JustPaste.it

ভুল সবই ভুল

 

  • অনেক লোক কথায় কথায় অযথা কসম করে থাকে। এটা ঠিক নয়। অপ্রয়োজনে কথায় কথায় কসম করা মারাত্মক অন্যায়। এতে আল্লাহর নামের বড় অমর্যাদা হয়। এ জন্যে পারতপক্ষে কসম করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এমনকি সত্য কথায়ও অহেতুক কসম না করা ভালো।
  • অনেকে এই বলে কসম করে যে, আমার দাবীর বেলায় যদি আমি মিথ্যুক প্রমাণিত হই, তাহলে আমার যেন ঈমান নসীব না হয়। এমন কথা বলাও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। হাদীসে আছে যে, এমন ব্যক্তি যদি তার দাবীতে মিথ্যুক প্রমাণিত হয়, তাহলে তার ঈমান চলে যায়। আর বাস্তবিক যদি সে সত্যবাদী হয়, তবুও তার ঈমান ক্ষুন্ন হয়। ঈমানের ব্যাপারে এ ধরনের কথা বলা অন্যায়।
  • অনেকে আজকাল বাপ-ছেলের নামে কসম করে। এটাও অন্যায়। এ ব্যাপারে সতকর্তা অবলম্বন করা দরকার।
  • অনেকে শরীয়াত পরিপন্থী কসম করে তার উপর অটল থাকে এবং একে নিজের মাহাত্ম্য বলে মনে করে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা মারাত্মক অন্যায় ও নিন্দনীয় কাজ। ভুলবশতঃ শরীয়ত পরিপন্থী কসম করে বসলে উচিত তা পূর্ণ না করে ভেঙ্গে ফেলা এবং কসমের কাফফারা দেওয়া।
  • অনেকের ধারণা, তিনটি রোযা রাখা-ই কসমের কাফফারার জন্য যথেষ্ট। অর্থাৎ কসম ভেঙ্গে ফেলে যদি কেউ তিনটি রোযা রেখে নেয়, তাতেই কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। এ ধারণা সর্বাংশে সঠিক নয়। কসমের কাফফারা সম্পর্কে শরীয়াতের বিধান হলো, কসম ভঙ্গ করার পর প্রথমে দেখতে হবে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবশ্যকের অতিরিক্ত এতটুকু সামর্থ্য আছে কিনা, যদ্বারা সে দশজন মিসকীনকে দু'বেলা পেট পুরে আহার করাতে পারে কিংবা দশজন মিসকীনের প্রত্যেককে এক সদকা ফিতর পরিমাণ খাদদ্রব্য বা তার মূল্য দিতে পারে। অথবা দশজন মিসকীনের প্রত্যেককে মধ্যম মানের একজোড়া করে পোষাক দিতে পারে, যদি এতটুকু সামর্থ্য থাকে, তাহলে এমন ব্যক্তির রোযা রাখা কাফফারার জন্য যথেষ্ট নয়।
  • ভুলবশতঃ কাফফারা আদায় করা না হলে পরে শুধু তাওবা করে নেওয়া যথেষ্ট নয়। বরং স্মরণ হওয়ার পর নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাফফারা দিতে হবে।
  • অনেক লোক গাইরুল্লাহর নামে মান্নত করে থাকে যে, হে অমুক বুজুর্গ! আমার এই কাজটি সমাধা হয়ে গেলে আপনার নামে খানা খাওয়াবো কিংবা আপনার কবরে গেলাফ দেব ইত্যাদি। এ ধরনের মান্নত করা প্রকাশ্য শিরক।
  • অনেকে মান্নতের বস্তু, বিতরণে গরীব মিসকীনদের সাথে স্বচ্ছল এবং ধনীদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করে বসে। যেমন দেখা যায় যে, কবুল হওয়া মান্নতের শিরনি মসজিদে নিয়ে নির্বিচারে সব মুসল্লির মধ্যে বিতরণ করা হয়। তার মধ্যে স্বচ্ছল, ধনী, নিজের বাপ, দাদা, নানা, ছেলে, নাতী প্রমুখ উপস্থিত থাকে এবং তারাও তা ভোগ করে। অথচ নিজের মান্নতের বস্তু এরা ভোগ করতে পারেনা। এমনটি ঘটে গেলে এ ধরনের লোকেরা যতটুকু ভোগ করবে, পুনরায় ততটুকু উপযুক্ত ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করতে হবে।
  • অনেক লোক নিজেদের আরোপিত মান্নত সম্পর্কিয় সব খুঁটি-নাটি বিষয় পালন করা জরুরী মনে করে। যেমন কেউ মান্নত করল যে, আমার অমুক কাজটি হয়ে গেলে দু টাকার মিষ্টি দেব কিংবা মসজিদে শিরনি বিতরণ করব বা এত পরিমাণ টাকা মক্কায় পাঠিয়ে দেব অথবা রমযান মাসে দান করব ইত্যাদি। কিন্তু শরীয়াতে এসব পালন করা জরুরী নয়। অর্থাৎ মিষ্টি দেওয়ার কথায় মিষ্টি-ই দিতে হবে, মসজিদে-ই বিতরণ করতে হবে কিংবা মক্কায়-ই পাঠাতে হবে বা রমযান মাসেই দান করতে হবে, এমনটি জরুরী নয়। মান্নত করা বস্তু উপযুক্ত খাতে দিয়ে দিলেই মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

-হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রাহঃ)