JustPaste.it

asasmbn


আল-জিহাদ

মুখতাসার আসাসুল জিহাদ (সকল পর্ব)।
সংক্ষেপে জিহাদ সংক্রান্ত নীতিমালা (বাংলা)।
পর্ব-১
১:১; দার অর্থ বাড়ি। তবে এটি রাষ্ট্রের অর্থেও ব্যবহৃত হয়। যার আরেকটি নাম দাউলাহ। দার বা দাউলাহ তথা রাষ্ট্র হল ঐ সীমানা বিশিষ্ট ভূখণ্ড, যাতে কোনো রাষ্ট্রশক্তি কর্তৃত্বশীল রয়েছে।
১:২; রাষ্ট্রশক্তি হল ঐ শক্তি যা রাষ্ট্রীয় বিষয়াবলী বাস্তবায়নে সক্ষম। আমাদের নিকট রাষ্ট্রীয় বিষয় তাই যাকে ইসলাম রাষ্ট্রীয় বিষয় বলে। যেমন- সীমান্ত সংরক্ষণ, দণ্ডবিধি বাস্তবায়ন ইত্যাদি।
১:৩; ব্যক্তি যেভাবে মুসলিম বা কাফির হয়, দারও দারুল ইসলাম কিংবা দারুল কুফর হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ভাবে কুফর তথা ইসলাম বিরোধী বিষয় ও বিধান থেকে বেঁচে থেকে ইসলামের আনুগত্য করলে দারুল ইসলাম গণ্য হবে। যদিও ইসলামী আইন বাস্তবায়নে ত্রুটি হয়। রাষ্ট্রীয় সীমান্ত বিহীন স্থান, যেমন- সমুদ্র দারুল হারব বলে গণ্য।
১:৪; দারুল ইসলাম তিন প্রকার। ১) দারুল খলীফাহ। যা খলীফার অধীনে থাকে। যেমন- প্রথম দুই খলীফার অধীনে ছিল। ২) দারুস সুলতান। যা খলীফাহ নয় এমন মুসলিম আমীরের অধীনে থাকে। যেমন- বর্তমান মালি, সোমালিয়া, ইয়ামান ইত্যাদি অঞ্চলের ইমারাহ সমূহ। এর কারন তিনটি। ক) খলীফার দৌর্বল্য। এর ফলে যেমন- সুলতান আয়্যূবীর অধীনে শাম। খ) খলীফার দুরত্ব। এর ফলে যেমন- সুলতানদের অধীনে হিন্দ বা মিন্দানাও। গ) একক খলীফাহ না থাকা। যেমন- আব্বাসী খিলাফতের পতন পরবর্তী ইসলামী সালতানাত সমূহ। উল্লেখ্য, সুলতান হলেন নির্ধারিত ভূমিতে রাষ্ট্রশক্তির অধিকারী। আর খলীফাহ হলেন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুসলিম উম্মাহর সর্বোচ্চ সুলতান বা শাসক। খলীফা গভর্নর নিয়োগ করলে প্রত্যক্ষ, আর অনুগত সুলতান থাকলে পরোক্ষ। ৩) দারুল বুগাত (বাগী/ বিদ্রোহীর বহুবচন)। যা বিপথগামী মুসলিমদের অধীনে থাকে। যেমন- আইএস/ খারিজী শাসিত ভূমি।
১:৫; দারুল কুফর তিন প্রকার। ১) দারুল হারব আসলিয়্যাহ বা মৌলিক ভাবে যুদ্ধযোগ্য দেশ। যা পূর্বে দারুল ইসলাম ছিল না। যেমন- আমেরিকা। এর ভিতরের মুসলিমদের কর্তব্য হল হিজরত কিংবা ইসলামের সহায়তায় অবস্থান। আর বাইরের মুসলিমদের দায়িত্ব হল আগ্রাসন বা ইক্বদাম। ২) দারুল হারব হুক্বমিয়্যাহ বা বিধানগত ভাবে যুদ্ধযোগ্য দেশ। যা পূর্বে দারুল ইসলাম ছিল এখন নেই। যেমন- হিন্দ। এর ভিতরের মুসলিমদের কর্তব্য হল মুক্তিযুদ্ধ বা তাহরীর। আর বাইরের মুসলিমদের দায়িত্ব হল সাহায্য। ৩) দারুল আহদ বা চুক্তিবদ্ধ দেশ। এই দারুল কুফর ঐ দারুল ইসলাম বা মুসলিমদের বিপরীতে, যার/ যাদের সাথে তার চুক্তি হয়েছে। যেমন- হুদাইবিয়ার চুক্তির পর মদীনাবাসীদের জন্য মক্কা। বর্তমানে তালিবানের বিপরীতে আমেরিকা। সুতরাং তৃতীয় পক্ষের জন্য তা দারুল হারব। যেমন- মদীনার বাইরে আবু বাসীর রা. ও তার সঙ্গীদের জন্য মক্কা। আফগানের বাইরে আল কায়েদার জন্য আমেরিকা।
১:৬; আহদ বা চুক্তি নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্টকালের জন্য হবে, চিরস্থায়ী হবে না। সুতরাং অনির্দিষ্টকালীণ চুক্তি প্রয়োজনের সময় ভাঙ্গা যাবে। চিরস্থায়ী চুক্তিও সময়ের সাথে ভেঙ্গে যায়। চুক্তি ভাঙ্গতে হলে জানানো আবশ্যক। আর চুক্তি তিন কারণে বৈধ। ১) যুদ্ধে জড়ালে যদি ক্ষতির ও পিছু হটার আশংকা বেশি হয়। ২) প্রস্তুতির জন্য সময়ের প্রয়োজন হলে। ৩) ভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যস্ত থাকলে।
১:৭; ওয়াতন অর্থ বাসভূমি। যার অর্থ মাতৃভূমি বা জন্মভূমিও করা হয়। এর দ্বারা একটি গ্রাম বা শহর থেকে নিয়ে একটি ভৌগোলিক অঞ্চল উদ্দেশ্য হতে পারে। এর অর্থ রাষ্ট্র নয়। একটি রাষ্ট্রে এক থেকে অনেকগুলো ওয়াতন থাকতে পারে। ওয়াতনের প্রতি আকর্ষণ বা ভালবাসা নিজের পছন্দের খাবার বা কাপড়ের উপর আকর্ষণের মতোই। এর কোনো আদর্শিক দিক নেই। এর সাথে রাষ্ট্রের আনুগত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য আদর্শ নয়ত স্বার্থের উপর নির্ভরশীল। দেশ শব্দটি কখনো রাষ্ট্রের অর্থে কখনো ওয়াতনের অর্থে ব্যবহৃত হয়। উভয়ের পার্থক্য বুঝে নেয়া আবশ্যক। ধর্মের প্রয়োজনে উভয়কেই ছাড়তে হয়। যেমন- হিজরত বা মুক্তিযুদ্ধ।
১:৮; আদর্শিক জাতীয়তার মূল হল ধর্ম। নাগরিকত্ব ও জাতীয়তা এক নয়। ওয়াতন, ভাষা, বংশ বা রাষ্ট্রকে আদর্শিক জাতীয়তার মুল বানানো কুফর। নৃতাত্ত্বিক বা ভাষাগত জাতীয়তা যদি পরিচয়ের জন্য হয় এবং আদর্শিক জাতীয়তা না বুঝায়, তবে ক্ষতি নেই বরং প্রয়োজন। যথা- وجعلناكم شعوبا وقبائل لتعارفوا
১:৯; দারুল আমান বা নিরাপদ দেশ বলতে কখনো দারুল ইসলাম কখনো দারুল আহদ উদ্দেশ্য হয়। আর দারুল ফিতান বলতে কখনো দারুল হারব বা কুফর আবার কখনো দারুল বুগাত উদ্দেশ্য হয়।
পর্ব-২
২:১; খিলাফাহ অর্থ স্থলবর্তীতা। এর ব্যবহারস্থল পাঁচটি। ১) এক প্রজন্মের পর অন্য প্রজন্মের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠালাভ। যেমন- واذكروا إذ جعلكم خلفاء من بعد قوم نوح ২) দীন পালনের দায়িত্ব। যা সবার উপর থাকা সত্ত্বেও কেবল মুমিনগণ গ্রহণ করেছে। আদাম আ. এক্ষেত্রে প্রথম ব্যক্তি। যেমন- إني جاعل في الأرض خليفة ৩) দীনী প্রতিনিধিত্ব। যেমন- العلماء ورثة الأنبياء এভাবে হাদীস ইত্যাদির সনদ। ৪) ইসলামী হুকুমাত বা শাসন ব্যবস্থা। যেমন- يا داود إنا جعلناك خليفة في الأرض এর দ্বারাই কোনো দার দারুল ইসলাম হয়। এটি খলীফাহ ও সুলতান উভয়ের দারকেই শামিল করে। ৫) ইসলামী ভূখণ্ড সমূহের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। যেমন- খিলাফাতে রাশিদাহ /উমাউইয়্যাহ /আব্বাসিয়্যাহ /উসমানিয়্যাহ।
২:২; চতুর্থ অর্থে খিলাফাহ অর্থাৎ ইসলামী শাসনকে প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং সারা পৃথিবীকে দারুল ইসলাম বানানো ফারযে কিফায়াহ। সুতরাং দারুল ইসলামের রক্ষণাবেক্ষণ ও দারুল হারবের উপর আগ্রাসন ফারযে কিফায়াহ। আর পঞ্চম অর্থে খিলাফাহ অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী একক খলীফাহ নির্ধারণ (সামর্থ্যানুযায়ী) ওয়াজিব।
২:৩; দারুল ইসলামে শাসকের পদপ্রাপ্তি: ক) কর্তৃত্ব অর্জনের দ্বারা সাব্যস্ত হবে। বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই হোক। যেমন- উমারে সালেস মুল্লা উমার র. বৈধ ভাবে কর্তৃত্ব নিয়েছেন। তবে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলকারি ও জালিমের আনুগত্য দুর্বল। তার বাইআহ ওয়াজিব নয়। যেমন- ইরাকে বাগদাদীর বাইআহ। আর কর্তৃত্ব ছাড়া পদ সাব্যস্ত হয় না। খ) ইসতিখলাফ বা উত্তরসূরী নির্ধারণের দ্বারা বৈধ। যেমন- উমারে সানী উমার বিন আবদুল আযীয। তবে অযোগ্যকে শাসক বানানো হারাম। আর দুই যোগ্যের মাঝে তুলনামূলক কম যোগ্যকে বানানো মাকরূহ। গ) শূরা বা পরামর্শের দ্বারা উত্তম। যেমন- উমার রা. উমারে আউয়াল। তবে অযোগ্যের মতামত অবৈধ। আর আহলে শূরার সংখ্যাগরিষ্ঠতা বৈধ। ঘ) তারাযী বা নেতৃবৃন্দের রায়ের উপর মুসলিম উম্মাহর সন্তূষ্টিক্রমে সর্বোত্তম। যেমন- আবু বকর রা.। তবে ফাসিক ও বিদআতীদের সন্তোষ বা অসন্তোষ অগ্রাহ্য।
২:৪; পূর্বোক্ত ক, খ, গ ও ঘ এর মাঝে কোনো বিরোধ নেই। সুতরাং এসবের মধ্যে মিশ্রণ সম্ভব। যেমন- উল্লেখিত চার জনের মধ্যে আউয়াল ও সানী উমারের বেলায় শূরা ও ইসতিখলাফ দুটোই ছিল। তারাযী ও শূরা সবার বেলায়ই ছিল। আর কর্তৃত্ব তো থাকবেই।
২:৫; দারুল ইসলামে শাসকের পদচ্যৃতি: ক) মৃত্যুর দ্বারা অর্জিত হবে। খ) ইরতিদাদ বা ইসলাম ত্যাগের দ্বারা আবশ্যক হবে। গ) কর্তৃত্ব হারানোর দ্বারা সাব্যস্ত হবে। চাই তার নিজের কারণে হোক বা অন্যের কর্তৃত্ব গ্রহণের কারণে হোক।
২:৬; দারুল ইসলামে শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করবে: ক) মুরতাদ হলে। খ) যালিম হলে। এছাড়া যদি আত্মরক্ষা অসম্ভব হয়। এবং কল্যাণের আশা থাকে। গ) দখলদার হলে। যদি হকদারের ব্যপারে আশা থাকে। ঘ) ধ্বংসের মুখোমুখি হলে। যেমন- শাসক আত্মসমর্পণ বা এধরনের কোন আদেশ দিল। তবে যাচাই ব্যতীত শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করবে না।
২:৭; দারুল কুফর দারুল ইসলামে পরিণত হয়: ১) তার ক্ষমতাসীনদের ইসলাম গ্রহণের দ্বারা। যেমন- মদীনা। ২) মুসলিমদের আগ্রাসনের দ্বারা। যেমন- মক্কা। ৩) মুক্তিযুদ্ধের দ্বারা। যেমন- আফগান। তবে মুক্তিযুদ্ধ দারুল হারব হুক্বমিয়্যার সাথে খাস।
২:৮; দারুল ইসলাম দারুল কুফরে পরিণত হয়ে দারুল হারব হুক্বমিয়্যাহ হয়: ১) ক্ষমতাসীনদের ইরতিদাদের দ্বারা। যেমন- প্রথম খলীফার সময় আরবের মুরতাদদের এলাকা। ২) কাফিরদের আগ্রাসনের দ্বারা। যেমন- ফিলিস্তীন। ৩) আভ্যন্তরীণ কাফিরদের ক্ষমতা দখলের দ্বারা। যেমন- বাতিনী শিয়া কাফিরদের দখলকৃত ভূমি।
পর্ব-৩
৩:১; হিজরত হলো ওয়াতন ত্যাগ করা। হিজরত: ১) বাইরে থেকে স্থায়ীভাবে দারুল ইসলামে যাওয়া। যেমন- মক্কা থেকে মদীনায়। বাইরে দীন পালনে বাধা থাকলে তা ওয়াজিব। নয়তো মুসতাহাব। ২) দীনের সাহায্যার্থে ওয়াতন ছেড়ে মুজাহিদদের সাথী হওয়া। যেমন- বেদুইনদের মদীনায় হিজরত। প্রয়োজনে ওয়াজিব, নয়তো মুসতাহাব। ৩) নিরাপত্তার জন্য ওয়াতন পরিবর্তন করা। যেমন- মক্কা থেকে হাবশায় হিজরত। উল্লেখ্য, দারুল কুফর দারুল হারব হয়েছে জিহাদ ফারয হওয়ার পর। তাই মক্কা ও হাবশা তখন দারুল কুফর ছিল, হারবিয়্যাহ নয়। তবে মক্কা দারুল ফিতান আর হাবশা দারুল আমান।
৩:২; ক্বিতাল অর্থ যুদ্ধ, তবে এটি অভিযানের অর্থে। তাই একতরফা আক্রমণ ও দ্বিপক্ষীয় লড়াই উভয়েই এতে উদ্দেশ্য। ক্বিতাল: ১) সত্য দীনের জন্য। এটি কেবল মুমিন (ক) করে। ২) সত্য দীনের বিপক্ষে অথবা মিথ্যা দীনের জন্য। এটি কেবল কাফির (খ) করে। এই দুই প্রকার ক্বিতাল ইবাদাতের শ্রেণিভুক্ত। ৩) বৈধ দুনিয়ার জন্য। এটি মুমিন (গ) ও (যিম্মী) কাফির (ঘ) উভয়েই করতে পারে। যেমন- মুমিন হারবীর বিরুদ্ধে। যিম্মী লুটেরার বিরুদ্ধে। ৪) অবৈধ দুনিয়ার জন্য। এটি মুমিন (ঙ) ও কাফির (চ) উভয়েই করতে পারে। যেমন- ডাকাতির জন্য। সুতরাং মুক্বাতিল বা লড়াইকারী ক থেকে চ মোট ছয় প্রকার।
৩:৩; জিহাদ হল ইসলামী ক্বিতাল (ও তার আনুসাঙ্গিক বিষয়াবলী)। দীন তথা আল্লাহর হক্বের জন্য হলে হাক্বীক্বী। আর বৈধ দুনিয়া তথা বান্দার হক্বের জন্য মুমিন করলে হুক্বমী। কখনো উভয়টি একত্রিত হয়।
৩:৪; বিধানগত দিক থেকে জিহাদ: ১) মূলত ফারযে কিফায়াহ। যেমন- দারুল হারবে ইক্বদাম। ২) ফারযে আইন। যদি সবার অংশগ্রহণ ছাড়া ফারয আদায় না হয়। যেমন- তাহরীর। ৩) অথবা নাফল। যেমন- বেসরকারী ভাবে আবশ্যকতা ছাড়াই হারবীর উপর আক্রমণ। অথবা মাযুর ব্যক্তির ফারয জিহাদে সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অংশগ্রহণ।
৩:৫; বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জিহাদ: ক) ওয়াজিব: ১) ইমারাহ বা নেতৃত্বের আদেশে। ২) আক্রান্ত কাউকে সাহায্য সম্ভব হলে। ৩) সংঘর্ষের মুখোমুখি হলে। খ) নিষিদ্ধ: ১) মামুরের জন্য ইমারার অনুমতি ছাড়া। ২) শারীআহ সম্মত চুক্তির বর্তমানে। ৩) জাতীয় পরাজয় বা বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকলে। তবে একক বা কতেকের বেলায় হলে যুদ্ধ না করা রুখসাহ বা বৈধ। আর করা আযীমাহ বা উত্তম। গ) বৈধ: যদি আবশ্যক বা নিষিদ্ধ কোনো বিষয় না থাকে। যেমন- আমীরের জন্য আদেশ করা। একাকী ব্যক্তির জন্য নাফল করা। আর বিপরীতমুখী দুটি বিষয় একত্র হলে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রাধান্য পাবে। যেমন- শারীআহ সম্মত চুক্তির বর্তমানে আমীরের আদেশ গৃহীত হবে না।
৩:৬; জিহাদে ১) অযথা সম্পদ ধ্বংস করা যাবে না। তবে ক) বর্তমানে শত্রুর ব্যবহার্য্য সম্পদ ধ্বংস করা যাবে। যেমন- টুইন টাওয়ার। খ) ভবিষ্যতে শত্রুর হাতে যা পৌঁছবে তাও ধ্বংস করা যাবে। যেমন- ইহুদীদের খেজুর বাগান। ২) শত্রু আয়ত্তে এলে অর্থাৎ নিহত বা বন্দি হলে দেহকে বিকৃত করবে না। এছাড়া হত্যা বা আটকের জন্য বিকৃতি বৈধ।
পর্ব-৪
৪:১; বাইআহ হল বিশেষ প্রতিশ্রুতি। বাইআহ হয়: ১) বাইআতুল ইসলাম। যা ইসলামে প্রবেশের সময়। এটি মুসতাহাব। ২) শাসকের আনুগত্যের জন্য। কর্তৃত্ব গ্রহণের সময় নেতৃবৃন্দ থেকে খাস ভাবে, গ্রহণের পরে জনতা থেকে আম ভাবে। এটি ওয়াজিব। এটি ক) খলীফার জন্য। একে বলে বাইআতে উযমা। মুল্লাহ উমার র. এর বাইআহ এর কাছাকাছি ছিল। কিংবা খ) সুলতানের জন্য। যেমন- সোমালিয়া, মালি ইত্যাদির আমীরদেরকে প্রদেয় বাইআহ। ৩) বিশেষ আমল যেমন- ক) হিজরতের জন্য, খ) নুসরতের জন্য, যেমন- বাইআতে আক্বাবাহ, গ) জিহাদের জন্য, সৈন্যদের পক্ষ থেকে জামাআহ বা সেনাপতিকে। আনুগত্য বা অবিচলতার জন্য। যেমন- উসামাহ র. কে প্রদত্ত বাইআহ। হুদাইবিয়ার বাইআহ। ৪) দীনী তারবিয়াতের জন্য। যেমন- তাসাওউফের বাইআহ। হক পীরের বাইআহ। রসূল সা. কখনো কখনো নারী (ও পুরুষ) সাহাবীদের থেকে এ প্রকার বাইআহ নিয়েছেন। একই বাইআতে একাধিক প্রকার একত্র হতে পারে।
৪:২; জিহাদ মোট নয় প্রকার। পাঁচ প্রকার কাফিরদের সাথে খাস। ১) দারুল হারব আসলিয়্যাহকে দখলের জন্য আগ্রাসন বা ইক্বদাম। যেন পর্যায়ক্রমে পুরো বিশ্ব দারুল ইসলামে পরিনত হয়। এটি ফারযে কিফায়াহ। শাসকের অধীনে করতে হয়। উদ্দেশ্য গায়রুল্লাহর শাসনের অবসান ও কাফিরদের ইসলামের তাবলীগ। যেমন- মক্কা বিজয়। ২) হারবী বা যুদ্ধযোগ্যদের উপর একাকী বা সম্মিলিতভাবে ইক্বদাম, তাদের দেশে কিংবা বাইরে। উদ্দেশ্য, শাস্তি দান, ক্ষতি সাধন ও ত্রাস সৃষ্টি। এটি নফল। এর জন্য রাষ্ট্র বা শাসক শর্ত নয়।যেমন- বদর, আবূ বাসীর রা. এর যুদ্ধ। ৩) মুহারিব বা (আক্রমণকারী) যোদ্ধাদের প্রতিরোধ বা দিফা'। একাকী বা একত্রে, শাসক থাকুক বা না থাকুক। যেমন- উহুদ, আহযাব, সালামাহ বিন আক্বওয়া' রা. কর্তৃক গাতফানী ও ফাযারী ডাকাতদের প্রতিরোধ। ৪) দারুল হারব হুকমিয়্যাহকে মুক্তকরণ বা তাহরীর। যেমন- ফীরূয দাইলামী রা. ও তার সাথীবর্গ কর্তৃক আসওয়াদ আনাসীর বিরুদ্ধে ইয়ামানে মুক্তিযুদ্ধ। সূক্ষ্ম হিসেবে বনী ক্বুরাইযাহ। এটি একা যথেষ্ট হলে একা করবে। নইলে দলবদ্ধ হয়ে করবে। ৫) দীনের সম্মান রক্ষার্থে তা'যীমী জিহাদ। একাকী বা একত্রে, স্বেচ্ছায় বা আদেশক্রমে। যেমন- কাব বিন আশরাফ ও অভিজিৎ রায়ের হত্যা। মক্কা বিজয়ের সময়ে হারামের ভিতরে হত্যা।
৪:৩; তিন প্রকার জিহাদ মুসলিমদের সাথে খাস। ৬) খলীফাহ বা সুলতানের অধীনে বাগী, সন্ত্রাসী ও খারিজীদের বিরুদ্ধে ইক্বদাম। ৭) একাকী অথবা মুসলিমদের সাথে মিলে বাগীদের দিফা'। আলী রা. এর নেতৃত্বে উভয়টি হয়েছে। ৮) দখলদার বা যালিম শাসকের বিরুদ্ধে শর্তসাপেক্ষে মুক্তিযুদ্ধ। ইমাম আবূ হানীফা ও মালিক র. খলীফাহ মানসূর আব্বাসীর বিরুদ্ধে যার ফাতওয়া দিয়েছেন। হুসাইন রা. ইয়াযীদের বিরুদ্ধে যার আয়োজন করেছেন।
৪:৪; নবম প্রকার জিহাদ আম। (৯) তা হল জান, মাল ও ইযযাতের বৈধ অধিকার রক্ষার্থে। অবৈধ অধিকারের জন্য নয়। যথা- من قتل دون ماله فهو شهيد যেমন- কারবালায় হুসাইন রা.। যদিও গিয়েছেন অষ্টম প্রকারের জন্য। উল্লেখ্য, মালের অবৈধ অধিকার স্পষ্ট। জানের অবৈধ অধিকার: যেমন- ক্বিসাস, হদ বা বৈধ দাসত্ব থেকে পলায়ন। আর ইযযাতের বেলায়: যেমন- অনৈসলামিক গর্ব বা মর্যাদা।
৪:৫; জিহাদের দশম প্রকার রিবাত বা (সীমান্ত) প্রহরা। যদি ক্বিতাল না হয়। আর ক্বিতাল হলে পূর্বের কোনো প্রকারে চলে যাবে। জাসূসিয়্যাহ বা গোয়েন্দাগিরি ইত্যাদি সহায়তামূলক বিষয়াবলী ক্বিতালের অনুষঙ্গ বিধায় জিহাদের হুকুমে।
৪:৬; জিহাদ হল আম ভাবে মানুষদের আর খাস ভাবে কাফিরদের ইসলামের আনুগত্যে বাধ্য করণ। যাতে গায়রুল্লাহর শাসনের বিলুপ্তি ঘটে এবং দীন বিধানগত ও কার্যগত উভয় ক্ষেত্রেই পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর জন্য হয়। যদিও ব্যক্তি কাফিরের ইসলাম গ্রহণে কিছু চাপ থাকলেও বাধ্যবাধকতা নেই।
পর্ব-৫
৫:১; ধ্বংস হওয়ার ক্ষেত্রে কাফিররা চার স্তরের। ১) যাদের পুরো ধ্বংস করা ওয়াজিব। হত্যা করে ও সম্পদকে গনীমাহ বানিয়ে। উল্লেখ্য, (দারুল ইসলামের বাসিন্দাদের জন্য) গনীমাতের মালিকানা অর্জিত হয়- ক) আগের দারুল কুফর থেকে বের করলে, যেখানে ছিল। যদিও বের করার পূর্বে উপকৃত হওয়া বৈধ হয়। অথবা খ) দারুল ইসলামে তা উপস্থিত হওয়ার দ্বারা। ২) আংশিক ধ্বংস ওয়াজিব। হত্যার বদলে দাসত্ব চাপিয়ে কর্তৃত্বকে ধ্বংস করে। তখন ব্যক্তি গনীমাতের হুকুমে। আর ব্যক্তি নিহত কিংবা দাস হলে তার সম্পদও গনীমাহ হয়ে যাবে। যদি (আবশ্যক না হওয়ায়) হত্যা না করা হয় দাসও না বানানো হয়, জিযইয়া যোগ্য হলে কর্তৃত্ব হ্রাসের জন্য জিযইয়া ধার্য করা হবে। এর জন্য দারুল ইসলাম শর্ত। অথবা মুসলিম বন্দিদের বিনিময়ে মুক্তি দেয়া হবে। ফিদইয়া বা মুক্তিপণ নিয়ে বা না নিয়ে দারুল ইসলাম থেকে ছেড়ে দেয়া বৈধ নয়। তবে রাষ্ট্রের অবর্তমানে বা দুর্বলতায় বৈধ। যেমন- হারবীদের দেশে কোনো অভিযানে বন্দি। বর্তমানে আমাদের দুর্বল দারগুলোতে। ৩) পূর্ণ ধ্বংস বৈধ। ৪) আংশিক ধ্বংস বৈধ।
৫:২; কাফিরদের ধ্বংস সংক্রান্ত স্তর সমূহ। ১ম) ওয়াজিবুল ক্বতল ওয়াল ইসতিগনাম। অর্থাৎ জান ও মাল নেয়া আবশ্যক। ক) ও খ) মুহারিবুল ঈমান ওয়াল মুহারিবাহ। অর্থাৎ মু'মান আলাইহ বা যে সবের উপর ঈমান আনতে হয় সে সবের কোনোটির বিরুদ্ধে লড়াইকারী পুরুষ ও নারী। যেমন- খোদায়ী বা নবুউওয়াতের মিথ্যা দাবিদার। শাতিমে ইসলাম। গ) মুহারিবুল ইসলাম। অর্থাৎ মুরতাদ্দ পুরুষ। ২য়) ওয়াজিবুল ইসতিগনাম। অর্থাৎ স্বাধীনতা ও মাল নেয়া আবশ্যক। ক) মুহারিবাতুল ইসলাম। অর্থাৎ মুরতাদ্দাহ নারী। একে আমৃত্যু বন্দি রাখাও ওয়াজিব। খ) জিযইয়া অযোগ্য হারবিয়্যাহ নারী। হানাফীদের নিকট আহলে কিতাব ও মাজুসী বাদে আরব নারী। শাফিঈদের নিকট আহলে কিতাব ও মাজুসী বাদে সব নারী। একে দাসী বানানো আবশ্যক। গ) জিযইয়া অযোগ্য হারবী পুরুষ। তাকে হত্যা করা বৈধ তৃতীয় স্তরে শরীক থাকায়। নয়তো সে খ এর মত। ৩য়) মুবাহুল ক্বতল ওয়াল ইসতিগনাম। অর্থাৎ জান ও মাল নেয়া বৈধ। সুতরাং দায়িত্বশীল ব্যক্তি সম্ভাব্য সূরতগুলো থেকে যে কোনোটি বেছে নিবে। যেমন- হত্যা করা, দাস দাসী বানানো, মাল নিয়ে বা না নিয়ে জিযইয়া ধার্য, বন্দি বিনিময়। ক) মুহারিবাতুল মুসলিমীন। অর্থাৎ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নারী। খ) (জিযইয়া যোগ্য) হারবী পুরুষ। যোদ্ধা হোক বা না হোক। উল্লেখ্য, হারবী বা যুদ্ধ যোগ্য ব্যক্তি যার যিম্মাহ বা আমান বা আহদ নেই। ৪র্থ) মুবাহুল ইসতিগনাম। এটি হত্যা ছাড়া বাকি বিষয়ে তৃতীয় স্তরের মত। ক) হারবিয়্যাহ নারী। খ) যুদ্ধ মুক্ত ও যুদ্ধ অযোগ্য হারবী পুরুষ। যেমন- অতিবৃদ্ধ, অন্ধ, পঙ্গু ইত্যাদি। এরা অবশ্য ব্যক্তিগত জিযইয়া থেকে মুক্ত।
৫:৩; কাফিরদের বাচ্চারা বড়দের হুকুমে হত্যা বাদে। তাদের হত্যা অযোগ্য অংশ তথা চতুর্থ স্তর ও বাচ্চারা যদি বন্দি করার সময় বা যুদ্ধক্ষেত্রে থাকায় আহত বা নিহত হয় ক্ষতি নেই। তবে ইচ্ছাকৃত আঘাত নিষিদ্ধ। আর তাদের মধ্যে যারা একাধিক স্তরে পড়বে, হুকুমের বেলায় কঠিনটি প্রয়োগ হবে। যেমন- যোদ্ধা আরব নারী: মুবাহুল ক্বতল, ওয়াজিবুল ইসতিগনাম।
পর্ব-৬
৬:১; নিরাপত্তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কাফিররা তিন স্তরের। মুআহিদ, মুসতামিন ও যিম্মী। নিরাপত্তার জন্য বড় শর্ত হলো মুহারবাতুল ঈমান, ইসলাম ও মুসলিমীন তিনো প্রকার লড়াই থেকে মুক্ত থাকা। ১ম) মুআহিদ নারী পুরুষ। যারা কৃত শর্তানুযায়ী নিরাপদ। এরা মূলত চুক্তিবদ্ধ হারবী। তারা আবার ক) আলী বা উচ্চস্তরের। যদি মুসলিম তাদের আমান নেয় বা তাদের অধীনে বাস করে। যেমন- হাবশায়। খ) মুসতাওয়ী বা বরাবর। যেমন- হুদাইবিয়ার চুক্তির পর মদীনা ও মক্কা। অথবা একই রাষ্ট্রে সম সুবিধাভোগী মুসলিম ও কাফির। গ) সাফিল বা নিম্নস্তরের। যদি আমাদের সুবিধার্থে চুক্তি হয়।
৬:২; মুআহিদদের মাল তাদের শর্তানুযায়ী বৈধ। যেমন- সুদের লেনদেন। কারন, দারুল হারবে হারবীর সাথে মুসলিমের সুদের লেনদেন (ইমাম আবূ হানীফা ও মুহাম্মাদ র. এর নিকট) বৈধ। আর হারবী ও মুআহিদের ফারক হল হারবীর মাল যেকোনো উপায়ে নেয়া যায়। মুআহিদের বেলায় তার অনুমতি শর্ত। সুতরাং যেসমস্ত মালে হারবী ও মুআহিদ ছাড়া কারো মালিকানা নেই, তাতেই এই হুকুম। যা তাদের বেসরকারী ও সরকারী সব ব্যাংককে শামিল করে। কারন, রাষ্ট্রীয় সম্পদের মিলকে রক্ববাহ বা সত্ত্বাগত মালিকানা কারো না থাকলেও মিলকে তাসাররুফ বা ব্যবহারিক মালিকানা সরকারের থাকে। তাই দারুল কুফরের রাষ্ট্রীয় সম্পদের মালিক কাফিররাই।
৬:৩; মুআহিদদের আহদ বাতিল করতে চাইলে সমতার ভিত্তিতে জানিয়ে দিতে হবে। আহদ সর্বদা লিখিত হয় না। মৌখিক বা ইঙ্গিতেও হতে পারে। কোনো মুসলিম যদি দারুল কুফরে প্রবেশ করে- ক) আমান নেয়া ব্যতীত, খ) আমান পাওয়া ব্যতীত কিংবা গ) ভিন্ন দারুল কুফরের পরিচয়ে; তবে কোনো আহদ বা আমান সাব্যস্ত হবে না। বর্তমান (অধিকাংশ) ভিসা আমানের জন্য যথেষ্ট নয়।
৬:৪; ২য়) মুসতামিন নারী পুরুষ। এরা ঐ সকল হারবী যারা কোনো প্রয়োজনে নির্ধারিত সময়ের জন্য আমান নিয়ে দারুল ইসলামে প্রবেশ করে। এরা অনেক বিষয়েই মুআহিদদের মত। (কারন, আমান হলো সাময়িক। আর আহদ হলো আপেক্ষিক।) যেমন- যিম্মী থেকে মিরাস না পাওয়া। কিছু বিষয় ছাড়া। যেমন- সুদের বৈধতা। কারন তা দারুল কুফরের সাথে খাস।
৬:৫; কাফিরদের সপ্তম স্তর: যিম্মী নারী পুরুষ। যারা কর্তৃত্ব হ্রাসের ভিত্তিতে শর্ত সাপেক্ষে দারুল ইসলামের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। যেমন- ক) জিযইয়া ইত্যাদি আদায়। খ) মুসলিমদের খাস বিষয় যেমন- রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব, প্রকাশ্যে ইবাদাহ, মুসলিম দাস দাসীর মালিকানা ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকা। সুতরাং তাদের কোনো দাস বা দাসী মুসলিম হয়ে গেলে তারা তাকে বিক্রি করতে বাধ্য। গ) তাদের খাস বিষয় আমাদের অনুমতির ভিত্তিতে। যেমন- মদপান ইত্যাদি।
পর্ব-৭
৭:১; হুকুম: ক) তিন ধরণের। আদেশ, নিষেধ ও অনুমতি। খ) দুই ক্ষেত্রে। ধর্মসংক্রান্ত: ইসলামী হোক বা কুফরী, ও ধর্মমুক্ত। গ) তিন স্তরের। ১) গঠনগত, যেমন- ধর্মের বা রাষ্ট্রের আইন। ২) অনুসরণমূলক, যেমন- বিচারকের হুকুম। গঠনগত হুকুমের অনুসরণে হুকুম। ৩) সাধারণ বা মুতলাক্ব, যা সরাসরি হয়। সুতরাং হুকুমদাতার হুকুম (খ×+গ=) দশ প্রকার। যথা- ১,২) ধর্মসংক্রান্ত ও গঠনগত। এটি ঈমান বা কুফর (প্রকাশক)। ইসলামী বা কুফরী আইন। ৩) ধর্মমুক্ত ও গঠনগত। এটি বৈধ। যেমন- সড়ক আইন। ৪,৫) ধর্মসংক্রান্ত ও অনুসরণমূলক। এটি (আল্লাহর) ইবাদাহ বা কুফরী। যেমন- ইসলামী বা কুফরী আইনে ফায়সালা। নামাযের আদেশ। ৬) ধর্মমুক্ত ও অনুসরণমূলক। এটি বৈধ। এরপরে সাধারণ হুকুম; ৭) সৎকর্মের হলে ভাল। যেমন- মায়ের সেবা কর। ৮) বৈধ কাজের হলে বৈধ। যেমন- পানি দাও। ৯) গুনাহের হলে গুনাহ। যেমন- গান শুনাও। ১০) কুফরের হলে কুফরী। যেমন- পূজা কর। এছাড়াও বিদআতী (১১) ও অনর্থক (১২) হুকুম হতে পারে।
৭:২; সেক্যুলারিজমের দুই স্তর। ক) ব্যক্তি জীবনে। খ) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। আর তা হলো মানুষের সার্বভৌম শাসন। হালাল, হারাম ও ফরযের অধিকার। গনতন্ত্র হল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে মানুষের হুকূমাহ। আর গায়রুল্লাহর হুকূমাহ কুফর, তা শূরা বা ইমারতের দ্বারা হলেও। আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা ক) বৈধ বিষয়ে বৈধ। যেমন- কোনো শরীকী বিষয়ে সবার সমান অধিকার হলে। খ) মুসতাহাবের বিপরীতে মাকরূহ। গ) ওয়াজিবের বিপরীতে হারাম। সুতরাং রাজতন্ত্রের অর্থ রাজার সার্বভৌম শাসন হলে কুফর। কিন্তু শাসকের পরিবার থেকে উত্তরসূরী নিয়োগ উদ্দেশ্য হলে মাকরূহ।
৭:৩; রাজনীতির অর্থ: ক) রাষ্ট্রনীতিতে প্রভাব বিস্তার। খ) রাষ্ট্র ক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা। গ) (ক্ষমতাসীনের জন্য) ক্ষমতা বজায় রাখার চেষ্টা। প্রত্যেকটি দারুল ইসলামে অথবা কুফরে। দারুল ইসলামে: কল্যাণের পক্ষে ক মৌখিক, শক্তি প্রয়োগে নয়। তবে অন্যায়ের প্রতিরোধ, যেমন- অন্যায় আদেশ বাস্তবায়ন না করা এর বাইরে। খ ও গ অযোগ্যের জন্য যুলম। যোগ্যের জন্য ইনসাফ। আর দারুল কুফরে: দীন ও দুনিয়া রক্ষার্থে ক ধোঁকা ও হারাম ব্যতীত যেকোনো ভাবে। তবে মুহারিবরা ধোঁকাযোগ্য। হারাম বাদে খ সম্ভব হলে বৈধ। তখন দারটি দারুল ইসলামে পরিণত হবে। আর গ তো অসম্ভব। তবে কোনো দারুল কুফরের ক্ষমতাসীনরা মুসলিম হয়ে গেলে হয়তো তাকে দারুল ইসলাম বানাবে, নয়তো ক্ষমতা ছেড়ে দেবে। এরপর প্রয়োজনে হিজরত করবে। কিন্তু এধরনের রাজনীতি ইক্বদাম ও তাহরীরের বাঁধা হবে না।
৭:৪; আহলে কুফরের দেয়া খিয়ার বা সুযোগের ভিত্তিতে কোনো কাজ, যেমন- তাদের শাসনাধীনে কোন কাজ করা কুফর নয়। যদি তা কুফর হয় তবে মুখতার বা স্বেচ্ছাপ্রণদিত  ব্যক্তির ঈমান গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু বাস্তবে যদি কাজটি কুফর হয় তবে ভিন্ন কথা।
৭:৫; দারুল কুফরের সরকারী চাকুরী তিন প্রকার। ক) জনগনের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন- সাধারণের হাসপাতালে। এটি বৈধ। খ) রাষ্ট্রের সহায়ক। এটি অবৈধ। যেমন- কর গ্রহণ। গ) কুফরের সহায়ক। যেমন- কুফরী আইন প্রণয়ন বা বাস্তবায়ন। এটি কুফর।

  সালমান মুসতফী @ মুহাররম, ১৪৪২/ ২০২০

https://82. 221.139.217/showthread.php?22227-

পূর্ণ লিংক কপি করার পর 82. পরবর্তী স্পেস বা খালি জায়গা মুছে নিন।
টর ব্রাউজার ব্যতীত লিংকে ক্লিক করবেন না।