JustPaste.it

 

 

 

 

 

 

স্লিপার সেলগুলোতে গোয়েন্দাদের

অনুপ্রবেশ ও প্রতিরোধের উপায়!

 

 

 

আবদুল ওয়াহহাব ফারিস অনূদিত

 

 

 

 

 

**********

 


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

أَوَلَمَّا أَصَابَتْكُمْ مُصِيبَةٌ قَدْ أَصَبْتُمْ مِثْلَيْهَا قُلْتُمْ أَنَّىٰ هَٰذَا ۖ قُلْ هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

“যখন তোমাদের উপর একটা মুসীবত এসে পৌঁছালো, অথচ তোমরা তার পূর্বেই দ্বিগুণ কষ্টে পৌঁছে গিয়েছো, তখন কি তোমরা বলবে, এটা কোথা থেকে এলো? তাহলে বলে দাও, এ কষ্ট তোমাদের উপর পৌঁছেছে তোমাদেরই পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাশীল।” (সূরা আলে-ইমরানঃ ১৬৫)

জিহাদের পথে গোপনীয়তা সংরক্ষণের বিষয়টি এর বহনকারীর জন্য আমানত স্বরূপ। শত্রুরা যেসকল কারণে মুজাহিদদের হত্যা করতে, বন্দী করতে এবং তাঁদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে সক্ষম হয়, তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো গোপন তথ্য সংরক্ষণের ব্যাপারে অবহেলা এবং অযোগ্যতা। এই গোপনীয়তা প্রকাশ পেয়ে যায় মুজাহিদদের সাধারণ মজলিসগুলোতে, যেখান থেকে জাসুসরা এসব তথ্য সংগ্রহ করে থাকে, বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে, যা নিজেই একটা জাসুস।

গুপ্তচরের সাহায্য ছাড়া তারা কখনই আপনাকে ধরতে সক্ষম হবে না; আপনার কিছুই করতে পারবে না। এর কারণ হচ্ছে শত্রুরা যা খোঁজে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিই গুপ্তচররা দিয়ে থাকে – তা হচ্ছে মুজাহিদদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

এক কথায়, বর্তমানে আমাদের যুদ্ধ হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার যুদ্ধ, তথ্য সংগ্রহের জন্য যুদ্ধ, এবং গোপনীয়তা বজায় রাখা ও বিশ্বাস সংরক্ষিত রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর যুদ্ধ।

তাই, কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরিণতির ব্যাপারে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যেই আমাদের এই লিখাটি প্রয়োজনীয় মনে করছি। আমরা এখন গুপ্তচরদের এমন কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো, যা সাধারণত তারা তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে।

যেভাবে গুপ্তচররা তথ্য সংগ্রহ করে!

এখন আমরা গুপ্তচরদের স্বীকারোক্তি থেকে জানবো যে, তারা কী কী উপায়ে আমাদের মুজাহিদ ভাইদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। এরকম একজন গুপ্তচর তার স্বীকারোক্তিতে বলেছিলো,

“আমি তাঁর সাথে কথা বলছিলাম। তখন সে আমাকে বললো, ‘কথাটা শুধু তোমার আর আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখো, মুনদির এবং আবু মুহাম্মাদ কাছাকাছিই আছে।’ সুতরাং, আমি তাদের (তাগুত) সাথে যোগাযোগ করলাম এবং বাড়ির বর্ণনা দিয়ে দিলাম।”

শাইখ কাসিম আর-রীমি (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“আমাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগণ নিহত হন শুধুমাত্র আমাদের অসচেতনতার কারণে; হয় মোবাইল ফোন ব্যবহারে অসচেতনতা বা গোপন তথ্য প্রদানের ব্যাপারে অসচেতনতা। আর এই ভুলের চরম মূল্য দিতে হয় আমাদের শ্রেষ্ঠ মানুষগুলোকে হারিয়ে। যেসকল ভাইকে ফারিস কাসেমীদের গুপ্তচরবৃত্তির ফলস্বরূপ ড্রোন হামলার কারণে আমরা হারিয়েছি, তাঁদের মধ্যে শায়খ আবু আব্দুল রহীম (রহিমাহুল্লাহ), আবু হাজির আল-হাদরামি (রহিমাহুল্লাহ), আবু জানা আল-সোয়াইরি (রহিমাহুল্লাহ), নাসের ‘আওশান আল-‘আবিদি (রহিমাহুল্লাহ), আবু ‘ইজ আল-গামিদি (রহিমাহুল্লাহ), শু’আইব আল-মালিকি (রহিমাহুল্লাহ), জিহাদ আল-শিহরি (রহিমাহুল্লাহ) এবং উসমান আল-সান’আনি (রহিমাহুল্লাহ)-এর ছবি এখানে দেয়া হলো।”

শাইখ ইবরাহীম আল কোসী (শাইখ খুবাইব আস-সুদানি) (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“যদি আমরা হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সিরাতের দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে আমরা তথ্য সংরক্ষণের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হতে পারবো এবং সাধারণ মুসলিম জনগণের কাছে তা প্রচার করা থেকে বিরত থাকবো। আর তথ্য সংরক্ষণ করার বিষয়টি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দাওয়াতের প্রথম দিক থেকে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয় – শুরুর দিকে গোপনে দাওয়াত দেয়া, আরকাম ইবনে আবিল আকরাম (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর ঘরে গোপনে বৈঠক করা, সাহাবীদেরকে প্রথমে হাবশা ও পরে মদিনায় হিজরত করার আদেশ এবং কোন যুদ্ধের পূর্বে সেনাবাহিনীকে প্রকৃত গন্তব্যের পরিবর্তে ভিন্ন গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করতে বলা, মক্কা বিজয়ের আদেশ, এবং আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে।”

শাইখ ইবরাহীম আবু সালেহ (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন, 

“তথ্য ফাঁস খুবই বিপজ্জনক একটি বিষয়, যদিও অনেক সময় কোন তথ্যকে অপ্রাসঙ্গিক কিংবা কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। হয়তো একটি তথ্যের কিছু অংশ এক জায়গা থেকে আসে, আরেকটি অন্য জায়গা এবং তৃতীয়টি আরেক জায়গা থেকে। এভাবে সব অংশ একসাথে হতে হতে একটি তথ্য পূর্ণতা লাভ করে। এমনকি এটা একজন মুজাহিদ ভাইয়ের মৃত্যুর কারণ, কিংবা কোন অপারেশন ভেস্তে যাবার কারণ হতে পারে।”

সম্মানিত পাঠক! মূল বিষয় হলো, বাস্তবতা আমাদের চোখের সামনে, যা আমরা জানতে পারবো আটককৃত গুপ্তচরদের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে।

গুপ্তচর ফারিস আল কাসিমি[1] বলেছে-

“কোন মজলিস থেকে আপনি খুব সহজেই একজন ভাইয়ের কাছ থেকে তথ্য নিতে পারবেন। ছোট একটি তথ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়। এই সামান্য তথ্য থেকে একটি স্থানের অবস্থা, একজন ভাই, কিংবা নেতৃস্থানীয় বিশেষ কোন ভাইয়ের খোঁজও বের করে ফেলা সম্ভব।”

এক ইসরাইলী গোয়েন্দা নেতা এক সাক্ষাৎকারে বলে,

“আমরা বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে থাকি, শুধুমাত্র একজন গুপ্তচর থেকেই তথ্য নেই না। এটা অনেকটা তাসবিহ এর ৩৩ দানার মত, যার একেকটি দানা একেক জায়গা থেকে আসতে পারে। সবশেষে ৩৩ টি দানা একসাথে মিলে একটি তাসবিহ তৈরি হয়ে যায়।”

শাইখ ইবরাহীম আল কোসী (খুবাইব আস-সুদানি) (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“হয়তো একটি মাত্র শব্দই মুসলিম উম্মাহর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং এর দ্বারা ইসলামের শত্রুরা সুযোগ নিয়ে মুসলিমদের হত্যা এবং বন্দী করতে পারে। হয়তো মনের অজান্তে কোন শব্দ বের হয়ে গেলো, যা আল্লাহর ক্রোধ এবং জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

এটা জরুরী নয় যে, একজন গুপ্তচর শুধু আরেকজন গুপ্তচরের মাধ্যেম তথ্য সংগ্রহ করবে। তথ্য সংগ্রহের জন্য এমন একজন মুজাহিদই যথেষ্ট, যে অন্য মুজাহিদদের তথ্য গোপন রাখতে পারে না।

শাইখ ইবরাহীম আবু সালেহ (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“শত্রুরা তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সকল চেষ্টাই করে থাকে। এটা জরুরি নয় যে, তারা শুধু তাদের গুপ্তচরের কাছ থেকেই তথ্য নিবে।”

সম্মানিত পাঠক! তথ্য সংগ্রহের জন্যে শত্রুরা অনেকগুলো কৌশল এবং পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। এর উদাহরণ আরেকজন গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি জেনে নেওয়া যাক।

গুপ্তচর সালেহ মুসলিহ সালেহ হাদ্দা[2](শিহাব আল যামারি) বলে-

 “আমি একজনের কথা জানি, তবে তাঁর পরিচয় স্মরণ করতে পারছি না। তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ, আমি খুশি হয়ে যাই, যখন দেখি ভাইয়েরা নিরাপত্তার বিষয়ে মোটর সাইকেলের সদ্ব্যবহার করে। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘তুমি কাকে দেখেছো?’ সে উত্তর দিলো, ‘খালিদ।’ (অর্থাৎ গুপ্তচর এই মুজাহিদ ভাইয়ের অজান্তেই আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ ভাইয়ের নাম জেনে নিলো।”

গুপ্তচর আজিজ আহমেদ সাইফ আলিমী বলেছে-

“এরা (মুজাহিদরা) এমন লোক যে, তাঁরা কখনই আপনাকে তাঁদের ফোন নাম্বার দিবে না। উসাইদ আল আদানি, আবু হুসাইন আল মাইসারের ড্রাইভার, কেউই তাঁর নাম্বার আমাকে দেয়নি। আর দিলেও সাধারণত তাঁরা অব্যবহৃত নাম্বার দেয়। শেষ পর্যন্ত আমি নিজে তাঁর সাথে দেখা করলাম এবং তাঁর কাছ থেকে নাম্বার নিলাম।”

সম্মানিত পাঠক! গুপ্তচরদের স্বীকারোক্তিগুলো থেকে আমরা একটি বিষয় পরিষ্কার বুঝতে পারলাম যে, গুপ্তচরদের ধোঁকা দেয়ার কৌশলগুলো সাধারণত সতর্কতার সাথে গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়। অর্থাৎ, তাদেরকে এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণসহ অনেক ধরনের কৌশল শিখিয়ে দেয়া হয়।

কী কী প্রশ্নের মাধ্যমে গুপ্তচররা তথ্য বের করে নেয়?

গুপ্তচর আব্দুর রহমান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল বুরাইদি বলে,

“ধরুন, যখন আমি প্রথম তানজিমে যোগ দেই, তখন তারা আমাকে অতিরিক্ত প্রশ্ন করতে নিষেধ করেছিলো। প্রথমত, নিজেকে সন্দেহমুক্ত রাখার জন্য। দ্বিতীয়ত, তাঁরা দ্রুত আপন করে নিতো এবং লক্ষ্য রাখতো কে বেশি বাচাল! কে প্রায়ই প্রশ্ন করে, আর কে এরকম নয়। এভাবে তাঁরা সন্দেহভাজন এবং বিশ্বস্তভাজন আলাদা করতো। তৃতীয়ত, যখন আপনি তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করে এবং তাঁদের সাথে কাজ করা শুরু করবেন, তখন সহজেই তাঁদের যেকোন প্রশ্ন করা যায়। তখন কারো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা বা কারো অবস্থানের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা আপনাকে এর উত্তর দিবে। মূলত, এই তিনটিই হচ্ছে প্রধান পয়েন্ট।

আরেকটি বিষয় যে, গুপ্তচররা তরুণদের টার্গেট করে। যেমন, আপনি আবু ফায়ায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন যে, সে কেমন করছে, তাঁর কাজ কী এবং এই সংক্রান্ত প্রশ্ন, বিশেষত তাঁকে মুকাল্লা থেকে প্রত্যাহার করার পরে।”

সে আরও বলে, “আমি কিছু ভাইদের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করি না, বরং আরেকজনের মাধ্যমে খবর নেই। যখন আমি নিশ্চিত থাকি যে কারো কাছে কোন নির্দিষ্ট ভাইয়ের নাম্বার আছে, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি যে, তাঁর কাছে ঐ নির্দিষ্ট ভাইয়ের নাম্বার আছে কি না। ঐ ভাইকে আমার জরুরী প্রয়োজন বলে সাথে সাথেই নাম্বারটি আমি তাঁর কাছ থেকে সংগ্রহ করি। আমি পরে ওই ভাইকে ফোন দেই এবং কথা বলি। এর কারণ হলো, প্রথমত, নাম্বারটি যাচাই করা। দ্বিতীয়ত, যে আমাকে নাম্বার দিয়েছে, তাঁকে সন্দেহমুক্ত রাখা। যদি তাঁদের দুজনের সাক্ষাৎ হয়, গল্পটি যেন অসম্পূর্ণ না থাকে।”

গুপ্তচর আজিজ আহমেদ সাইফ আলিমী তার স্বীকারোক্তিতে বলে,

“যখন আমি কারো নাম্বার সংগ্রহ করতে চাই, আমি কখনই এমন মানুষকে নির্বাচন করি না, যার ফোন সবসময় বন্ধ থাকে। যেমন, বাসসেমের ফোন সবসময় বন্ধ থাকে। অতএব, তাঁর নাম্বার উদ্ধারের জন্যে আমি কখনই মাথা ঘামাবো না। আমি নজর রাখি তাঁদের উপর, যাদের মোবাইল সাধারণত চালু থাকে। আমি তাঁদের সাথে পরিচিত হই, এমনকি তাঁদের মাধ্যমে অন্যদের নাম্বার নিয়ে আসি।”

সে আরো বলে,

“যার সাথে আমার সাধারণত সাক্ষাৎ হয় না, তাঁর কাছে আমি কখনই তথ্য জানতে চাই না। আমি এমন ব্যক্তির সাথে মেলামেশা করি না, যে আমাকে সন্দেহ করতে পারে। যেমন, আমি যদি বাসসেমের কাছে আব্দুল্লাহ আল-সান’আনির নাম্বার চাই, সে ভাববে, কী ব্যাপার? সে কেন তাঁর নাম্বার চাচ্ছে? এটা অবশ্যই সন্দেহ তৈরি করবে। তাই, আমি এমন ব্যক্তির কাছে যাই না। আমি এমন ব্যক্তির কাছে যাই, যার সাথে আমার ভালো ও খোলামেলা সম্পর্ক রয়েছে। যদি আমি জানি যে, তাঁর কাছে নাম্বারটি নেই, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি সে নাম্বারটি জোগাড় করে দিতে পারবে কি না এবং সে রাজি হয়। তখন আমি তাঁর নাম্বার নিজের কাছে রাখি এবং পরে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁকে ফোন করে জিজ্ঞেস করি যে, সে আবু আব্দুল্লাহ আল-সান’আনির নাম্বারটি জোগাড় করতে পেরেছি কি না।”

সম্মানিত পাঠক! এই বিষয়ে গুপ্তচর আল বুরাইদি আরেকটি বিষয় তুলে ধরে, যা আমরা তার জবানবন্দিতে তুলে ধরছিঃ

তথ্য বের করার ক্ষেত্রে শত্রুবাহিনী কী ধরনের ক্যাটাগরি তৈরি করে?

গুপ্তচর আব্দুর রহমান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল বুরাইদি এই ব্যাপারে বলে,

“সংক্ষেপে, তথ্য সংগ্রহের জন্যে মানুষকে আমরা তিন ভাগে ভাগ করি।

প্রথমত, যার কাছ থেকে কোন কষ্ট ছাড়াই তথ্য সংগ্রহ করা যায়। সে তাঁর নিজের ইচ্ছাতেই সব বলে দেয়। এদেরকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

১। এমন মানুষ, যারা তাঁদের কাছে তথ্য আছে বলে গর্ববোধ করে এবং সবজান্তার মত আচরণ করে।

২। এমন মানুষ, যারা কাউকে কষ্ট দিতে চায় না।

দ্বিতীয়ত, এমন মানুষ, যাদেরকে আপনি জিজ্ঞাসা না করলে কোন তথ্য দিবে না।

তৃতীয়ত, এমন মানুষ, যারা কোন প্রকার তথ্য দেয় না। কোন কিছু জিজ্ঞেস করলেই তাঁরা আপনাকে সন্দেহ করে বসবে।

কুফরি গোয়েন্দাসংস্থাগুলো আমাদেরকে ঐসব ভাইয়ের সাথে সাথে থাকার উপদেশ দেয়, যেন কেউ আমাদের সন্দেহ করলে সে তা প্রতিরোধ করে। আপনি যার সাথে ঘনিষ্ঠ হয়েছেন, তাঁর সামনে আপনি সৎ এবং নিষ্ঠাবান থাকুন। দেখবেন আপনার এই আচরণ দেখে আপনাকে সে সবসময় সমর্থন দিচ্ছে এবং আপনাকে রক্ষা করছে।”

‘সাধারণত কীভাবে তথ্য বেশি ফাঁস হয়?’ এই প্রশ্নের উত্তরে গুপ্তচর আব্দুর রহমান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল বুরাইদি বলে,

“বেশিরভাগ সময় আপনি ভাইদেরকে বলতে শুনবেন যে, সে আরেক ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করবে।”

এই ব্যাপারে শাইখ কাসিম আর-রীমি (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“এমন কোন গুপ্তচরকে আমরা পাইনি, যে প্রাথমিকভাবে একজন বা দুইজন মুজাহিদ ভাইয়ের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে না। আমাদের মুজাহিদ ভাইরা নিজের অজান্তেই তাদেরকে তথ্য দিতে থাকে। গুপ্তচর তাঁদের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়, তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং এভাবে প্রায়শই তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে।

গুপ্তচর তাঁর সামনে খুব ভালোভাবে ইবাদত করে, তাঁদের সামনে কুরআন পড়ে, যতক্ষণ না একজন বলে যে, আমি তাকে (গুপ্তচর) আমার পাশে রাখতে চাই, যেন তাকে দেখে আমার আল্লাহর কথা স্মরণ হয়। কিন্তু তাকে কেন মুসলিমদের গোপন তথ্যগুলো দিতে হবে? কেন?

আপনি বলতে পারেন যে, আপনি তাকে বিশ্বাস করেন। তাও যদি হয়, আপনি কেন তাকে আপনার গোপন তথ্য দিবেন? কেন!!?? তথ্য আপনার জন্য কোন নির্দিষ্ট বিষয় নাও হতে পারে। কিন্তু এটা আপনার কাছে একটা আমানত। আর আপনি কেন এই আমানত ভঙ্গ করবেন? আপনি বলতে পারেন যে, আপনি যাকে বিশ্বাস করেন তাকেই তথ্য দিয়েছেন। সারকথা হচ্ছে, এসব গোপন তথ্য আমরা আমাদের বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকেও গোপন রাখবো, আর কাফিরদের থেকে তো আমরা সম্পূর্ণভাবে দুরত্ব বজায় রাখবো।”

সাধারণ মজলিস থেকে কীভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হয়?

গুপ্তচর সালেহ আল হাদ্দা বলে,

“সে (অন্য একজন গুপ্তচর) আমাকে আফগানিস্তানের ভাইদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো। আমি তাকে বললাম, এটা একটি একক সংগঠন এবং তাঁদের নেতাদের সাথে অবশই যোগাযোগ আছে। সে জিজ্ঞাসা করলো, তাঁদের কাউকে আপনি চিনেন? আমি বললাম, এসব বিষয় জানা খুবই কঠিন। সংশ্লিষ্ট ছাড়া কারো পক্ষে এসব বিষয় জানা প্রায় অসম্ভব। পড়ে আমি তাকে আরও জানালাম যে, কিছু প্রশ্নের উত্তর শুধুমাত্র বড় নেতারাই জানেন। তখন সে বললো, যদি তুমি তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকো, তবে কি জিজ্ঞেস করতে পারবে? তারপর সে আরও বললো, ঠিক আছে, তুমি যখন তাঁদের সাথে একসাথে বসো, ওই বৈঠক থেকে একটি অথবা দুইটি শব্দ নিশ্চয়ই শুনেছো। সেগুলোই আমাদের বলো।”

গুপ্তচর আবু হাসান আত-তাইযি বললো,

“ভাইয়েরা (মুজাহিদ) খোলা বইয়ের মতো।”

গুপ্তচর আব্দুর রহমান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল বুরাইদি এই ব্যাপারে বলে,

“তথ্য সংগ্রহের ব্যাপারে আরেকটি বিষয়, যখন মুজাহিদ ভাইয়েরা একসাথে বসে, তখন আপনার কোন বিষয়েই প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই। তারা নিজে থেকেই বলবে। যেমন, তুমি কি জানো, শাইখ বাতারফি এখন মিডিয়ার দায়িত্বে আছেন, অথবা কোন শাইখের নাম ধরে তিনি এখন কোথায় আছেন সেটা জানিয়ে দিবে। একজন বৈঠকের এক কোনা থেকে জোরে জোরে এই কথা বলবে আপনি শুধু কান লাগিয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবেন। আর এটাই ভাইদের ভুল যে, তাঁরা তাঁদের কথা বলার সময় অসতর্ক থাকে। তাঁরা বলতে থাকে, অমুক ভাই তদন্তের দায়িত্বে আছেন, তমুক ভাই ঐ কাজের দায়িত্বে আছেন, ইত্যাদি। এভাবেই আমরা টুকরো টুকরো তথ্য জোগাড় করে থাকি, একটি টুকরো এখান থেকে আরেকটি ওখান থেকে, একজন থেকে একটু আরেকজন থেকে আরেকটু।”

সম্মানিত পাঠক! গুপ্তচর তাইজিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, “একজন মুজাহিদ ভাইকে পটিয়ে তুমি কীভাবে তথ্য আদায় করে নিবে?” সে বললো, কথা বলানোর মাধ্যমে।

শাইখ খুবাইব আস সুদানি (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

 

﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ [٨:٢٧]

 

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ এবং তার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না, তোমাদের কাছে আমানতের খেয়ানত করো না! (সূরা আনফালঃ ২৭)।

এই আয়াতের শানে নুযূলের ব্যাপারে ইমাম সুদ্দি (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “একবার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাহাবীদের সাথে আলোচনা করছিলেন। এই আলোচনা কুরাইশদের পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলো। তখনই এই আয়াত নাজিল হয়।”

শাইখ আবু হুরাইরা কাসিম আর-রীমি বলেন,

“তোমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা মুনাফিকি বলে বিবেচনা করা হয়। এটা একটি সাধারণ বিষয়।”

আল্লাহ তাআলা বলেন,

﴿ وَلَا يُشْعِرَنَّ بِكُمْ أَحَدًا [١٨:١٩]

“এবং কিছুতেই যেন তোমাদের খবর কাউকে না জানায়” (সূরা-কাহফঃ ১৯)

আল-ইশ’আর অর্থাৎ আল-ইখবার (অবগত করানো, জানানো)

গুপ্তচর আবু হাসান আত-তাইযি আরো বলে,

“এমন হতে পারে যে, আমি [মুজাহিদরা] জানিই না আমি [মুজাহিদরা] একজন গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছি।”

শাইখ খুবাইব আস সুদানি (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“আরবরা তাদের অসম্মানের চোখে দেখে, যারা তথ্য গোপন রাখে না। তাই তারা বলে, ‘সে একজন ভদ্রলোক, কিন্তু সে তথ্য গোপন রাখতে পারে না। আর সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তির কাছে তথ্য গোপন থাকে।’ তথ্য গোপন রাখা অর্থ হচ্ছে এমন এক দরজার মত, যা তালা দিয়ে বন্ধ করা এবং তার চাবি হারিয়ে গেছে। তথ্য গোপন রাখা একজন মানুষের সম্মানকে পূর্ণ করে। মুজাহিদ বাহিনীর একেকটি তথ্য গোপন রাখা একজন আমানতদারের কাজ।”

শাইখ আবু হুরাইরা কাসিম আর-রীমি বলেন,

“অনেক ভাই আমাকে একটি বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। বিষয়টি হলো, কিছু ভাই কোন গোপন তথ্য গোপন রাখতে পারে না, এমনকি তাঁর স্ত্রী থেকেও না। একজন ফোন হাতে নেয় এবং বলতে থাকে যে অমুক আর অমুক এই জায়গায় আছে। আমাদের মধ্যকার সবচেয়ে উত্তম ভাইয়েরা তাঁদের এই দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের জন্যে হত্যার শিকার হয়, শুধুমাত্র এই ধরনের বেপরোয়া আচরণের কারণে। দায়িত্ববোধ কোথায় গেলো? আমানতের ব্যাপারে সতর্কতার কী হলো? এই গোপন তথ্যটি একটি আমানত।

সত্যিকার অর্থে দুনিয়া এবং জান্নাত, পাহাড়কে আমানত ভার দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু তারা এই ভার বহন করতে নিজদের অক্ষমতা প্রকাশ করে, কিন্তু মানুষ নিয়েছিলো।

﴿إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَةَ عَلَى السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَن يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ مِنْهَا وَحَمَلَهَا الْإِنسَانُ ۖ إِنَّهُ كَانَ ظَلُومًا جَهُولًا [٣٣:٧٢]

আমি আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই আমানত পেশ করেছিলাম, অতঃপর তারা একে বহন করতে অস্বীকার করলো এবং এতে ভীত হলো, কিন্তু মানুষ তা বহন করলো। নিশ্চয় সে জালেম-অজ্ঞ”। (সূরা আল-আহযাবঃ ৭২)

শাইখ ইবরাহীম আবু সালেহ বলেন,

“প্রত্যেক মুজাহিদ ভাইয়ের জন্যে আবশ্যক যে, সে তাঁর আরেক ভাইয়ের তথ্য গোপন রাখবে, যেন নিজের অজান্তেই আল্লাহ তা’আলার শত্রুদের সহায়তা করা না হয়ে যায়, যেন মুজাহিদদের কোন অপারেশনের ব্যাপারে শত্রুরা আগে থেকেই অবগত না হয়ে যায়, যেন তোমার জন্যে তোমার ভাইরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না হয়, যেন শত্রুরা এমন বিজয় লাভ না করে যা তারা স্বপ্নেও ভাবেনি। আমাদের ভাইদেরকে শুধু তাঁদের ভাইদের তথ্য গোপন রাখতে হবে এবং এই আমানতদারিতা বজায় রাখতে হবে।”

শাইখ খুবাইব আস সুদানি (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“প্রত্যেক মুসলিম যারা তাঁদের জবানের মাধ্যমে সীমালঙ্ঘন করে, সে যেন আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং একথা স্মরণ রাখে যে, ফেরেশতারা প্রতিটি শব্দের হিসাব রাখছে।

﴿مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ [٥٠:١٨]

“সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে।” (সূরা ক্বাফঃ ১৮)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

...”وَهَلْ یَکُبُّ النَّاسَ فِی النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ أَوْ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ إِلَّا حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ» ترمذی : ۲۶۱۶ - ابن ماجه : ۳۹۷۳

 “কিয়ামতের দ্বীন মানুষ তাঁর চেহারার জন্য জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে না, বরং তাঁদের জিহ্বার কারণে নিক্ষিপ্ত হবে।” (তিরমিযী, হাদিস নং-২৪১৪, ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-৩৯৭৩)

সম্মানিত পাঠক! তথ্য বের করার গুপ্তচরদের অনেকগুলো উপায় আছে। একটি আরেকটি থেকে বিপজ্জনক। এর একটি হলো মোবাইল ফোন।

শাইখ আবু হুরাইরা কাসিম আর-রীমি বলেন,

“বর্তমানে আমরা মোবাইল ফোনকে একটি স্পাই এজেন্ট হিসেবে গণ্য করি। একজন এজেন্ট যে কিনা সবসময় আমাদের সাথে থাকে। একজন স্পাই তথ্য সংগ্রহের জন্যে অন্য স্পাইয়ের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তার শুধুমাত্র এমন একজন মুজাহিদ দরকার, যে কিনা তথ্য সংরক্ষণের ব্যাপারে অসচেতন।”

গুপ্তচর আবু হাসান তাইজি বলে,

“আবু আলি আল-তাইযযি আর আমীর নেই, তাঁর বদলে আমীর হয়েছেন আব্দুল্লাহ আস সুনানি,” এটি একটি তথ্য।

“আমাদের এক ভাই সফরে বের হবেন, তোমাদের সাথে দেখা হতে পারে,” এটিও একটি তথ্য। “আমাদের কিছু ভাই সোমা থেকে আসবেন, তাঁদের জন্যে রাতের খাবারের ব্যাবস্থা করতে হবে,” এটিও আরেকটি তথ্য। অর্থাৎ একজন নিজের অজান্তেই বিনামূল্যে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছে।”

গুপ্তচর উসমান সারী জামাল[3] বলে,

“প্রথমত, সকল ভাইয়েরই মোবাইল ফোন আছে। তাঁরা তাঁদের স্ত্রীদেরকে তাঁদের গন্তব্য আর অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে দেয়। কেউ যদি তাঁদের উপর নজর রাখে, তাঁর অবস্থান সম্পর্কে সহজেই জানতে পারবে। “আমি এখন কাজের জায়গায় আছি, আমি এখন বুয়েশে আছি। আমি অমুক অমুক ভাইয়ের সাথে অমুক স্থানে আসবো।” আমি নিজে এই ধরনের কথা শুনেছি”।

গুপ্তচর আযিয আহমেদ বলে,

“আল্লাহর কসম, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্পাই হলো মোবাইল ফোন, যা তানযিমের ভাইদের মৃত্যুর কারণ।”

শাইখ আবু সালেহ বলেন,

“ভাইদের জানা উচিৎ যে, একটি মোবাইল ফোন স্পাইয়ের মত কাজ করতে মত সক্ষম। এটা তথ্য স্থানান্তর করতে পারে, এবং একটি ইলেকট্রনিক চিপ ক্ষেপণাস্ত্রকে গাইড করার মত ক্ষমতা রাখে। এটা এমন যে, কোন মোবাইলের মালিক বলছে, ‘আমি এখানে আছি, এটি আমার লোকেশন’।”

গুপ্তচর বুরাইদি বলে,

“এটাই প্রমাণ হয় যে, শত্রুরা স্পাইদের থেকে যা উপকার পায়, তাঁর চেয়ে বেশি উপকার পায় মোবাইল ফোনের কারণে। যেমন, আড়ি পাতা, ড্রোন হামলা, কিংবা একদম সঠিক স্থান সম্পর্কে জানা, ইত্যাদি কাজ মোবাইল খুব সহজে করে দেয়। কোন গুপ্তচরের সাহায্য ছাড়াই তা বলে দিতে পারে এটি অমুকের বাড়ি। যেমন, এটি আবু হাজির আল মালেকির ঘর অথবা শাইখ আতিউল্লাহর ঘর। এটা কোন ব্যাপারই না!!”

শাইখ কাসিম আর-রীমি বলেন,

“আমাদের শেষ সময়ের পর, বিশেষ করে আমাদের প্রস্থানের পর আমরা বুঝতে পারি যে, বেশিরভাগ ড্রোন হামলার মূল কারণ ছিল মোবাইল ফোন। একটি মোবাইল তাঁর ব্যাবহারকারীর ব্যাপারেই গুপ্তচরবৃত্তি করে, বিশেষত তাঁদের জন্যে, যারা ফোনে কী বলে বা না বলে তার কোন হিসাব রাখে না। এটি একটি চলন্ত ইলেকট্রনিক চিপ, যা কিনা তার বহনকারীর সাথে ঘুরে বেড়ায়। যার সঙ্গ একজন ভাইয়ের জন্যে এবং তাঁর সঙ্গে যারা থাকে তাঁদের জন্য বিপজ্জনক। এটা এমন একটা যন্ত্র, যা ভাইদের ঘর এবং বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বলে দিতে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় যে, এটি একজন স্পাইয়ের জন্যে যোগাযোগের মাধ্যম, যা দ্বারা সে শত্রুদের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি তথ্য পাচার করতে পারে। আর একটি ইলেকট্রিক চিপ মোবাইলের সাথে জুড়ে দেয়া ততক্ষণ পর্যন্ত বেকার, যতক্ষণ না স্পাই শত্রুদের সাথে যোগাযোগ করে ওই নির্দিষ্ট চিপের নাম্বার দিয়ে বলে যে ওই চিপ একটিভ করা হয়েছে।”

গুপ্তচর বুরাইদি বলে,

“আমি এক ভাইয়ের গাড়িতে ঢুকলাম, চিপ খুলে একটি স্থাপন করে দিলাম গাড়ির সীটের নিচে। তাঁর সাথে কথা বলতে থাকলাম কিছু বিষয়ে। এরপর কাজ শেষে আমি আমার গন্তব্যে চলে গেলাম। তারপর আমি সাথে সাথে তাদেরকে (তাগুত) ফোনে জানিয়ে দিলাম যে, চিপ সেট হয়ে গেছে। পরের দিন ড্রোন হামলা হলো।”

গুপ্তচর আব্দুল ওয়াহেদ আলি আল মানসুর বলে,

“হাওতাতে পৌঁছে, আমি পিছনে গিয়ে মাহাদি আলিকে ফোন দিলাম। আমি তাঁকে ছয় নাম্বার বিশিষ্ট চিপ নাম্বার দিলাম। আমি তাদের (তাগুত) জানিয়ে দিলাম যে, আমি চিপ বসিয়ে দিয়েছি। তারা বললো, যদি চিপ স্থাপিত হয় তাহলে ঠিক আছে। এতখানি কথাই যথেষ্ট ছিলো। তারপর আমি আমার ফোন বন্ধ করে দিলাম। এই ঘটনার ঠিক ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই আমি প্রত্যাশিত খবর শুনলাম।”

গুপ্তচর আবু ইউসুফ আস সিহরি বলে, 

“সে (কোন মুজাহিদ) আমাকে ফোন দিলো। তারপর আমি আহমেদকে, জাতীয় নিরাপত্তা’র সদস্য, কল দিয়ে জানালাম যে, তারা ইতিমধ্যে চলে গেছে।”

সে (বুরাইদি) বললো,

“সে আবু নাসির আল মারিবি’র সাথে যোগাযোগ করলো, এরপরে সে আবু জানাকে জিজ্ঞাসা করলো উনি কি আবু নাসের ছিল? সে তাকে নিশ্চিত করলো যে, উনিই আবু নাসের। তখন সে বললো, তারা কোথায় মিটিং করতে পারে তা আমাকে জানাও। সে আবার সফর করেছিলো এবং মুতাওয়াককিলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলো। আমি ২ থেকে ৩ মিনিট পর তাদের সাথে কথা বললাম এবং তাদের জানিয়ে দিলাম যে, এই মাত্র আবু জানা সাথে আবু নাসের আল মারিবিকে নিয়ে বের হয়ে গেলেন। তারা আবু নাসের মারিবির ব্যাপারে নিশ্চিত করতে বললো। আমি তাদের বললাম যে, ইনি আবু নাসের আওশান, তাঁর বাড়ি মারিব, এবং ইনিই সেই আবু নাসের, যাকে তারা দীর্ঘদিন ধরে খুঁজে আসেছে।

যেভাবে আমরা ভাইদের ছবি নিয়ে থাকিঃ পূর্ব সতর্কতামূলকভাবে আগে ক্যামেরার শব্দ এবং ফ্ল্যাশ বন্ধ করে নেই। ভাইয়েরা তাঁদের মত বসা থাকে, সামনে যে থাকে তাঁর অগোচরে তাঁর ছবি তুলে জায়গামত পাঠিয়ে দেই। আর যখন কোন ভাই আমার পাশে বসে, আমি তাঁর উল্টো দিকে গিয়ে বসি, যেন ক্লিয়ার শট পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে এমন ভান করি যে, নেটওয়ার্কে সমস্যা হচ্ছে, আর ফোন উঁচু করে ধরে ছবি তুলে নেই।

যখন কোন অডিও রেকর্ড করতে চাই, তখন আমার মোবাইলে রেকর্ডার চালু করে দেই। তারপর ক্যামেরা সামনে রেখে আমার ফোনটা পকেটে ঢুকাই। এই ক্যামেরার কারণে কোন ভাই হয়তো আমাকে ফোন উল্টিয়ে রাখার অনুরোধ করে। তখন, আমি মোবাইল উল্টে রাখি যেন মাইক্রোফোন সামনে চলে আসে। পরে আমি ভাইদের মজলিশে কিংবা একজন ভাইয়ের সাথে কথা বলা শুরু করি, কোন খবর জিজ্ঞাসা করি বা গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়ে আলোচনা করি, এরপর এই রেকর্ডিং মূল জায়গাতে পাঠিয়ে দেই।

একটি সময়ে আমি প্রায় ধরা পরে যাচ্ছিলাম আব্দুল ইযযের কাছে, আল্লাহ তাঁকে কবুল করুন। সে আমার সাথে বসা ছিলো। আমার ফোন বের করে ছবি তোলার জন্যে প্রস্তত করলাম এবং একটি ছবি তুললাম, কিন্তু ফ্ল্যাশলাইট অন ছিলো। আমি সাথে সাথে মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের একটি অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করলাম এবং ওইটা তাঁর মুখের দিকে ঘোরাতে থাকলাম। সে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো কেন আমি তাঁর ছবি তুললাম। আমি মজা করে বললাম যে, আপনার ছবি তখন তুলেছি যখন আপনি হাসছিলেন। আমার বেশ মজার লাগছিলো।”

গুপ্তচর সালেহ বলে,

“আমার সেদিনের কথা মনে আছে, যেদিন আমি টেলিগ্রাম ব্যবহার করছিলাম। তখন তারা বললো শাইখ বাসির উপস্থিত হয়েছেন...এটি টেলিগ্রামেও তারা উল্লেখ্য করলো। তারা আমাকে আরো জিজ্ঞাসা করলো শাইখ কাসিম কোন নির্দিষ্ট সমাবেশে ছিলেন কি না।”

শাইখ রীমি বলেন,

“কে মুজাহিদ বাহিনীর তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে? মুজাহিদরা নিজেরাই! ওয়েব ফোরামে কী হচ্ছে তা যদি আপনি দেখেন, তখন আপনি বিস্মিত হয়ে যাবেন। মুজাহিদরা নিজেদের সীমা যেভাবে লংঘন করে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। তাঁরা মুজাহিদদের লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা প্রকাশ করে দেয়, এরপর তাঁরা ওপেন চ্যাট রুমে এগুলো নিয়ে তর্ক করে। এই তর্কের উদ্দেশ্য কী?

শত্রুদের লক্ষ্য হচ্ছে, তারা মুজাহিদদের একসাথে ধরবে, একসাথেই জেলে নিয়ে যাবে এবং বলবে, যে ময়দানে থাকলে কী করতে সেটা নিয়ে বিতর্ক করো!! আপনি যদি জেলে থাকতেন, তবে কখনই আপনি তা করতেন না, বরং এটাকে আপনার ভাইদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখতেন।”

শত্রুরা জানে যে, আপনাকে যদি তারা বন্দী করতে পারে, তাহলে আপনি আর কিছুই করতে পারবেন না, শুধু বাইরে থাকা ভাইদের ক্ষতি করা ছাড়া।”

গুপ্তচর বুরাইদি বলে,

“তারা ভাইদের ইউজারনেম এবং আপডেটের ব্যাপারে সবসময় আগ্রহী থাকে। তারা জিজ্ঞাসা করে যে, নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির ইউজারনেম আছে কি না, অথবা কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তি ফিরে এসেছে কি না, কিংবা অমুক অমুক ব্যক্তি ইন্টারনেট থেকে এতো দীর্ঘ সময়ের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে কেন, ইত্যাদি। এভাবে তথ্য নিয়ে তারা ভাইদের নজরদারিতে রাখে।”

শাইখ রীমি বলেন,

“২০১১ সালে আমাদের বিদায়ের পর, ন্যাশনাল সিকিউরিটি’র ডকুমেন্ট থেকে আমরা খুঁজে পাই যে, ওখানে তিনজন ভাইয়ের উপর হামলা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। শাইখ আবু বাসের আমাকে তাঁদের তালিকা দেন এবং তাঁদের ডাকতে বলেন। তাঁদের মধ্যে দুইজন মারা গিয়েছিলো, আর একজন বেঁচে ছিলো। কেন তাঁদের উপর হামলা নিষেধ ছিলো, যেখানে তাঁরা আমাদের বিশ্বাসভাজন সাথী? কেননা তাঁদের কাছে তানজিমের সকল খবর রয়েছে। শত্রুরা তাদের লোক মারফত ওই ভাইদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। তা দুইভাবে হতে পারে – যখনই ওই ভাইরা কোন খবর পেতো, শত্রুরা তাঁদের ফোন মনিটর করার মাধ্যমে সেটা জেনে নেয়, অথবা সেই ভাইরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাইদের সংবাদ সংগ্রহ করে যখন বাকি ভাইদের সেসব সুসংবাদ দিতো [তখন গুপ্তচরদের মাধ্যমে শত্রুরা তা জেনে নেয়]।

গুপ্তচর বুরাইদি বলে,

“যেমন, শিহারে আমনির সেফহাউস কোথায় সেটা বের করে আমি তাদের মেসেজ দিয়ে দিলাম এবং নিশ্চিত করলাম যে, এখানেই তাঁরা অভিযুক্তদের রেখেছে।

সবশেষে, সকল ধরনের ফোন মুজাহিদদের জন্য শত্রু এবং গুপ্তচর। স্মার্টফোন এবং বাকি ফোনের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তারা আড়ি পাততে পারবে, আপনার সঠিক অবস্থান বের করতে পারবে এবং আপনাকে হত্যা করার জন্য মিসাইল হামলা করতে পারবে।”

শাইখ রীমি বলেন,

“বর্তমানে আমাদের মূল সমস্যা হলো মুসলিমদের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া। এটাই আমাদের অবনতির অন্যতম কারণ। আমরা খোলা বইয়ের মত হয়ে গিয়েছি। আমরা আমাদের চিন্তা উন্মুক্ত করে দিয়েছি, যা দ্বারা শত্রুরা ফায়দা নিচ্ছে।”

এবার আমরা কিছু পরিসংখ্যান দিবো, যা গত নয় বছর ধরে গুপ্তচরদের স্বীকারোক্তি থেকে জড়ো করা হয়ে হয়েছে। আর যা আমাদের থেকে এখনো গোপন আছে, তা হয়তো আরো বেশি বিস্ময়কর। এখানে আমরা দেখতে পাবো আমাদের ভাইদের কোন ধরনের কথার কারণে শত শত মুজাহিদ ভাই নিহত হয়েছেন।

১। “এই ব্যক্তি হচ্ছে অমুক” – এই ধরনের মন্তব্যের জন্যে কমপক্ষে ৩০ জন মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছেন, এমনকি আবু সুফিয়ান আশ শিহরি (রহিমাহুল্লাহ) আহত হয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই দায়িত্বশীল ভাই।

২। “এ কথা কাউকে বলবেন না, এটি আর কেউ জানে না” – এই ধরনের বিবৃতির কারণে ৩০ এর অধিক মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই অন্য মুজাহিদ ভাইদের ব্যাপারে কর্তব্যরত ছিলেন।

৩। “এই গাড়িটি নির্দিষ্ট একজন ভাইয়ের অথবা একটি গ্রুপের” – এই ধরনের বিবৃতির কারণে ৪০ এর অধিক মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছেন।

৪। “এই বাড়িতে অমুক থাকে অথবা এই বাড়িটি অমুক কমিটির” – এই ধরনের বিবৃতির কারণে ৫০ এর অধিক মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছেন।

৫। “আমি যাচ্ছি। সেই ব্যক্তি আগামীকাল বা তারপরের দিন যাবে। আমার নির্দিষ্ট এই দিনে মিটিং আছে” – এই ধরনের বিবৃতির কারণে ১২০ এর অধিক মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছেন।

৬। “আমি আপনাকে সুসংবাদ দিচ্ছি, ভাইদের... গনিমত অর্জন বা কিডনাপিং-এর অপারেশন আছে” – এই ধরনের বিবৃতির কারণে ১৩০ এর অধিক মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছেন।

এরকম একটি খবরের কারণে একজায়গায় ৬০ জন মুজাহিদ নিহত হন এবং অন্য আরেক জায়গায় ৪২ জন নিহত হন।

আর সবচেয়ে চোটের বিষয় এটা না যে, কতজন মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় নিহত হলেন; মূলত চোটের বিষয় তো এটি যে, এসব বাক্যগুলো মুজাহিদ ভাইদের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়। মুজাহিদ ভাইয়েরা মনে করেন যে, তাঁরা তো তাঁদের বিশ্বস্ত ভাইদের কাছেই এসব কথা বলছেন, অথচ এটা বুঝতে পারছেন না যে, তাঁদের প্রথম ভুল হলো তাঁদের কাছে যা আমানত ছিলো তার খেয়ানত হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, কথাগুলো এক ভাই থেকে আরেক বিশ্বস্ত ভাই, তাঁর থেকে আরেক বিশ্বস্ত ভাই, এভাবে ছড়াতে থাকে, যতক্ষণ না তাঁরা শত্রুদের হাতে ধরা পরে যান।

একজন মুজাহিদ ভাইয়ের জন্যে এটা আবশ্যক যে, তিনি মুসলিমদের গোপন তথ্য তাঁর কাছে গোপন রাখবেন তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ভাই, বা আমাদের সবচেয়ে সচেতন ভাই, এমনকি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বিশ্বস্ত ভাইয়ের কাছ থেকেও।

এর পাশাপাশি একজন মুজাহিদের উপর এটাও আবশ্যক যে, তিনি তাঁর সাথী ভাইদের প্রতিরোধ করবেন, নিষেধ করবেন এবং উপদেশ দিবেন, যারা তথ্য গোপন রাখতে পারেন না।

এর কারণ, আজ পর্যন্ত যত তথ্য ফাঁস হয়েছে, তাঁর প্রভাব শুধুমাত্র একজনের উপর পরেনি, বরং তাঁর ক্ষতি জামা’আতকে ভোগ করতে হয়েছে। তাই এই ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকার কোন অনুমতি নেই।

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন,

یقول رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم "والذی نفسی بیدہ لتاٰمرن بالمعروف ولتنھون عن المنکر اٰو لیوشکن اللہ اٰن یبعث علیکم عقابا منہ ثم تدعونہ فلا یستجیب لکم"

“ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! তোমরা সৎ কাজের আদেশ করো এবং অসৎ কাজের নিষেধ করো, নচেৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব তোমাদের উপর পতিত হবে। তখন তোমরা আল্লাহকে ডাকবে, কিন্তু তাতে তিনি সাড়া দিবেন না।”

বেশি কথা বলা এবং গল্প গুজব করা অনেকের কাছে স্বাভাবিক আচরণ হয়ে গেছে। এটি আমাদের একটি অন্যতম দোষ, যার মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে কোন নমনীয়তা অবলম্বন করা যাবে না। আর যারা সামরিক গোপনীয়তা বজায় রাখার গুরুত্ব বোঝেন, তাঁদের উচিৎ যারা তথ্য গোপন রাখতে পারেন না, তাঁদের উপদেশ দেয়া, যেন তাঁরা লোক দেখানো ভাব এবং অহংকার থেকে বিরত থাকেন।

যারা গোপনীয়তা রক্ষার গুরুত্ব বোঝেন এবং মূল্যায়ন করেন, তাঁদের জন্য এটি আবশ্যক যে, যারা সামরিক তথ্য গোপন রাখতে পারেন না তাঁদের মুখ বন্ধ রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আর যারা এসব তথ্য ফাঁস হওয়ার সময় উপস্থিত থাকেন কিন্তু তা প্রতিরোধ করেন না, তাঁরাও এসব তথ্য ফাঁসের জন্য দায়বদ্ধ।

 শাইখ ইবরাহীম আল কোসী (শাইখ খুবাইব আস-সুদানি) (হাফিজাহুল্লাহ) বলেন,

“যে ব্যাক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির সন্ধানে হিজরত করেছে, যে মুজাহিদ আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করতে চায় এবং শাহাদাত অর্জনের জন্যে সকল আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত যে প্রতিদানের কোন শেষ নেই, তাঁদের জন্যে বলছি, কখনই তোমার জবান বা মোবাইল ফোনকে ভাইদের গোপন তথ্য ফাঁসের কারণ বানিয়ো না, যা কিনা তোমার ভাইদের বন্দীত্ব এবং মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে, আর শত্রুদেরকে আমাদের দুরাবস্থা নিয়ে উল্লাস করার সুযোগ করে দিবে। আল্লাহর শপথ, আমরা আল্লাহর অনেক নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবার ভয় করি শুধুমাত্র কিছু বিষয়ে আমাদের গাফেলতি এবং অবমুল্যায়নের জন্যে, যেসব বিষয় বাস্তবে অনেক বড় এবং বেশ গুরুত্বপূর্ণ।”

 

 

[1] - তার আসল নাম আব্দুর রহমান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল বুরাইদি (ফারিস আল কাসিমি), ২১ বছর বয়সী এই গুপ্তচর সংগঠনে যোগদান করেছে ১৪৩৬ হিজরীতে।

[2]  ২৫ বছর বয়সী গুপ্তচর সালেহ মুসলিহ সালেহ হাদ্দা (শিহাব আল যামারি) যামার নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করে।

[3] গুপ্তচর উসমান সারী জামাল ১৯৬৯ জন্মগ্রহণ করে। সে তানজিমে যোগ দেয়ার কিছুদিন আগে আটক হয়।