JustPaste.it

ভূ-গোলময় পৃথিবী

 

এদেশে মুজাহিদ থাকবে ইমান

আযাদী সুরক্ষার স্বার্থে

মর্দে মুজাহিদ

 

            গুজব রটতে রটতে একসময় তা সত্য হয়ে যায়। যেমনটা শুনা যাচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির দ্বার প্রান্তে প্রায় পৌঁছে গেছে। পুঁজিবাদ বিশ্ব প্রশংসা করেছে, আমেরিকা সাবাস দিয়েছে, অতএব নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। দুনিয়াদার মুসলমানের কপালে পুরস্কার জুটে অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর। মিশরকে সম্প্রতি নোবেলের জয়টিকা পরানো হয়েছে। মিশর নিজেকে ফেরাউন সভ্যতার ধারক বলে গর্ব করবে আর আধুনিক সভ্যতা তাকে কদর করবেনা এমন তো হতে পারে না। পরমাণু বিজ্ঞানে যে মুসলিম  বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তার দেশের মুসলমানরা তার জন্য গর্ব বোধ তো করেই না বরং এই পুরস্কার তাদের প্রতি ষড়যন্ত্র, উস্কানিমূলক আচরণ বলে বিবেচনা করে থাকে। এমন আচরণ আমাদের ভাগ্যেও জুটে থাকে। আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার সংবাদে ঐ আমাদেরও লজ্জায় কোনো কোনো সময় মাথা হেট করে থাকে। সম্প্রতি প্যারিস থেকে সমাজ কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি পুরস্কার আমাদের দেশে পাঠানো হয়েছে। এমন সমাজ কর্মীকে দেয়া হয়েছে, যিনি তার সমাজকে ত্যাগ করেছেন, যে সমাজে তিনি এখন অবৈধ। নারী পুরুষের যে বন্ধনকে ইসলাম সম্পূর্ণ হারাম করেছে সেই নিষিদ্ধ আইনকে উপেক্ষা করে অবৈধ এক সামাজিক বন্ধনে তার বসবাস। ইসলাম যা কিছু অবৈধ করে মুসলিম নামধারী তা বৈধ করবে, এমন বিদ্রোহী সমাজ কর্মীকেই তো পুরস্কার দেয়া চাই। মুসলমান যাকে ত্যাগ করবে অন্যে তাকে স্বাগতম জানাবে এটা তো ঐতিহাসিক সত্য। তাবুকের ঘটনাই তার প্রমাণ। আল্লাহর নবীর প্রিয়তম সাহাবী ইসলামের দুশমনের আহ্বান শুনে কান্নায় ভেংগে পড়েছিলেন। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ গরীব মা-বোনকে চক্রবৃদ্ধি সুদে জর্জরিত করে গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কার পাবে। এতে আর বিচিত্র কী? কোটি কোটি নিস্পাপ মুখে হারাম অন্ন দিয়ে নামের আগে মুহাম্মদ লিখার ধৃষ্টতার বিচার তো অন্যত্র হবে, তবে আপাততঃ নোবেল প্রাপ্তির সংবাদে এ দেশের মুসলমানরা কেমন প্রতিক্রয়া ব্যক্ত করবেন সেটাই হবে জাতির বিবেক।

            আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এখনো বিশ্ববাসী স্বীকৃতি দেয়নি। মাত্র দু'টি বাদে অন্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলিও দেয়নি। দেয়নি এইজন্য যে, তারা এখনো বুঝেনি, মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পেতে একদিন তাদেরকেই তালেবানদের দ্বারস্থ হতে হবে। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের বুদ্ধিসুদ্ধিই আলাদা। মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ অধিক এই কায়দায় তারা ইতিমধ্যে তালেবানদের ঘরে গিয়ে তাদেরকে কোলে তুলে  নিয়েছে। জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় তালেবানদের দুই উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি গ্রামীণ ব্যাংকের জন্মভূমি বঙ্গভূমি জিয়ারত করতে এসেছিলেন। এসে কী দেখলেন তারা? জন্ম ভূমিকে যে বধ্যভূমিতে পরিণত করে ফেলেছে পাপিষ্ঠরা!

              দস্তরখানায় গ্রামীণ ব্যাংকের আখুনি পোলাও বাসি হতে চললো;আফগান মেহমানরা ছুটে গেলেন আলিমদের-দরবারে। এটাই স্বাভাবিক। সারা পৃথিবীকে যারা দ্বীনের আলোতে উদ্ভাসিত করবেন, মুসলমান যাদের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তারা কী করে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের মায়ার জালে আটকা পড়ে যাবেন? যে চক্রবৃদ্ধির বিষকে বাংলাদেশের মানুষ হজম করতে পারেনি, আলিমরা যে হারামের উপর থু থু নিক্ষেপ করেছেন, তা কি আজ তালেবানদের দ্বারা ইস্তেমাল করিয়ে নতুন কোনো ফতোয়া আদায়ের চেষ্টা করছে জ্ঞান-পাপীরা? ভিক্ষা চাইনা মা তোর কুত্তা সামলা অবস্থার সৃষ্টি হলো আফগানদের। অবশেষে ওআলাইকুম আত্-তাফাৎ, হে গ্রামীণ ব্যাংক বলে স্বদেশে ফিরে গেলেন দূরদর্শী তালেবান নেতৃবৃন্দ।

            আহা! দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত একটি সুযোগ শেষ পর্যন্ত মোল্লাদের পাল্লায় পড়ে ভেস্তে গেলো। তালেবানরাও নিজেদেরকে বলেন মোল্লা। আজকাল মোল্লাদের বড় বেশী ইজ্জত দিচ্ছে দুনিয়ার মানুষ। রেডিও টেলিভিশনে ওদেরই কথা। ওদের বিজয় গাঁথা। বলে কিনা-আমীরুল মুমিনীন! তাজ্জব ব্যাপার! আসলে তাজ্জবের কিছু নেই। মোল্লা মানে মাল্লা। মনে নেই সেই ছোটকালের শিশুতোষ কবিতা? ছিপখান তিন দাড়, তিনজন মাল্লা। এই মাল্লারাই এখন হাল ধরেছে।

            মহাজ্ঞানী মহাজনরা দুনিয়াতে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে যে আমলের বিনিময়ে, সেই একই আমলের বিনিময়ে আখিরাতেও পুরস্কৃত করবেন আল্লাহ তায়ালা দ্বিতীয়বার, জাহান্নামের আগুন দিয়ে। অন্যদিকে আরেক দল হাতের আংগুল কামড়িয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে। পত্র-পত্রিকা রক্তাক্ত করে তুলছে প্রতিদিন। তালেবান যেন ওদের জন্ম জন্মান্তরের দুশমন। জন্মভূমির পবিত্র মাটিতে কোনো তালেবে ইলম তালেবানকে যেনো ওরা থাকতে দেবেনা। ওরা চায় দ্বীনহীন সমাজ। ওরা চায় ইসলামবিহীন সমাজ। কিন্তু তা কি সম্ভব? বাংলাদেশের জমীনে কত লক্ষ তালেবে ইলম তালেবান মওজুদ আছে, তার হিসাব কি ওরা জানে? প্রতিটি তালেবানের পিতাও একজন তালেবান, তালেবানের মাতাও তালেবান। কেননা ইলমের তলবকারীই তার সন্তানকে জ্ঞানের সন্ধানে নিয়োজিত করতে পারেন। একজন তালেবান তার পরিবারের, বংশের এবং সমাজেরও প্রতিনিধিত্বকারী, তাদের দ্বীনের প্রতিনিধিত্বকারী এবং সেই জন্য তালেবান তাদের সকলের সম্পদ, তাদের ভালবাসার ধন। ইচ্ছা করলেই দ্বীনের আলো নিভিয়ে দেয়া যাবেনা এবং ইচ্ছা করলেই এই জমীনকে তালেবানবিহীন স্বপ্নরাজ্যে পরিণত করা যাবেনা। না এই জমীনকে কেউ বধ্যভূমি বানাতে পারবে, একে কেউ অনাবাদী রেখে দিতে পারবে।

            আফগানিস্তানের তালেবানরা বিজয়ী হলে পত্রিকা ওয়ালারা এত নাখোশ হবে কেন? আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠিত হলে, হুকুমতে ইলাহী কায়েম হলে মুসলমানের সন্তান ভিমরী খাবে কেন? এই সব জ্ঞানপাপীরা কি মরে গিয়ে শুধু মাটি হয়ে যাবে মনে করেছে? কিয়ামত কি তাদের জন্য হবে না? তারা কি বিচার দিবসে হাজিরা না দিয়ে পারবে? দুনিয়ার বাস্তব অভিজ্ঞতাও তো তাদের কৃতকর্মকে সমর্থন করেনা। ইসলাম প্রতিষ্ঠার সকল প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করতে জীবন উৎসর্গ করে যখন পরপারে পাড়ি দেয়, তখন দাফন-কাফন থেকে শুরু করে জানাজার আয়োজন কোনোটাই অন্য কোনো পন্থায় সমাপন করার অসিয়ত করে যায়না। সন্তান-সন্তুতি যতদিন তাকে মনে রাখে, ততদিন আল্লাহর দ্বীনের খেলাফ পন্থায় তার মুক্তি কামনা করেনা। তাহলে এটা কেমন আত্মঘাতী দুরাচারী যে আল্লাহর পাকড়াও থেকে পালিয়ে যেতে পারবেনা অথচ আল্লাহর সৃষ্টি জগতে বসবাস করে বাগাওয়াতি করবে, দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দুশমনকে ইন্ধন যোগাবে, পিছন থেকে মুজাহিদদের পিঠে বিষাক্ত তীর ছুড়বে? মুজাহিদের রক্ত যখন ফিনকি দিয়ে বের হয়, বহমান খুনে জমীন পিচ্ছিল হয় তখন অবশ্যই শক্রর উল্লাস চারিদিকে প্রতিধ্বনিত হয়, কিন্তু মুসলমান কী করে সেই উল্লাসে তালি বাজায় যদি সে উন্মাদ অথবা নির্বোধ না হয়?

            আল্লাহ পাকের পবিত্র কালাম থেকে সারা জীবন মাহরুম থাকা যার নসীব হয়েছে, ইসলামের পবিত্র অংগনে বিচরণ যার ভাগ্যে জুটেনি, নবীজীবনের মহান আদর্শ অনুভব করতে যার চিন্তা-চেতনা ব্যর্থ হয়েছে, ঈমানের পরশমনি যে অন্তর ছুঁতে পারেনি, তার জন্য আত্মঘাতীদের নিয়েই আমাদের বসবাস। সারাজীবন এরা মুসলমানকে বিভ্রান্ত করে, পথহারা করে। এরা অন্য পথের পথিকের সাথে পথ চলে, পথের দিশা হারিয়ে যত্রতত্র ঘুরেফিরে জীবন সায়াহ্নে আবার মুসলমানের কাঁধে চড়ে শব মিছিলকে দীর্ঘায়িত করে কবরস্থানের দিকে যাত্রা করে। যাদের সাথে শত্রুতা করলো তাদের সাথে কবরে বসবাস করার জন্য শেষ বেলায় ফিরে আসে। জীবন যাপনকে নিরাপদ করতে হলে আইনের প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন ইসলামী জীবন যাপন করার জন্য। আল্লাহকে সিজদাহকারীর জন্য চাই সিজদাহর জন্য উপযুক্ত এমন জমীন, যেখানে থাকবে না কোনো প্রতিবন্ধকতা। যেখানে আল্লাহকে অস্বীকারকারী বসবাস করে, আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতাকারী বসবাস করে, সেখানে সংগত কারণেই মুসলমানের পাশে থাকবে মুজাহিদের বসবাস। আজ যে তালেবান কাল সে মুজাহিদ। এদের অহিত কামনা কোনো মুসলমানের জন্য নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় তার সন্তানের জন্য, তার পিতামাতার জন্য। মুসলমানের নিজের জন্য, তার দ্বীনের নিরাপত্তার জন্য একদল মুজাহিদ দুনিয়াতে থাকবেই এবং কিয়ামত পর্যন্ত এই ব্যবস্থা জারী থাকবে এই অসিয়ত করে গেছেন মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাঃ)। যুগে যুগে এই ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা মুসলমান উপলব্ধি করেছে তখনই, যখন তেমন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। আমাদের দুঃসময় দেখে আজ আমরা বিচলিত হচ্ছি। কিন্তু যে দুঃসময়কে আমরা আমাদের উত্তরাধিকারদেরকে দিয়ে যাচ্ছি, তা যে কতো মর্মান্তিক সে কথা আলোচনা করতে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে। মানুষ অসহায় প্রাণী নয়। মুসলমান তো নয়ই। কেননা মুসলমানের সহায় আল্লাহ জাল্লা জালালুহু ঈমানের আলো মাটির প্রদীপের আলো নয়, ঈমানের আলো নূরের আলো; আর আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা নুর ‘আলানুর। তাহলে মুমিন কি করে অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে? কুরআনুল কারীমের আয়াত যাদের প্রেরণা, হায়াতে তইয়্যেবাহ যাদের বাসনা, আল্লাহর বন্দেগী যাদের সাধনা, তারা দুনিয়ার কোনো কাপালিকের মুখাপেক্ষী হতে পারেনা। আলো বাতাস পানি এ সবের মালিক আল্লাহ তায়ালা। এ সব কখনো ফুরিয়ে যায় না, ফুরিয়ে যায় তার জন্য যাকে আল্লাহ তা থেকে বঞ্চিত করেন। মানুষ মানুষকে বঞ্চিত করে এক মানুষকে অন্য মানুষের মুখোপেক্ষী করে কেবলমাত্র আল্লাহর লানত পেয়ে অনিবার্য ধ্বংসে নিমজ্জিত হওয়ার জন্য।

              কিছুদিন আগে আমার মহল্লার মসজিদের মুতাওয়াল্লী সাহেব নোটিশ পাঠালেন জরুরী সভায় যোগদানের জন্য। সভার বিষয় মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রসংগ। যথাসময়ে সভার কাজ শুরু হলো। মুতাওয়াল্লী সাহেব জানালেন ঐদিন সকালবেলা বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন নোটিশ দিয়েছে। মুতাওয়াল্লী হন্তদন্ত হয়ে বিদ্যুৎ অফিসে ছুটে গেলেন। তাকে জানানো হলো, মসজিদের বকেয়া রয়েছে। মুতাওয়াল্লী জানালেন, মসজিদের সব বিলই যথারীতি দেয়া হচ্ছে, তার কাছে রসিদ মওজুদ আছে। কর্তৃপক্ষ জানালেন, বকেয়া সাম্প্রতিক কালের নয়, কয়েক বছর আগের অর্থাৎ এক সাবেক রাষ্ট্রপতি যখন মসজিদ মাদ্রাসার বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করে দিয়েছিলেন তখনকার। তার ঘোষণা দেয়ার সময় থেকে তার আমলের অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল দেয়া হয়নি। সেই পাওনা এখন সুদে আসলে লক্ষ টাকায় দাড়িয়েছে। মুতাওয়াল্লী হাতে পায়ে ধরে সাময়িক সংযোগের ব্যবস্থা করে এসেছেন এবং তড়িঘড়ি কমিটির সভা ডেকেছেন। আমরা জানতাম, হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না। আর হুকুম যার তার নয়, স্বয়ং রাষ্ট্রপতির। বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে অন্য কোনো কারণে নয়, আল্লাহকে সিজদাহ করার সময় আল্লাহর ঘরখানিকে সামান্য কিছু সময় আলোকিত করার জন্য। কিন্তু তাতে কী? বাস্তব সত্য হলো, সংযোগ সাময়িক মাত্র, যেকোনো দিন লাইন আবার কেটে দেয়া হবে এবং সিজদাহ ও রুকুকারীরা অন্ধকারে নিমজ্জিত হবেন, কেননা মসজিদের যে আয় তাতে এই পর্বতপ্রমাণ পাওনা মিটানো সম্ভব নয়, এমনিতেই ইমাম মুয়াজ্জিন সকলে সামান্য অর্থের বিনিময়ে কোনোমতে পেটেভাতে জীবন যাপন করছেন। মুতাওয়াল্লী আরো জানালেন, এই সংকট শুধু আমাদের নয় অন্যত্রও ঘটেছে বলে মতামত দিতে শুরু করলেন। একজন পরামর্শ দিলেন, সরকারের কাছে আবেদন করার জন্য, এমনকি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তদবির করতে। অন্যজন বললেন, পত্রিকায় বিস্তারিত লেখার জন্য। আরেকজন বললেন, অন্যান্য যেসব মসজিদ ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে সেই সব কমিটির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের পথে যাওয়ার জন্য। আমি তুলনামূলকভাবে অতি নগন্য এক সদস্য এবং বয়সে অন্যদের তুলনায় আরো নিম্ন পর্যায়ের বিধায় পরামর্শ মোটেই যুৎসই হলো না;তবু খুব জোর দিয়ে বললাম, মুসল্লী ও মসজিদের পক্ষ থেকে আইনের আশ্রয় নেয়া হোক। আল্লাহর ঘর এবং এই ঘরে এবাদত কারো তামাশা কিংবা খামখেয়ালীর বিষয় নয়।

            যাই হোক কমিটির সিদ্ধান্ত কী হয়েছিলো সেটা আপাততঃ অনুল্লেখ থাকুক। পাঠক শুধু বিবেচনা করুন এ কোন জমীনে আমরা বসবাস করছি। কাদের সাথে বসবাস করছি। আমরাই বা কোন বাসিন্দা। আমাদের পরিণতি কী?

            ইসলাম আল্লাহ পাকের মনোনীত দ্বীন। এই ধর্মের সুরক্ষার ব্যবস্থাও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। একদল মুজাহিদ মওজুদ থাকবেই, নবীজির এই অসিয়ত না বুঝার কোনো কারণ নেই। যাদের চোখ আছে, কান আছে, অন্তর আছে তারা তালেবানের সন্ধান, মুজাহিদের অবস্থান জানতে চাইবেই। শ্রীকৃষ্ণ আর মুহাম্মদের তুলনা করতে পারে কোনো মূর্খ, কিন্তু একথা শুনে যারা চুপ করে থাকে তারা গন্ডমূর্খ। এই সমাজকে যারা তালেবান মুক্ত রাখতে চায় তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করে। মুশরিক মুমিনের বাসস্থান দুনিয়াতেও এক নয় আখিরাতেও এক নয়। এই জমীনে যদি তালেবান ও মুজাহিদ না থাকবে, তাহলে থাকবে কারা? কোটি মানুষের সিজদাহ পড়েছে যে জমীনে তাকে চারণ ভূমি করার আশা নিষ্ফলই হবে। মুমিন আর মুশরিকে তফাৎ যৎসামান্য নয়। আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে অত্যন্ত স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন এই তফাৎ মানুষ ও পশুর ব্যবধান কিংবা তার চেয়েও অধিক। মুজাহিদ আর তালেবান, মুক্ত জমীন যারা কামনা করে, তারা কি আর কোনো পায়ের আওয়াজ পায় না? আপন চিত্তকে কোন চিত্তের কাছে বন্ধক রেখেছে যে কান থাকতে বধির হয়েছে? নাকি এই স্বেচ্ছামরণের ব্রত সে নিজেই গ্রহণ করেছে! আল্লাহপাক যাকে সন্তান দিয়েছেন, সে কেমন বদদ্বীল যে অন্যকে ধর্মপুত্র না করলে শান্তি পায়না!

             মাতৃভূমিকে যারা আজ বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে, যাদের কারণে সন্তানের জন্য মায়ের ঘুম হারাম হয়েছে, কন্যার জন্য পিতার দুশ্চিন্তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে, ঘরে বাইরে জীবন বিপন্ন হয়েছে। তাদের মোকাবিলা কে করবে। আছে কোনো মায়ের সন্তান যে মানুষকে বাঁচানোর ব্রত গ্রহণ করবে! এখনো যে এমন আশা করে সে কল্পনাবিলাসী।

             সত্যকে যে জানে ও মানে, শাশ্বত ইসলামকে যে বুঝে, পবিত্র কালামে যার অবিচল আস্থা আছে, এক ও অদ্বিতীয় আহকামুল হাকিমীনের উপর যার ঈমান একনিষ্ঠ আছে, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঘোর অমানিশার উপর যেভাবে আলোর জগৎ সৃষ্টি করেছেন, সেই অনিবার্য কামিয়াবীর পথের যে পথিক, সেই মর্দে মুমিন মরণজয়ী মুজাহিদের কাজ, কর্তব্য এবং তার প্রতি আল্লাহ পাকের নির্দেশই হলো বিপন্ন মানবতাকে মুক্ত কর; নিজের জীবনের বিনিময়ে আর্তের জীবন রক্ষা কর; জালিমের হাত থেকে মজলুমকে বাঁচাও। অতএব আজ তালেবান আর মুজাহিদকে আসতে দিতে হবে আল্লাহ তা'আলার একনিষ্ঠ বিপন্ন বান্দাদের মুক্তির স্বার্থে।