ইসলামে নিবেদিত মুসলিম জনতা আজ নির্মম নির্যাতনের শিকার
গোটা ফিলিস্তীন এক জ্বলন্ত কারাগার
মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন
১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে ইসরাঈল এবং পিএলওর মাঝে এমন এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার ফলে ফিলিস্তিনের সীমিত কিছু এলাকায় ইয়াসির আরাফাতের আধা স্বায়ত্বশাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। অনেকে আশা করেছিল যে, এই চুক্তির ফলে অন্ততঃ ফিলিস্তিনীদের উপর নির্যাতনের ধারা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু শেষ ফলাফল তা হয়নি। নির্যাতিত হত ইসরাঈলী পুলিশের হাতে, এখন তাদেরকে মারছে খোদ আরাফাতের সরকার।
বিগত দু' বছর ধরে ফিলিস্তীন' থেকে যে খবরাখবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে যে, ফিলিস্তিনীদের উপর নির্যাতন চালানোর ক্ষেত্রে ইয়াসির আরাফাত ইসরাঈলকেও হার মানিয়েছে। এ দু'বছরে আরাফাত প্রশাসন থেকে সাধারণ ফিলিস্তিনবাসী জেল-জুলুম, ক্ষুধা-দারিদ্র ও বেকারত্ব ছাড়া আর কিছুই পায়নি। এই গত দু' বছরে ফিলিস্তীনে মানবাধিকার এমনভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, যেমনটি হচ্ছে কাশ্মীরে। নিম্নে গত দু' বছরে ফিলিস্তিনীদের উপর পরিচালিত আরাফাত প্রশাসনের নির্যাতনের কিঞ্চিত বিবরণ তুলে ধরা হলো।
ধরপাকড়
আরাফাত প্রশাসন তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধরপাকড় ও গ্রেফতারীর মাধ্যমে নির্যাতনের সূচনা করেছে। ইয়াসির আরাফাতের ক্ষমতাগ্রহণ ও ফিলিস্তীন আগমনের মাত্র একমাস পর ১৪ আগষ্ট ১৯৯৪ সালে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত পুলিশ বাহিনী আরাফাতের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী পলিসির প্রতিবাদকারীদের উপর চড়াও হয় এবং তার প্রতিপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহযুক্ত লোকদের গ্রেফতার করে কারাবন্দী করতে থাকে। এ দমন অভিযানে প্রায় একহাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পরবরর্তীতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকে। ২৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৬ এ অভিযান আরো কঠোর রূপ ধারণ করে। পশ্চিম তীর এবং ইয়াসির আরাফাতের কতৃত্বাধীন অন্যান্য এলাকা থেকে এ দিন ৪০ জন ফিলিস্তিনীকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারী ১৮৭ জন ফিলিস্তিনীকে কারাগারে বন্দী করা হয়। ১৩ এপ্রিল পুলিশ বাহিনীর একজন মুখপাত্র ঘোষণা করেন যে, এ অভিযানে ৯০০ ফিলিস্তিনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘোষণা মোতাবেক আরাফাত প্রশাসন কর্তৃক ফিলিস্তিনীদের গ্রেফতারীর হার দৈনিক ১৮ জনে দাড়ায়।
যে সব এলাকায় নির্দিষ্ট লোকদের ধরা যায়নি সেখানে তাদের বাপ-মা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীদের ধরে ততক্ষণ পর্যন্ত আটক রাখা হয়েছে, যতক্ষণ না তারা এসে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করেছে। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে এই বলে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে যে, যদি তারা তাদের প্রতি আরোপিত অভিযোগসমূহ স্বীকার করে না নেয়, তা হলে তাদের স্ত্রীকন্যা ও বোনদের সম্ভ্রমহানী করা হবে। অর্থাৎ আরাফাত প্রশাসনও তথ্য অনুসন্ধানের ঠিক সে পদ্ধতি-ই অবলম্বন করেছে, যে পদ্ধতিতে জালিম ইসরাঈল সরকার অনুসন্ধান চালাতো ফিলিস্তিনীদের ঘরে ঘরে। পর্যবেকক্ষকদের অভিমত হলো, ফিলিস্তিনে ১৯৬৭ থেকে এ পর্যন্ত ধরপাকড়ের এটাই সবচেয়ে বড় অভিযান।
গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার কেবল তারাই নয়, যাদের ব্যাপারে ইসরাঈলী সৈন্যদের উপর আক্রমণের আশংকা আছে। বরং যারা এই সন্দেহযুক্ত লোকদের সাথে কোনো না কোনো রকম সম্পর্ক রাখে, তারাও এ চরম হয়রানীসহ গ্রেফতারীর শিকার হচ্ছে। তা ছাড়া লেখক, সাংবাদিক, ডক্টর, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবি, শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরও গ্রেফতার করে হয়রানী করা হচ্ছে। ডক্টর মাহমুদ জাগের, শায়খ আহমাদ বাহার ও শায়খ সাইয়েদ আবুসালেহ এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। আরো যে সব বিশিষ্ট ব্যক্তি আরাফাত প্রশাসনের হয়রানীর শিকার হয়েছেন, তম্মধ্যে আন্-নাজাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ আব্দুস সাত্তার কাসেম, গাজা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ ইব্রাহীম মাকাদমা, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের : ফ্যাকালটি অফ টেকনোলজির ডিন ডঃ মুহাম্মদ শাবিত, গাজা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ আতিক ইসমাঈল শামিল, দৈনিক আল-হায়াতের প্রতিনিধি আয়মান সালামা এবং গাজা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আল-ওয়াতন-এর ডেপুটি চীপ এডিটর ডঃ গাজী হামিদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
গাজার “এজেন্সী ফ্রান্স প্রেস এর ফটোগ্রাফার ফাইয়াজ নুরন্দীনকে গ্রেফতার হয়েছে। মানবাধিকার সংরক্ষণ সংস্থার যে সব কর্মী আরাফাত প্রশাসনের এসব অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছে, হয়রানী থেকে তাদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি। নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত 'ফিলিস্তিনী আযাদ কমিশন' এর নেতা ডঃ সিরাজকে ৯ ঘন্টা আটক রেখে তার কর্মতৎপরতা সম্পর্কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
পুলিশী হয়রানীঃ
ইয়াসির আরাফাতের কোপদৃষ্টি থেকে সামাজিক, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোও রক্ষা পাচ্ছেনা। যাকেই সন্দেহ হয়েছে যে, লোকটি হামাসের সাথে সম্পর্ক রাখে, আরাফাতের পুলিশ তার উপর-ই চড়াও হচ্চে। ৭ই মার্চ ১৯৯৬ গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর দুইশত পুলিশ হানা দেয়। দীর্ঘ ছয় ঘন্টা পর্যন্ত তারা গোটা বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে তন্নতন্ন করে তল্লাশী চালায়। বিদ্যালয়ের দরজা জানালা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। অফিসের ফাইল, গুরুত্বপুর্ণ কাগজপত্র ও কম্পিউটার ডিস্ক তূলে নিয়ে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডদেরও তারা ধরে নিয়ে যায়।
৩০ মার্চ ১৯৯৬ নিউফোর্স এর কয়েক ডজন জওয়ান লেফটেনেন্ট কর্নেল তারেক হাসানীর নেতৃতে নাবলুসের আন-নাজাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন এক মুহূর্তে হানা দেয়, যখন বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্ররা ইয়াসির আরাফাত প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিল। সেদিন পুলিশী আক্রমণে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। এক গর্ভবতী ছাত্রীর উপর পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের ফলে ঘটনাস্থলেই তার গর্ভপাত ঘটে যায়। এ অভিযানে পুলিশ ৫৫ জন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
অতঃপর এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে লাগাতার দু'সপ্তাহ প্রচন্ড বিক্ষোভের পর ইয়াসির আরাফাত ছাত্রদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা দ্বিতীয়তার আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
পুলিশী হানা থেকে আল-ইসলাহ সোসাইটি, ইসলামিক সোসাইটি, ইসলামিক কমপ্লেক্স ও তার শাখাসমূহ, কিন্ডার গার্টেন এবং হেল্থ কমপ্লেক্স এর মত গণস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানও রেহাই পাচ্ছেনা। পুলিশ এসব প্রতিষ্ঠানের সরঞ্জামাদি লুট করে নিয়ে গেছে। কিন্ডার গার্টেন থেকে শিশুদের খেলনা পর্যন্ত পুলিশ নিয়ে গেছে। সেবা সংস্থাগুলোতে গরীবদের মাঝে বিতরণের জন্য রাখা খাদ্যসামগ্রীও পুলিশ লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
টর্চার
গ্রেফতারকৃত লোকদের উপর নির্যাতনের সব ধরনের অমানুষিক পদ্ধতি অবলম্বন করে চলছে। সাধারণ কয়েদী থেকে নিয়ে বড় বড় স্কলারও এই নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ডঃ ইবরাহীম মাকাদমাকে গ্রেফতার করে গাজার জেলে অতি সংকীর্ণ ও অন্ধকার একটি প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছিল। তার উপর এত নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে যে, তার পাজরের হাড্ডিগুলো ভেঙ্গে গেছে। নির্যাতনের পর যখন তিনি জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়তেন, তখন তাকে গাজার আশ-শিফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একটু সুস্থ হলে আবার শুরু হয় নির্যাতন। এইভাবে তার উপর নির্দয় নির্যাতন চালান হয়। তাকে বাধ্য করা হতো, যেন তিনি তার উপর সরকার কতৃক আরোপিত মিথ্যা অভিযোগগুলো স্বীকার করে নেন। সম্প্রতি তিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
পাড়াগাঁয়ে অবস্থিত জাবালিয়া মুহাজির ক্যাম্প-এর এক যুবক জামাল জারাহকে অনুসন্ধান করার নামে এত নির্যাতন করা হয়েছে যে, তার উভয় বাহু ভেঙে গেছে। এ ধরনের অসংখ্য নিষ্পাপ লোক পুলিশী প্রহরায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদীদের থেকে জানা গেছে যে, ফিলিস্তিনী অনুসন্ধান কেন্দ্রগুলোতে কয়েদীদের প্রথমে দিনের পর দিন পানিতে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তারপর তাদেরকে পানি থেকে তুলে এনে বিশেষ এক ধরনের লাঠি দ্বারা বেদম প্রহার করা হয়। এতে সারা শরীরে অসহনীয় যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়, হাড়-গোড় ভেঙ্গে যায়, মাথার চুল ও দাড়ি কামিয়ে দেওয়া হয়। মাথা নিম্নমুখী করে পা দু'টো উপরে তুলে ছাদের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পেটানোর জন্য অনেক সময় বৈদ্যুতিক তারের তৈরি হান্টার ব্যবহার করা হয়।
জাতিসংঘের এক অফিসারের জাতিসংঘ মহাসচিবের নিকট প্রেরীত ফিলিস্তিন সম্পর্কে এক লিখিত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, অধিকৃত অঞ্চলসমূহে ব্যাপকহারে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। ফিলিস্তিনী নিরাপত্তা বাহিনীর যে সব অফিসারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে, তাদের কেউ-ই এ অভিযোগ অস্বীকার করেননি।
মেজর জেনারেল মুহাম্মদ পি, এল, ওর অংগ সংগঠন ফাতহে তাহরীক এর সামরিক শাখা আল-আসিফা ফোর্স এর কমান্ডার। তিনি বলেন, ইয়াসির আরাফাতের শাসনাধীন অঞ্চলসমূহের জেলগুলোতে কয়েদীদের উপর অসহনীয় নির্যাতন চলছে। তিনি বলেন, এ রিপোর্টের সমর্থনে আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেছে, অনুসন্ধান কেন্দ্রগুলোতে আরাফাত প্রশাসনের নির্যাতনে এ পর্যস্ত অসংখ্য লোক প্রাণ হারিয়েছে। ফরীদ জারবাও, সালমান জালাইতা ও তাওফীক আলী এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই নির্যাতনের প্রতিবাদে কারাগার গুলোতে লাগাতার অনশন-ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। “বাইতে লাহম' এর জেলে তো একটানা দু' সপ্তাহেরও অধিক কাল অনশন ধর্মঘট পালিত হয়। কিন্তু ইয়াসির আরাফাত প্রশাসন নির্যাতন বন্ধের পরিবর্তে উল্টো শাস্তিস্বরূপ ধর্মঘটকারীদের দূরদূরান্তের জেলে স্থানান্তর করছে। অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উপর জোর চাঁপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যেন তারা বন্দীদের সমস্যার ব্যাপারে কোনো কথা না বলে।
হত্যা
ফিলিস্তীন নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দা পুলিশ ইসরাঈলী মোসাদের ন্যায় প্রতিপক্ষকে গুপ্তভাবেও হত্যা করছে। একটি নির্ভরযোগ্য রিপোর্ট মোতাবেক এ যাবত গুপ্তভাবে ১১ জন ফিলিস্তিনীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশ্য হত্যাও চলছে। ১৯৯৪ সালের ১৮ নভেম্বর গাজায় একটি মসজিদের বাইরে গুলি করে পুলিশ ১৪ জন নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। ১৯৯৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী গাজায় পুলিশ একটি ক্যাম্পের উপর গুলি ছুড়ে এবং ইসলামী জিহাদ নামক সংগঠনের সাথে জড়িত দু" ব্যক্তিকে হত্যা করে। ১৩ মার্চ ১৯৯৬ সালে পশ্চিম তীরের রামলা অঞ্চলের তাছীর লুজী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। বলা বাহুল্য যে, সরকারের পক্ষ থেকে এসব হত্যাকান্ডের একটিরও তদন্ত নেয়া হয়নি।
ন্যায়-নীতির অবসান
ইয়াসির আরাফাত স্টেট সিকুরিটি নামক এক বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করে রেখেছেন। কিন্তু কার্যতঃ এই আদালত ন্যায়-নীতিকে টুটি চেপে হত্যা করছে। এখানে বন্দী আসামীদের আইনজীবির সহযোগিতা নেয়ার অনুমতি নেই। অধিকাংশ মামলার শুনানী হয় গভীর রাতে। সাংবাদিকদের পর্যন্ত আদালতের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে দেওয়া হয় না। ইয়াসির আরাফাতের, এই আদালত এ পর্যন্ত একজন আসামীকেও ন্যায় বিচার উপহার দিতে পারেনি। এ যাবত যে ক'টি মামলার রায় হয়েছে, তার সব ক'টি-ই আসামীদের বিপক্ষে গিয়েছে।
আর্থিক ধ্বস
ইয়াসির আরাফাত প্রশাসন শুধু দৈহিক নির্যাতন আর বন্দুকের গুলি দ্বারা-ই ফিলিস্তিনীদের হত্যা করছে না বরং ইসরাঈলের সাথে আঁতাতের ফলে ফিলিস্তীনের আর্থিক অবস্থা এমন খারাপ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, জনগণ ক্ষুধা-দারিদ্রের কষাঘাতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। ইসরাঈলী নিষেধাজ্ঞার ফলে গত কয় মাসে বেকারত্বের হার ৬০ থেকে সত্তর শতাংশে উঠে এসেছে। ফিলিস্তিনীদের সাহায্যার্থে প্রাপ্ত ত্রাণসামগ্রী ফিলিস্তিনীদের স্বার্থ বিরোধী কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। মোট কথা, ইয়াসির আরাফাত প্রশাসন নির্যাতন নিপীড়নে ইসরাঈলকে ডিঙ্গিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ফিলিস্তীনে এখন স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের সভা সমাবেশ করারও অনুমতি নেই। এক কথায়, ফিলিস্তীনের সমগ্র আধা স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল এখন একটি কারাগার ছাড়া আর কিছুই নয়।
সূত্রঃ
১। ফিলিস্তিন টাইমস, লন্ডন।
২। বেদার ডাইজেস্ট, লাহোর।