গল্প নয়
উসতা আনা-ই-তাহাজ্জুদ
রুবাইয়াত আল-ইমাম
মহান প্রভু আল্লাহ তাঁর বন্ধু রাসূল (স)-কে বলেছেনঃ “রাতে বিনিদ্র থেকে নামাজ পড়। এটি তোমার জন্য অতিরিক্ত হুকুম।” মহানবী (স) রাত্রি জেগে নামাজ পড়তেন। তাহজ্জুদের নামাজ।
তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব অনেক, অসীম এর তাৎপর্য। ফজিলত এর সীমাহীন। প্রকৃত পক্ষে তাহাজ্জুদ নামাজ মানুষকে আল্লাহর সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করে। তাহাজ্জুদ নামাজ স্রষ্টা আর সৃষ্টির মধ্যে সেতু বন্ধন।
আমাদের জাতির মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজ প্রায় উঠে গেছে। ফলে আল্লাহর সাথে মুসলিম জাতির যোগাযোগ দুর্বল হয়ে গেছে। নিবিড় সম্পর্ক হয়ে গেছে শিথিল হীম শীতল।
মহান রাসূল খেজুর পাতার একটি চাটাই পেতে তাহাজ্জুদ পড়তেন। তিনি এতো বেশী তাহাজ্জুদ পড়তেন যে, সাহাবীরা পর্যন্ত তা দেখে তাহাজ্জুদ পড়া শুরু করে দেন। সাহাবীরা দল বেধে নামাজ পড়তে আসতেন। কাতার বেধে দাঁড়িয়ে যেতেন মহানবীর পেছনে। আস্তে আস্তে লোক সংখ্যা বাড়তে থাকে।
মহানবী দেখলেন, এভাবে নামাজ পড়তে থাকলে সমস্যা হতে পারে। সাহাবীদের এই আগ্রহ দেখে তাহাজ্জুদ নামাজ ফরজ হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি সবাইকে ডেকে এভাবে দল বেধে নামাজ পড়তে আসতে নিষেধ করে দিলেন। বললেনঃ
“তোমরা তোমাদের ঘরে নির্জনে নিভৃতে নামাজ পড়।”
তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার উত্তম সময় হলো শেষ রাত্রির সময়। তাহাজ্জুদ নামাজের বিষয়ে অনেক হাদীস আছে। এ নামাজের কথা কুরআনেও বলা হয়েছে।
তাহাজ্জুদ নামাজ আসলে নফল। তাই এ নামাজ আদায়ে কাউকে বাধ্য করা হয় না। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। এ জন্যই এ নামাজের তাৎপর্য অনেক বেশী। কারণ, স্বেচ্ছায় আল্লাহকে ডাকা, তাঁর সান্নিধ্যে যাওয়া, সাহায্য চাওয়া। আর তাঁর কাছে প্রার্থনা করাকে আল্লাহ খুব বেশী পছন্দ করেন। আল্লাহ খুশী হন। আমাদের বেশী বেশী তাহাজ্জুদ পড়া উচিত।
মসজিদে নববীর যে স্থানে মহানবী (স) তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন সে স্থানে একটি স্তম্ভ নিমার্ণ করা হয়েছে। সেটির নামই উস্তা আনা-ই তাহাজ্জুদ। তাহাজ্জুদ স্তম্ভ।
মহানবী রাত্রি জেগে আল্লাহর ইবাদাত করেছেন। তাঁরই স্মৃতি এ স্তম্ভটি। স্তম্ভটি রাতে বিনিদ্র থেকে আল্লাহকে স্মরণ করার মূর্ত প্রতীক। এ স্তম্ভটি আজ মুসলিম উম্মাহকে তাহাজ্জুদের প্রতি ডাক দিচ্ছে। আহবান জানাচ্ছে।