JustPaste.it

সার্ক অঞ্চলে খৃস্টীয় আধিপত্য বিস্তারের সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র

-পর্যবেক্ষক

=====================================================================

 

        দক্ষিন এশিয়ার সার্কভুক্ত অঞ্চলে খৃস্টীয় আধিপত্য বিস্তারের সুদূর প্রসারী চক্রান্ত নিয়ে পশ্চিমা দেশসমূহ এবার একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে থেকে ধর্মান্তকরণের কাজ শুরু করেছে। পালক পিতা-মাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নাগরিক তথা আজকের শিশুদের নিজেদের সামাজিক ও ধর্মীয় চেতনায় গড়ে তোলার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক একটি বেসরকারী সাহায্য সংস্থা আগামী দশ বছরে কেবল বাংলাদেশ থেকে ৯৬ হাজার পরিবারের একটি করে শিশুকে পোষ্য সন্তান হিসেবে গ্রহণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাংরাদেশে কর্মকান্ড শুরু করেছে। অশুভ তৎপরতার কারণে বিশ্বের কয়েকটি মুসলিম দেশ থেকে বিতাড়িত সংস্থাটি বর্তমান ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের পর পাকিস্তানে কার্যক্রম শুরুর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে এবং এ অঞ্চল নির্বিঘ্নে কাজকরার উদ্দেশ্যে তারা আগাম সাবধানতা অবলম্বন করেছে । মূল নামকে গােপন রেখে ছদ্ম নাম ব্যবহারসহ বাংলাদেশের অফিসসমূহে ওয়ার্ক পার্মিট না থাকা সত্ত্বেও বিশ্বস্ত বিদেশীদের নিয়ে গূরুতপূর্ণ পদের দায়িত্ব পালন করানাে হচ্ছে। অনুন্নত দেশসমূহ সেবার নামে চাকরি প্রদান, ঋণ নান, অর্থ সাহায্যসহ বিভিন্নভাবে চিহ্নিত কয়েকটি সাহায্য সংস্থা কর্তৃক ধর্মান্তকরণ অভিযােগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু এবার তারা সরাসরি শিশুদের লালন-পালনের মাধ্যমে নিজেদের মতাদর্শে গড়ে তোলার কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।

 

        বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, সুদূর প্রসারী এই চক্রান্ত নিয়ে যে সংস্থাটি মাঠে নেমেছে, তার আসল মাম হচ্ছে FOSTER PARENTS PLAN INTERNATIONAL (ফষ্টার পেরেন্টস প্লান ইন্টারন্যাশনাল)। কিন্তু সংস্থাটি সরকার ও জনগণকে ফাঁকি দেয়ার লক্ষ্যে F0STER PARENTS অর্থাৎ পালক পিতা এই দুটি শব্দ বাদ দিয়ে কেবল “প্লান ইন্টারন্যাশনাল" নামে কাজ শুরু করেছে। অবশ্য দাতাদের কাছে ও অভ্যন্তরীন যোগাযােগে মুল নাম ব্যবহার করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়াসহ মােট ৮টি রাষ্ট্রের অর্থানুকূলে পরিচালিত এই সংস্থাটি অনুন্নত দেশসমূহে গড়ে উঠা হাজারাে এনজিও'র মত ভােকেশনাল, এডুকেশনাল ইত্যাদি কার্যক্রম চালালেও এর মূল কর্মসূচী হচ্ছে ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভলপমেন্ট প্রােগ্রাম। এই চাইল্ড ডেভলপমেন্ট এর নামেই পালক পিতা-মাতার কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।  সংস্থাটি দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তানদের লালন-পালনের সকল দায়-দায়িত্বের ব্যবস্থা অর্থাৎ পালক পিতা-মাতার ব্যবস্থা করে দেবে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, একটি পরিবার থেকে কেবল একটি শিশুরই দায়িত্ব নেন তারা এবং সেই শিশুর বয়স কোনক্রমেই বার বছরের বেশী হবে না। অবশ্য সূত্রটির মতে, কারো নয়, সর্বোচ্চ ৬ শছরের শিশু তাদের টার্গেট। অবুঝ শিশুটির পিতা-মাতার সাথে চুক্তিপূর্ণ সংস্থা শিশুকে তার পালক পিতা-মাতার কাছে (দেশে এবং বিদেশে ) হস্তান্তর করবে। এক অর্থে বলা চলে পিতা মাতার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শিশু পাচার। স্বাভাবিকভাবেই অবুঝ এই শিশুটি পালক পিতা-মাতার কাছে বড় হয়ে নিয়ে ধর্ম ও আচার-আচরণ সম্পর্কে কি জানবে তা বলার আপেক্ষা রাখে না।

 

        সূত্রটি জানায়, “প্লান ইন্টারন্যাশনাল" ছদ্ম নাম দিয়ে বাংলাদেশে সংস্থাটি কার্যত ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কাজ শুরু করলেও সরকারের অনুমােদন সাপেক্ষে  অফিসিয়ালি কাজ শুরু করে ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে। এর আগে তারা এই অঞ্চলে ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকায় তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামীতে সংস্থাটি পাকিস্থানে তার কার্যক্রম শুরু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সংস্থাটির রিজিয়ন অফিস দিল্লীতে স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের ফিল্ড অফিসটি অবস্থিত ঢাকায় ধানমন্ডির আবাসিক এলাকায়। সূত্র জানায়, ইতােমধ্যে দিনাজপুরের খানসামা থানা গোয়ালডিহিসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সার্ভে সম্পন্ন করেছে। সার্ভে রিপোর্টে শিশুর ছবিসহ পারিবারিক অবস্থা ও পরিচয় বাংলাদেশ থেকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শিশুদের পােষ্য পিতা-মাতার ঠিকানায় সেগুলাে পৌছে দেয়া হবে বলে সূত্রটি দাবী করেছে।

 

        সুত্রটি আরো জানায়, ফষ্টার পেরেন্টস প্লান ইন্টারন্যাশনাল নামক এই সংস্থাটির অশুভ তৎপরতা উপলদ্ধি করে ১৯৯০ সালে জাকার্তা, ১৯৯১ সালে বালি (ইন্দোনেশিয়া), ১৯৯২ সালে সুদান সরকার তাদের দেশে সংস্থাটিকে নিষিদ্ধ ঘােষণা করে।

 

        উল্লেখিত দেশসমূহ থেকে বিতাড়িত হয়ে চক্রান্তকারীরা বাংলাদেশসহ সার্কভুক্ত অঞ্চলে নামের পরিবর্তনসহ আরাে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করেছে। তারা বাংলাদেশের অফিসসমূহে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিজ্ঞপ্তি না নিয়ে দেশীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ােগের মাধ্যমে নিয়ােগপ্রাপ্তদের অনুগত করে রাখার ব্যবস্থা করেছে।

 

        তদুপরি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় কার্যকলাপ দেশীয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছে গােপন রাখার জন্য নিজেদের বিশ্বস্ত বিদেশীদের অবৈধভাবে অফিসের দায়িত্ব দিয়ে রাখা হচ্ছে। নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটিতে শেখার কিছু না থাকলেও ভিজিটর ভিসায় বাংলাদেশে অনেক ভিনদেশী নাগরিক আসছে। কার্যতঃ তারা বিভিন্ন অফিসে নিয়মিত বেতনে চাকরি করে সংস্থার ব্যর্থ রক্ষা করছে। সূত্রটি জানায়, “প্লান ইন্টারন্যাশনাল" বাংলাদেশ ফিল্ড অফিসের ফিল্ড ডাইরেক্টর বৃটিশ নাগরিক হেলেন গেলেকারই অবৈধভাবে বাংলাদেশে কাজ করছে। বাংলাদেশী নাগরিককে বিয়ে করলেও তিনি নাগরিকত্ব পাননি এবং এ যাবত চাকরির ওয়ার্ক পারমিট পাননি। ফলে তিনি এখন পর্যাপ্ত রাজস্ব প্রদানের সুযােগ না পেয়ে ও মাসিক মোটা বেতনের চাকরি করে চলেছেন। দিনাজপুর অফিসেও ভারতীয় নাগরিক, মিসেস মনিলা ভিজিটর ভিসায় এসে নিয়মিত ভাতা নিয়ে কাজ করছে। সূত্রটির মতে, তদন্ত হলে, প্লান ইন্টারন্যাশনালের প্রকৃত রূপ উন্মোচিত হন এবং আরো অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে।

 

সৌজন্যেঃ দৈনিক ইনকিলাব

 

═──────────────═