JustPaste.it

আইএস/দাওলার মতবাদের আলোকে যেসব কারণে আইএস নিজেই ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় !! (অকাট্য প্রমাণসহ) 

 

আইএস নামক খাওয়ারিজ দলটি মুসলিম জাতির হক্ব মুজাহিদ দল আল-কায়েদা এবং তালিবানদের বহু আগেই মুরতাদ বলে আখ্যা দিয়েছে ! না’উযুবিল্লাহ  !! এমনকি সরাসরি শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ কে এই বাতিল আইএস তাকফীর করেছে অর্থাৎ মুরতাদ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং তালিবানদের প্রধান তথা ইসলামী ইমারতের আমীরুল মুমিনীনকে ত্বগুত বলে আখ্যা দিয়েছে।

 

আইএসের তাকফীরের মূলনীতিঃ

আইএস তাদের নিজেদের দল ব্যতীত দুনিয়ার সকল মুজাহিদ সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক মুজাহিদকে মুরতাদ মনে করে এবং অফিসিয়ালি তা ঘোষণাও করেছে। (না'উযুবিল্লাহি মিন যালিক)।

তাকফীর করার ক্ষেত্রে প্রথমে তারা একটি দলকে মুরতাদ বলে আখ্যা দেয়,অতঃপর সেই দলকে কেউ তাকফীর না করলে কিংবা সেই দলের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে তাকফীর না করলে তাকেও তারা মুরতাদ আখ্যা দেয়। উদাহরণস্বরুপঃ আইএস প্রথমে সিরিয়ার বিভিন্ন দলকে তাকফীর করেছে। এছাড়াও হামাস ও ইখওয়ানুল মুসলিমীনকে তাকফীর করেছে।  অতঃপর আল-কায়েদার শাখা জাবহাতুন নুসরাহ কেনো সেসব দলকে তাকফীর করেনি,তাই আইএস জাবহাতুন নুসরাহকে তাকফীর করে। অতঃপর জাবহাতুন নুসরাহকে তাকফীর না করার কারণে আল-কায়েদার সকলেই এখন তাকফীর করছে।

এটাকেই বলে ‘চেইন তাকফীর’ ।

এর অকাট্য প্রমাণ আইএসের ম্যাগাজিন ‘রুমিয়া’র ২য় সংখ্যায়, ৬ পৃষ্ঠায় দেখুন.......

As such, it will not be accepted that any of our troops is found refraining from making takfir of the individuals from the parties who fight us and whom we fight over Allah’s Shari’ah. Any of the troops of the Islamic State who is found refraining from making takfir of these factions shall

have his case referred to the amir of his division for the refrainer to be summoned and what was alleged against him be confirmed. The condition of these factions will be explained to him if he is ignorant thereof. Then, if he refrains from making takfir of these factions after the clarification,

he will be transferred to the court for istitabah [for the court to demand the soldier’s repentance or otherwise– if he refuses to repent – for him to be punished for apostasy].”

 

অর্থাৎ, “অনুরুপ যেমন এসব গ্রুপের মধ্যে যারা আমাদের সাথে যুদ্ধ করে এবং আমরা যাদের সাথে আল্লাহর শরী’আহর জন্য যুদ্ধ করি, আমাদের কোনো সৈন্য যদি তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে তাকফীর করা থেকে বিরত থাকে এমন পাওয়া যায়,তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ইসলামিক স্টেটের কোনো সৈন্য এমন পাওয়া যায় যে,এসব দলকে তাকফীর করা থেকে বিরত থাকে,তবে তার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের আমীরের কাছে পাঠানো হবে ।তিনি তাকে তলব করবেন এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হবেন। যদি সে উক্ত দলগুলোর ব্যাপারে অজ্ঞ হয়,তাহলে তাকে সে ব্যাপারে অবগত করানো হবে। অতঃপর স্পষ্ট করার পর যদি সে এসব দলকে তাকফীর করা থেকে বিরত থাকে,তাহলে  ইস্তিতাবাহ বা তাওবার জন্য কোর্টে প্রেরণ করা হবে[কোর্টের জন্য উক্ত সৈন্যকে তাওবাহ করতে বলা হবে অন্যথায় যদি সে তাওবাহ করতে অস্বীকার জানায়,তাহলে সে জন্য তাকে রিদ্দা তথা মুরতাদ হওয়ার শাস্তি প্রদান করা হবে।]”

 

উপরোক্ত বক্তব্যে স্পষ্টভাবে আইএস জানিয়ে দিয়েছে, যে ব্যক্তি সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা ও অন্যান্য মুজাহিদদেরকে তাকফীর করবে না,সেও মুরতাদ  !!!  কী জঘন্য চেইন তাকফীর  !!!

(উল্লেখ্য চেইন তাকফীর হচ্ছে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো মুরতাদকে তাকফীর না করে তাহলে তাকেও মুরতাদ বলা। অতঃপর এই ব্যক্তিকে যে মুরতাদ বলবে না,তাকেও মুরতাদ বলা ! এভাবেই তাকফীরের এই ধারা চলতেই থাকে ! না’উযুবিল্লাহ ! এটাই খারিজীদের তাকফীরের নীতি,যা যুগে যুগে প্রত্যক্ষ করা যায়। অথচ ইসলামের মূলনীতি হচ্ছে যাদেরকে কুরআন-হাদীসে কাফির বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং যাদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে ইজমা’ হয়েছে,তাদেরকে জেনে-শুনে কেউ কাফির না বললে,সে রিদ্দায় পতিত হবে। অথচ এই বিধানটি মুরতাদদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে। )

 

এহেন অবস্থায় তাদের এই নীতির ভিত্তিতেই আসুন তাদেরকে যাচাই করি......


বিষয়-১।

দাওলার ম্যাগাজিন দাবিক্ব-১৪ এর ২৮-৪৩ পৃষ্ঠায় “মুরতাদ ব্রাদারহুড” শিরোনামে একটি আর্টিকেলে মুসলিম ব্রাদারহুড এবং শাইখ হাসানুল বান্নাকে সুস্পষ্ট ভাষায় মুরতাদ আখ্যা দেওয়া হয়।

আইএস নামক এই ভ্রান্ত দলটির উক্ত আর্টিকেলের দাবী অনুযায়ী আল-কায়েদা যেহেতু ইখওয়ান এবং হাসানুল বান্নাকে মুরতাদ বলছে না,তাই আল-কায়েদার আকীদা বাতিল !!

ইখওয়ানুল মুসলিমীনকে কেনো আল-কায়েদা তাকফীর করেনি এটিকে শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর অধীনে আল-কায়েদার ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়। 

শাইখ হাসানুল বান্নাসহ ইখওয়ানুল মুসলিমীনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুরতাদ আখ্যা দেওয়ার পর  দাবিক্ব-১৪ এর ৪২ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে...................

Thus, the jihād claimants consider these murtaddīn and tawāghīt to be Muslims, as was the stance of adh-Dhawāhirī on Morsi and his followers.

অর্থঃ  এভাবে জিহাদের দাবীদাররা এসব মুরতাদ ও ত্বগুতদেরকে মুসলিম হিসেবে বিবেচনা করে,যেরুপ মুরসী ও তার অনুসারীদের ব্যাপারে যাওয়াহিরীর অবস্থান।” 

আইএস  তাদের ম্যাগাজিন দাবিক্বের উক্ত সংখ্যায় আরো বলেছে,

This attitude towards the Ikhwān was repeated in the official media of al-Qā’idah under the leadership of adh-Dhawāhirī, most famously in “The General Guidelines for Ji­hādī Activity” and “The Pact to Support Islam.”

 

ইখওয়ানের ব্যাপারে আল-কায়েদার এই দৃষ্টিভঙ্গির তীব্র সমালোচনা করে অতঃপর ৪৩ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে,

Is this not what the apostate sahwāt of adh-Dhawāhirī have fallen into in every land?

 

অর্থাৎ “এটি কী তা নয়,যাতে যাওয়াহিরীর মুরতাদ সাহওয়াতরা প্রত্যেক ভূমিতে পতিত হয়েছে ?” 

 

একদম পরিষ্কারভাবে দ্ব্যার্থহীন শব্দে সকল ভূমিতে জিহাদ করা আল-কায়েদার মুজাহিদদেরকে তাকফীর করা হয়েছে এখানে ! আশা করি প্রত্যেক সত্যানুসন্ধানী এর মাধ্যমে এই বাতিল মতবাদের অধিকারী দলটি সম্পর্কে পরিষ্কার হবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

এবার আসুন...... তাদের প্রতারণা ও মিথ্যাচারের স্বরুপ দেখি.......   

২০১১ সালের মার্চ মাসে আল-কায়েদার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা AQAP এর পক্ষ থেকে শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ এর তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত গ্লোবাল জিহাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাগাজিন ‘ইন্সপায়ার’ এর ৫ম সংখ্যায় “The Jihadi Experience” শিরোনামে  শাইখ আবু মুস’আব আস-সূরী হাফিঃ এর একটি লেখা প্রকাশিত হয়। উক্ত লেখায় শাইখ হাসানুল বান্নার নামের সাথে রাহিঃ (ইংরেজিতে may Allah have mercy upon him) যোগ করা হয়।

 

‘ইন্সপায়ার’ এর ৫ম সংখ্যার লিংক......... http://tinyurl.com/j82hp2u

 

তখন শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ জীবিত ছিলেন। এছাড়া ‘ইন্সপায়ার’ এর উক্ত সংখ্যায় শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ এর একটি আর্টিকেলও ছাপা হয়।

শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ, শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ কিংবা আল-কায়েদার তৎকালীন কোনো আলিম কিংবা দায়িত্বশীল শাইখ হাসানুল বান্নাকে রাহিঃ বলার সাথে দ্বিমত পোষণ করেননি।

উনারা এর সাথে দ্বিমত করেছেন,পারলে আইএসের সমর্থকরা কোনো প্রমাণ হাজির করুক ! সারা জীবনেও দেখাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ্‌।

বর্তমান আল-কায়েদা যদি হাসানুল বান্নাকে মুসলিম বলার কারণে মুরতাদ/সাহাওয়াত হয়,তাহলে শাইখ উসামা রাহিঃ এর অধীনে এবং শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ এর তত্ত্বাবধানে ‘ইন্সপায়ার-৫’ এ একই কথা লেখার কারণে কেনো তৎকালীন আল-কায়েদা এবং শাইখ উসামা রাহিঃ এবং শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ এর উপর একই হুকুম হওয়ার কথা ????

কেনো একই হুকুম হবে না,তার জবাব তাদের কাছে জানতে চাই !!!  

তাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দেখবেন এখানেই !!!!

আইএসের নেতা ও সমর্থকরা দাবী করে থাকে,আল-কায়েদা নাকি শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর অধীনে মানহাজ পরিবর্তন করেছে !!!

অথচ ‘ইন্সপায়ার’ এর এই সংখ্যায় যখন শাইখ হাসানুল বান্নার নামের সাথে রাহিঃ শব্দ যোগ করা হয়েছে,তখন শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ,শাইখ আনওয়ার আল-আওলাকী রাহিঃ জীবিত ছিলেন।

তাহলে কারা তাদের আকীদা পরিবর্তন করেছে এবং মনগড়া ও বাতিল তাকফীর নীতি বানিয়ে নিয়েছে,তা এবার বুঝুন।

 

বিষয়-২।

 আইএস নামক দলটির সিরিয়ার একজন শার’য়ী ফ্রি সিরিয়ান আর্মি সম্পর্কে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি দেয়া বার্তায় কী বলেছিলো দেখুন.......

//অনুরুপভাবে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির উপর হুকুম প্রয়োগের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সাথে যুক্ত থাকার কারণেআমভাবে তাদেরকে তাকফীর করা বৈধ হবে না। অথচ আমরা সকলেই জানি ফ্রি সিরিয়ান আর্মির কর্নেল রিয়াদ আল-আসাদ এর অবস্থান ইনসাফপূর্ণ। আর ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সাথে যুক্ত এমন অনেকে রয়েছে যারা বিভিন্ন ইসলামী গ্রুপের সাথে যুক্ত কারো কারো থেকে উত্তম। আর এখানে এমন অনেক দল রয়েছে যারা ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সাথে নামমাত্র সংযোগ রাখে কিন্তু তাদের সাথে মুজাহিদদের সম্পর্ক ভালো। সুতরাং এই নামে কোনো হুকুম যুক্ত করা যে, ফ্রি সিরিয়ান আর্মি মুরতাদ এধরণের প্রয়োগ করা সঠিক হবে না। আর যে তাদের(ফ্রি সিরিয়ান আর্মি) উপরআমভাবে মুরতাদ হুকুম প্রয়োগ করে,তাহলে তা গুলু বা বাড়াবাড়ি যা নিষিদ্ধ। আর যেকোনো গ্রুপের উপর বিদ্রোহ কিংবা রিদ্দা বা মুরতাদ হওয়ার হুকুম প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে।//

উল্লেখ্য ফ্রি সিরিয়ান আর্মির ব্যাপারে দাওলার এই নেতা এই বার্তাটি দেয় ফ্রি সিরিয়ান আর্মি তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রায় ২০ দিন পর। আর ফ্রি সিরিয়ান আর্মির মধ্যে বিভিন্ন ধরণের দল তার বহু আগে থেকেই বিদ্যমান।

এছাড়া আএইসের মসূলের শার’য়ী ২০১৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আইএসের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রায় ১ মাস পর দেওয়া বার্তা বলেছে.....

// আমরা নতুনভাবে এর উপরে তাকীদ দিচ্ছি, যে ব্যক্তি শামের জিহাদী দলগুলোকে তাকফীর করে কিংবাজাইশুল হুরবা ফ্রি সিরিয়ান আর্মি অনুরুপ অন্যদের উপরআমভাবে তাকফীর প্রয়োগ করে এমন প্রত্যেক ব্যক্তি থেকে আমাদের সম্পর্কহীনতা নবায়ন করছি। এটা গুলু বা বাড়াবাড়ি,যাতে আমরা একমত নই। এমন কথা বলা ব্যক্তি যেই হোক না কেনো আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি,এমনকি যদি সে আমাদের সৈন্যদের অন্তর্ভুক্তও হয়“//  

 

উপরোক্ত দুই শার’য়ীর বার্তায় আহরারকে ভাই বলে সম্বোধন করা হয়েছে।

 

এই পর্যন্ত এসে তারা হয়তো অজুহাত বানাবে,এটা সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছিলো !! আরো দাবী করতে চাইবে, সেসব দলে পরে পরিবর্তন এসেছে !! কিন্তু বাস্তব সত্য হচ্ছে,সেসব দল শুরু থেকেই এরকম ছিলো।

তাদের এই বাতিল দাবী হাতেনাতে ধরিয়ে দিতে আগেই উত্তর দিয়ে রাখছি, আসাদ আর্মির সাবেক কর্নেল রিয়াদ আল-আসাদ একদম শুরু থেকেই গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যুদ্ধ করছে। তাহলে কীভাবে তার অবস্থান কীভাবে ইনসাফপূর্ণ হয় !!!!

যেহেতু একদম শুরু থেকে সে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যুদ্ধ করছে,তাই সে মুরতাদ হওয়ার কথা !! কিন্তু দাওলার শার’য়ী তাকে তাকফীর করেনি।

ফলে দাওলা এবং তার সমর্থকদের মতে দাওলার এই শার’য়ী সুস্পষ্টভাবে মুরতাদ হওয়ার কথা !! আর দাওলার অন্যান্য নেতা কিংবা বাগদাদী দাওলার এই (মুরতাদ !)শার’য়ীকে যেহেতু মুরতাদ বলে আখ্যা দেয়নি এবং তাকে দল থেকে বহিঃষ্কার করেনি কিংবা সেও তাওবা করেনি,তাই বাগদাদীসহ পুরো দাওলাই মুরতাদ হওয়া উচিৎ  !!! কেনো হবে না,এর উত্তর যেনো দেয় !! দেখবেন দ্বিমুখী নীতি !

দাওলার নেতাদের বক্তব্যের প্রমাণ এই লিংকে পাবেন.....   https://justpaste.it/takfir_is   

 

বিষয়-৩।

   ২০০৯ সালে আল-জাযিরার সাথে এক সাক্ষাৎকারে আল-কায়েদার তৎকালীন ৩য় ব্যক্তি শাইখ মুস্তাফা আবুল ইয়াযিদ রাহিঃ কে আল-জাযিরার সাংবাদিক বলেছিলো, “আল-কায়েদা নিজেদের ব্যতীত দুনিয়ার অন্যান্য জিহাদী দলের ব্যাপারে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেএমন কথা প্রচলিত আছে। ব্যাপারে জানতে চাইলে শাইখ মুস্তাফা আবুল ইয়াযিদ রাহিঃ বলেন...........................

আমরা পূর্বেও বলেছি,এখনো বলছি, আমরা আমাদের সামর্থ অনুযায়ী ফিলিস্তিনের প্রত্যেক সত্যবাদী মুজাহিদকে এমনকি হামাসের মুজাহিদদেরকেও সহযোগিতা করি,সমর্থন করি সাহায্য করি তারা আমাদের ভাই।

আল-জাযিরার সাক্ষাৎকারের লিংক....

Video thumb

( মিনিট ৩০ সেকেন্ডের পর উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন।)

উল্লেখ্য শাইখ মুস্তাফা আবুল ইয়াযিদ রাহিঃ উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন ২০০৯ সালে। অথচ হামাস গণতান্ত্রিক নির্বাচনে গেছে ২০০৬ সালে।

 

যেসব ইসলামী দল গণতান্ত্রিক ভোট/নির্বাচনের মাধ্যমে ইসলাম কায়েমের কথা বলে তাদেরকে আল-কায়েদা/শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ তাকফীর করেন না। এজন্য শাইখ আইমান আল-যাওয়াহিরী হাফিঃ এর আকীদা সঠিক নয় দাবী করে এ ব্যাপারে আইএসের ম্যাগাজিন দাবিক্ব-06 এর 20 পৃষ্ঠায় ৫ নং টীকায় বলা হয়েছে.................

    5. Adh-Dhawāhirī does not make takfīr of the parliamentary “Islamists”

অর্থঃ ৫.আয-যাওয়াহিরী পার্লামেন্টারি “ইসলামপন্থীদের”কে তাকফীর করে না !

 

আইএস যেসব ইসলাম্পন্থী দল ভোট/নির্বাচনে অংশ নেয় এমন সকল দলের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে তাকফীর করে অর্থাৎ তাদের প্রত্যেককে মুরতাদ বলে আখ্যা দেয়।   

গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর আল-কায়েদার ৩য় প্রধান ব্যক্তি হামাসকে তাকফীর করেনি বরং ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হামাসের মুজাহিদদেরকে ভাই বলে সম্বোধন করেছেন। সুতরাং আইএসের খারিজী আকীদা অনুযায়ী তিনি এবং আল-কায়েদার আমীর শাইখ উসামা বিন লাদেন রাহিঃ সহ সব উমারা নিশ্চয়ই রিদ্দাহ করেছে !!! মা’আযাল্লাহ !! আর দাওলার পূর্বের আমীর+বর্তমান আমীর কেউ যেহেতু শাইখ মুস্তাফা আবুল ইয়াজিদ রাহিঃ কে তাকফীর করেনি,তাই বাগদাদীসহ সকলেই মুরতাদ হওয়ার কথা !!!!

 

হামাসকে ভাই বলার ব্যাপারে শাইখ উসামা রাহিঃ সহ তৎকালীন দুনিয়ার কোনো মুজাহিদ আমীরই উনাকে তাকফীর করাতো দূরের কথা ভুলও ধরেনি  !!!

ধোকাবাজির পথ এখানে বন্ধ হয়ে যাবে আশা করি ! অতঃপর তাদের একটি পথ অবশিষ্ট আছে। আর তা হচ্ছে, তারা বলবে, আমরা শাইখ উসামা রাহিঃ এর মানহাজ বুঝি না !! আমরা কুরআন-হাদীস মেনে চলি !!

তারা একথা বলবে কারণ, শাইখ উসামা রাহিঃ এর মানহাজের আলোকে তারা যে একটি বাতিল দলে পরিণত হয়ে গেছে,তাতে তাদেরও সন্দেহ থাকার সুযোগ নেই।

আইএস কিন্তু তার মুখপাত্রের মাধ্যমে অডিও বার্তা দিয়ে বলেছিলো, তারাই শাইখ উসামার মানহাজে আছে, আর আল-কায়েদা শাইখ উসামার মানহাজ থেকে সরে গেছে !!!!! 

 

লেখাটি আপাতত ৩ টি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলাম। তাদের বাতিল মতবাদের আলোকে তাদের বহু কুফুরী প্রমাণসহ বিস্তারিত পর্যায়ক্রমে লেখা হবে,যার মাধ্যমে (তাদের বাতিল মতবাদের আলোকে) তারা নিজেরাই যে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে মুরতাদ হয়ে বসে রয়েছে তা দেখাবো ইনশাআল্লাহ্‌। এগুলো দেখানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাদের বাতিল মতবাদ প্রমাণ করা,তাদেরকে তাকফীর করা উদ্দেশ্য নয় ।

  আল-কায়েদা কিংবা তালিবানরা কখনোই তাদেরকে তাকফীর করেনি এবং কাফির মনেও করে না।  কারণ, আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল-জামা’আতের আকীদা অনুযায়ী আইএস/দাওলা নামক দলটি একটি খারিজী দল। আর আহলুস সুন্নাহর গ্রহণযোগ্য আকীদা হচ্ছে, খারিজীরা কাফির নয় বরং চরম বিভ্রান্ত ও বিদ’আতী একটি দল।

আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে  আইএস সহ সবধরণের বাতিল মতবাদ থেকে হিফাযত করুন।

...................................................................

 

বিঃদ্রঃ  জিহাদ ও আইএস সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু লেখা পড়তে মূল পেইজে যেতে পারেন। 

লিংক....   https://justpaste.it/Abdullah_Hasan