JustPaste.it

পাঠকের কলাম

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

 

নবী প্রেমের করুণ ছবি

পবিত্র মাহে রবিউল আউয়াল আগমনের সাথে সাথে নবীভক্তদের মুখে ও কর্মকাণ্ডে সীরাতুন্নবীর আলোক-রশ্মী, শিক্ষা ওআদর্শের প্রভা নতুন করে বিকীরণ হতে শুরু করে! বর্ণাঢ্য র‌্যালী, সভা-সমাবেশ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, সীরাত মাহফিল ও পুস্তক প্রদর্শনী থেকে শুরু করে অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড সীরাতুন্নবীকে ঘিরে উদযাপিত হয় নবী দিবসে। নানা মত ও পথের নেতা-নেত্রীরা রাসূলের আদর্শ বর্ণনা করে বিবৃতি প্রদান করেছেন। কিন্তু তবুও বলতে হচ্ছে, এ সবকিছুই নিছক লৌকিকতা ও নিষ্প্রাণ আনুষ্ঠানিকতা। পেয়ারা নবীর আদর্শ ও ভালবাসা বছরে একবার উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে নবীদিবস পালন করার মধ্যেই কি সীমাবদ্ধ? অন্যায়-অবিচার আর পাপাচারের প্রচন্ড তান্ডবে যখন বিশ্বমানবতার শ্বাসকষ্ট প্রকট, তখন একরাতের আলোকসজ্জা, বর্ণাঢ্য র‌্যালী আর কিছু আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে কি জাতিকে সুস্থ জীবনের সন্ধান দেয়া সম্ভব? মরীচিকা সম নবীর এ প্রেম আর স্মরণ মুসলিম উম্মাহর দুঃখ-দুর্গতি লাঘবে আদৌ কোন ভুমিকা রাখছে কি?

আজ কিছু সেক্যুলার ও নাস্তিক বুদ্ধিজীবী পুস্তক ও পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে নবী ও তাঁর সুন্নাতের বিরুদ্ধে নানাভাবে প্রতিনিয়ত কটাক্ষ করছে, নানা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিচ্ছে ইসলামের ইতিহাসকে বিকৃত করতে, পবিত্র জিহাদ সম্পর্কে মানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, ঈমান-আকীদার উপর নিরন্তর হামলা চালাচ্ছে, কিন্তু তবুও তৌহিদী জনতার প্রতিবাদী কন্ঠ গর্জে উঠছে না। এ ধরনের আঘাতে উম্মতে মুহাম্মদীর গর্জে ওঠার কথা ছিল, কিন্তু তা বাদ দিয়ে আমরা নবীর প্রেম দেখাতে লৌকিকতা ও আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে ব্যাপৃত। নবীর আদর্শ, নবীর শিক্ষা, নবীর সুন্নত যেখানে হামলার শিকার, যেখানে কুখ্যাত আলী আসগরের ন্যায় নাস্তিক-মুরতাদ-স্বয়ং নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করছে, যেখানে মুসলমানের চির শত্রু ইয়াহুদী হায়েনারা ঘৃণ্য পোস্টার ছাপিয়ে মহানবী ও কুরআনকে করছে অবমাননা, সেখানে বীরের জাতি মুসলমানরা কিভাবে নীরব দর্শক থাকতে পারে? বছরে একবার ধুমধামের সাথে ঈদে মিলাদুন্নবীর নামে মরীচিকাসম নবীর প্রেম দেখালেই কি পরকালে জবাবদিহিতা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?

সংসদে বসে ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে শুধু নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করলেই দায়িত্বমুক্ত হওয়া যাবে না। বাংলার তৌহিদী জনতার প্রতিনিধি হিসাবেও তার হক আদায় হবে না এবং তা নবী প্রেমিক বলেও প্রমাণিত হবে না। হাজার মাইল দূরের ইয়াহুদীদের নিন্দাবাদ জ্ঞাপন হলো। কিন্তু নিজের ঘরের কুখ্যাত আলী আসগরের নিন্দা জানাতো তো দূরের কথা তার সম্পর্কে সংসদে কোন আলোচনাই হলো না কেন? অথচ ইয়াহুদীদের নিন্দাবাদের চেয়ে বাংলার এই কুলাঙ্গারকে কঠোর হস্তে পাকড়াও করার বেশী প্রয়োজন ছিল ।ইয়াহুদীরা তো পোস্টারের মাধ্যমে অবমাননা করেছে, এছাড়াও তারা হলো বিজাতি। কিন্তু প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কুখ্যাত অধ্যাপক আলী আসগর তো সরাসরি মুখে সন্ত্রাসী বলে পেয়ারা নবীকে চরম আঘাত করেছে, ধর্মীয় শিক্ষার বিরুদ্ধে কটুক্তি করেছে, তার উপর সে আবার মুসলমান দাবীদার। নবীর প্রেমিক হয়ে থাকলে তো সর্বপ্রথম এই কুলাঙ্গারকে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলাতোর প্রয়োজন ছিল ! পরপরই ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। নবীর আদর্শ বর্ণনার ক্ষেত্রে তো মুখে খুব খই ফোটে, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এতো ভন্ডামী কেন?

খালেদ সাইফুল্লাহ দেলওয়ার

 

ঈমানী চেতনা থাকলে এমনটি হতো না

এক শ্রেণীর মানুষের নিত্য অভ্যাস হয়েছে যে, তারা ধর্ম, কৃষ্টি-কালচার ও ইসলামী ঐতিহ্যে আঘাত করে বগল বাজায়। নিশিচারিনী নারীর কায়দায় খিলখিলিয়ে অট্টহাসি করে। ইসলামের ধারক বাহকদের দেখা মাত্রই ঠাট্টা মশকরা করে। চোখ টিপে, শীষ দেয়। মৌলবাদী বা মোল্লা বুলি আউড়িয়ে কথা শিল্পির সাজে আধুনিকতার ঢেকুর দেয়। এসব দেখলে অনেক মুসলমান নিজেকে শামলাতে পারে না। একে অপরকে ডেকে বলে, ভাইরে! এদেশে ইসলাম নিয়ে বেঁচে থাকা মহা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঐ যে শুতো ইসলাম বিরোধীরা কি বলছে, ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংস করতে তারা পায়তারা করছে ইত্যাদি দু'একটি কথা বলে মুসলিম নামের বনি আদমগুলো ঘরে ফেরে। ঘরে গিয়ে জান খালাসের দোয়া পড়ে। তারা মনের গভীর অঙ্গণে এ কথাটিকে স্থান দেয় না যে, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত আমরা কত গালমন্দ শুনলাম। কত রাজনৈতিক ধাক্কাখেলাম! নানাভাবে লাঞ্চিত হলাম। অনেক লাঞ্চিত হয়েছি, অনেক কথা শুনেছি, আর নয়। এবার একটু প্রতিবাদ করি।

প্রতিবাদ করা ইসলাম বিরোধী নয় কিংবা দোষের কিছু নয়, এটি ইসলামের বিধানে রয়েছে। আর প্রতিবাদ জায়েজ না হলে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ২৭ টি জিহাদ কেন করেছেন। জিহাদ করা তো অপ্রায়োজনীয় বা অবৈধ নয়। ইতিহাস কি একথা সাক্ষ্য দেয় না যে, ইকামতে দ্বীনের আন্দোলন যা মুসলমানরা মনে-মুখে-বুকে সর্বস্তরে ধারণ করতো—বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই হতো। সাহাবা কেরাম জান-মালের কুরবানী দিয়ে এ সকল গোষ্ঠীর মোকাবিলায় যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তেন। তারা প্রমাণ করতেন যে, আমরা সত্যিকার হকের উপর আছি। সাহাবায়ে কেরামরা খুব ভালোভাবে টের পেতেন যে, বিধর্মী এবং মুনাফিকরা একমাত্র ইসলামের কারণে ও দ্বীন গ্রহণের অজুহাতে আমাদের অহেতুক গালমন্দ করে।

উল্লেখ্য, ব্যক্তিগত বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম বদলা নিতেন না। তাদের সহায়-সম্বল সম্পূর্ণ নষ্ট করলেও, তারা সে ব্যাপারে তেমন মাথা ঘামাতেন না। তবে দ্বীনে হকের বিরুদ্ধবাদীদের তারা কোন ক্রমেই ক্ষমা করতেন না। সাহাবায়ে এজামদের শেষ ও আখেরী কথা ঈমান এবং ইসলাম। বর্তমানে আমাদের মুসলিম চরিত্র এর সম্পূর্ণ বিপরীত। ব্যক্তি স্বার্থে আমরা বখতিয়ার খিলজীর বীরত্ব দেখাই এবং ইসলামী স্বার্থে দেখাই হীনমন্যতা। ইসলাম রক্ষার জন্য ইসলাম বিরোধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হওয়ার কারণে আজ ব্রাহ্মণ্যবাদী অপশক্তির হোতারা আমাদের কাঁদিয়ে ছাড়ে। আমরা নিথর নিস্তব্দভাবে সে ব্যথা হজম করি। এভাবে আর কতদিন চলবে বলুন? আমরা যেন ইসলামী স্বার্থে গালমন্দ হজম না করি । গাল হজম যেন আপন স্বার্থের লাগি হয়।

নিজাম উদ্দীন

 

তালেবান সরকারের স্বীকৃতিদান সময়ের বলিষ্ঠ দাবী

রুশ আগ্রাসন থেকে মুক্ত হবার পর দীর্ঘ দিনের অশান্তি-হানাহানি এবং স্বার্থের দ্বন্ধ মিটিয়ে দিতে এবং শহীদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রকৃত ইসলামী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার তাগিদে তালেবান আন্দোলন গড়ে উঠেছিল ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমীক কওমী মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক কর্তৃক। আর এ অনাড়ম্বর জীবন যাপনকারী নিঃস্বার্থ তালেবান কর্মীরা শান্তিপ্রিয় জনগণের সার্বিক সহযোগীতা ও আশির্বাদপুষ্ট হয়ে আজ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। কঠোর হাতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাকারী এ তালেবান সরকার তাদের অধিকৃত সকল স্থানে কুরআনী আইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে এনে বর্তমান এ অশান্তিময় বিশ্বের প্রতি নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।যদিও সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বমোড়ল সম্প্রদায় তালেবানদের বিরুদ্ধে কল্পকাহিনী ও তিলকে তাল বানিয়ে বিশ্ববাসীকে তালেবানদের প্রতি কুধারণা সৃষ্টি করতে জোরদার অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, কারণ আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমগুলো ঐ সব সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণে;তবুও সত্য আজ ক্রমে ক্রমে উদ্ভাসিত হচ্ছে। তাই যত দিন যাচ্ছে তালেবানদের সততা ততই বলিষ্ঠভাবে প্রমাণিত হচ্ছে।

            সে জন্যই তথাকথিক বিশ্বমোড়লরা তালেবান বিরোধী জোটকে নানাভাবে সাহায্য ও ইন্ধন দিচ্ছে, যাতে করে আফগানে স্থীতিশীলতা না আসে। কারণ আফগান শান্ত হলেই তালেবান সরকার তাদের কল্যাণধর্মী কাজে আত্মনিয়োগ করবে; যা কিনা ঐ সমস্ত হীনমন্যদের মিথ্যা গর্বের সৌধকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে পারে। এমনি এক পরিস্থিতিতে শান্তি ও মানবতার মঙ্গলকামী দেশ হিসাবে বাংলাদেশ সরকারের অবশ্যই উচিৎ, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে মুসলিম বিশ্বের সাথে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, মুক্তিকামী মানুষের বন্ধু এবং শান্তিকামী রাষ্ট্র হিসাবে এদেশের(বৈদেশিক)মূলনীতিকে বাস্তবায়ন করা এবং এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মনের আকুতিকে বাস্তবায়ন করে আপামর জনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এটাই বর্তমান সময়ের এক বলিষ্ঠ দাবী। অতএব বর্তমান সরকারের কাছে আহবান, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দান করার দুর্লভ সুযোগ গ্রহণ করে নিজেদেরকে ধন্য করুন

ইকবাল জাফর খন্দকার

 

 

আসুন সন্ত্রাস, নেশা নগ্নতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি

একটি দেশের সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিতকরণ ও শান্তি শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা। আর তা  দেশকে সুখী ও সমৃদ্ধশালী করার জন্যও পূর্বশর্ত। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তি ২৫ বছর বিভিন্ন সরকার দেশ পরিচালনা করলেও এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয় নি বরং উদ্বেগজনক হারে আরো অবনতি হচ্ছে দিন দিন। নামাজে শান্তি নিরাপত্তা নেই। নির্বিঘ্নে চলাফেরা, নিরাপদে বসবাস, শংকাহীনভাবে ব্যবসা-বানিজ্য, মুক্তমনে শিক্ষাঙ্গনে পড়াশুনা আরো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দেশে আইনের শাসন নেই, প্রভাবশালী চক্রের লালিত ও মদদপুষ্ট মাস্তান ও দুস্কৃতিকারীরা দ্বিগুণ উৎসাহে চালিয়ে যাচ্ছে সমাজে হত্যা, সন্ত্রাস, জুলুম, রাহাজানী। জনগণ হয়ে পড়ছে এদের কাছে জিম্মী। এইসব দুস্কৃতিকারীরাই নেশার বিস্তার ঘটিয়ে যুব সমাজের হাতে তুলে দিচ্ছে রকমারী ধরনের মাদকতা, ছড়িয়ে দিচ্ছে বাজারে অশ্লীল ও নগ্নতায় ভরপুর পত্র-পত্রিকা, স্বার্থ হাসিলের জন্য লেলিয়ে দিচ্ছে সন্ত্রাসীদের নীরিহ জনতার উপর । যার পরিণামে যুব সমাজ হচ্ছে দ্রুত বিপথগামী, তারা ধাবিত হচ্ছে অন্ধকারের দিকে, আগামী দিনের ভবিষ্যত ছাত্রদের হাতে শোভা পাচ্ছে বই, কলম, খাতার পরিবর্তে পিস্তল, চাকু, ককটেল। সমাজের এই দুরাবস্থায় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতির ভবিষ্যত, দেশবাসীকে করে তুলেছে শংকিত অথচ এই সমস্যার সমাধান করার গুরু দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যেন দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। তাই এই অবস্থা থেকে সমাজকে রক্ষা করা এবং আগামী দিনের ভবিষ্যত যুব সমাজকে বাঁচাতে দেশবাসীকে অবশ্যই সজাগ হতে হবে, অপরাধীদের ভয় না করে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস, জুলুম, নেশা ও নগ্নতা বিস্তারকে নির্মূলের জন্য এক যোগে কাজ করতে হবে।

মুহাম্মদ আইয়ুব