রণাঙ্গনের ঘটনা
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য
---------------------------★
★ কমান্ডার দাউদ খান বলেন, ভারত সেনারা সর্বদা আমাকে খুঁজে বেড়াতো। ফলে বহুদিন যাবত আমি নিজ ঘরেও যেতে পারি নি। একবার আমি ঘরে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প করলাম। আমি ঘরে উঠতেই ভারতীয় সেনার নিকট আমার ঘরে আসার সংবাদ পৌঁছে যায়। তারা গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। এক বৃদ্ধা আমাকে তার ঘরের উপর তলায় লুকিয়ে রাখেন, যাতে সৈন্যদের নজরে না পড়ি। সৈন্যরা সন্দেহ করে যে, আমি বৃদ্ধার ঘরে আত্নগোপন করেছি।
তারা বৃদ্ধার ঘরে এসে তন্ন তন্ন করে খোঁজ করে। আমি যে কক্ষে লুকিয়ে ছিলাম সেখানেও ওরা তল্লাশী চালায়। কিন্তু আল্লাহর কি অপার মহিমা, চোখের সামনে থাকা সত্বেও তারা আমাকে দেখতে পেল না।
★ কমান্ডার দাউদ খান বলেন, একদিন আমরা দু'জন মুজাহিদ শ্রীনগরে গেলাম।ঈদুল ফিতর - এর সময় তখন নিকটে। আমরা ঈদের পর পরই ভারত সেনার উপর আক্রমণ করব বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আক্রমণের বিষয়ে পরামর্শ চলছিল।এ সময় একদিন ভারতীয় সৈন্যরা ঐ এলাকায় ক্রেক ডাউন করে বসে। আমরা ভারতীয় সেনাদের আসার খবর জানতাম না। ছোট একটি মেয়ে এসে আমাদের সংবাদ দিল, সৈন্যরা এ এলাকায় ক্রেক ডাউন বসিয়েছে।বুঝলাম, শাহাদাতের অন্তিম সময় ঘনিয়ে এসেছে। কারণ, বের হওয়ার কোন পথ নেই।সবাই আমরা আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে আপন গুনাহের জন্য ক্ষমা চাইতে মশগুল হলাম। দু'হাত তুলে দু'আ করলাম, "হে আল্লাহ! এ জালিমদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা কর। সৈন্যরা আমাদের একদম নিকটে চলে এলে আমরা এক এক করে সবাই বের হতে লাগলাম।সামনে একটি দেয়ালের পিছনে অবস্থান নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সৈন্যরা আমাদের দেখে অফিসারকে লক্ষ্যে করে বললো, এই যে সন্ত্রাসীরা পালাচ্ছে। বলুন, তাদের উপর ফায়ার করি।কিন্তু আল্লাহর কি করুণা, সেনা অফিসার আমাদের উপর ফায়ার করতে বারণ করল।আমরাও নিরাপদে সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম।পরে এ ব্যাপারটি নিয়ে অফিসার ও সৈন্যদের মাঝে বেশ কথা কাটাকাটি হয়।
★কমান্ডার দাউদ খান বলেন, মুজাহিদরা একবার সংবাদ পাঠকদেরকে রেডিও এবং টিভিতে সংবাদ পাঠ করতে নিষেধ করে। কিন্তু তারা এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় মুজাহিদরা রেডিও, টিভির উচ্চপদস্থ দু'জন অফিসারকে অপহরণ করে নেয়। অপহরণের পর আমরা একগ্রামে আত্নগোপন করি। সৈন্যরা খবর পেয়ে সে গ্রাম ঘিরে নেয়।
পালানোর কোন রাস্তা না পেয়ে অগত্যা আমরা সনাক্তি প্যারেডে গিয়ে দাঁড়াই। বাঁচার কোন আশা দেখছিলাম না। মুজাহিদদের ধরার জন্য কয়েকটি গাড়িতে বারোজন গুপ্তচর বসানো হয়। আমরা কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে সাহায্যে প্রার্থনা করতে লাগলাম। সনাক্তির জন্য আমাদেরকে গুপ্তচরের সামনে নিয়ে দাঁড় করানো হয়।কিন্তু গুপ্তচরদেরকে আল্লাহ পাক অন্ধ করে দেন।আমরাও তার করুণা ছায়ায় বেঁচে গেলাম।
★মুজাহিদ বাহাউদ্দীন চল্লিশজন মুজাহিদ সহ একবার শ্রীনগর এলাকায় ক্রেক ডাউনের জালে আটকা পড়ে যান। সৈন্যরা ঘরে ঘরে তল্লাশি শুরু করে দেয়। সৈন্যরা মুজাহিদদের অবস্থানের নিকট পৌঁছলে কমান্ডার বাহাউদ্দীন মুজাহিদদের বের হবার নির্দেশ দিলেন এবং কিছু কঙ্কর উঠিয়ে 'রাব্বী ইন্নী মাগলুবুন ফানতাসির' দু'আ পড়ে কঙ্করগুলো পকেটে রেখে দেন। তিনি সামনে অগ্রসর হয়ে পকেট থেকে কঙ্কর বের করে সৈন্যদের নিক্ষেপ করলে সৈন্যরা রাস্তা ছেড়ে সরে দাঁড়ায়।এমনি করে মুজাহিদরা অগ্রসর হতে থাকেন। মুজাহিদরা যখন শেষ গলি অতিক্রম করছিলেন, তখন এক সৈন্য সেখানে পাহারা দিচ্ছিলো। কমান্ডার বাহাউদ্দীন অবশিষ্ট একটি কঙ্কর সৈন্যটির উপর ছুঁড়ে মারলেন। মুজাহিদরা বলেন, আমরা আশ্চর্য্য নয়নে আল্লাহর কুদরত প্রত্যক্ষ করলাম, কঙ্কর নিক্ষেপের পর প্রহরী সৈন্যটি মাথা নুয়ে আমাদেরকে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত করল।
★ মুজাহিদ দাউদ খান বলেন, একবার আমি শ্রীনগরের বিখ্যাত লাল চক দিয়ে যাচ্ছিলাম। সৈন্যরা সেখানে পথচারীদের তল্লাশি করছিল।ভাবলাম, এ ব্যাটাদের হাত থেকে বাঁচা বেশ কঠিন হবে। ভাবতে ভাবতে আমি এক ফল ফেরীওয়ালার কাছে গিয়ে সহযোগিতা প্রার্থনা করলাম।সে বললো, আমাকেও সনাক্তি প্যারেডে দাঁড়াতে হবে।অসহায় কাতর অবস্থায় আল্লাহর দরবারে আকূল মনে সাহায্য চাইলাম। আমার নিকট একটি সনাক্তি কার্ড ছিল, আমি সেটা অফিসারকে না দেখিয়ে এক সৈন্যকে দেখালাম। সৈন্যটি আমাকে চলে যাওয়ার অনুমতি দিল। আমি ওখান থেকে চলে আসার পর এক অফিসার সৈন্যটিকে বললো, তাকে যেতে দিলে কেন? কথাটা শুনে আমি জোরে দৌড় দিলাম। সৈন্যরা ফায়ার করতে করতে আমার পিছু নিল।গুলি- বৃষ্টির মাঝে আমি জীবিত ফিরে আসলাম।
[কাশ্মীর থেকে প্রকাশিত পত্রিকা থেকে অনূদিত ]