পাঠকের কলাম
কোথায় লুকিয়ে ছিলে তুমি?
কেন একটি বছর লুকিয়ে ছিলে তুমি? কেন কাঁদালে আমাকে, লক্ষ পাঠককে? তুমি কি ফাঁদে আটকা পড়েছিলে? তুমি কি কালা- কানুনের অক্টোপাশে, বন্দী হয়েছিলে? তা হবে কি করে, তুমি যে প্রহরী, তুমি তো জাগাও। তুমি তো প্রতিক্ষণ এই বলে ডাক দিয়ে যাও, জাগো মুজাহিদ! তোমার অবর্তমানে কে শুনাবে আমাদের জাগানিয়ার গান? তোমার অবর্তমানে কেউ একটিবারও উচ্চারণ করেনি, জাগো নওজোয়ান! জাগো মুজাহিদ! সবাই শুনায় ঘুম পাড়ানিয়া গান। তোমার অবর্তমানে মনে হয়েছে এ জনপদ এক বিশাল কবরস্থান। তোমার কথা শুনে এখন মনে হচ্ছে, এ জনপদের মানুষ এখনো বেঁচে আছে, যারা মেরুদণ্ড সোজা করে বাতিলের মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তোমার আহ্বানে যখন ঘুমের পাড়া জেগে উঠছে, তখন তোমাকে বেঁচে থাকতেই হবে। আল্লাহ্র সাহায্য সম্বল করে তোমাকে বাঁচিয়ে রাখবই ইনশাআল্লাহ্। আর লুকাবে না কিন্তু। হে আমার প্রিয় জাগো মুজাহিদ!
- হেলাল উদ্দীন
শাহাদাত আমাদের কাম্য
জাগো মুজাহিদের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট, আশা করি তাঁরা সকলে ভাল আছেন। আপনারা ভাল থাকলেই আমাদের মত গাঁও- গেরামের অজ্ঞ-তরুণরা ইসলামের মূলনীতি, আদর্শ ও শিক্ষা সঠিকভাবে জানতে পারি। পাশাপাশি মুসলমানদের দুর্দিনে আল্লাহ্ পাকের দরবারে আমাদের তুচ্ছ প্রাণ উৎসর্গ করে শাহাদাতের বিশাল মর্যাদার মুকূট পড়ার সৌভাগ্য লাভ হবে বলেও আশাবাদী।
আপনারা শুনলে হয়তো খুশী হবেন, আমরা গুটিকয়েক তরুণ মিলে ‘জাগো তরুণ’ নামে একটি ইসলামী সমিতি গঠন করেছি। এই সমিতির আওতায় একটি ইসলামী পাঠাগার রয়েছে। এই পাঠাগারের মাধ্যমে বিভিন্ন জিহাদী বই-পুস্তক হালুয়াঘাটের মুসলমান ভাইদের হৃদয়ে ধীরে ধীরে শাহাদাত লাভের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করছে। তাছাড়া এই সমিতির মাধ্যমে আপনাদের প্রকাশিত মাসিক “জাগো মুজাহিদ” হালুয়াঘাটে বিতরণ করা হচ্ছে। এই ম্যাগাজিন বিক্রি করে মুনাফা অর্জিত হচ্ছে- তার পুরোটাই সমিতির তহবিলে জমা হচ্ছে। এই ম্যাগাজিনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। প্রতি মাসে অন্তত ১০ কপি করে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমিতির পাঠাগারের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়াজ নসিহতের অডিও ক্যাসেট বিতরণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে আমাদের এই ইসলামী প্রচারণায় মুসলমান ভাইদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। দোয়া ও পরামর্শ আমাদের এই নতুন প্রতিষ্ঠানটির জন্য একান্ত অপরিহার্য।
-মুহাম্মদ আজীজুল হক
জাগো মুজাহিদের প্রতি জাতির আস্থা অপরিসীম
দেশবরেণ্য আলিমগণের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এবং স্বনামধন্য লেখকগণের সুচিন্তিত লেখা দ্বারা সুশোভিত “জাগো মুজাহিদ” যে সময়ের চাহিদা পূরণে সক্ষম, সে কথা আবার প্রমাণিত হল।
এ পত্রিকাটি ইসলামী সংস্কৃতি ও আদর্শ বিকাশে এক নতুন দিগন্ত। ইসলামের নীতি বর্জিত আদর্শচ্যুত ক্ষমতাবানদের ইচ্ছার উপর এ পত্রিকার ভবিষ্যৎ সোপর্দ করা যাবে না। এ পত্রিকার যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে এদের মোকাবেলা করেই।
‘সত্য সর্বকালের মানুষের জন্য গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিযুক্ত’ এ সত্য ও সরল কথাটি ওরা বুঝেও মানছে না। কেননা ওরা জ্ঞানপাপী। আর জ্ঞানপাপীরা হল ড্রাগনের চেয়েও মারাত্মক জীব।
ইসলামী সংবিধান বাস্তবায়নে যে “জাগো মুজাহিদ” আত্মনিয়োগ করেছে, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কেউ পত্রিকাটি বন্ধ রাখবে তা তৌহিদী জনতা মেনে নিবে না, নিতে পারে না। সত্য ও ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠায় জাগো মুজাহিদের যাত্রা। মানবতার উৎকর্ষ সাধনে, মানবতার মান উন্নয়নে স্বীয় কর্তব্য পালন করে সত্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা তার অঙ্গীকার এবং অসত্যকে প্রতিরোধ করতে সে সর্বক্ষণ সচেষ্ট। এ পত্রিকার প্রতি জাতির আস্থা অপরিসীম। আমরা এর স্থায়ীত্ব কামনা করি।
-ফুজাইল আহমাদ
প্রেরণার আঁধার
অনেক দিন পর আবার ভেঙ্গে যাওয়া মনটায় চাঙ্গাভাব অনুভব করছি। নিজেকে উজ্জীবিত মনে হয়েছে এক নতুন শক্তিতে। এর কারণ জাগো মুজাহিদ। অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি, ইসলাম বিরোধী বিদেশী দালালরা মুসলিমদের উপর অন্যায় ও অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি করছে। তাদেরকে বাধা দেয়ার জন্য মাথা তুললে সে মাথাটিকে কিভাবে দ্বিখণ্ড করবে, সে চিন্তায় তারা দিন-রাত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তবুও মুসলিম মুজাহিদ জনতা আল্লাহ্কে স্মরণ করে অন্যায়ের বিরোধিতা করে চলেছে। তারা বাতিলের মোকাবেলায় নিজের জানমাল নিয়ে জিহাদ করে যাচ্ছে। কিন্তু কাফির-মুশরিকরা ইসলামকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিতে চাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তারা নতুন ফাঁদ তৈরি করছে। মাসিক জাগো মুজাহিদ-এর নাম- নিশানা কিভাবে বাংলার যমীন থেকে মুছে ফেলা যায়, সেই চেষ্টা ছিল ওদের অনবরত। কিন্তু তারা ব্যর্থ হলো। দীর্ঘ প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর ইসলামের দাওয়াতপত্রখানি আবার ফিরে এসেছে পাঠকের হাতে। মুসলিম জাহান পেরেশান ছিল এই জন্য তারা এক অজানা আশংকায় ভুগছিলেন, বুঝি জাগো মুজাহিদ আর ফিরে আসবে না পাঠকের হাতে। কিন্তু আল্লাহ্ তায়ালার অপার কুদরতে তিনি আবার এই যমীনে তার পুনর্জীবন দান করেছেন। ইনশাআল্লাহ্ জাগো মুজাহিদ এই যমীনে কায়েম থাকবে। আমাদের সকলের এই প্রার্থনা আল্লাহর দরবারে।
-মুহাঃ মেহেদী হাছান ইব্নে মাহফুজ
ইসলামী জাতিসংঘ চাই
‘আল কুফরু মিল্লাতুন ওয়াহিদাহ।’ মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পবিত্র মুখনিসৃত এই হাদীছের সরল অর্থ- ‘ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে সকল কুফরী শক্তি জোটবদ্ধ।’ এই একবিংশ শতকের মোহনায় এসে আমরা এই বাস্তবতাই প্রত্যক্ষ করছি সর্বত্র।
আমরা জাতিসংঘের দ্বিমুখী নীতির কথা বলতে পারি। পূর্ব তিমুরে স্বাধীনতাকামীরা স্বাধীনতা পেয়ে গেল খ্রিষ্টান হওয়ার সুবাদে। অথচ দীর্ঘ অর্ধ শতক ধরে আযাদীপাগল কাশ্মীরী মুসলমানদের রক্ত নিয়ে তামাশা খেলে চলেছে আধিপত্যবাদী ভারত। জাতিসংঘ থেকেছে নীরব সমর্থক হয়ে।
মুসলমানদের জন্য সে যদি কখনো কিছু করে, তবে অবশ্যই তা এই জন্য-যাতে মুসলিম দেশগুলো তার বিকল্প কিছু ভাবতে সুযোগ এবং ফুরসত না পায়।
কার্যত এটি একটি ‘ইসলাম ও মুসলমান নিধন সংঘে’র ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে নিরলসভাবে। ইহুদী-খ্রিষ্টান-হিন্দুদের হয়ে এমনসব ‘কাজ’ সে সমাধা করে দিচ্ছে, যেটা সরাসরি তাদের দ্বারা সম্ভব নয়।
উপরের কথাগুলো একপেশে আর চটুল মনে হলেও, এগুলো খুবই সত্য।
আমরা কি এই ‘নিধন সংঘ’ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিছু ভাবছি?
ও.আই.সি নামে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থা থাকলেও, তার অবদান যথেষ্ট নয়।
মুসলিম দেশের রাষ্ট্র প্রধানগণ সম্মিলিতভাবে যদি কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তবে এই ‘আন্তর্জাতিক আগ্রাসন’ থেকে বিশ্ব মুসলিম মুক্তি পেতে পারে। নিশ্চিত হতে পারে বিশ্বের মানব সম্প্রদায়ের শান্তি ও সংহতি।
-সাদীকুল্লাহ মিসবাহ
হ্যাপি মিলেনিয়াম ধন্যবাদ টিএসসি
৩১ ডিসেম্বর রাত। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড তার বুকের স্পর্শকাতর জায়গা টিএসসি খুলে দিল মিলেনিয়াম বরনের কাতুকুতু খেলার জন্য। বিরাট খেলা। দর্শকও প্রচুর৷ খেলুড়ে নায়ক পঙ্গপাল নিয়ে হাজির রাত ১২টার পূর্বেই। সহকারী নায়করাও চোখে স্বপ্ন আঁকে বাহুবদ্ধ অচেনা নায়িকার নরম শরীরের খায়েশি নড়াচড়া। গড়িয়ে যায় সময় সেকেন্ড মিনিট করে করে। মহানায়ক প্রস্তুত। প্রস্তুত তার বাহিনী। দু’একটা মশা গ্যাঞ্জাম করে। মাঝে মাঝে মহানায়কের আব্বারা মোবাইলে খবর নেয়। কী বাবা, খেলা শুরু হল? বিস্ফারিত নয়নে নায়ক জবাব দেয়, না বাবা, নায়িকা এখনও আসেনি। মধ্যরাতের অন্ধকারে ধাক্কা মেরে একটি গাড়ীর হর্ন বেজে ওঠে। দরজা খুলে যায়। নেমে আসে ভূবন মোহিনী মক্ষিরানী। পৌষের শীত হার মেনেছে। যৌবনের প্রচণ্ড তাপে গরম কাপড় না পরে পরেছে স্কার্ট। কোমর খুজু খুজু করে দ্রুত পায়ে আসছে নায়িকা। উদ্বিগ্ন দর্শক। খুশি খুশি টিএসসি। নায়ক গজেন্দ গমনে হাই হাই হ্যাল্লো হ্যাল্লো করে এগিয়ে যায়। নবাগত মিলেনিয়াম নায়কের ঘন ঘন নিশ্বাসে বুঝে নেয় তার নিয়ত খারাপ। ভদ্র বাবার সন্তান নায়ক নায়িকাকে পেয়ে তার ফোজদারি হাত দুটোকে চালু করে। পাতলা বসনা ষোড়শী নায়িকা আরাম আরাম বোধ করে। চোখ বন্ধ হয়ে আসে, শরীর অবশ হয়। এই তো চেয়েছি। এজন্যই তো শীতের রাতে হালকা জামা পরে এসেছি। রেফারির বাঁশি না বাজতেই শুরু হল বস্ত্র ছেঁড়া কাতুকুতু খেলা। সহকারীরাও ফাও চান্স নিতে এগিয়ে এল। শুরু হল ফাইনাল কাতুকুড়ু খেলা। সাবাস নায়ক! সাবাস সহকারীরা! আরে! দীর্ঘদিনের ট্রেনিং কি আর বৃথা যায়? নায়িকা বেচারী কিন্তু এত বেশী লোকের সাথে জীবনেও কাতুকুতু খেলেনি। তাই তো বাংলা ভুলে ইংরেজীতে হেল্প হেল্প করতে থাকে। উলঙ্গ শরীরের সর্বত্র ডজন দুয়েক খেলুড়ের কাতুকুতু সহ্য করতে না পেরে নায়িকা অচেতন হয়ে পড়ে। রেফারি পুলিশের বাঁশি শোনা যায়। খেলা শেষ হওয়ার সিগন্যাল। টিএসসি এ রকম একটি ঐতিহাসিক খেলা দেখতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে। নায়কের বাজানরা খেলার খবর শুনে খুশি হয় শুধু দুঃখ পায় মিলেনিয়াম, লজ্জায় মুখ ঢাকে সমগ্র জাতি।
-মিথুন কামাল
বিংশ শতাব্দী, একুশ শতক হবে কেন?
আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, গোটা পৃথিবীর মানুষের নতুন শতাব্দীর আয়োজন ও বিংশ শতাব্দী শেষ কথাটি বলার জন্য আমি ভেবে অবাক হই যে, গোটা পৃথিবীর একটি মানুষও কি সঠিক হিসাব জানে না। তা বলছ, নতুন শতাব্দী। আমি তা বলতে বা মানতে রাজি নই। কারণ, কাউকে যদি ১০০ পর্যন্তই গণনা করতে বলা হয় তাহলে তিনি ১০০ পর্যন্তই গণনা করবেন, ৯৯ পর্যন্ত গণনা করবে না। যদি কেউ ৯৯ পর্যন্ত গণনা করেন, তাহলে তার হিসাব ভুল হবে। আরও সুন্দরভাবে বলা যায়, ধরুন আপনার কাছে এক ব্যক্তি ১০০ টাকা পাওনাদার আপনি যদি তাকে ৯৯ টাকা দেন, তাহলে সেই ব্যক্তি আপনার কাছ আরও ১ টাকা পাওনা থাকবেন। আর এই হিসাব মতে বিংশ শতাব্দী পূরণ হতে এখনও ১টি বছর বাকি আছে। আর বিংশ শতাব্দী তখনই পূর্ন হবে যখন ২-এর পিঠে তিনটি শূন্য বসবে। আর নতুন শতাব্দী তখনই শুরু হবে যখন বিংশ শতাব্দী পুর্ণ হয়ে ২০০১ সাল চালু হবে। আর এই হিসাব মতে আমরা প্রকৃতির কাছে ১টি বছর পাওয়া আছি। অতএব গোটা পৃথিবীর মানুষের কাছে আমার প্রশ্ন, এই হিসাব মতে কি করে বিংশ শতাব্দী একুশ শতক হয়।
-মোঃ আব্দুল হাই