পাঠকের কলাম
হেবরন হত্যা কান্ড এবং অচল জাতীয় সংসদ
মুখে কুলুপ এঁটে আর কতদিন গণতন্ত্রের ধ্বজা উঠিয়ে দেশবাসীকে ধোঁকা দেবে সরকার বাহাদুর? তোমার গণতান্ত্রিক তখতের আলীশান অট্টালিকায়, যার বুনিয়াদ ইসলাম আর মুসলমানদের উপর তা নিস্পিষ্ট হচ্ছে তোমার সিংহাসনের তলায়, ভুলন্ঠিত হচ্ছে কোরআনের ইজ্জত। যার একটি আয়াত ব্যবহার করছ নির্বাচনের টোপ হিসেবে, শোভা বর্ধন করে তোমাদের বক্তৃতা-বিবৃতি আর দলীয় ব্যানারে শীর্ষস্থানে। কোরআন ও ইসলামের মর্যাদা রক্ষার্থে কিছু কর, এমন আবদার তোমার কাছে করবো না। কেননা, তা বুমেরাং হয়ে হাওয়ায় মিশে যাবে। কিন্তু যেই বিসমিল্লাহর বুলি আওড়িয়ে ময়দান দখল করেছিলে, সংবিধানে তা সংযোজন করছ বলে বড়াই করো, "জয় বাংলায় লাথি মার বিসমিল্লাহ কায়েম কর" বলে যে উত্তপ্ত স্লোগান তুলেছিলে সেই বিসমিল্লাহর সম্মান বাঁচাতে কি তুমি কিছু করতে পার না? তোমার স্বগোত্রীয় এক নারী। স্বগোত্রীয় বললাম এ কারণে, যখন সমগ্র জাতি, সেই নরকের কীটকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন তুমিই তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে, দেশবাসীর অনুরোধ অগ্রাহ্য করে নির্বিঘ্নে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হওনি, এ আপদ যাতে আবারো এ দেশে পা রাখতে পারে তার সুবন্দোবস্ত করে দিয়েছ। যার জন্য এত দরদ সে নিশ্চয়ই তোমার আত্মার আত্মীয়। তাই তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারোনি। অবলিলাক্রমে সেই ভ্রস্টা নারী এ সুযোগেরই সদ্বব্যাবহার করছে তোমার মৌন সম্মতি পেয়ে। বাঙালী জাতীয়তাবাদের মোকাবেলায় মুসলিম বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল, তোমার চোখের সামনেই তার মৃত্যু ঘটছে। ইতরের জাত বলে অবহিত করেছে তোমার বাপ, দাদা সহ সকল মুসলমানকে। যে সীমানার অধিপতি হয়ে আছ তাও রাবার দিয়ে মুছে ফেলতে চেয়েছে সেই নষ্টা নর্তকী। এরপরেও নিশ্চুপ তোমার প্রশাসন। ধিক, তোমার ক্ষমতার উচ্চাভিলাষ ও জাতীয়তাবাদের। বিধবার সাদা শাড়ি ছেড়ে, একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভুখন্ডের কত্রী হয়ে ক্ষমতার মোহে স্বামী স্বজাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে হাত মিলিয়েছে কওমের শত্রুর সাথে। দেশবাসীর প্রাণের দাবী উপেক্ষা করে সাম্রাজ্যবাদের মনোরঞ্জনে ব্যাপৃত হয়েছো সমস্ত পরিষদ নিয়ে। দুঃর্ভাগ্য এ জাতির।যাকে ইজ্জত আজাদীর মুহাফেজ হিসেবে নিযুক্ত করেছে, সে তা নিয়ে সওদাবাজীতে লিপ্ত। মুসলমান হয়েও ইসলামের অনুশীলন করো না। যদি কেউ মৌলবাদ বলে এ শংকায়। এই ব্যর্থ প্রয়াসে বৃথা সময় অপচয় না করে বল আমি প্রগতিশীল নাস্তিক, তবেই নাজাত পাবে এই অপবাদ থেকে। নচেৎ সাচ্চা মুসলমানের মত জীবন যাপন কর, এতে রাজাসন চলে যাবে না, বরং আরো মজবুত হবে। আল্লাহ তাআলা মুমীনকে খেলাফতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁর পবিত্র কালামে। তা ছিনিয়ে নেয়া হবে না, যদি বান্দা তার বিধানের উপর অটল থাকে। অতএব মৌলবাদের পরিচয় দিতে আমরা মোটেও কুণ্ঠিত নই। চরমোনাই-পীর-সাহেব যথার্থই বলেছেন, "যে মুসলমান নিজেকে মৌলবাদী মনে করবে না সে জারজ মুসলমান" আর তোমার বিগত দিনের কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত হয়, "তুমি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত এক অগণতান্ত্রিক সরকার।" বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করার কোন সুযোগই হাতছাড়া করো নি। তাদের ভাল পদক্ষেপ গুলিও তোমার প্রশাসনের সহ্য হয়নি। হেবরন হত্যাকাণ্ড নিয়ে কি তুলকালাম কাণ্ডটাই না ঘটিয়েছিলে। যার রেশ ধরেই আজ সংসদ কার্যত অচল হয়ে আছে। সন্ত্রাস দমন আইন দিয়েই বিপক্ষ দলকে নাকানি-চুবানি খাযইয়ে ছেড়েছ, হাঙ্গামাকারীদের সাহায্যে সভা সমাবেশ পন্ড করেছ, ধর্ম এবং রাষ্ট্রদ্রোহীদের উস্কে দিয়ে দেশ প্রেমিক ও ধর্মপ্রাণ মানুষের আস্থা হারিয়ে কপাল খেয়েছ, বিশাল জনগোষ্ঠীর আবেগ-অনুভূতির তোয়াক্কা না করে গুটি কতেক বিধর্মীর মনতুষ্টির উদ্দেশ্যে পাঠ্য পুস্তক থেকে আল্লাহ শব্দ তুলে দেয়ায় আর কত ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছো। বামপন্থীদের কোণঠাসা করতে ডানপন্থীদের গোপনে ইন্দন যোগাতে। পক্ষান্তরে ডানপন্থীদের শায়েস্তা করতে তোমার বন্ধু-প্রতিম বামপন্থীদের উৎসাহিত করতে। এ নাপাক ইরাদা নিয়েই চেয়েছিলে ক্ষমতার মসনদ বিপদমুক্ত রাখতে। কিন্তু সেই অব্যার্থ মুসিবত ঘুরেফিরে তোমার দুয়ারে হাজির। সরকার পতনের আন্দোলনে সবাই এক প্লাটফর্মে, আদর্শিক মতপার্থক্যও কমিয়ে ফেলেছে তোমার অপসারণ কে ত্বরান্বিত করতে। বর্তমান সরকার নামের এই জঞ্জাল বাকশালী বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। যার অভিষেক হয়েছিল স্মরণকালের পলায়নকারী ঘূর্ণিঝড়ের মধ্য দিয়ে, কোথায় গিয়ে যে এর অবসান হবে তা খোদাই জানে। সমাপ্তিটা যে ভালো হবেনা তার আলামত পাওয়া যাচ্ছে। নয়তো এ সরকারের সব চাইতে ভাল মানুষটি, যিনি জাতির সবচাইতে সম্মানিত ব্যক্তি ও মুরুব্বী, মহামান্য রাষ্ট্রপতি তোমার প্রশাসনের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে আসছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিরাত মাহফিলে, যা করোরই কাম্য ছিল না। সেদিন প্রেসিডেন্টকে যারা অপমান করছে আমরা তাদের এবং এই অযোগ্য সরকারের প্রশাসনকে ধিক্কার জানাই।
পরিশেষে তোমাকে বলছি সাহস থাকে তো জনতার সামনে এসে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করে যাও। চাটুকারদের কথায় জাতিকে আর প্রতারিত করো না। আগামী নির্বাচনে ভরাডুবি থেকে বাঁচাতে হলে সুগন্ধার সূরম্য দালান থেকে বেরিয়ে দেশবাসীর সামনে আসতে হবে। সেই আগমন যে সুন্দর ও সম্মানের হয় এই কামনাই করবো।
মোঃ আবু জিহাদ, মালিবাগ জামিয়া, ঢাকা
ইসলামের শত্রুদের রুখে দাঁড়ান
ইসলামের ইতিহাসে এমনটি নতুন কিছু নয়। প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল ও ইসলামের বিরোধিতা করার মত হতভাগ্য মুনাফেক, মুরতাদ ও নাস্তিকদের সাক্ষাৎ সব যোগেই পাওয়া যায়। আমাদের সমাজেও আজ কিছু সংখ্যক লোক ইসলামের অপপ্রচার ও আল কোরানের অপব্যাখ্যা করে যাচ্ছে ইহুদী-খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতায়। যেন তারা এদেশের সংখ্যাগুরু তৌহিদী জনতার আদর্শ, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে। এনজিওদের ঈমান লুণ্ঠনকারী অপতৎপরতা, ব্রাক্ষণ্যবাদীদের মরণ ছোবল আর সেক্যুলার ও নাস্তিক্যবাদীদের বিষাক্ত প্রচারণা, সব মিলিয়ে দেশকে দূর্যোগময় অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আঘাতের পর আঘাত আসছে ইসলামের ওপর। এ পর্যন্ত তাদের সর্বশেষ আঘাত হলো মহাগ্রন্থ আল কোরআনের ওপর। অথচ এ দেশের রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম, এ দেশের সংবিধানের কপালে লিখিত হয়েছে "বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম"। আর এ সরকার বিসমিল্লাহর নামে তৌহিদী জনতার ভোট নিয়ে ক্ষমতার মসনদে সমাসীন হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবার মুখে উচ্চারিত হয় আল্লাহর পবিত্র নাম। তবে কি এ সবই কেবল জনগণকে দেখানো? কেবলমাত্র ভাওতাবাজী? তা না হলে আজ পবিত্র ইসলাম, কুরআন ও ধর্ম বিরোধীদের এত স্পর্ধা কেন? এদেশের হকপন্থী পীর-মাশায়েখ ও আলেম সমাজ আজ মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার! এদেশের একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী অমুসলিম এবং বিধর্মীদের চেয়েও জঘন্যভাবে ইসলামকে, মুসলমানকে ও আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আক্রমণ করছে এবং এদেশের স্বাধীন অস্তিত্বের বিরুদ্ধে বিরতিহীন ভাবে স্পর্ধিত উক্তি করে যাচ্ছে। তারা মনে করে আল্লাহ পাক ওদেরকে কোন দিন পাকড়াও করবেন না। এসব নাস্তিক মুরতাদদের জন্য দুঃখ করার বা ওদের কথায় অবাক হবার কিছু নেই বটে। তবে দুঃখ এখানেই যে বিসমিল্লাহর নামে ভোট নিয়ে সরকার এ ধরনের নাস্তিক, মুরতাদ, রুশ, ভারত ও খ্রিস্টান সম্রাজ্যবাদের পোষা গোলামদেরকে পুলিশ পাহারা বসিয়ে লালন পালন করছে। আর তথাকথিত কিছু মাওলানা নামধারী লোক টাকার লোভে এ দলের মৃতদের জানাজাও পড়ে দেয়। অথচ এদের জন্য সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান রয়েছে ইসলামের। ক্ষমতাসীন সরকারের মনে রাখতে হবে যে, এ দেশের তৌহিদী জনতা ঈমান-আকিদা হরণকারী অপতৎপরতা সমূহের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশ্রয়দানের জন্য তাদের ভোট দেয়নি। এদেশের সংখ্যাগুরু মানুষ ধর্মভীরু। তাই সরকারের মুষ্টিমেয় ধর্মদ্রোহীদের মনোরঞ্জন করার উদ্দেশ্য হলে মূল স্রোত ধারা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে হবে সরকারকে। সুতরাং সুযোগও ক্ষমতা সদ্বব্যাবহার করা না হলে পতন অনিবার্য। আর আমাদের স্বরণ রাখতে হবে, কথা বলা, প্রতিবাদ করা, মিছিল, সমাবেশ করার সময় শেষ। এখন সময় এসেছে জিহাদের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার। ইসলামের ইতিহাসে অনেক কারবালা ঘটেছে। বর্তমানেও মুসলিম মিল্লাতকে ঘিরে বহু কারবালা সংঘটিত হচ্ছে। ইসলামের শত্রুরা ইসলাম ও মুসলিম সমাজকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বহুদিন ধরে অনেক কৌশল চালিয়ে আসছে। তবুও মুসলিম জাতি টিকে ছিল এবং আছে। কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে ইনশাআল্লাহ। হে প্রিয় তৌহিদি জনতা! ওদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলুন একতা। ওদেরকে দেখিয়ে দিন ঈমানী শক্তির ক্ষমতা।
হাকীমুল উম্মত পাঠাগারের পক্ষে
মুহাম্মদ জামালউদ্দীন, শাহমীরপুর, পটিয়া, চট্টগ্রাম।