বাগদাদীর প্রতি চিঠি – আফগানিস্তান ইসলামিক ইমারাত
আস-সালামু আলাইকু ওআ রাহমাতুল্লাহি ওআ বারাকাতুহু
হে আল্লাহ! আপনার দ্বীনকে হিফাযাত করার শক্তি আমাদের করুন, মুজাহিদদের বিজয়ী করুন এবং যমীন শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা করে দিন।
ইসলামের শুরুর সেই প্রথম শতাব্দী থেকে এখন পর্যন্ত আরবের পর আফগানিস্তানই ইসলামের এক সুরক্ষিত দূর্গ হিসেবে কাজ করে আসছে এই মহাদেশে। সমকালী জিহাদে আমাদের আন্তর্জাতিক নায়কেরা, ইমাম আল-মুজাহিদীন শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম, ক্বায়িদ আল-মুজাহিদীন শাইখ উসামা বিন লাদিন, ক্বাহির আস-সালিবিন আবু মুসা’ব আয-যারকাউয়ী ক্বাহির আল-মুলহিদীন খাত্তাবেরা (রাহিমাহুমুল্লাহ) আফগানিস্তানের এই জিহাদের মাদ্রাসারই তৈরী এবং এখানেই তারা বিকশিত হয়েছিলেন।
সেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, রাশিয়ান দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া জিহাদ এবং বর্তমান মার্কিন জোটের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চলমান জিহাদের যে উদ্দীপনা এবং বিশ্বাস, এতে আফগানিস্তানের মুসলিমদের সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা এবং যে ধারা বর্তামানে ইমারাত আল-ইসলামিয়াহ বজায় রেখেছে, তা অবিস্মরণীয়। ইনশা’আল্লাহ পূর্বের মত আমরা আবারো ক্রুসেডর বাহিনীর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জিহাদের পূর্ণ বিজয় দেখতে যাচ্ছি। মার্কিন এবং তাদের মিত্রদের যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে বাচার আর কোন উপায় নেই। মুজাহিদদরা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে চলছেন, এবং আশা করা যায় যে এই বছর ১৪৩৬-এই আমরা সম্পূর্ণরূপে বিজয়ী হব, এবং অবশিষ্ট শত্রুদেরও উৎখাত করতে পারব, আল্লাহ আমাদের সহায় হোক।
মার্কিন জোটের এই দখলদারিত্ব ছিল শরীয়াহ প্রশাসনকে ধ্বংসের জন্যই। যে শরীয়াহ শাসন ছিল কুরআন এবং সুন্নাহ মোতাবেক এবং আহলুস-সুন্নাত ওআল-জামাতের আকীদাহ অনুযায়ী বিচার ব্যবস্থা ছাড়াও প্রশাসনের সবগুলো ক্ষেত্র ছিল শরীয়াহ আইন দ্বারা পরিচালিত। এই কারণে রাষ্ট্র হতে সকল ধরনের শিরক, বিদা’হ, খুরাফা এবং কমিউনিস্ট ধারণাগুলো ক্রমেই দূর হচ্ছিল। একই সময়ে ইসলামিক ইমারাতেই এই ইসলামিক ব্যবস্থা মার্কিন নেতৃত্বাধীন কুফফার গোষ্ঠি আর সহ্য হচ্ছিল না, এবং তারা বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা এবং ছলচাতুরী করে, এটাকে আক্রমণ করল। আফগান মুসলিমেরা আমির আল-মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমারের (হাফিযাহুল্লাহ) সাহসী নেতৃত্বে ক্রুসেডরদের এই আগ্রসানের বিরুদ্ধে জিহাদে কাতারেও আবদ্ধ হয়ে গত ১৩টি বছর ধরে অবর্ণনীয় কুরবানী করে আসছে ইসলামি প্রশাসনকে প্রতিষ্ঠা করতে।
আপনার দৃষ্টিআকর্ষণ করে বলছি যে ক্রুসডররা সহ আন্তর্জাতিক কুফফারগোষ্ঠি বিরুদ্ধে ইসলামিক ইমারাতের মানহাজ হচ্ছে ঐক্য, বিশেষ করে জিহাদের কাতারে ঐক্য বজায় রাখা। সোভিয়েতের বিরুদ্ধে বিজয়ের পর আমরা এই ঐক্যহীনতার কারণে আমাদের ১৪ বছরের জিহাদের ফল হতে বঞ্ছিত হয়েছিলাম, পনের লাখ শহীদদের যে আশা ছিল, ব্যাপারটি খুব দুঃখজনক ছিল আমাদের এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য, যারা সেই জিহাদের সাথে সংযুক্ত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মু’মিন এক গর্তে দুইবার দংশিত হয় না।” [বুখারী: ৮৩ মুসলিম: ৭৬৯০]
ইসলামিক ইমারাত খুব কঠোরভাবে জিহাদের কাতারে ঐক্য বজায় রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করে, যেমনটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা’আলা কুরআনের একটি আয়াতে বলেছেন,“আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।” [সূরা সফ: ৪]
এছাড়াও আরেকটি আয়াতে তিনি মুসলিমদের মধ্যে দলাদলি, ভাগাভাগি, অন্তর্কোন্দলকে নিষিদ্ধ করে বলেন, বলেন, “আর আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রাসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে।” [সূরা আনফাল: ৪৬]
এই আয়াতগুলো সহ হাদিস এবং জিহাদে পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে, সাথে সাথে সমাজের বর্তমান পরিস্থিতি বুঝে, ইসলামিক ইমারাত জিহাদের কাতারে একাধিক দলের উত্থানকে না জিহাদ না মুসলিম কারো জন্যেই কোন উপকার আছে বলে খুঁজে পায় নি। কারণ আফগান সমাজের একটা বৈশিষ্ট্য যে এখানে মতানৈক্য এবং অন্তর্কোন্দল আগে থেকেই আছে, তাই একটি মাত্র নেতৃত্ব থাকলে এই সমস্যাগুলো কমিয়ে আনা যায় এবং ক্রমেই উৎপাটন করা যায়।
এখন পর্যন্ত ইসলামিক ইমারাত অনেক মতানৈক্য, সংঘর্ষ এবং বিভাজনের ফিতনাকে সাফল্যের সাথে সমাধান করে ঐক্য ধরে রেখেছে। তাই এখন যদি ইসলামিক ইমারাতের থাকা অবস্থায় আরেকটি নেতৃত্ব, আরেকটি জিহাদি কাতার তৈরীর চেষ্টা করা হয়, তবে বলা যায় যে ইচ্ছাকৃত ভাবেই মতানৈক্য এবং বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত ইসলামিক ইমারাত অনেক মতানৈক্য, সংঘর্ষ এবং বিভাজনের ফিতনাকে সাফল্যের সাথে সমাধান করে ঐক্য ধরে রেখেছে। তাই এখন যদি ইসলামিক ইমারাতের থাকা অবস্থায় আরেকটি নেতৃত্ব, আরেকটি জিহাদি কাতার তৈরীর চেষ্টা করা হয়, তবে বলা যায় যে ইচ্ছাকৃত ভাবেই মতানৈক্য এবং বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই ইসলামিক ইমারাত, এই প্রশাসনের অধীনেই জিহাদি কার্যক্রম চালানোর শর্ত দেয় এবং এর কারণগুলেো পর্যায়ক্রমে নিম্নে দেয়া হল:
১. মুজাহিদদের মধ্যে ঐক্য থাকা জরুরী এবং এটি ফরজ, বিশেষ করে যখন আমরা মার্কিন ক্রুসেডর জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। তাই মার্কিন নেতৃত্বাধীন কুফফার জোটের বিরুদ্ধে লড়াই একটি ব্যানারের নিচেই যুদ্ধ করতে হবে।
আর এই ইসলামিক ইমারাতের নেতৃত্ব ১৫০০ উলামারর পরামর্শে (আহলিল-হাল ওআল-আকদ, শূরা) এটি ফাতওয়াতে ইসলামিক ইমারতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রতিষ্ঠিত করা হয়। তাছাড়া বিশ্বে সুপরিচিত সম্মানিত ফিক্বীহ আলিম শাইখ হামুক বিন উকলা আশ-শুয়াইবী (রাহিমাহুল্লাহ) এবং শাইখ উসামা বিন লাদিনের (রাহিমাহুল্লাহ) মত মুজাহিদ নেতাদের স্বীকৃতি সহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে আহলুস-সুন্নাত ওআল-জামা’তের সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হয়, এবং এই ইমারাতের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য অভিযোগ আনতে সক্ষম হয় নি। তাই এখানে নতুন করে আরেকটি দল করার না শরীয়াহগত কোন কারণ আছে, আর না কোন যৌক্তিক আছে কোন যৌক্তিক কারণ।
২. শরীয়াহ এবং বাস্তবতা অনুযায়ী, মুসলিমদের জন্য ফরজ এমন পদ্ধতি অবলম্বন করা, যেটার মাধ্যমে যেটা ইসলামি প্রশাসন, সমাজ এবং প্রাত্যহিক জীবন-ব্যবস্থা, নিরাপত্তা এবং টিকে থাকার অবলম্বন নিশ্চিত করা যায়, আল্লাহই সবকিছুর হিফাযাতকারী। ইসলামিক ইমারাত তাদের শরঈ এবং প্রাত্যহিক জীবনের সাফল্যের জন্য ঐক্যের ভিন্ন কিছু চিন্তা করে না, এবং বিভিন্ন ভাগ এবং বিভিন্ন ব্যানারকে জিহাদ এবং মুসলিমদের জন্য ক্ষতিকর মনে করে।
৩. মার্কিন নেতৃত্বাধীন ক্রুসেডের জোটের বিরুদ্ধে জিহাদে, ইসলামিক ইমারাত তাদের এক অবর্ণনীয় পরাজয় উপহার দিয়েছে, এবং যেসব শহর কুফফারদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে, শিরক এবং অন্যান্য সকল অনৈসলামিক কাজের ক্ষেত্র উৎপাটন করা হয়েছে। ইসলামিক ইমারাতের এই দুই বছরের প্রতিরোধ এবং ধৈর্য ধারণের পর, ঐক্যবদ্ধ কাতার মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি অনুকরণীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে বর্তমান বিশ্বে কুফফারদের মোকাবেলার জন্য।
মার্কিনরা এবং ইসলামের অন্যান্য শত্রুরা আফগানিস্তানে মুজাহিদদের ঐক্যহীন করার জন্য অনেক ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে, কিন্তু ইসলামিক ইমারাত তাদের সম্মুখ সমরে হারিয়েছে, এবং তাদের সকল পরিকল্পনা নসাৎ করে আসছে এই দৃ্ঢ় ঐক্যের ফলে, যে কারণে কুফফারদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো ভেস্তে যাচ্ছে। তাই আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের এই স্পর্শকাতর মূহুর্তে ঐক্যহীন না করে ফেলেন, যেখানে আমরা কুফফার হতে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হয়ে আসছি। আপনার জন্য উচিত হবে না এমন কিছুক সমর্থন করা যেটা মুজাহিদদের মধ্যে চেইন অব কমান্ডে ভাঙন সৃষ্টি করে, ঐক্য নষ্ট করে এবং শত্রুদের ষড়যন্ত্রকে সফল করে দেয়, যেহেতু তারা চায় ইসলামিক ইমারতের চেইন অব কমান্ডে ফাটল ধরাতে।
৪. কুফফারদের এই নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আসছে অনেকগুলো ইসলামিক হুকুমাত এবং কোন না কোন ভাবে তা কুফফারদের দখলে চলে যাচ্ছে। তাদের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হল অনৈক্য এবং একটি নেতৃত্বের অভাব। তাই, অনৈক্যের ফিতনা এড়ানোর জন্য, আফগানিস্তানে উম্মাহ এবং জিহাদের ভালোর জন্য, ইসলামিক ইমারাতের হুকুমাতের অধীনে জিহাদ এবং প্রশাসন থাকাটা জরুরী। অন্য দল, নতুন শ্লোগান ইত্যাদি শুধুমাত্র ইসলামি আদর্শের সুফল নষ্ট করা এবং মুজাহিদদের ক্ষতি বয়ে আনার ছাড়া কিছুই করতে পারবে না।
৫. আন্তর্জাতিক কুফফার জোট, শিরক, বিদা’হ বিরুদ্ধে ইসলামিক ইমারাতের জিহাদ কুরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা পরিচালিত এবং সকল সমস্যার সমাধান শরীয়াহ উৎস থেকেই সমাধাম করা চেষ্টা করা হয়, আর এজন্যেই সারাবিশ্ব থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় মুসলিম উম্মাহর দুআ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা আমাদের জন্য আসছে। তাই আপনি দয়া করে এই ইসলামিক ইমারাতের প্রতি বিভিন্ন কারণে খুশি নয়, যেমন: অপরাধ তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, এদের থেকে আমাদের সম্পর্কে কোন তথ্য নেবেন না। এর বদলে আপনি সরাসরি ইসলামিক ইমারতের নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ করুন, আমাদের মুখপাত্র, মিডিয়া রিপ্রেটেটিভ সকলেই আপনাকে স্বাগত জানায় এবং যে ব্যাপারে আপনার প্রশ্ন জাগবে সেগুলো তাদের সাথে যোগাযোগ করে স্পষ্ট করে নিবেন। এটা আমাদের মধ্যে বিশ্বাস এবং বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করবে।
৬. ইসলামিক ইমারাত আফগানিস্তানে মার্কিন এবং ন্যাটোর এই পরাজয়কে সমগ্র বিশ্বের ক্রুসেডরদের পরাজয় বলে মনে করে। আল্লাহ আফগানিস্তানের মুজাহিদদের এই বিজয় দিয়েছেন তাদের ইখলাস, তাওকাওয়া, সবর এবং ঐক্য এবং বিশেষ করো ইসলামিক ইমারতের শক্তিশালী নেতৃত্বের কারণে। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এই ধারা বজায় রাখতে, এবং আশা করি যে অন্যান্য জিহাদি দলগুলোও আমাদের জিহাদে সাহায্য করবে, আমাদের সাথে বিজয়ে অংশ নিবে। আমরা আশা করি নাই যে তারা আমাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করবে এবং মুজাহিদদের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিবে, এবং কুফফারদের পরাজিত করা থেকে বিরত রাখবে।
৭. আফগানিস্তানে ক্রুসেডর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইসলামিক ইমারাতের এই সাফল্য শুধুমাত্র আল্লাহর সাহায্যের কারণেই, এতে হাজার শাহীদদের কুরবনী, মুসলিম উম্মাহর কুরবানী, কেউ আহত, কেউ কারারুদ্ধ আর কেউ বা ঘর-বাড়ি হারিয়ে রিফউজী অথবা সর্বশ্রান্ত। এই সকল কুরবানী একটি নেতৃত্ব এবং এটি ব্যানানের অধীনে ছিল। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, মুজাহিদদের মধ্যে মতানৈক্য বেড়ে না যায়, ঐক্য যেন ভেঙে না পড়ে। নতুবা পূর্বের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে। ঐক্যহীনতার কারণে কুফফাররা আবার সুযোগ নিবে এবং আমদের দাসত্বে আবদ্ধ করে ফেলতে চাইবে।
একই সময় এটা স্পষ্ট বাস্তবতা যে, ইসলামিক ইমারাতের বর্নীল অতীত, ইসলামের পথে কুরবানী, এবং ভারসাম্য পূর্ণ ইসলামিক পরিকল্পনাগুলো শুধু মাত্র আফগান মুসলিমদের জন্যই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর পছন্দ হয়েছে। তাই যদি আপনি এই নতুন দল করার চেষ্টা বন্ধ না করেন তবে, তারা এই অনৈক্যের জন্য আপনাকে দায়ি করবে, আপনার কার্যক্রমে খুব অখুশি হবে।
৮. এখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় জিহাদ এবং ইসলামিক আন্দোলন চলছে, যেখানে মুসলিমদের কুরবানী চলে আসছে, এবং সকলেরই কম বেশি সাফল্য রয়েছে; রয়েছে অনুসারী, সমর্থক, এবং সামাজিক অবস্থান। সকল সাফল্যই খুব প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অনেক কুরবানীর মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। তাই আপনার প্রতি আমাদের আহবানম যে, এমন কোন ধূম্রজাল সৃষ্টি করবেন না যেটার কারণে এতদিনের অর্জন, পরিকল্পনা, শৃঙ্খলা নষ্ট হয় এবং অনৈক্যের সৃষ্টি হয় এবং বিশেষ করে যেটা রক্তপাতের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে, আমরা আল্লাহর কাছে এই রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া থেকে পরিত্রাণ চাচ্ছি। বিশ্বাস করুন, এইরকম কাজ আপনার ব্যক্তিত্বে চরম কালিমা লেপন করবে এবং ভবিষ্যতে কার্যক্রম ব্যহত করবে। এটা মুসলিমদের মধ্যে রক্তপাত ঘটতে পারে সৎ মুসলিমগণ নিহত হলে, শহীদের পরিবারগুলো আশা হারিয়ে ফেলবে।এবং আমাদের বিরুদ্ধে কুফফারদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যাবে।
৯. আপনার কাছে তো এটা স্পষ্ট যে শেষ ৪ দশকেরও কম সময়ে বিশৃঙ্খলা, গোত্রী এবং জাতীয়তাবাদী হানাহানি, মতানৈক্য এবং কুফফারদের আগ্রসান সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই আফগানিস্তান। এমনকি বর্তমানেও এমন লোকজন আছে যারা পূর্বের শত্রুতা, মতানৈক্য অন্তরে লালন করে। তাই এখানে অনেক লোক মুজাহিদ পরিচয় বহন করে তাদের ব্যক্তিকত স্বার্থ উদ্ধার চরিতার্থ করতে চায় এবং এতে জিহাদ কাতরে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে, তবে আল্লাহর রাহমতে, ইসলামিক ইমারাতের নেতৃত্ব, এর জনবল এবং অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধান করে আসছে। অর্থাৎ, ইসলামিক ইমারাত এইরকম লোকদের তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আসছে, এবং আল্লাহ আমাদের এই রকম সমস্যা থেকে প্রতিবার মুক্তি দিয়ে আসছেন।
আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, যেন এই ধারা অব্যাহত থাকে। তবে আমরা অবার হচ্ছি, আপনার এই বিচ্ছিন্ন আহবানের কারণে, এইসব লোকজন স্বার্থপর লোকজন আপনার নামকে ব্যবহার করে ফিতনা এবং অনৈক্য সৃষ্টি করছে দেখে। তো এই কারণে আমরা দৃঢ় ভাবে আপনাকে এই ব্যাপারে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানাচ্ছি যে এই রকম বিপদ এড়ানো যায় এবং ইসলামিক ইমারাত থাকতে অন্য কোন দলের উদ্ভব যেন না হয়।
যেহেতু আল্লাহর কালাম সমুন্নত করার জন্যই এই জিহাদ, যা মুসলিম এবং বিশেষ করে মুজাহিদদের জন্য ফরজ, ইসলামিক স্টেটের উচিত, ইসলামিক ইমারাতকে এই জিহাদে সহযোগিতা করা এবং ঐক্য আর শক্তি অর্জন অব্যাহত রাখা। এমন কোন বিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া উচত না যে কারণে মুজাহিদ নেতা, আলিম এবং হাজার হাজার মুজাহিদদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। একারণে ইসলামিক স্টেটের সাথে তাদের দূরত্ব বেড়ে যাবে। ইসলামিক ইমারাত ২০ লক্ষ শাহীদের রক্ত সংরক্ষণে, তাদের অর্জন সংরক্ষণে এই চিঠিটি লিখল। আমরা আল্লাহর কাছ থেকে এইরকম পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা করছি।
ওআ সাল্লাল্লাহু আ’লা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ ওআলা আলিহি ওআসহাবিহি আজমাইন।
ওআস-সালামু আলাইকমু ওআ রাহমাতুল্লাহি ওআ বারাকাতুহু।
আফগানিস্তান ইসলামিক ইমারাত
নায়িবে আমীর এবং সর্বোচ্চ পরিষদের আমীর
আলহাজ্ব মোল্লা আখতার মুহাম্মাদ মানসূর
১৬ জুন ২০১৫