আপনি জানেন কি?
৮ লাখ ইরাকী শিশুর মৃত্যু
আমেরিকা ও ইউরোপ একদিকে শিশু অধিকার সংরক্ষণের হিরো হয়ে বসে আছে এবং যে সব দেশে শিশুদেরকে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তারা সে সব দেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করে উচিত শিক্ষার হুমকি দিচ্ছে। অপর দিকে রাজনৈতিক কারণে জাতিসংঘের বাণিজ্যিক অবরোধের ফলে ইরাকের ৮ লাখেরও বেশী শিশু মারা গেছে। কিন্তু তাতে ইউরোপ আমেরিকার মনে বিন্দুমাত্র দয়ার উদ্রেক হয়নি। ইরাকের সরকারী মুখপাত্র বলেছেন, ইরাকের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের বাণিজ্যিক অবরোধের ফলে ঔষধের অভাবে গত সাত বছরে প্রায় ৮ লাখ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। ইরাকের সোসাইটি ফর চিলড্রেন স্পোর্ট-এর প্রধান সুলতান ইলশুয়ী বলেছেন, মৃত্যুবরণকারী শিশুদের মধ্যে ৩ লাখ-ই ছিল ৫ বছরের কম বয়সী। ইরাকের উপর এই অমানবিক অবরোধের কারণে ১৯৯৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪ শত শিশু মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে। ইরাক সরকার কর্তৃক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী জাতিসংঘের অবরোধ আরোপের পূর্বে প্রতি বছর অনুর্ধ্ব ত্রিশ হাজার ইরাকী মৃত্যুবরণ করতো। অবরোধের পর এর হার এখন বছরে ১ লাখ ৪০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। সুলতান ইলশুয়ী আরো বলেন, অধিকাংশ শিশু খাদ্যের অভাবে এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে।
ক্ষুধার যন্ত্রণায় মৃত্যুবরণ
দারিদ্রের কারণে ভারতে প্রতি মিনিটে একজন করে লোক আত্মহত্যা করে ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট মোতাবেক চলতি বছর এ সময় পর্যন্ত কেবল দিল্লীতে ৩০০ ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে। বলা বাহুল্য যে, এটা হলো সরকারী পরিসংখ্যান। মূলতঃ এর সংখ্যা আরো বেশী। রিপোর্ট মোতাবেক গত সাত বছরের পরিসংখ্যানে এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশী ঘটেছে পশ্চিম বাংলায়। ১৯৯৪ সালে পশ্চিম বাংলায় ১২ হাজার ৩ শত ৮৯, মহারাষ্ট্রে ১০ হাজার ৭ শত ৮২, তামিলনাড়ুতে ৯ হাজার ২ শত ৪৮, কর্ণাটকে ৯ হাজার ৫ শত এবং কেরালায় ৮ হাজার ৫ শত ৩৩ ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে।
রিপোর্ট মোতাবেক ভারতে আত্মহত্যাকারীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সরকার অর্থনৈতিক উন্নতির দাবী করছে বটে, কিন্তু তাদের দাবী ক্ষুধিত মানুষের কাছে উপহাস বলে মনে হচ্ছে। তাই ভারতে মানবাধিকার কমিশন এ পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকা দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কমিশন বলেছে, দেশে প্রতিদিন অসংখ্য লোক ক্ষুধার যন্ত্রণায় অসহ্য হয়ে আত্মহত্যা করছে, কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাদের এ নীরবতা ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের আলোকে এক ক্ষমাহীন অপরাধ।
সংগ্রহেঃ মুহিউদ্দীন