JustPaste.it

আঁধার থেকে আলোর পথে

 

নওমুসলিম কূটনীতিক ওলার্জ উইলসন এর সাক্ষাৎকারঃ

পাশ্চাত্যবাসী ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে না

 

                “বেশ কিছু কাল হলো আমি ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা করে আসছি। এই গবেষনা চালাতে গিয়ে আমি ইসলাম সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বই অধ্যয়ন করেছি এবং আমার পিতা ডেনমার্ক ভাষায় ইসলাম সম্পর্কিত যে ক'টি বই অনুবাদ করেছেন, অত্যন্ত নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে সেগুলোও আমি পাঠ করেছি। এক পর্যায়ে আল্লাহ তা’আলা আমাকে সত্য ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করার তাওফীক দান করেন এবং আমি মুসলমান হয়ে যাই। আজ আমি নিজের মধ্যে এক রকম প্রশান্তি, আনন্দ ও এমন সৌভাগ্য অনুভব করছি, দুনিয়ার কোনো কিছুর সাথে যার তুলনা হতে পারে না।”

               উদ্ধৃত উক্তিটি ডেনমার্কের এক রাষ্ট্রদূত নওমুসলিম ‘ওয়াল ওলার্জ উইলসন’ এর। তার বক্তব্য হলো, এই অনুভূতি ও বিশ্বাসে আমি মুসলমান হয়েছি যে, একমাত্র ইসলাম-ই ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, প্রেম-প্রীতি, আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও কল্যাণের ধর্ম। মানবজাতির জন্যে ইসলামই একমাত্র কল্যাণকর জীবন ব্যবস্থা"

                আরব বিশ্বের সুবিখ্যাত পত্রিকা ‘আদ-দাওয়া' এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে ডেনমার্কের নওমুসলিম রাষ্ট্রদূত উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। এ সাক্ষাৎকারে তিনি তার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।

                যে কোন অমুসলিম দেশের কোন রাষ্ট্রদূতের ইসলাম গ্রহণ নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়। কিন্তু অপরদিকে এ ধরনের ঘটনা খ্রিষ্টান ও অন্যান্য অমুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য রীতিমত মাথা ব্যাথার কারণ, যা তাদেরকে কাটার মত বিদ্ধ করে। একজন মর্যাদাসম্পন্ন সচ্ছল ও সমৃদ্ধশালী অমুসলিম বিনা চাঁপে সম্পূর্ণ সেচ্ছায় ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন ইসলাম গ্রহণ করছে, এ প্রশ্ন তাদের রীতিমত ভাবিয়ে তুলছে। আবার এ ধরনের ঘটনা মুসলিম সমাজের দুর্বল ঈমানের অধিকারী লোকদের মধ্যেও মনোবল বৃদ্ধি করছে। অবর্ণনীয় বিলাস-ব্যসন ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে নিমজ্জিত থাকা সত্ত্বেও সবকিছু ত্যাগ করে ইউরোপের কোলে লালিত একজন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীর ইসলাম গ্রহণ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যময়। বিশেষ করে তিনি যখন ঘোষণা করেন ইসলাম-ই একমাত্র সঠিক জীবন ব্যবস্থা, একমাত্র অনুসরণযোগ্য আদর্শ এবং ঈমানের স্বাদ-ই বিশ্ব মানবতার প্রকৃত স্বাদ। ঈমানের চেয়ে বড় সম্পদ দ্বিতীয়টি আর নেই। উক্ত নওমুসলিমের সাথে ‘আদ-দাওয়া’ প্রতিনিধির যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, নিম্নে এর বিবরণ দেয়া হলো। (অনুবাদক)

              প্রশ্নঃ আমাদের একান্ত কামনা যে, আপনার, ইসলাম গ্রহণের কাহিনী নিজের মুখে বর্ণনা করে আমাদের শুনাবেন, যাতে পাঠক মহল তা পাঠ করে উপকৃত হতে পারে।

            উত্তরঃ ১৯৬৩ সালের কথা। তখন আমি সবেমাত্র যৌবনে পদার্পণ করেছি। সে সময়ে আমার মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ এবং সে দেশকে এই প্রথম কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়। সে সফরে আমি জর্দান, সিরিয়া ও লেবানন প্রভৃতি বড় বড় শহরগুলো ভ্রমণ করি। এ সময়ে বহু মুসলমানের সাথে আমার সাক্ষাত ঘটে এবং তাদের সঙ্গে অত্যন্ত খোলামেলা মতবিনিময় হয়। তাতেই আমি বেশ প্রভাবিত হয়ে পড়ি। তা ছাড়া ইসলাম সম্পর্কে বেশ ক'টি বই অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করেছিলাম। এতে ইসলাম সম্পর্কে বহু অজানা বিষয় এক এক করে আমার জানার সুযোগ হয়। এভাবে ধীরে ধীরে আমার মনে এ দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যে, ইসলাম-ই আল্লাহ তা'আলার একমাত্র ও সর্বশেষ দ্বীন। ইসলাম ছাড়া আর যত ধর্ম আছে, সবই ভ্রান্ত ও অচল। অবশেষে এ চিন্তার আলোকেই সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় ও স্বাধীনচিত্তে আমি ইসলাম গ্রহণ করি এবং ১৯৬৭ সালে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রকাশ্যে নিজের মুসলমান হওয়ার কথা ঘোষণা করি। এরপর নিজ দেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে বিভিন্ন দেশ সফর করি এবং ১৯৮৭ সালে রিয়াদে রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হই।

               আমি বিশেষভাবে যে কথাটি বলতে চাই, তা হলো, শৈশব থেকেই আমার মন-মানসিকতা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট ছিল এবং ইসলাম গ্রহণের প্রতি যে বিষয়টি আমাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল, তা হচ্ছে, মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য-সম্প্রতি, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধন। আরব দেশগুলোতে মুসলমানদেরকে কাছে থেকে দেখার পর আমার মধ্যে এ বিষয়ে দৃঢ় উপলব্ধি জন্মে। ইসলামের যে বৈশিষ্ট্যটি আমার সবেচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে, তা হলো ইসলামের স্বচ্ছ ও নির্ভেজাল একত্ববাদ। যেমনঃ ইহুদী ও খ্রিষ্টধর্ম আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে আরো একাধিক উপাস্য স্থির করেছে। খ্রিষ্টানরা তো হযরত ঈসা (আঃ)-কে এত বেশী মর্যাদা দিয়ে বসেছে যে, তাকে খোদার আসনে বসিয়ে ছেড়েছে। পক্ষান্তরে ইসলাম এ ধরনের যাবতীয় শির্ক থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। নির্ভেজাল তাওহীদ ইসলামের একক ও অন্যতম বৈশিষ্ট্য। দুনিয়াতে ইসলাম-ই নির্ভেজাল তাওহীদের একমাত্র ধারক; যাতে শিরকের লেশমাত্র নেই। ইসলাম বিশ্বজগতকে এক আল্লাহর দিকে আহ্বান করে। মহান আল্লাহর অসংখ্য শুকরিয়া যে, তিনি সউদী আরবের মত একটি দেশে রাষ্ট্রদূত হিসাবে আমাকে কাজ করার সুযোগ দান করেছেন, যা আমাকে ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে নিবিড়ভাবে বহু কিছু জানার ব্যাপারে সহায়তা করেছে।

           প্রশ্নঃ এক শ্রেণীর মুসলমানের অসাধু চালচলন এবং অপরাধপ্রবণতা আপনার মনে কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা ইসলাম গ্রহণে বাঁধার সৃষ্টি করেছে কি?

           উত্তরঃ দ্বীনের আদেশ-নিষেধ আর মানুষের কর্ম পদ্ধতির মাঝে তারতম্য থাকা-ই স্বাভাবিক। দ্বীনের মধ্যে কখনো কোন প্রকার পরিবর্তন আসে না। পরিবর্তন হয় মানুষের চাল-চলন ও কর্মকান্ডে। মানুষের কাজে ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কারণ মানুষ ফেরেশতা নয় যে, তারা ভুলের উর্ধে থাকবে। কাজেই কারো অপরাধ প্রবণতার ফলে মন খারাপ করার কি কারণ থাকতে পারে?

             প্রশ্নঃ মুসলমান হওয়ার পর আপনার সামাজিক জীবনে কোন পরিবর্তন এসেছে কি?

            উত্তরঃ মুসলমান হওয়ার পর আমি নিজের মধ্যে এক ধরনের আত্মিক পরিতৃপ্তি ও মানসিক প্রশান্তি অনুভব করছি। চিন্তার জগতেও আমার এক রকম বিপ্লব অনুভব হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলাম গ্রহণের পর আমার সামাজিক জীবনে যথেষ্ট বিপ্লব এসেছে।

           প্রশ্নঃ ইসলাম গ্রহণ করার আগে ইসলাম সম্পর্কে আপনার ধ্যান-ধারণা যেমন ছিল, ইসলাম গ্রহণের পর তাতে পরিবর্তন এসেছে নিশ্চয়। এ ব্যাপারে আমাদেরকে কিছু বলবেন কি?

            উত্তরঃ বলব না কেন? আপনি যদি ইউরোপের বাসিন্দা হতেন, তা হলে ইসলাম সম্পর্কে এ মুহূর্তে আপনার কোনো অভিজ্ঞতা থাকতো না বললেই চলে। ইউরোপের স্কুল-কলেজগুলোতে ভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে দায়সারা গোছের প্রাথমিক কিছু শিক্ষা দেয়া হয় মাত্র। ইসলাম সম্পর্কেও সামান্য শিক্ষার ব্যবস্থা আছে ঠিক, কিন্তু তা এতই অকিঞ্চিৎকর যে, তা একজন মানুষের পক্ষে সঠিক কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য মোটেই সহায়ক নয়।

             আমার বিশ্বাস, পাশ্চাত্যবাসী ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ও উল্লেখযোগ্য কোনো ধারণা রাখে না। তারা আরব দেশগুলোকে তাদের প্রতিপক্ষ ও শক্র মনে করে। কিন্তু বিজ্ঞানের এ উন্নতির যুগে সভ্যতা ও সাংস্কৃতির আদান-প্রদান এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অত্যাধুনিক ব্যবস্থার ফলে ইসলাম ও মুসলমানদের ব্যাপারে পাশ্চাত্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে। রয়ে গেল ইসলাম সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশ্ন। এর জবাব হলো, এ বিষয়টা শুরু থেকেই সন্তোষজনক ছিল। কারণ, শৈশব থেকেই আমি ইসলাম সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য জ্ঞান লাভ করেছিলাম। এক পর্যায়ে এ সত্যনিষ্ঠ ধর্ম সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা যথেষ্ট সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ হওয়ার পরই আমি ইসলামকে আমার মুক্তির গ্যারান্টি হিসাবে হণ করেছি।

          প্রশ্নঃ অনেকের ধারণা, ইসলামের ভবিষ্যত অত্যন্ত উজ্জ্বল। এর প্রমাণ হলো, ইউরোপের ইসলাম গ্রহণকারীদের সংখ্যা অন্যান্য ধর্মের তুলনায় বিস্ময়কররূপে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার ধারণা কি?

           উত্তরঃ এ এক জীবন্ত বাস্তব যে, ইউরোপে মুসলমানদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেবল ফ্রান্সেই চার মিলিয়ন মুসলমান রয়েছে। ইউরোপে বাইরে থেকে একনিস্ট মুসলমানদের যাতায়াত আরো বৃদ্ধি পেলে ইউরোপবাসীদের ইসলাম গ্রহণের গতি আরো ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা যায়।

         আসলে ব্যাপার হলো, ইউরোপের লোকেরা মনে করে যে, মুসলমান এমন এক-সম্প্রদায়ের নাম, সন্ত্রাস মারামারি আর কাটাকাটি করা যাদের প্রধান কাজ। তাদের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে এ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির মূলে রয়েছে পাশ্চাত্যের ইসলামবিরোধী প্রোপাগান্ডা এবং ইসলামের শত্রুদের লাগামহীন অপপ্রচার। মুসলমানদের সঙ্গে যখন তারা মেলামেশা ও উঠাবসা করবে, তখন ধীরে ধীরে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ধ্যান-ধারণায় পরিবর্তন আসতে থাকবে এবং ইসলাম ও মুসলমানদের ব্যাপারে তাদের পূর্বের ঘৃণা-অনীহা ও ভুল বুঝাবুঝির দেয়াল আপনা-আপনি ভেঙ্গে যাবে। ইসলামের ব্যাপারে পাশ্চাত্যের অভিজ্ঞতা ও জানা-শুনার পরিধি বৃদ্ধি পাবে। এভাবে যদি আমি ইউরোপে ইসলামের ব্যাপারে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা রাখি, তাহলে ভুল করব না।

           প্রশ্নঃ ইসলাম সম্পর্কে যতটুকু লেখা-পড়া করেছেন, তাতে আপনি নিশ্চয় ইসলাম প্রদত্ত মানবাধিকার সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। আচ্ছা, খ্রিষ্টধর্ম এবং ফরাসী বিপ্লব মানব জাতিকে ইসলামের অনুরূপ অধিকার দিয়েছে কি?

           উত্তরঃ ইসলাম ও খ্রিষ্টধর্ম উভয়ই মানব জাতিকে বিভিন্ন অধিকার দিয়েছে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি খ্রিষ্টধর্মের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে স্বতন্ত্র। ইসলাম মানবাধিকারকে শরীয়তের দৃষ্টিতে দেখে। কারণ ইসলামে মানবজীবনের উপর শরীয়ত-ই শাসন করে। কিন্তু খ্রিষ্টধর্মে মানবাধিকার গির্জার পরিবর্তে সরকারের দফতর থেকে সংরক্ষিত হয়। ইউরোপে ধর্ম আর রাষ্ট্র আলাদা বিষয়। একের সঙ্গে অপরের কোনো সম্পর্ক নেই।

           পক্ষান্তরে ইসলামে ধর্ম ও রাষ্ট্রের মাঝে কোনো তফাত নেই। মূলত ধর্ম আর রাষ্ট্র মিলেই ইসলাম। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি চলতে পারে না। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই ইসলামের আবির্ভাব। বর্তমানে ইউরোপে মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য নতুন নতুন আইন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু তা অন্ধকারে হাতড়ে মরার শামিল, ফলাফল শূন্য। ইসলাম মানব জাতিকে যে অধিকার দিয়েছে, অন্য কোন ধর্ম ও মতবাদ তার সমকক্ষতার দাবি করতে পারে না।

            প্রশ্নঃ পূর্বের কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে আপনি বলেছেন যে, পাশ্চাত্য মিডিয়া ও প্রচার মাধ্যমগুলো ইউরোপে মুসলমানদেরকে বিকৃতভাবে পেশ করে। মুসলমানদেরকে তারা কখনো সন্ত্রাসী, কখনো কট্টরপন্থী, কখনো প্রতিক্রিয়াশীল, কখনো বা সেকেলে, সাম্প্রদায়িক বলে পরিচিত করে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?

             উত্তরঃ বিভিন্ন দেশের অনেককেই আমরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকতে দেখি। তারা শান্তিপ্রিয় নাগরিকদেরকে- মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম-নির্বিচারে হত্যা করছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ বসনিয়া-হার্জেগোভিনার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। সেখানে সার্ব হায়েনারা যে অমানবিক কান্ড ঘটিয়ে চলছে, তা সন্ত্রাসের চরম ঘৃণ্য ও লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত। মোট কথা, ইউরোপ ও এশিয়ার কোনো ভূ-খন্ডই সন্ত্রাসমুক্ত নয়। কিন্ত, দুঃখের বিষয় হলো, ইসলামের দুশমনরা আরব বিশ্বকেই কেবল সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয়। যেমনঃ ইসরাঈল ফিলিস্তিনের ইন্তেফাদা আন্দোলনকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। এটা মোটেই ঠিক হচ্ছে না। কারণ, ফিলিস্তিনীরা তাদের বৈধ অধিকার পুনরুদ্ধার ও মাতৃভূমির মর্যাদা রক্ষার জন্য সংগ্রাম করছে। সন্ত্রাস করবে একজন আর সন্ত্রাসী আখ্যা পাবে আরেকজন, এটা অন্যায়।

             প্রশ্নঃ মুসলিম বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?

             উত্তরঃ বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে বলা, যায় যে, আজ মুসলিম বিশ্ব দু'অংশে বিভক্ত। এক অংশ, যাদের তেমন কোনো সমস্যা নেই। অপর অংশ নানা রকম রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত। যেমনঃ বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সার্ব হায়েনাদের হিংস্র থাবা ও হিংসাত্নক কার্যকলাপের শিকার। সেখানকার লাখো মুসলমান গণহত্যার শিকার হয়েছে, বেদখল ও লুণ্ঠিত হয়েছে তাদের জমিজমা, ধনসম্পদ ও মুসলিম মা-বোনদের ইজ্জত আব্রু। ফিলিস্তীনসহ আরো বহু মুসলিম রাষ্ট্রের এই একই করুণ চিত্র। আমাদের মুসলমানদের এখন দায়িত্ব হলো, দুনিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য অর্থ ও অস্ত্রের সাহায্য নিয়ে মুসলিম ভাইদের পাশে দাঁড়ানো। এটা এখন আমাদের অন্যতম ঈমানী দায়িত্ব।

সৌজন্যেঃ আখবারুল আলম

আল-ইসলামী, মক্কা

ভাষান্তরঃ মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন