে!!!
এই অসহায়ত্বের মধ্যেই কাটে কয়েক বছর। আলেম-উলামা শহীদদের জন্য কিছুই করতে পারলেন না। নবীর কটুক্তিকারীরা সদম্ভেই চলতেই থাকে। আলেম-উলামা ইসলামের চূড়ান্ত অসহায়ত্ব দেখা সত্ত্বেও ইসলামের দূর্গ মাদ্রাসাগুলোতে দিব্যি নিশ্চিন্ত মনে বসে দরস-তাদরীস চালাতে থাকেন। যেন কিছুই হয়নি।
বরং তাদের কারো কারো পক্ষ থেকে কাফেরদের কাছে আত্মসমর্পণমূলক ভাষণ আসতে থাকে। কেউ এমন কুফরী বার্তাও প্রকাশ করতে থাকে: আওয়ালীগের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই, আলকায়েদা, তালেবান ইত্যাদি জংগীবাদীদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ মুসলিম মুজাহিদদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, আর ইসলাম অচলকারী কাফেরদের সাথে কোন শত্রুতা নেই। আস্তাগফিরুল্লাহ!!
আর সেই চূড়ান্ত লাঞ্ছনা ও অসহায়ত্বের সর্বশেষ বহি:প্রকাশ ঘটে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ভ্রাহ্মণবাড়ীয়ায় দু’টি মাদ্রাসা ও মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া ও একজন মাদ্রাসার তালিবুল ইলমকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনার মাধ্যমে।
গত ১২/১/২০১৬ এ ভ্রাহ্মণবাড়ীয়ার ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইউনুসিয়ার এজন তালেবুল ইলমকে হত্যা করা হয়। তালিবুল ইলমটির নাম মাসুদ। মাদ্রসার ভিতর ঢুকে হাজার হাজার মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যখান থেকেই তাকে হত্যা করা হয়। জালিমরা তাদের ঔদ্ধত্য ও হিংস্রতার বিভৎস রূপ দেখায়। উক্ত আল্লাহর বান্দাকে উপর্যপুরী লাথি মেরে মাদ্রসার ৪ তলা ছাদ থেকে নীচে ফেলে দেয়।
পুলিশের পোশাক পরিহিত দু'জন সন্ত্রাসী আকুল চন্দ্র ও তাপস রঞ্জনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ যুবলীগ হামলা চালায় মাদ্রসায়। তাদের ছোড়া ককটেল ও গুলির শব্দে কম্পন সৃষ্টি হয় শহরজুরে।
এমনকি তাদের হাত থেকে আল্লাহর ঘর মসজিদও রেহায় পায় নি। মসজিদের দরজা, জানালা, কাঁচ, দেয়াল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ করেছে ব্যাপকভাবে। মাদ্রাসার মূল ভবনের ফটক ভাঙতে না পেরে সন্ত্রাসীরা হানা দেয় পাশের হিফজখানায়। দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে বেধড়ক পেটাতে থাকে, গুলি করতে থাকে হাফেজে কুরআনদের উপর। আর বলে তোদের আল্লাহ কোথায়? বল, তোদেরকে বাঁচাতে। কত বড় স্পর্ধা!
হাফেজ মাসুউদকে ধরে লাথি মারতে মারতে তার বুকের পাঁজরগুলো ভেঙ্গে ফেলে হায়েনারা। অতঃপর লাথি মেরে ৪তলা ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়। শাহাদতের মর্যাদা লাভ করে মাসউদ।
কুফ্ফার মিডিয়াগুলো একজন মুসলিমের হত্যাকা-কে নিতান্ত তুচ্ছ সাব্যস্ত করে পাপের উপকরণগুলো ভাঙ্গা নিয়ে দু:খ প্রকাশ করতে থাকে। যেন ওদের শয়তানীতে শয়তানও হার মানে!
লজ্জাজনক বিষয় হল এদেশে মুসলিম নিধনের জন্য সাম্প্রতিক সময়গুলোতে অধিকাংশ বড় বড় পদগুলোতে হিন্দু ও সর্বাপেক্ষা বেশি ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যাতে গুটিকয়েক হিন্দু মালউন ও ইসলাম বিদ্বেষীর মাধ্যমে ষোল কোটি মুসলিমকে লাঞ্ছিত করা যায়, ইসলাম ও মুসলিমদেরকে অবদমিত করা যায়।
এই মাদ্রসার তালিবুল ইলমকে হত্যা করেছিল ভ্রাক্ষ্মণবাড়ীয়া সদর থানার পুলিশের ও. সি. আকুল চন্দ্র ও এস. আই তাপস রঞ্জন। ওরা দু’জনই ছিল হিন্দু। আর ওদেরকে সাপোর্ট দেয় তাগুত ছাত্রলীগ।
একজন আল্লাহর বান্দাকে মুশরিকরা হত্যা করেছে। একজন মুসলিম যুবককে হিন্দু মালউনরা হত্যা করেছে। একজন তালিবুল ইলমকে নাস্তিক ও তাগুতদের নিকৃষ্ট চ্যালারা হত্যা করেছে।
হত্যা করে সেই হিন্দু পুলিশের ওসি ও এস আই প্রকাশ্যেই অহংকারের সাথে ঘুরে বেড়ায়। এই সাহসী কীর্তির জন্য তাগুত সরকার তাদের নিরাপত্তা আগের তুলনায় আরো বাড়িয়ে দিয়েছে, সেই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অবিরত ইসলাম প্রিয় লোকদেরকে গালিগালাজই করতে থাকে, গর্বের সাথে ঘুরে বেড়ায়। আর ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়াগুলো মাদ্রাসার ছাত্রদের সামান্য নড়াচড়াকে ‘মাদ্রাসার ছাত্রদের তান্ডব’ বলে জনমনে বিদ্বেষ ছড়ায়। এই নাস্তিকদের কাছে মুসলমানের রক্তের চেয়ে ওদের মাটি ও প্লাষ্টিকের মূর্তিগুলোর দাম বেশি!!
কিন্তু আলেম-উলামার ভুমিকা কি ছিল?!! যারা মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল, আল্লাহর পথে বাধা দিয়েছিল, আলেম-উলামা কি ফেৎনা নির্মূল হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন? তারা কি রক্তের বদলা রক্তের দ্বারা নিয়েছিলেন? তারা কি অহংকারী ও উদ্ধতদের উচিত শিক্ষা দিয়ে ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত করেছিলেন?
দু:খের বিষয়! তারা আবারও ধরলেন সেই অভিশপ্ত গণতন্ত্রের পথ- মিছিল, সমাবেশ, হরতাল। তারা হত্যার বদলা হত্যার দ্বারা না নিয়ে হত্যার সাথে জড়িতদের বরখাস্ত দাবি করলেন মাত্র! মুসলমানের রক্ত কতটা সস্তা হয়ে গেল!! আল্লাহর দ্বীনের কতটা অসম্মান করা হল!!
কাফেরদের পক্ষ থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধের মোকাবেলায় তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামলেন!! কাফেররা প্রকাশ্যে মুসলিম হত্যা করলেও তারা শান্তিপ্রিয় ভদ্র মানুষ!! পাছে কাফেররা তাদেরকে সাম্প্রদায়িক বলে না ফেলে, সন্ত্রাস বলে না ফেলে!!! হয়রে নবীর আদর্শ! হায়রে নববী আদর্শের অপব্যাখ্যা!!
তাই তারা কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ পালন না করে কাফেরদের রসম-রেওয়াজ অবলম্বন করলেন। তারা অযৌক্তিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হলেন। যে অপরাধীরা হত্যা করেছে তাদেরকে নিরাপদে নিশ্চিন্তে ছেড়ে দিয়ে ডাক দিলেন অনর্থক হরতালের, যা সাধারণ মানুষের জীবন চলাচলে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটায় এবং যাতে অনর্থক বদনাম ছাড়া কোন লাভও নেই।
আরো হতাশাজনক বিষয় হল, তারা এমন তুচ্ছ বিষয়ের দ্বারা সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন, যা মুসলমানের রক্তের সাথে উপহাস ছাড়া কিছুই নয়! কাফেরদের পক্ষ থেকে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা আর নিহতের পরিবারের একজনকে সেই তাগুতের বাহিনীতে চাকুরী প্রদান, যে তাগুত বাহিনীর সাহায্যে তাগুত সরকার কুফরী শাসনকার্য পরিচালনা করে যাচ্ছে। তারপর আলেম-উলামা ইলম-কালাম সব কিতাবের পৃষ্ঠায় রেখে এটাকে নাম দিলেন ‘সফলতা’।
সেই জাতির অধ:পতন কে ঠেকাবে, যারা যিল্লতিকে মনে করে মর্যাদা! গোলামীকে মনে করে সম্মান?!
দু:খের বিষয়! অতি সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে, রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে আলেম-উলামা আবার সেই সমাবেশেরই ঘোষণা দিয়েছেন। ভাবখানা এমন, যেন শাসনব্যবস্থা সবই ইসলাম মত চলছে, শুধু এখন একটি বিষয়ে সমস্যা হয়েছে, তাই তার প্রতিবাদ হচ্ছে। অথচ গোটা শাসনব্যবস্থাটাই তো কুফরী শাসনব্যবস্থা। কাফেরের দল তো মুসলমানদের অস্তিত্তই নির্মূল করতে চাচ্ছে। তাদের কাছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার দাবি করার কী অর্থ!! কিন্তু তারা তাদের চক্ষুর শীতলতা, অন্তরের প্রশান্তি সেই গণতন্ত্রকেই আকড়ে থাকবেন।
টকশোতে দেখা যাচ্ছে, আলেমদের প্রতিনিধি ইসলামের প্রকৃত বিধানটি বলতে সংকোচবোধ করছেন। ইসলামের প্রকৃত রূপটি বলতে ভয় পাচ্ছেন, লজ্জাবোধ করছেন, পাছে নাস্তিকের দল ইসলামকে কট্টরপন্থা বলে ফলে!! ইসলামকে শেকেলে বলে ফেলে! তাই তিনি আধুনিক ও গণতান্ত্রিকভাবেই ইসলামকে প্রকাশ করার প্রয়াস পেয়েছেন! তিনি আত্মরক্ষামূলকভাবে ইসলামের পক্ষে কথা বলেছেন!
এভাবে আর কত দিন কুরআন-সুন্নাহকে লাঞ্ছিত করা হবে? আর কত প্রতিশোধ ছাড়া মুসলমানের রক্ত ঝড়তে থাকবে? আর কত নিস্পাপ কুরআনের হাফেজ বর্বরতার শিকার হবে?
কে আছে, লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষের অথর্ব মিছিলের বিপরীতে, একজন মাত্র আল্লাহর সৈনিকের ভূমিকা পালন করবে? দশজন কাফেরকে হত্যা করতে একজন মুসলিমই যথেষ্ট হবে, একটি মাত্র অস্ত্র দিয়ে দু’চার জন কাফেরের অহংকার চুরমার করে দেবে? মাত্র দু’চারটাকে অস্ত্রের ভাষায় জবাব দেওয়ার মাধ্যমে এ অঞ্চলের সকল বেঈমানদের অন্তর জুড়িয়ে দিবে?
হে সম্মানিত আলেম-উলামা! এবার গোলামীর পথ থেকে বেরিয়ে আসুন! অসহায়ত্বের মনোভাব ঝেড়ে ফেলুন! এবার বলুন! আর কোন আত্মরক্ষামূলক জবাব নয়! কাফেরদের কাছে আর কোন ধর্ণা নয়! ওদের সাথে কথা বলুন অস্ত্রের ভাষায়। ওই অসভ্য নাস্তিকদেরকে বলুন, তোদের মত নিকৃষ্ট নাস্তিক ও রাসূলের দুশমনদেরকে জবাই করার জন্য রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা দরকার!! যেমন: রাসূলুল্লাহ সা: বলেছিলেন: يامعشر قريش!ّ جئتكم بذبح “হে কুরাইশ সম্প্রদায়! আমি তোমাদেরকে জবাই করার জন্য এসেছি!!
রাসূল সা: এর সুযোগ্য খলীফা হযরত আবু বকর রা: বলেন,
ما ترك قوم الجهاد في سبيل الله إلا جعل الله عليهم ذلا
“যখনই কোন জাতি জিহাদ পরিত্যাগ করে তখনই আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দেন”।
আজ কত দ্বীনের বাহকদের লাশ পড়ছে! কত আল্লাহ ওয়ালা অসহায়ভাবে নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে! কিন্তু একটি কাফেরেরও নাপাক দেহে আচড় পড়ছে না!
আহ! মুহাম্মদ সা: জীবিত থাকলে কী কষ্টই না পেতেন! কী অস্থীরতাই না অনুভব করতেন!
তিনি তো তার সাথে চুক্তিবদ্ধ বনু খুজা’আ গোত্রের কয়েকজন লোকের জুলুমের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাদের থেকে অধিক ইলমওয়ালা ১০ হাজার সাহাবী নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন মক্কার উদ্দেশ্যে।
তিনি তো একজন সাহাবী, হযরত ওসমান রা: এর হত্যার সংবাদ শুনে ১৪০০ পূণ্যাত্মা সাহাবীসহ রক্তের শেষ বিন্দু কুরবানী করতে চেয়েছিলেন! মৃত্যুর জন্য বাইআত নিয়েছিলেন!
তিনি তো একজন সাহাবীর হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সুদূর মুতার অঞ্চলে দুই লক্ষ অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত কাফের বাহিনীর মুকাবেলায় মাত্র তিন হাজার মরণজয়ী বীর সাহাবাকে পাঠিয়েছিলেন! তিন হাজার সাহাবা শহীদ হয়ে যাক, তবুও একজন মুসলিমের রক্ত প্রতিশোধহীন থাকতে পারে না! অপমান, হীনতা মানা যায় না!
হে কুরআনের বাহকগণ! আপনারা আর কতকাল গণতন্ত্রের মুনাফিকদের সস্তা রাজনৈতিক বুলিগুলোর মত অনর্থক বুলিগুলো আওড়াবেন? যেগুলোর একপয়সরও মূল্য নেই। যেগুলো বর্তমানে বাজারের সবচেয়ে পঁচা, বাশি ও সস্তা কথা হয়েগেছে। গণতন্ত্রের দ্বারা আর কত লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হবেন?
আমরা আপনাদেরকে আহ্বান করছি, সেই সম্মানের পথে আসুন, যে পথে চলে গেছেন মুহাম্মাদ সা: ও তার সাহাবাগণ। যে পথে ক্ষুধার্ত নি:সম্বল সাথীদেরকে নিয়ে মুহাম্মদ সা: বিশ্বের পরাশক্তিদের ভীত কাঁপিয়েছিলেন। যে পথে মুহাম্মদ বিন মাসলাম রা: ইসলামের সমালোচনাকারী কা’ব বিন আশরাফ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। যে পথে আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক রা: ইহুদী আবু রাফে থেকে ইসলাম নিয়ে কটুক্তির প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। যে পথে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ না ঘটিয়ে কয়েকজন আল্লাহর বান্দাই থাবা বাবা, অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয়, ওয়াশিকুর, নিলাদ্রি ও দীপনের মত নিকৃষ্ট ইসলাম বিদ্বেষীদের আস্ফালন ধুলার সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন।
হে মুসলিম যুবকেরা! তোমরা কি কাপুরূষ হয়ে গেলে? তোমরা কি প্রবাদতুল্য ভীতু জাতি হিন্দুদেরকে তোমাদের উপর নেতৃত্ব করতে দিবে? তোমাদের কি তাগুত-বাহিনী থেকে বেশি প্রাণের মায়ায় পেয়ে বসল?
না, আর নারীদের ন্যায় অলংকার পরে বসে থেকো না। এবার ওমর রা: এর ন্যায় হুংকার দাও। আবু বকর রা:এর ন্যায় বলে উঠ, “আমি জীবিত থাকতে দ্বীনের ক্ষতি হয়ে যাবে?!!
তোমরা কি আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের বীরত্বের কথা ভুলে গেছ? যিনি উম্মতের সবচেয়ে বড় জালিম হাজ্জাজ বিন ইউসুফের মোকাবেলায় লড়েছিলেন। যুদ্ধের চূড়ান্ত মূহুর্তে যখন তার সমস্ত সাথীগণ তাকে ছেড়ে হাজ্জাজের নিরাপত্তার আশ্রয় নেয়। তিনি নি:সঙ্গ হয়ে পড়েন। সেই মূহুর্তে তিনি তার মা, তথা হযরত আবু বকর রা: এর কণ্যা হযরত আসমা রা: এর নিকট গিয়ে পরামর্শ চান। তার মা তার উদ্দেশ্যে বলেন, বাছা! তুমি কি ইতিপূর্বে হকের উপর ছিলে না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তার মা বললেন, তাহলে আগা গোড়া হকের উপরই থাক। তিনি তার মাকে বললেন, মা! আমার একটি বিষয় আশঙ্কা হয়, তা হচ্ছে, তারা তো আমার লাশ বিকৃত করবে, টুকরো টুকরো করবে? তার মা বললেন, বাছা! বকরীকে যখন যবাই করা হয়, তখন তাকে এক টুকরো করা হল, না কয় টুকরো করা হল, তার কি তার খবর থাকে? তুমি সত্যের উপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৃঢ়পদে লড়াই করে যাও।
তারপর তিনি তার মায়ের সাথে করমর্দন করে রণাঙ্গণে যাবেন, তখন তার অন্ধ মা অনুভব করলেন, তার গায়ে লোহার পোশাক। তাতে তিনি বললেন, বাছা! তুমি কি কাপুরূষ হয়ে গেছো? তোমার গায়ে লোহার পোশাক কেন? তখন তিনি লোহার পোশাক খুলে উলঙ্গ শরীরে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন। যুদ্ধে তার গুটিকয়েক সাথী সবাই শহীদ হয়ে গেল। হাজ্জাজের হাজার হাজার সৈন্যের মোকাবেলায় বাকি আছেন শুধু তিনি একা। তিনি একা হাজ্জাজ বাহিনীর উপর এমন বিদ্যুৎ বেগে ঝাপিয়ে পড়েন যে, তার চারপাশে অসংখ্য হাজ্জাজের সৈন্যের লাশ পড়তে থাকে। জীবনের অন্তিম মূহুর্তে, যখন প্রভুর সাক্ষাৎ লাভের নেশায় হৃদয় তার উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল, জান্নাতের হুরপরীদের স্বাদর অভ্যর্থনায় সাড়া দিতে অধীর হয়ে উঠছিলেন, সেই সময় এ আল্লাহর সৈনিক এমন অসীম বীরত্ব দেখান, যা পৃথিবীর আকাশ কখনো দেখেনি। আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুউচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করুন!
হে তালিবুল ইলমগণ! তোমরা কি রাসূল সা: এর কলিজার টুকরা হুসাইন ইবনে আলী রা:এর বাহাদুরি ভুলে গেছো? যিনি মৃত্যুর শেষ পর্যন্ত একাই হাজার হাজার জালিমের সাথে লড়েছেন, জালিমের হাতে বাইআত হওয়ার লাঞ্ছনা থেকে শাহাদাৎ বরণকেই সম্মানজনক মনে করেছিলেন।
হে মুসলিম জাতি! ইসলাম ছাড়া পৃথিবীতে বেঁচে থেকে কি লাভ? তুমি যে ধর্ম পালন করবে তা কেন অচল ও অকার্যকর থাকবে?
তুমি কি কাফেরদের প্রভাব মেনেই হীনভাবে জীবনটা কাটিয়ে দিবে? তুমি কি নীচু ও পরদেশি হয়েই সর্বদা থাকবে?
হয়ত সম্মানের সাথে বিজয়ী বেশে দুনিয়াতে বসবাস করো, নয়ত পরম সুপেয় শাহাদাতের সুধা পান করে প্রিয় রবের সাথে সাক্ষাৎ করো, জান্নাতের নাজ-নেয়ামতে সুখের দেশে বাস করো। যেখানে শুধুই শান্তি, শুধুই প্রশান্তি!!