গনতন্ত্রের পক্ষে ইসলামি(!!) গনতন্ত্রিদের কিছু কঠিন যুক্তির সহজ জবাব
একযুগেরও বেশী আগের কথা।
গণতন্ত্র নামক মানবরচিত মতবাদের মাধ্যমে দ্বীন কায়েমের ব্যর্থ চেষ্টারত দল ও মতের নেতাকর্মীদেরকে গণতন্ত্র পরিহার করে জিহাদের পথে অগ্রসর হওয়ার আহবান জানালে তাদের যেসব কঠিন(!) যুক্তির সম্মুখীন হতাম এবং সেসব কঠিন প্রশ্নের সহজ উত্তর দিতাম,তার কিছু উল্লেখ করা সময়োপযোগী মনে করছি।
কারণ, এই দীর্ঘসময় পর অফলাইনে না হলেও অনলাইনে মাঝে মাঝে অনুরুপ প্রশ্ন দেখা যাচ্ছে।
আসুন ১৩/১৪ বছর আগে ফিরে যাই.............
# জিহাদ সমর্থকঃ
গণতন্ত্র পরিহার করুন।কারণ গণতন্ত্র একটি মানবরচিত কুফুরী মতবাদ। আর মানবরচিত কুফুরী মতবাদের মাধ্যমে কখনো আল্লাহর দ্বীন কায়েম হতে পারে না।
# ইসলামী গণতন্ত্রীঃ
দেখুন, কাফিররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যেধরণের অস্ত্র ব্যবহার করে,মুসলিমদেরকেও অনুরুপ পাল্টা অস্ত্র ব্যবহার করা উচিৎ। রাসূল সাঃ এর সময় কাফিররা তরবারি ব্যবহার করেছিলো,তাই মুসলিমরাও তরবারির মাধ্যমে জবাব দিয়েছিলো। এখন তারা গণতন্ত্রের মাধ্যমে এসেছে,তাই তাদেরকে গণতান্ত্রিকভাবেই মোকাবেলা করতে হবে।
# জিহাদ সমর্থকঃ
কাফিররা সেসময় মূর্তির পূজা করতো,আল্লাহর রাসূল সাঃ ও সাহাবীরা কী মূর্তির মাধ্যমে মোকাবেলা করেছিলেন ? আজকের গণতন্ত্র আর সেকালের মূর্তির দু’টিই কুফুরী ও শিরক। গণতন্ত্রের মোকাবেলায় যদি গণতন্ত্র হয়,তাহলে মূর্তির মোকাবেলা মূর্তির মাধ্যমে করা উচিৎ ছিলো !!!
আর সেকালের কাফিররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে তরবারি ব্যবহার করেছিলো। আজকের কাফিররা কী খালি হাতে ??
আজকে তারা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র,ট্যাংক,কামান,যুদ্ধ বিমান,ক্ষেপনাস্ত্র,পারমানবিক অস্ত্র ইত্যাদি নিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
আপনার যুক্তি অনুযায়ী মুসলিমদেরও কী এগুলোর মাধ্যমেই মোকাবেলা করা উচিৎ নয় ??
(১৩/১৪ বছর আগেও সঠিক জবাব পাইনি,আজও দিতে পারবে না ইনশাআল্লাহ্। )
# ইসলামী গণতন্ত্রীঃ
(গণতন্ত্রকে বৈধতা দিতে না পেরে জিহাদ সমর্থককে উদ্দেশ্য করে।) এই রাষ্ট্র যেহেতু গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত । আর আপনারা জিহাদীরাও এখানেই বসবাস করেন,সুতরাং আপনারাওতো গণতন্ত্রকে মেনেই চলেন ।
# জিহাদ সমর্থকঃ
গণতন্ত্র হচ্ছে একটি কুফুরী মতবাদ,যা নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের হাতে আইন তৈরির ক্ষমতা দেয়। পক্ষান্তরে আমরা এই কুফুররী মতবাদকে সর্বাত্মকভাবে বর্জন করেছি এবং একে চরমভাবে ঘৃণা করি।
এরপরও আমরা কীভাবে গণতন্ত্রকে মেনে চললাম,বুঝলাম না !
আচ্ছা, আল্লাহর রাসূল সাঃ মক্কার শিরকী পরিবেশে ছিলেন বলে কী বলা যাবে, উনিওতো মূর্তিপূজা মেনেই মক্কায় ছিলেন ??? (না’উযুবিল্লাহি মিন যালিক)
কিংবা মুসা আঃ ফির’আউনের রাজ্যে এবং ইব্রাহীম আঃ নমরুদের রাজ্যে ছিলেন বলে কী বলা যাবে,উনারা ফির’আউন ও নমরুদের কুফুরী ও মূর্তিপূজার রাজত্ব মেনেই ছিলেন ???
আচ্ছা, বাতিল আইনে পরিচালিত রাষ্ট্রে থাকি বলে যদি এটিকে মেনে নেয়া বুঝায়,তাহলে কী আমরা বুঝবো, আপনারা এই কুফুরী রাষ্ট্রের সকল কুফুরী আইন মেনে নিয়েছেন ?
তার মানে কী আপনারা মদের লাইসেন্স দেয়া,পতিতাবৃত্তির লাইসেন্স,সুদের বৈধতা দান এগুলোকে মেনে নিয়েছেন ???
(জবাব পাইনি..........)
# ইসলামী গণতন্ত্রীঃ
(একপর্যায়ে গণতন্ত্র বিরোধীদেরর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে.....) এদেশে যেহেতু গণতন্ত্র চলে,তাই কেউ যদি তা মানতে না চায় এবং মানে না বলে দাবী করে,তাহলে তার উচিৎ এদেশ ছেড়ে চলে যাওয়া !
কারণ তাদের গণতান্ত্রিক দেশে থাকা মানায় না।
# জিহাদ সমর্থকঃ
আল্লাহর যমিনে যারা আল্লাহর দ্বীন মানতে চায়না এবং মানে না,তাদের এবং তাদের সমর্থকদের আল্লাহর এই যমিন ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিৎ !!
কারণ, আল্লাহর যমিনে আল্লাহর আইন না মানা ব্যক্তিদের মানায় না !!!
(লা-জাওয়াব.......)
উপরের এই প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি স্বয়ং আমি হয়েছিলাম এবং অনুরুপ উত্তরই দিয়েছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ্।
১৩/১৪ বছর পর আজও অনলাইনে দেখছি, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম কায়েমের ব্যর্থ ও ইসলাম বহির্ভূত প্রচেষ্টাকে বৈধ করার জন্য সেই আদিযুগের ছেলেমানুষি যুক্তি দিতে !
যেমনঃ আমরা বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করাই, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করি,ট্যাক্স দেই ইত্যাদির মাধ্যমে বুঝাতে চায়,আমরা নাকি গণতন্ত্রের মধ্যেই আছি !
মানে গণতন্ত্র মেনে চলি !!!
এসব হাস্যকর যুক্তির জন্য আশা করি বিগত ১৩/১৪ বছর আগের উত্তরই যথেষ্ট হবে। নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজনবোধ করছি না।
গণতন্ত্রের ব্যাপারে স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, গণতন্ত্র এই যুগের সবচেয়ে জঘন্য ও প্রতারণাপূর্ণ মানবরচিত কুফুরী+শিরকী মতবাদ এবং একটি স্বতন্ত্র দ্বীন।
কোনোভাবেই আমরা গণতন্ত্রকে মানি না এবং মানবো না ।
এমনকি যদি আমাদেরকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় এবং আগুনে জ্বালিয়ে ছাই করে দেওয়া হয়।
রাসূল সাঃ শিরক্ মেনে না নেওয়ার জন্য একথাই বলেছেন।
গণতন্ত্র হচ্ছে সকল কুফুরী ও আল্লাহদ্রোহীতার রক্ষক।
এটি সকল কুফুরী ও শিরককে নিরাপত্তা দেয় এবং লালন-পালন করে।
গণতন্ত্রের আল্লাহদ্রোহীতার বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর এটিকে অক্ষত রেখে কিংবা গণতান্ত্রিক পন্থায় আল্লাহর যমিন থেকে শিরক্,কুফর উৎখাত করা এবং আল্লাহর দ্বীন কায়েমের চেষ্টা করা স্ববিরোধিতা ও আত্মপ্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
গণতন্ত্রের কী এবং এর হুকুম কী এব্যাপারে জানতে আল-কায়েদার শীর্ষস্থানীয় আলিম শাইখ আবু মুহাম্মাদ ‘আসিম আল-মাক্বদিসী হাফিঃ লিখিত ‘আদ-দিমুক্বরাতি
য়্যাহ দ্বীনুন’ অর্থাৎ ‘গণতন্ত্র একটি দ্বীন’ কিতাবটির অনুবাদ ভালোভাবে পড়ূন।
কিতাবের নামঃ ‘গণতন্ত্র একটি দ্বীন।