JustPaste.it

untitled.png

 

❛আমেরিকার প্রতি বার্তা || LETTER TO AMERICA❜

— ইমামুল মুজাহিদ শাইখ উসামা ইবনু লাদিন [تقبله الله]

“যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে, যাদেরকে আক্রমণ করা হয়েছে। কারণ তাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে বিজয় দানে সক্ষম।” [সূরাঃ আল-হাজ্জ্ব; আয়াতঃ ৩৯]

 

“ঈমানদারগণ আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে আর যারা কাফির তারা তাগুতের পথে যুদ্ধ করে। কাজেই তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, নিশ্চয়ই শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল।” [সূরাঃ আন-নিসা; আয়াতঃ ৭৬]
❛আমরা কিসের ভিত্তিতে যুদ্ধ করছি?❜ — শিরোনামে কয়েকজন আমেরিকান লেখক বেশ কিছু নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এই নিবন্ধগুলো কিছু বিষয়ের উত্তর নিষ্পন্ন করেছে। যার মধ্যে কিছু শরিয়াহ এর উপর ভিত্তি করে সত্যকে মেনে চলে আর অন্যগুলো এমন নয়। আল্লাহর নিকট পুরষ্কারের আশা করে, তাঁর কাছে সাফল্য এবং আশ্রয় কামনা করে আমরা এখানে সত্যকে তুলে ধরতে চাই, প্রশ্নগুলোর জবাব দেয়া এবং সতর্ক করার জন্য।
আল্লাহ্‌র সাহায্য কামনা করে, দুটো প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে আমেরিকানদের প্রতি আমাদের জবাব পেশ করছিঃ—

 

প্রশ্নঃ ০১ — কেন আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি আর কেনইবা তোমাদের বিরোধিতা করছি?

 

প্রশ্নঃ ০২ — আমরা তোমাদের কিসের প্রতি আহ্বান করছি এবং তোমাদের কাছ থেকে আমরা কী চাই?
প্রথম প্রশ্নঃ— কেন আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আর বিরোধিতা করছি ?
উত্তর খুব সহজঃ

 

০১ — কারণ তোমরাই আমাদের (প্রথমে) আক্রমণ করেছো আর এখনো তা চালিয়েই যাচ্ছো।

 

(ক) তোমরাই ফিলিস্তিনে আমাদের উপর আক্রমণ করেছো।

 

(i) ৮০ বছরেরও বেশী সময় ধরে ফিলিস্তিন সামরিক দখলে নিমজ্জিত। তোমাদেরই সাহায্য আর সমর্থনে ব্রিটিশরা, ফিলিস্তিনকে ইহুদিদের হাতে তুলে দিয়েছিলো যারা ৫০ বছরেরও বেশী সময় ধরে তা দখল করে রেখেছে। নিপীড়ন, অত্যাচার, অপরাধ, হত্যা, বহিষ্কার, ধ্বংস ও বিধ্বস্ততা দিয়ে উপচে পড়ছে বছরগুলো। ইসরায়েলের সৃষ্টি আর এর বিস্তৃতি সবচাইতে বড় অপরাধগুলোর একটি। আর তোমরাই এই সকল অপরাধীদের নেতা। অবশ্য ইসরায়েলের প্রতি আমেরিকানদের সমর্থনের মাত্রা ব্যাখ্যা এবং প্রমাণ করার তো প্রয়োজনই নেই। ইসরায়েল তৈরী করাই খোদ একটি অপরাধ যা অবশ্যই মুছে ফেলতে হবে। এই অপরাধে অবদান রাখার জন্য যাদের হাত দূষিত সেই প্রত্যেক ব্যক্তিকে এর মূল্য দিতেই হবে, আর চরমভাবে তারা এর মূল্য দিবে।

 

(ii) ফিলিস্তিনের উপর ইয়াহুদীদের ঐতিহাসিক অধিকার রয়েছে, তাওরাতে তাদের যা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল—তোমরা যে এখনো এই বানোয়াট মিথ্যার পুনরাবৃত্তি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাওনি তা দেখে আমাদের হাসি আর কান্না দুটোই পায়। যারাই এই তথাকথিত ঘটনার বিরোধীতা করে তার বিরুদ্ধেই এন্টি-সেমিটিজম এর অভিযোগ চলে আসে। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে মিথ্যা আর ব্যাপকভাবে প্রচারিত বানোয়াট কথার একটি। বরং ফিলিস্তিনের জনগনই হলো খাঁটি আরব আর প্রকৃত শেমীট্ (original Semites)। মুসলিমরাই মূলত মুসা (আলাইহিস সালাম) আর অবিকৃত তাওরাতের উত্তরাধিকারী। ইবরাহিম, মুসা, ঈসা ও মুহাম্মদ (আলাইহিমুস সালাম) সহ সমস্ত নবীদের ওপর মুসলিমরা ঈমান রাখে। যদি তাওরাতে মূসার অনুসারীদের ফিলিস্তিনের অধিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েই থাকে তবে সেটা পাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত মুসলিম জাতি।
মুসলিমরা ফিলিস্তিন জয় করে যখন রোমানদের তাড়িয়ে দিয়েছিল তখন ফিলিস্তিন আর জেরুজালেম ইসলামের প্রতি ফিরে এসেছিল, যা সকল নবীর ধর্ম (আলাইহিমুস সালাম) । অতএব, ফিলিস্তিনের উপর ঐতিহাসিক অধিকারের প্রতি যে আহ্বান তা মুসলিম উম্মতের বিরুদ্ধে আসতে পারে না যারা সকল নবীর (আলাইহিমুস সালাম) উপর ঈমান আনে আর আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না।

 

(iii) ফিলিস্তিনিদের থেকে যে রক্ত ঝরছে তার সমানরূপে প্রতিশোধ নেয়া হবে। তোমরা জেনে রাখো যে, শুধু ফিলিস্তিনিরাই কাঁদে না; শুধুমাত্র তাদের নারীগন বিধবা হয় না, শুধুমাত্র তাদের সন্তানরাই এতিম হয় না।

 

(খ) তোমরাই আমাদের সোমালিয়াতে আক্রমণ করেছিলে; চেচনিয়াতে আমাদের উপর রাশিয়ার নৃশংসতা, কাশ্মীরে আমাদের উপর ভারতের নিপীড়ন আর লেবাননে আমাদের উপর ইহুদিদের আগ্রাসনকে তোমরাই সমর্থন করেছিলে।

 

(গ) তোমাদেরই তদারকি, সম্মতি ও আদেশের অধীনে আমাদের দেশের সরকারসমূহ তোমাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে; দৈনিক আমাদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করে।

 

(i) এই সরকারসমূহ আমাদের জনগণকে ইসলামী শরীয়া প্রতিষ্ঠা করতে বাধা দেয়, তা করার জন্য সহিংসতা এবং মিথ্যা (তথ্য) ব্যবহার করে।

 

(ii) এই সরকারসমূহ আমাদের অপমানের স্বাদ গ্রহণ করায়। ভয়ভীতি আর দমন-নিপীড়ন করে বড় কারাগারে বন্দী করে রাখে।

 

(iii) এই সরকারসমূহ আমাদের উম্মাহর সম্পদ চুরি করে নগণ্য মূল্যে তোমাদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

 

(iv) এই সরকারসমূহ ইহুদিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। নিজেদের জনগণের ছিন্নভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর প্রতিষ্ঠিত ইহুদি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব স্বীকার করে ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ অংশ তাদের হাতে তুলে দিয়েছে।

 

(v) এসব সরকারের অপসারণ আমাদের উপর ফরজ; উম্মাহকে মুক্ত করা, শরীয়াহকে সর্বোচ্চ আইনে প্রতিষ্ঠিত করা আর ফিলিস্তিনকে পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি আবশ্যকীয় পদক্ষেপ। এসব সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ তোমাদের বিরুদ্ধে আমাদের করা যুদ্ধ থেকে আলাদা নয়।

 

(ঘ) তোমরা আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং সামরিক হুমকির মাধ্যমে আমাদের সম্পদ আর তেল নগণ্য মূল্যে চুরি করছো। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে মানবজাতির দ্বারা প্রত্যক্ষ করা সবচেয়ে বড় চুরি।

 

(ঙ) তোমাদের বাহিনী আমাদের দেশসমূহ দখল করেছে। তোমরা এসব ভূমিতে সর্বত্র তোমাদের সামরিক ঘাঁটি ছড়িয়ে দিয়েছো, আমাদের ভূমি কলুষিত করেছো, আমাদের পবিত্র স্থানগুলো অবরোধ করেছো। এ সবই করছো ইহুদিদের নিরাপত্তা রক্ষা আর আমাদের ধন-সম্পদ লুট করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে।

 

(চ) তোমরাই ইরাকের মুসলমানদের ক্ষুধার্ত করেছো। প্রতিদিন শিশুরা মারা যাচ্ছে সেখানে। আশ্চর্যের বিষয় যে, তোমাদেরই নিষেধাজ্ঞার ফলে পনের লক্ষেরও বেশি ইরাকি শিশু মারা গিয়েছে আর তখন তোমরা কোন পাত্তাই দাওনি। অথচ যখন তোমাদের ৩০০০ মানুষ মারা গেলো, তখন পুরো বিশ্ব এমনভাবে উঠে দাঁড়ালো যে, এখনো বসেনি !

 

(ছ) জেরুজালেম যে তাদের চিরন্তন রাজধানী; তোমরা ইহুদিদের এই ধারণাকে সমর্থন করেছো,সেখানে তোমাদের দুতাবাস স্থানান্তর করেছো।

 

,সেখানে তোমাদের দুতাবাস স্থানান্তর করতে হয়েছিলে। তোমাদেরই সাহায্য আর নিরাপত্তায় ইসরায়েলিরা এখন আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করার পরিকল্পনা আঁটছে। তোমাদেরই অস্ত্রের নিরাপত্তায় শ্যারন আল-আকসা মসজিদে ঢুকেছিল সেটাকে অপবিত্র করার উদ্দেশ্যে, তা দখল আর ধ্বংস করার প্রস্তুতি হিসেবে।
০২ — এইসব বিপর্যয় আর চরম দুর্দশা আমাদের প্রতি তোমাদের অত্যাচার ও আগ্রাসনের কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। আমাদের ধর্মে আদেশ করা হয়েছে এবং আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি বলে যে, নিপীড়িতদের (নিপীড়নকারীর উপর আগ্রাসন) ফিরিয়ে দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমাদের কাছ থেকে জিহাদ, প্রতিরোধ ও প্রতিশোধ ছাড়া আর কিছুর অপেক্ষা করো না। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আমেরিকা আমাদের উপর আক্রমণ চালানোর পর আমরা তাকে নিরাপদ ও শান্তিতে বসবাস করার জন্য ছেড়ে দেব এই আশা করা কি কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত?!
০৩ — এরপরেও তোমরা তর্ক করতে পারো যে, উপরে উল্লেখিত সমস্ত কারণ সত্ত্বেও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আগ্রাসন কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না যারা সেই অপরাধ করেনি এবং যেসব হামলায় তারা অংশগ্রহণ করে নি।
০৪ — (ক) এই যুক্তিটি তোমাদের নিজেদের কথার পুনরাবৃত্তি যে, আমেরিকা হলো বাক স্বাধীনতার দেশ আর এ বিষয়ে সে বিশ্বের নেতা, সেটার বিরোধিতা করে। সুতরাং, আমেরিকার জনগণই তাদের স্বাধীন ইচ্ছায় তাদের নিজেদের সরকার নির্বাচিত করেছে। এমন একটি মনোনয়ন যা তার কর্মপন্থার প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে। অতএব, আমেরিকার জনগনই ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি নিপীড়ন, তাদের ভূমি দখল ও অন্যায় অধিগ্রহণ এবং তাদের ক্রমাগত হত্যা, নির্যাতন, শাস্তি ও বহিষ্কারের জন্য তাদের সমর্থন দিয়েছে, আর দৃঢ়ভাবে তার সত্যাপন করেছে। আমেরিকান জনগণের হাতে তাদের সরকারের নীতি প্রত্যাখ্যান, এমনকি পরিবর্তন করবার অভিমত ও ক্ষমতা রয়েছে যদি তারা তা চায়।

 

(খ) আফগানিস্তানে আমাদের উপর বোমা বর্ষণকারী বিমান, আমাদের ঘর ধ্বংসকারী ট্যাংক, আরব উপসাগরে আমাদের ভূমি দখলকারী সেনা, ইরাক অবরোধ নিশ্চিতকারী নৌবহর—এসবগুলোর ফান্ডিং আমেরিকার জনগনের ট্যাক্স থেকেই আসে। ট্যাক্সের এই ডলারগুলো ইসরায়েলকেই দেয়া হয় যেন তারা অবিরত আক্রমণ করে আমাদের ভূমিতে অনুপ্রবেশ করতে পারে। সুতরাং আমেরিকান জনগণই আমাদের বিরুদ্ধে হামলার অর্থায়ন করে এবং তারাই তাদের নির্বাচিত প্রার্থীদের মাধ্যমে ইচ্ছামত এই অর্থ ব্যয়ের তদারকি করে।

 

(গ) আমেরিকান সেনাবাহিনী আমেরিকান জনগণেরই অংশ। যারা নির্লজ্জভাবে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইহুদিদের সহায়তা করছে।

 

(ঘ) আমেরিকান জনগণই তাদের পুরুষ এবং নারী উভয়কেই আমেরিকান বাহিনীতে নিয়োগ করে, যারা আমাদের উপর আক্রমণ চালায়।

 

(ঙ) এই কারণে আমেরিকান জনগণ আমাদের বিরুদ্ধে আমেরিকান এবং ইহুদিদের দ্বারা সংঘটিত সমস্ত অপরাধ থেকে নির্দোষ হতে পারে না।

 

(চ) সর্বশক্তিমান আল্লাহ প্রতিশোধ নেওয়ার অনুমতি এবং উপায় দিয়েছেন। সুতরাং, যদি আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়, তবে আমাদের পাল্টা আক্রমণ করারও অধিকার রয়েছে। যে আমাদের গ্রাম ও শহর ধ্বংস করবে, আমাদেরও অধিকার আছে তাদের গ্রাম ও শহর ধ্বংস করার। যারা আমাদের সম্পদ চুরি করেছে, তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করারও অধিকার আমাদের আছে। আর যে আমাদের বেসামরিক মানুষ হত্যা করেছে, তাদের (বেসামরিক মানুষ) হত্যা করারও অধিকার আমাদের আছে।

 

আমেরিকান সরকার ও প্রেস এখনও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করে, যে কেন তারা নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে আমাদের আক্রমণ করেছিল? বুশের চোখে শ্যারন যদি শান্তিপ্রেমী মানুষ হন, তাহলে আমরাও শান্তিপ্রেমী মানুষ! আমেরিকা নীতি ও শিষ্টাচারের ভাষা বোঝে না। তাই আমরা এমন ভাষা ব্যবহার করে সম্বোধন করছি যেন সে বুঝতে পারে।
দ্বিতীয় প্রশ্নঃ— আমরা তোমাদের কিসের প্রতি আহ্বান করছি এবং তোমাদের কাছে আমরা কী চাই?
০১ — সর্বপ্রথম আমরা তোমাদের আহ্বান করছি ইসলামের প্রতি।

 

(ক) এই ধর্ম হলো আল্লাহ্‌র একত্ববাদের ধর্ম, তাঁর সাথে অংশীদার স্থাপণ করা হতে মুক্ত একটি ধর্ম, আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদারিত্ব প্রত্যাখ্যানের ধর্ম; আল্লাহ্‌র প্রতি পরিপূর্ণ ভালোবাসার, তাঁর আইনের প্রতি পরিপূর্ণ বশ্যতা স্বীকার করার ধর্ম। তাঁর নবীর (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে প্রেরিত ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক সকল প্রকার মত, পথ, আদেশ, উপদেশ, তত্ত্ব ও ধর্ম বর্জনের ধর্ম হলো ইসলাম। ইসলামই হলো সকল নবীর ধর্ম। ইসলাম তাঁদের মধ্যে কোন পার্থক্য করে না। তাঁদের সকলের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
এই ধর্মের দিকেই তোমাদের আহ্বান করছি আমরা। পূর্ববর্তী সকল ধর্মের সীলমোহর হচ্ছে ইসলাম। এটি হলো রবের একত্ববাদের, আন্তরিকতা, সর্বোত্তম আচরণ, ন্যায়পরায়ণতা, করুণা, সম্মান, পবিত্রতা এবং তাকওয়ার ধর্ম। অন্যের প্রতি দয়া দেখানো, তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা, তাদের অধিকার প্রদান করা এবং নির্যাতিত ও নিপীড়িতদের রক্ষা করার ধর্ম। হাত, জিহ্বা ও অন্তর দিয়ে ভালো কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার ধর্ম ইসলাম। এটা আল্লাহর পথে জিহাদের ধর্ম, যাতে তাঁর কালাম ও দ্বীন সবার উঁচুতে থাকে। আর ইসলাম হলো আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের শর্তে ঐক্য ও সন্ধির ধর্ম, যাতে রয়েছে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা ভাষা নির্বিশেষে সকলের মাঝে সাম্য ও সমতা।

 

(খ) এটি সেই ধর্ম যার গ্রন্থ কুরআন— অন্য সকল ঐশী গ্রন্থ ও বাণী পরিবর্তন হওয়ার পরেও—সর্বকালে সংরক্ষিত এবং অপরিবর্তিত থাকবে। কেয়ামত পর্যন্ত কুরআন অলৌকিক থাকবে। আল্লাহ যে কাউকে কুরআনের মত একটি কিতাব বা এর মত দশটি আয়াত নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন।
০২ — দ্বিতীয় যে বিষয়ের প্রতি আমরা তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি তা হল, তোমাদের মধ্যে ছড়িয়ে যাওয়া অত্যাচার, মিথ্যা, অশ্লীলতা, দুর্নীতি বন্ধ করা।

 

(ক) আমরা তোমাদের আহ্বান করি উত্তম আচার-আচরণ, নীতি, সম্মান এবং পবিত্র মানুষ হওয়ার ; ব্যভিচার, সমকামিতা, নেশাজাতীয় দ্রব্য, জুয়া খেলা এবং সুদের ব্যবসার মতো অনৈতিক কাজগুলো প্রত্যাখ্যান করার।
তোমাদের এসকল জিনিসের প্রতি আহ্বান জানাই এজন্য যেন তোমরা ইতিমধ্যে যেসব কাজ করেছো তা হতে মুক্ত হতে পারো। যেন তোমরা মুক্ত হতে পারো , 'আমরা এক মহান জাতি'—এমন প্রতারণাপূর্ণ মিথ্যে হতে যা তোমাদের নেতারা তোমাদের জঘন্য অবস্থা লুকিয়ে রাখার জন্য ছড়িয়ে থাকে।

 

(খ) অতি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে তোমরা হলে মানবজাতির প্রত্যক্ষ করা সবচাইতে নিকৃষ্টতম সভ্যতা।

 

(i) তোমরা সেই জাতি যারা আল্লাহ্‌র আইন দ্বারা সংবিধান পরিচালনা না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো নিজেদের আইন উদ্ভাবন করাকে বেছে নিয়েছে। তোমরা আল্লাহ্‌র আইন থেকে দেশীয় সংবিধানকে আলাদা করে নিয়েছো। এর মাধ্যমে তোমরা তোমাদের স্বভাবজাত প্রকৃতি (ফিতরাতের) বিরোধীতা করছো, যা তোমাদের স্রষ্টা ও রবের সম্পুর্ন কর্তৃত্ব সত্যায়ন করে। তোমরা সেই বিব্রতকর প্রশ্ন থেকে পালিয়ে বেড়াওঃ এটা কিভাবে সম্ভব যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ, মানুষকে সকল প্রাণী এবং ভূমির উপর কর্তৃত্ব দিয়েছেন, তাদের জীবনের সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধার উপকরণ দিয়েছেন, কেন তিনি মানুষকে বিধানের জ্ঞান, যা তাদের জীবন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সবচাইতে প্রয়োজনীয় বিষয়, দিবেন না ?

 

(ii) তোমরাই সেই জাতি যারা সকল ধর্মে নিষিদ্ধ সুদকে অনুমোদন দিয়েছো। তোমরা তোমাদের সম্পূর্ণ অর্থনীতি আর বিনিয়োগ সুদের উপর গড়ে তুলেছো। এর ফলশ্রুতিতে ইহুদিরা তাদের বিভিন্ন রূপ ও ছদ্মবেশে তোমাদের অর্থনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে, যার মাধ্যমেই তারা তোমাদের মিডিয়া, এমনকি জীবনের সমস্ত দিকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তোমাদেরকে তাঁদের দাস বানিয়ে ফেলেছে। তোমাদের ব্যায়ে নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছে তারা। যার বিরুদ্ধে ঠিক যেমনটি বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন সতর্ক করেছিলেন।

 

(iii) তোমরা এমন এক জাতি যারা নেশাজাতীয় দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবসা এবং ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তোমরা মাদকের অনুমতি দাও কিন্তু সেটার ব্যবসা নিষিদ্ধ করো। অথচ তোমাদের জাতিই সেটার সবচেয়ে বড় ভোক্তা।

 

(iv) তোমরা এমন এক জাতি যারা মানুষকে সমস্ত অনৈতিক কাজের অনুমতি দেয় আর সেটাকে তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার স্তম্ভ বলে মনে করে। তোমরা ধীরে ধীরে এমন অটল গহবরে তলিয়ে যেতে চলেছো যতক্ষন না পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে অজাচার ছড়িয়ে পড়ছে। সেসময়ে তোমাদের সম্মানবোধ কিংবা আইন কোনটাই এর আপত্তি করবে না।
হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে তোমাদের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টনের অনৈতিক কার্যকলাপ কে ভুলতে পারে? তোমরা তার বিচার পর্যন্ত করোনি, শুধুমাত্র “তিনি ভুল করেছেন” বলা ছাড়া, সময় অতিবাহিত হয়েছে তার কোন শাস্তি ছাড়াই। ইতিহাসে তোমাদের লজ্জাভরে স্মরণ করার জন্যে এর চাইতে ন্যাক্কারজনক আর কোন ঘটনা আছে কি ?

 

(v) তোমরা এমন এক জাতি যারা সব ধরনের জুয়া খেলার অনুমতি দেয়। কোম্পানিগুলিও এতে জড়িত। যার ফলে এই কাজে বিনিয়োগ সক্রিয় হয়ে উঠছে, অপরাধীরা ধনী হয়ে যাচ্ছে।

 

(vi) তোমরা এমন জাতি যারা নারীদের ভোগ্য পণ্যের মতো ব্যবহার করে অথবা বিজ্ঞাপন সরঞ্জামের মতো যা দিয়ে মানুষদের পণ্য কিনার আহ্বান জানানো হয়। প্রফিট মার্জিন বাড়াবার উদ্দ্যেশ্যে  যাত্রী, দর্শনার্থী, অপরিচিত লোকদের সার্ভ করতে তোমরা নারীদের ব্যবহার করো। তোমরাই আবার গলাবাজি করো যে নারীমুক্তির বিষয়টি তোমরা সমর্থন করো।

 

(vii) তোমাদের জাতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সব ধরনের যৌন ব্যবসা করে। বড় বড় কর্পোরেশন এবং প্রতিষ্ঠান; শিল্প, বিনোদন, পর্যটন, স্বাধীনতা এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক শব্দের নাম দিয়ে এই ব্যবসায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত; যেই নামগুলো তোমরা তাদেরকে দিয়েছো।

 

(viii) আর এসবের কারণেই ইতিহাস তোমাদের এমন এক জাতি হিসেবে বর্ণনা করেছে যারা মানুষের মাঝে এমন সব অজানা রোগ ছড়িয়ে দিয়েছে যা অতীতে কেউ চিনতো না। যাও মানবতার সামনে গর্ব করে প্রচার করো তো যে তোমরাই পৃথিবীতে এইডস নামক রোগ উৎপাদন করেছো। আমেরিকানদের এক শয়তানীক আবিস্কার!

 

(xi) তোমরাই তোমাদের শিল্প বর্জ্য আর গ্যাস দিয়ে ইতিহাসের অন্য যেকোনো জাতির চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে প্রকৃতিকে ধ্বংস করেছো। এরপরেও তোমরা Kyoto চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করছো, যাতে তোমরা তোমাদের লোভী কোম্পানি আর শিল্পগুলির মুনাফা সুরক্ষিত রাখতে পারো।

 

(x) তোমাদের আইন হল ধনী এবং বিত্তবানদের আইন, যারা তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর আধিপত্য কায়েম করে, বিভিন্ন উপহারের মাধ্যমে সেসব দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারণার কাজে অর্থায়ন করে । এদের পেছনে রয়েছে ইহুদিরা যারা তোমাদের পলিসি, মিডিয়া আর অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে।

 

(xi) যেই একটি কারণে পুরো বিশ্বমানবতার ইতিহাসে তোমরা অনন্য হয়ে থাকবে তা হলো, তোমরা তোমাদের শক্তি দিয়ে অন্য যেকোনো জাতির তুলনায় সবচাইতে বেশী মানুষ হত্যা করেছো; কোন নীতি বা মুল্যবোধ রক্ষার জন্যে নয়, শুধুমাত্র নিজেদের লাভ আর স্বার্থ রক্ষার জন্যে। তোমরাই জাপানে পারমাণবিক বোমা ফেলেছিলে, যদিও জাপান তখন তোমাদের সাথে যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত হয়েই ছিল। হে স্বাধীনতার দিকে আহ্বানকারীগণ ! কি পরিমাণ অত্যাচার, অবিচার, অন্যায় তোমরা করেছো?!

 

(xii) আমরা তোমাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহের একটি যেন ভুলে না যাই আবার: আচরণ আর মুল্যবোধে তোমাদের দ্বীচারিতা ও নীতি ও শিষ্টাচারে তোমাদের ভন্ডামি। সমস্ত প্রকার নীতি, শিষ্টাচার আর মুল্যবোধের ক্ষেত্রে তোমরা দুটো পাল্লা বানিয়ে রেখেছো; একটা নিজেদের জন্য, আরেকটা অন্যদের জন্যে।

 

(i) যেই স্বাধীনতা আর গণতন্ত্রের ডাক তোমরা দিয়েছো তা শুধু তোমাদের নিজেদের আর সাদা চামড়ার জাতির জন্যেই;  তোমরা তোমাদের বিকৃত ধ্বংসাত্নক নীতি আর সরকারদের, বাকি পুরো পৃথিবীর জন্যে চাপিয়ে দিয়েছো,যাদের তোমরা “আমেরিকার বন্ধু” বলে ডাকো। এরপরেও তোমরা তাদেরকে তাদের দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বাঁধা দাও। আলজেরিয়ার ইসলামিক পার্টি যখন সেখানে গণতন্ত্র চর্চা করে নির্বাচনে জিতে গেলো, তখন তোমরা তোমাদের এজেন্টদের আলজেরিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে ছেড়ে দিলে যেন তারা ট্যাংক আর বন্দুক দিয়ে তাদের আক্রমণ করে, যেন তাদের বন্দী করে, অত্যাচার করে। “আমেরিকান গণতন্ত্রের বই”-এর এক নতুন শিক্ষা।

 

(ii) বিশ্বে শান্তি নিশ্চিত করার বাহানায় গণবিধ্বংসী অস্ত্রসমূহকে নিষিদ্ধ এবং জোরপূর্বক অপসারণের বিষয়ে তোমাদের নীতি শুধুমাত্র সেসব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যাদের তোমরা এসব অস্ত্র রাখার অনুমতি দাও না। আর যে দেশগুলোর ব্যাপারে সম্মত হও—যেমন ইসরায়েল—তাহলে তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এই ধরনের অস্ত্র রাখার এবং ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়। অন্য কোন দেশ এরকম অস্ত্র তৈরি করছে বা রাখছে এ ধরণের সন্দেহ যদি তোমাদের হয় তাহলে তোমরা তাদের অপরাধী বলে গণ্য করো, তাদের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করো।

 

(iii) আন্তর্জাতিক আইনের দেয়া মীমাংসা আর নীতিকে সম্মান করার ব্যাপারে তোমরাই সবচাইতে পিছিয়ে, অন্যদিকে অন্য কেউ এমন কাজ করলে তোমরা তাদের বেছে তাদেরকে শাস্তি দেয়ার হুমকি দাও। অথচ ইসরায়েল ৫০ বছরেরও বেশী সময় ধরে জাতিসংঘের দেয়া মীমাংসা আর আইনকে দেয়ালে ছুড়ে মারছে, আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনেই।

 

(iv) আর যে যুদ্ধাপরাধীদের নিন্দার জন্যে তোমরা ফৈজদারি আদালত গঠন করেছো, সেই আদালতেই তোমরা নির্লজ্জের মতো নিজেদের ব্যাপারে খালাস চাও! ইতিহাস কিন্তু ভুলবে না কি ধরণের যুদ্ধাপরাধ তোমরা মুসলিমসহ পুরো বিশ্বের ওপর করেছো; জাপান, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, লেবানন, ইরাকে তোমাদের হত্যাযজ্ঞ তোমাদের উপর একটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে যা থেকে কোন নিস্তার তোমরা পাবে না। সাম্প্রতিককালে আফগানিস্তানের ঘটনাসমুহই তোমাদের যুদ্ধাপরাধ মনে করিয়ে দেবার জন্যে যথেষ্ট;তোমরা ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম ধ্বংস করেছো, তোমাদের বোমাবর্ষণে মসজিদে নামাযরত মুসল্লিদের মাথায় ছাদ ভেঙ্গে পড়েছিল। কুন্দুয ত্যাগ করবার সময় তোমরাই মুজাহিদীনদের সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করে জঙ্গি দূর্গে তাদের উপর বোমা বর্ষণ করেছিলে। এক হাজারেরও বেশী বন্দীদের শ্বাসরোধ ও তৃষ্ণায় হত্যা করেছিলে তোমরাই। এছাড়াও তোমাদের আর তোমাদের এজেন্টের অত্যাচারে আরও না জানি কতো মানুষ মারা গেছে , শুধুমাত্র আল্লাহ তা’আলাই জানেন। তোমাদের প্লেন এখনো আফগানের আকাশে আছে, দূর থেকে এখনো সন্দেহজনক মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে।

 

(v) তোমরা নিজেদের মানবাধিকারের অগ্রদূত হিসেবে দাবী করো। তোমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এমন সব দেশের বাৎসরিক পরিসংখান প্রকাশ করে। অথচ মুজাহিদরা যখন আক্রমণ করলো তখন সব মানবাধিকার উধাও হয়ে গেলো, যেসব সরকারের পদ্ধতিগুলো নথিভুক্ত করে তাদের নিন্দা জানাতে তোমরা তাদের পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করা শুরু করে দিয়েছ! খোদ আমেরিকাতেই তোমরা হাজার হাজার মুসলিম ও আরবদের ধরে নিয়ে গিয়েছো, কোন কারণ, আদালতে বিচার বা নাম প্রকাশ করা ছাড়াই তাদের হাজতে পাঠিয়েছো। নতুন আরও কঠোর আইন জারি করেছো।
গুয়ান্তানামোতে যা ঘটেছে তা তো আমেরিকা ও তার মুল্যবোধের জন্য এক ঐতিহাসিক কলঙ্ক, যা তোমাদের মুখের দিকে চিৎকার করে বলে, হে ভণ্ডরা “কোন সন্ধি বা মধ্যস্থতায় তোমাদের স্বাক্ষরের মূল্য কত?”
০৩ — তৃতীয়ত আমরা তোমাদের যে বিষয়ের দিকে আহ্বান করি তা হল, নিজেদের সাথে তোমরা সৎ থাকো। যদিও তোমরা আদৌ তা করবে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে! নিজেদের সাথে সৎ হলে তোমরা আবিষ্কার করবে যে তোমরা এমন এক জাতি যার কোন প্রকার মূল্যবোধ বা শিষ্টাচার নেই। তোমাদের কাছে মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতা এমন কিছু যা কেবলমাত্র তোমরা অন্যের কাছেই দাবীই করো, নিজেদের যা মেনে চলতে হয় না।
০৪ — এছাড়াও আমরা তোমাদের, ইসরায়েলকে সমর্থন বন্ধ করার, কাশ্মীরের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের, চেচেনদের বিরুদ্ধে রাশিয়ানদের ও দক্ষিণ ফিলিপাইনের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ম্যানিলা সরকারকে সমর্থন বন্ধ করার জন্য উপদেশ দিচ্ছি।
০৫ — তোমাদের আরও পরামর্শ দিচ্ছি, লাগেজ গুছিয়ে আমাদের ভূমি থেকে তোমরা বের হয়ে যাও। আমরা তোমাদের ভালোই চাই, তোমাদের হেদায়েত আর ন্যায়পরায়ণতা কামনা করি, অতএব, কফিনে তোমাদের ফেরত পাঠাতে আমাদের বাধ্য করো না।
০৬ — ষষ্ঠত, আমাদের দেশেগুলোর দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করারও আহ্বান জানাই।আমাদের রাজনীতি ও শিক্ষা পদ্ধতিতে তোমরা হস্তক্ষেপ করিও না। আমাদের একা ছেড়ে দাও, অন্যথায় নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে আমাদের দেখতে পাবে।
০৭ — পারস্পরিক স্বার্থ এবং সুবিধার ভিত্তিতে আমাদের সাথে তোমাদের চুক্তি এবং যোগাযোগ করার আহ্বান জানাই, দমনপীড়ন, চুরি আর দখলদারিত্ব এর মাধ্যমে নয়, ইহুদিদের সমর্থন করার নীতিটিও বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। নইলে তা তোমাদের আরও বিপর্যয় ঘটাবে।
তোমরা যদি এই সমস্ত শর্তে সাড়া দিতে ব্যর্থ হও তবে মুসলিম জাতির সাথে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও। তাওহীদবাদী এই জাতি আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখে এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। এই জাতিকে কুরআনে এভাবে সম্বোধন করা হয়েছে:

 

“তোমরা কি তাদেরকে ভয় কর? আল্লাহ্‌কে ভয় করাই তোমাদের পক্ষে বেশী সমীচীন যদি তোমরা মুমিন হও। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর, তোমাদের হাত দিয়েই আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিবেন, তাদেরকে অপমানিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করবেন আর মু’মিনদের প্রাণ প্রশান্ত করবেন। আর তিনি তাদের অন্তরের ক্ষোভ দূর করবেন এবং আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা তার তাওবা কবুল করবেন। আর আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” [সূরাঃ আত-তাওবাহ; আয়াতঃ ১৩-১৫]

 

সম্মান ও শ্রদ্ধার জাতিঃ—

 

“শক্তি-সম্মান তো আল্লাহরই, আর তাঁর রাসূল ও মুমিনদের।” [সূরাঃ আল মুনাফিকুন; আয়াতঃ ০৮]
“তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং চিন্তিত ও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।” [সূরাঃ আল ইমরান; আয়াতঃ ১৩৯]

 

শাহাদাতের জাতিঃ— তোমরা জীবন যতো আশা করো তার চাইতে বেশী তারা মৃত্যু আশা করে

 

“আর যারা আল্লাহ্‌র পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনোই মৃত মনে করো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে তারা রিযকপ্রাপ্ত। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে তারা আনন্দিত এবং তাদের পিছনে যারা এখনো তাদের সাথে সম্মিলিত হয়নি তাদের জন্য আনন্দ প্রকাশ করে যে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। তারা আনন্দ প্রকাশ করে আল্লাহ্‌র নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্য এবং এজন্য যে আল্লাহ মুমিনদের শ্রমফল নষ্ট করেন না।” [সূরাঃ আল ইমরানঃ আয়াত ১৬৯-১৭১]

 

বিজয় ও সাফল্যের জাতি — যা আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন

 

“তিনিই তাঁর রাসূলকে প্রেরণ করেছেন হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ সকল দ্বীনের উপর তাকে বিজয়ী করার জন্য, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।” [সূরাঃ আস-সফ,আয়াতঃ ০৯]

 

“আল্লাহ্ লিখে রেখেছেন, ‘আমি অবশ্যই বিজয়ী হব এবং আমার রাসূলগণও’। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মহাশক্তিমান, মহাপরাক্রমশালী।” [সূরাঃ আল মুজাদালা; আয়াতঃ ২১]

 

যে মুসলিম জাতি তোমাদের মতো পুর্ববর্তী জালিম সাম্রাজ্য ধ্বংস করে এসেছে, যে জাতি তোমাদের আক্রমণ প্রত্যাখ্যান করে, তোমাদের অনিষ্ট দূর করতে চায়, সেই জাতি তোমাদের সাথে লড়াই করতে সদাপ্রস্তুত। তোমরা খুব ভালো করেই জানো, এই মুসলিম জাতি তাদের অন্তরের গভীর থেকে তোমাদের দাম্ভিকতা আর অহংকারকে কতোটা ঘৃণা করে।
আমেরিকানরা যদি আমাদের এসব পরামর্শ, কল্যাণ, নির্দেশনা ও যেই ন্যায়পরায়নতার দিকে আহ্বান জানাচ্ছি তা শুনতে অস্বীকার করে, তবে জেনে রাখো, এই ক্রুসেডে তোমরা পরাজিত হবে যা বুশ শুরু করেছিল, ঠিক যেভাবে পুর্ববর্তী ক্রুসেডগুলোতে তোমরা মুজাহিদীনদের হাতে অপমানিত হয়ে লজ্জা ও নীরবতার সাথে ঘরে পালিয়ে গিয়েছিলে। আমেরিকানরা যদি সাড়া না দেয় তবে তাদের পরিণতি হবে ঠিক সেই সোভিয়েতদের মতোই যারা সামরিক পরাজয়, রাজনৈতিক ভাঙ্গন, আদর্শিক পতন এবং অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্ব সামাল দেবার জন্য আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।

 

এটা আমেরিকানদের প্রতি তাদের উত্তর হিসাবে আমাদের বার্তা। তারা কি এখন জানতে পেরেছে কেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি? আর কোন জাহেলিয়্যাতের কারণে তাদের উপর আল্লাহ্‌র হুকুমে আমরা বিজয়ী হবো ?

 

❛আমেরিকার প্রতি বার্তা || LETTER TO AMERICA❜

— ইমামুল মুজাহিদ শাইখ উসামা ইবনু লাদিন [تقبله الله]

অনুবাদঃ—
‘সালাফি সেন্ট্রাল মিডিয়া’
____________________________________
সালাফি সেন্ট্রাল - Salafi Central

 

❛নুসুস এবং সালফে স্বলেহীনদের মানহাজ অনুযায়ী ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরতে আমরা বদ্ধপরিকর❜
.
টুইটারঃ twitter.com/SCBN_Media
টেলিগ্রামঃ t.me/SalafiCentralBN
.
____________________________________
সালাফি সেন্ট্রাল - Salafi Central